নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবারা লাইনে থাকিস

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:২৪

ছবিঃ আমার তোলা।

আমি যখন স্কুলে পড়ি, তখন শিক্ষক জিজ্ঞেস করেছিলেন-
তুমি কি হতে চাও? আরো অনেককেই জিজ্ঞেস করেছিলেন। তাঁরা কেউ বলল, ডাক্তার হতে চাই, পাইলট হতে চাই, বিজনেসম্যান হতে চাই ইত্যাদি। আমি শিক্ষককে স্পষ্ট বলে দিয়েছিলাম- আমি একজন 'ভালো মানুষ' হতে চাই। কারন, আমাকে আমার মা বলেছেন, তুমি জীবনে যা-ই হও না কেন, (ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট)- সবার আগে তোমাকে একজন ভালো মানুষ হতে হবে। একজন ভালো মানুষ হওয়ার পর- তুমি যা খুশি হও। মায়ের কথা রাখতে গিয়ে জীবনে কিছুই হতে পারলাম না। এমনকি হয়তো 'ভালো মানুষ' পর্যন্ত হতে পারলাম না। ভালো আর মন্দের মাঝামাঝিতে রয়ে গেলাম। না ঘাটকা, না ঘরকা!!

রাস্তায় বের হলেই এত এত ভিক্ষুক এসে হাত পাতে।
কয়জনকে দেওয়া যায়! না করে দেওয়ার পরও ভিক্ষুক যায় না। তখন ধমক দিতে হয়। একজন ভালো মানুষ নিশ্চয়ই ভিক্ষুককে ধমক দিবে না। এখন আর জীবনে কিছু হতে পারবো না। বয়স পার হয়ে গেছে। এখন শুধু কোনো রকমে বেঁচে থাকতে চাই। তবে মনে মনে আমার ইচ্ছা ছিলো সিনেমার নায়ক হওয়ার। জিন্স প্যান্ট, লাল শার্ট পড়তাম। সাদা কেডস। চুল গুলো উলটো করে আচড়ে নিতাম। দেখতে ভালোই লাগতো। রাস্তাঘাটে দু চারজন মেয়ে চলার পথে ফিরে ফিরে চাইতো। আমার ভীষন লজ্জা লাগতো। তখন নিজেকে নিজে বলতাম, লজ্জা পাও ক্যান? তাহলে সিনেমায় অভিনয় করবে কি করে? একবার পেস্ট এর একটা বিজ্ঞাপন করার সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু পরিচালক বললেন, এই ছেলে তো ভীষন লাজুক। একে দিয়ে হবে না। আমাকে দিয়ে কিছুই হলো না। শুধু অক্সিজেন অপচয় করে যাচ্ছি।

একসময় আমার ইচ্ছা ছিলো কৃষক হবো। চাষবাস করবো।
সারাদিন জমিতে কাজ করবো। বউ দুপুরবেলা গামলা গামছা দিয়ে প্যাচিয়ে আমার জন্য ভাত নিয়ে আসবে। একটা গাছের নিচে বসে ভাত খাবো তাড়াহুড়া করে। বউ বলবে, এই তাড়াহুড়া করবে না। শান্তি মতো আস্তে ধীরে খাও। আমি বলব, জমিতে ম্যালা কাজ বাকি আছে। বউ বলবে, সাথে কয়েকজন কামলা নাও। তাতে তোমার কষ্ট কম হবে। আমি বলল, কি যে বলো! এতটুকু জমি আমি একাই চাষ করতে পারবো। নিজের গাই গরু থাকবে। খাঁটি দুধ পাবো। খাঁটি দুধ খাবো। বউ পায়েস বানাবে। চিতই পিঠা দুধে ভিজিয়ে দেবে। রাতে উঠানে বসে বউ আর আমি বসে গল্প করবো। আমি বলব, এক কাপ চা দাও। আমি চায়ের সাথে একটা বিড়ি ধরাবো। আনন্দময় জীবন। বউকে বুঝিয়ে বলব- কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থ আর আমাদের জীবনানন্দ একই ধারার কবি। তবে জীবন বাবুর ভাগ্য খারাপ। এক অসহায় কবি।

আমি জীবনে অনেক কিছুই হতে চেয়েছিলাম বলে, কিছুই হতে পারলাম না।
এখন মা বলে- বেঁচে থাক। তোর কাছে আর কিচ্ছু চাই না। তাই আমি এখন বেঁচে থাকতে চাই। মায়ের খুশিই আমার খুশি। কলেজে স্যার ঢুকেই বলতেন- 'বাবারা লাইনে থাকিস'। স্যারের শুধু এক কথা- 'বাবারা লাইনে থাকিস'। স্যারের কথা মানতে গিয়ে আমি আজীবন লাইনে থেকে গেলাম। কখনও লাইন ভাঙ্গিনি। ব্যাংকে গেলে লাইনে দাড়িয়ে থাকি। লিফটে ওঠার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি। এক কাপ কফির জন্যও লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি। দীর্ঘদিন লাইনে থাকতে থাকতে এখন আর লাইন ভাঙতে ইচ্ছা করে না। অভ্যাস হয়ে গেছে। অথচ নিজের চোখেই দেখি বহু লোক লাইনে নেই। লাইনে না থেকে তাঁরা আমার চেয়ে ভালো আছে। বেশ আছে। বরং আমি লাইনে থেকে ভুল করেছি। ভুলে ভুলেই জীবন গেলো। শ্বান্ত্বনা হলো- রবীন্দ্রনাথও জীবনে অনেক ভুল করেছেন। আমাদের বঙ্গবন্ধুও ভুল করেছেন। মহাত্মা গান্ধী বা স্বামী বিবেকানন্দও ভুল করেছেন। এমনকি ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রও ভুল করেছেন।

যাইহোক, স্বপ্নে দেখি মুনা নামের একটা মেয়ে আমাকে ভালোবাসে।
আমি যেখানেই যাই, মুনা সেখানে চলে আসে। আজিব!! মুনাকে বলেছি দেখো ভাই- আমার মমতাময়ী স্ত্রী আছে। সন্তান আছে। তাহলে কেন তুমি আমাকে ভালোবাসো? মুনা হাসে। সহজ সরল সুন্দর হাসি। মেয়েটার হাসি ভালো লাগে। বিশ্বসাহিত্যে তার বেশ ভালো দখল আছে। তবে মুনা ধার্মিক। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। এমনকি তাহাজ্জুদও পড়ে। ঘর থেকে বাইরে বের হলে বোরখা পড়ে। হাতমোজা পড়ে। শুধু চোখ দেখা যায়। অথচ বিনা দ্বিধায় সে আমাকে জড়িয়ে ধরে, চুমু খায়। আমার হাত ধরে নদীর পাড় দিয়ে হাঁটে। এটা কেমন ভালোবাসা! মুনা কি ঘোরের মধ্যে আছে? সে কি একটা ভুল করতে যাচ্ছে? তাকে কি প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে? সমস্যা হলো- একটু কঠিন করে কথা বললেই সে আবার কষ্ট পায়। কি যে করি! কি যে করি!!

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৯

মেঠোপথ২৩ বলেছেন: ''বাবারা লাইনে থাকিস'' শিক্ষকদের খুব প্রিয় ডায়লগ ছিল আগের জমানায় ।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা।
অনেক শিক্ষকের কিছু কিছু মজার ডায়লগ আছে।
আমাদের একজন শিক্ষক কথায় কথায় বলতেন- ভন্ডের দল।
অংকের শিক্ষক বলতেন, বুঝতে বেগ পেতে হচ্ছে?

২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মুনা চুমা খেলেও আপনি ভুলেও চুমা খাবেন না।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: কেন?

৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৫

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:



এখন শিক্ষকরা ভয়ে থাকে 'কিছু বলতে চায় না।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: খাঁটি শিক্ষক আমাদের নেই।

৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৩০

কামাল১৮ বলেছেন: পরিবেশ মানুষকে ভালো হতে সাহায্য করে।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমরা থাকি কলুষিত পরিবেশে।

৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ৭:১৪

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: জীবনে "কিছুই" না হতে পারার মাঝে আক্ষেপের কিছু নেই। কিছু হতেই হবে এমন কোন নিয়মও নেই। আর কিছু হয়েই বা লাভ কি যদি সেটা ধরে না রাখা যায়? মানুষ হয়ে জন্মেছেন, মানুষ হয়েই চলেও যাওয়াটাই সর্বোত্তম বলে আমার মনে হয়। শুভ কামনা থাকছে, ধন্যবাদ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো কথা বলেছেন। ধন্যবাদ।

৬| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:১২

আফলাতুন হায়দার চৌধুরী বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। সত্যি কথা বলতে স্বপ্ন লজ্জ্বাহীন। তাই স্বপ্ন দেখুন প্রানভরে।
বেঁচে থাকার চেয়ে বড় অর্জন আর কি হতে পারে। আমরা সবাই সফল মানুষ, যতক্ষণ বেঁচে আছি।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:২২

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর মন্তব্য করেছেন।

৭| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৩১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি স্বপ্নের মধ্যে মুনাকে চুমা দিলেও আমি সুরভি ভাবিকে বলে দিব। হাজার হোক বরিশালের মেয়ে। আমার একটা দায়িত্ব আছে। আর স্বপ্নে মুনার সাথে চুমাচুমি বেশী করলে ভোরে উঠে অবশ্যই গোসল করে নিবেন। আর ভিজা জামাকাপড় ধুয়ে নিবেন। তারপর নামাজ পড়বেন।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: হায় কপাল!!!
কত দূর ভেবে ফেলেছেন!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.