নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
এক জীবনে মানুষ কতটুকু বা কতজনের ভালোবাসা পায়?
একদম নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। হ্যাঁ নিজের বাবা মা তো ভালোবাসবেই। ভালোবাসবে ভাইবোন এবং আত্মীয় স্বজনেরা। নিজের সন্তানেরা। নিজের পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের বাইরের মানুষের ভালোবাসা পাওয়াটা বিরাট ভাগ্যের ব্যাপার। আমি অতি সাধারণ ও তুচ্ছ মানুষ হয়েও এতটুকু বয়সে বেশ কিছু মানুষের সহজ সরল স্বচ্ছ ভালোবাসা পেয়েছি। যা আমাকে আনন্দ দিয়েছে, মুগ্ধ করেছে। বেঁচে থাকতে শিখিয়েছে। এবং মনে করিয়ে দিয়েছে, জীবন সুন্দর। আনন্দ নিয়ে বেঁচে থাকো, জীবনটাকে উপভোগ করো। কোনোরকম কারন ছাড়াই যাদের কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়েছি, আজ তাদের কয়েকজনের ঘটনা বলব। তাদের ভালোবাসা স্বার্থ ও উদ্দেশ্যহীন।
১। খিলগাও রেললাইনের ধারে সন্ধ্যার পর মাছের বাজার বসে।
খুব জমজমাট বাজার। লোকজন পাগলের মতো মাছ কিনেন। সেখানে ১৮ বছরের রবিউল নামে এক ছেলে আছে, সে মাছ কাটে। বড় একটা বটিতে মুহুর্তের মধ্যেই বড় বড় মাছ কেটে ফেলে। মাছ কাটা দেখা দারুন ব্যপার। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখি। যাইহোক, এই রবিউল আমাকে বেশ খাতির করে। কয়েকদিন তার কাছে না গেলেই সে রাগ করে। রবিউলের কাছে গেলেই সে ভীষন খুশি হয়। আমাকে তার পাশে বসায়। আমাকে চা খেতে দেয়। বেনসন সিগারেট এনে দেয়। অথচ রবিউল আমার কোনো আত্মীয়স্বজন না। কোনোদিন আমি রবিউলের কোনো উপকারও করিনি। কেন যে সে আমাকে এত আন্তরিকতা দেখায় আমি ভেবে পাই না। চারিদিক থেকে তুচ্ছ আর অবহেলা পাওয়ার পর রবিউলের ভালোবাসা আমাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায়।
২। কলকাতাবাজার এলাকায় চা বিক্রি করেন, মতি ভাই।
এক সময় আমি কবি নজরুল কলেজে আড্ডা দিতাম। তখন থেকেই মতি ভাইকে চিনি। প্রতি মাসে ২/৩ বার তার কাছে যেতেই হয়। নইলে সে অনেক রাগ করেন। এখন মতি ভাইয়ের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। চায়ের পাশাপাশি সিঙ্গারা বিক্রি করেন। প্রতিদিন ৩শ' সিঙ্গারা দেড় ঘন্টার মধ্যে বিক্রি হয়ে যায়। বিকেলে পুরী, পিয়াজু, বেগুনি বিক্রি করেন। কোনো এক বিচিত্র কারনে মতি ভাই আমাকে অনেক স্নেহ করেন। যারা আমাকে আন্তরিকতা দেখায়, ভালোবাসা দেখায় আমি তাদের কখনও অবহেলা করি না। আমি যাই মতি ভাইয়ের কাছে। উনি চা-সিঙ্গারা খেতে দেন। আমার খেতে ইচ্ছা না করলেও আমি তাকে খুশি করার জন্য আগ্রহ নিয়ে হাসিমুখে খেয়ে নিই। বাসায় ফেরার সময় মতি ভাই জোর করে অনেক গুলো সিঙ্গারা দিয়ে দেন। টাকা দিতে গেলে বলেন, এরচেয়ে ভালো আমাকে জুতো দিয়ে মারেন।
৩। সিজার ভাই। বয়সে আমার চেয়ে অনেক বড়।
সিজার ভাই মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড এলাকার এক বাড়ির দাড়োয়ান। খুব ধার্মিক মানুষ। মাথায় নামাজের টুপি সব সময় থাকে। কপালের মাঝখানে কালো দাগ। সারাদিন বাড়ির গেটের কাছে বসে কোরআন শরীফ পড়তেই থাকেন। তার এক ছেলে, এক মেয়ে। বহু বছরর আগেই তাদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। সিজার ভাই আমাকে নিজের ছেলের মতোন করে ভালোবাসেন। আমাকে আব্বাজ্বী বলে ডাকেন। উনি নিজেই রান্না করে খান। তার ওখানে গেলে আমাকে না খাইয়ে ফিরতে দেন না। মাছের বড় পিছটা আমাকে দিবেন। তার হাতের রান্না ভালো না। কিন্তু মানুষটা আমাকে এতখানি ভালোবাসা দেখান আমি মুগ্ধ হুয়ে যাই। একজীবনে কত মানুষের ভালোবাসা পেলাম! আমি ভাগ্যবান। সিজার ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার আগে উনি প্রত্যেক বার আমাকে সূরা পড়ে ফুঁ দিয়ে দেন।
৪। মগবাজার এলাকায় সিটি ব্যাংকের একটা বুথ আছে।
সেই বুথের সিকিউরিটি গার্ড মোজ্জাফর ভাই। মোজ্জাফর ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় সৌদি গিয়েছিলো। তার ভাগ্য বদলায়নি। বরং জমিজমা গেছে, সেই সাথে অনেক টাকা দেনা হয়েছে। মোজ্জাফর আমাকে খুবই খাতির করে। আমার অনেক ফালতু কথাও খুব মন দিয়ে শোনে। আমি যদি একবার বলি, মোজ্জাফর একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকো, তাহলে মোজ্জাফর কোনো প্রশ্ন না করে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। মোজ্জাফর গ্রামের বাড়ি গেলে আমার জন্য কিছু না কিছু নিয়ে আসবেই। অথচ আমি কখনও মোজ্জাফরের জন্য কিছু করতে পারিনি। মোজ্জাফর কেন আমাকে খাতির করে আমি জানি না। সহজ সরল সম্পর্ক আমাদের। আমি মানুষকে ভালোবাসি। সে ধনী না দরিদ্র সেটা আমার কাছে কোনো বিষয় না। এজন্যই হয়তো এক শ্রেণীর মানুষ আমাকে দ্রুত আপন ও বিশ্বাস করে নেয়।
৫। একসময় আমাদের বাসায় কাজ করতো কোহিনূর।
কোহিনূর আমাদের এলাকায় সমস্ত বুয়াদের ওস্তাদ। এখন কোহিনূর বাসা বাড়িতে কাজ করে না। সে একটা মূরগীর দোকান দিয়েছে। প্রায়'ই আমাকে তার দোকানের সামনে দিয়ে যেতে হয়। আমাকে দেখলেই কোহিনূর আপা চিৎকার করে ডাক দেন। তাড়াহুড়া করে পাশের দোকান থেকে একটা ঠান্ডা কোক নিয়ে আমার হাতে ধরিয়ে দেন। আমি মানা করলেও আমার কথা শুনেন না। সুরভির কথা জিজ্ঞেস করে, আমার কন্যাদের কথা জিজ্ঞেস করে। আমি থাকা অবস্থায় যদি তার দোকানে কোনো কাস্টমার আসে, তাহলে কোহিনূর বলে দেয়, এখন মূরগী বেচা বন্ধ। একবার এলাকায় আমার সাথে কিছু বখাটের সাথে ঝামেলা হয়েছিলো। বখাটেরা দলবল নিয়ে আমাকে মারতে এসেছিলো। তখন এই কোহিনূর আপা সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন, বলেছিলেন, দেখি কোন বান্দির পুত আমার ভাইয়ের গায়ে হাত দেয়।
২৮ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:১০
রাজীব নুর বলেছেন: হলুদ পাঞ্জাবী আমার নেই।
২| ২৮ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:০০
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: কেউ না!!
২৮ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:১০
রাজীব নুর বলেছেন: দুঃখজনক।
৩| ২৮ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:২৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
২৯ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া জনাব।
৪| ২৮ শে জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০০
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সবগুলোই ভালো লাগল। তবে কোহিনূরেরটা একটু বেশি।
২৯ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: একটূও বেশী না। একদম বাস্তব।
৫| ২৮ শে জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৪
রাজসিংহ ২০২৩ বলেছেন: বর্তমান সময়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে কেউ কাউকে ভালোবাসে না।
২৯ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: বাসে। বাসে।
৬| ২৮ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:১৫
কামাল১৮ বলেছেন: একটা উদ্দেশ্য অবস্যই আছে।সেটা হলো আন্তরিকতা।আন্তরিক ভাবে মিসলে সবাই ভালো বাসবে।কৃত্তিম ভাবে মিসলে সবাই কৃত্তিমতা দেখাবে।মানুষ এটা বুঝতে পারে।
আন্দোলন কেমন দেখলেন।
২৯ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: এইসব আন্দোলন অযথা।
এসব করে তো আর বেকার সমস্যার সমধান হবে না। বাজারে জিনিসপত্রের দামও কমবে না।
৭| ২৮ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:০৩
রানার ব্লগ বলেছেন: পৃথিবীর কোন কিছুই উদ্দেশ্যহীন না । এই যে একটা গল্প লিখলেন এটার ও একটা উদ্দেশ্য আছে ।
২৯ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: তাই নাকি?
বলুন উদ্দেশ্যটা কি?
৮| ২৯ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ২:৩১
জাবাইরেজা বলেছেন: দা বিয়ার্ড আই মীন পাখি ইজ বেরি নাইচ
২৯ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:২০
রাজীব নুর বলেছেন: হুম ধন্যবাদ।
৯| ২৯ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:৫৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: শেষেরটা সুন্দর। উদ্দেশ্যহীন ভাবে কেউ ভালোবাসে কিনা জানিনা।
২৯ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:২১
রাজীব নুর বলেছেন: ভালোবাসলে অবশ্যই জানতেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৯
কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনার সাথে হিমুর মিল আছে! হিমুকেও এভাবে সবাই আদর যত্ন করে! একটি হলুদ পাঞ্জাবী কিনে নিবেন তাহলে জমে একেবারে ক্ষীর হবে!
লেখাটা আমার ভাল লাগল। সহজ সরল জীবনের গল্প!