![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
১। স্থানঃ মুন্সিগঞ্জ, বিক্রমপুর।
সময় তখন ১৯৪৬ সাল। গ্রামের নাম পয়সা। আদর আলী। বয়স ৬০। আদর আলী গাছ পাগল মানুষ। সে তার বাড়িতে গাছ লাগিয়ে ভরে ফেলেছে। দূর থেকে তার ঘরবাড়ি কিছুই দেখা যায় না। বড় বড় গাছ তার বাড়ি ঢেকে দিয়েছে। পয়সা গ্রামে যত গাছ আছে, সব তার নিজের হাতে লাগানো। সকাল সন্ধ্যা এই গাছের যত্ন তিনি নেন। এক বৈশাখ মাসে আদর আলী সিরাজদিখান গিয়েছিলো। সেখানে সে দুটা আম গাছের চারা পায়। চারা গাছ দেখে তার ভীষন লোভ হলো। গাছ দুটা সে তার গ্রামে নিয়ে আসে। কিন্তু গাছ লাগানোর জায়গা খুজে পায় না। কারন সব জায়গায় গাছ লাগানো হয়ে গেছে। অনেক খোজাখুজির পর কবরস্থানের পাশে একটু খালি জায়গা পাওয়া গেলো। আদর আলী সেখানে মাটি খুড়ে। মাটি খুড়তেই একটা সোনার মূর্তি পায়। বেশ ভাবী মূর্তি। আদর আলী দরিদ্র মানুষ। দরিদ্র হলেও তার লোভ নেই। এই সোনার মূর্তি দিয়ে সে কি করিবে? গ্রামের সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তি সোমনাথ সেনকে জানায়। পরের দিন আদর আলীর লাশ পাওয়া যায় পুকুর পাড়ে। ১৯৫৭ সালে একবার অনেক বড় ঝড় হয়। সেই ঝড়ে পয়সা গ্রামের অর্ধেকের বেশি গাছ ভেঙ্গে যায়। আর আদর আলীর মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
২। টিকটক সম্পর্কে আপনারা সবাই কম-বেশি জানেন।
আমাদের চাঁদগাজী দেশের মানুষের অবস্থা, মানসিকতা এবং শিক্ষার মান সহ জাতির অবস্থা বুঝার জন্য সামুতে আসেন। ব্লগারদের লেখা পড়েন। উনি দারুন বুদ্ধিমান মানুষ। মিসির আলীর মতোন বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী মানুষ। আর বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী মানুষ সব সময় মানবিক হয়। যাইহোক, আমি সামুর ব্লগারদের লেখা পড়ে- জাতির অবস্থা বুঝি না। তবে টিকটক ভিডিও গুলো দেখলে দেশের মানুষের অবস্থা বুঝি, দেশের মানুষের মানসিকতাও বুঝতে পারি। একটা টিকটকের কথা বলব- এক গ্রামের ছেলে। ধরে নিলাম ছেলেটার নাম- হাফেজ। বয়স ১৮ থেকে ২২ এর মধ্যে। সেই ছেলে টিকটক ভিডিও করে। দরিদ্র পিতার দরিদ্র ছেলে। হাফেজ একটা কলা গাছ লাথি দিয়ে ভেঙ্গে দেয়। দুটা কাঁচের প্লেট ভেঙ্গে দেয়, পুকুরে ডুব দিয়ে অনেকক্ষন থাকে। ভিডিও শেষে চিৎকার করে বলে ওঠে, আপনারা কমেন্ট করে জানান, আমি আর কি কি করিব? এটাই আমার লেভেল। এটাই আমার পাওয়ার। হাফেজের ভিডিও লোকজন আগ্রহ নিয়ে দেখে। অনেক লাইক দেয়। কমেন্ট করে।
হাফিজের টিকটক ভিডিও দেখে একজন কমেন্ট করলো-
হাফেজ ভাই আপনার বাবার পাছায় একটা লাথথি দিয়ে দেখান। হাফেজ সত্যি সত্যি তার বাবার পাছায় লাথথি দেয়। লাত্থি খেয়ে হাফিজের বাবা বলেন, এটাই আমার ছেলের পাওয়ার। এটাই আমার ছেলের কোয়ালিটি। কমেন্টে জানান আমার ছেলের আর কি কি করতে হবে? আরেকজন কমেন্টে বলে, হাফেজ ভাই আপনার বাবার লুঙ্গি ছিড়ে দেখান। হাফেজ সত্যি সত্যি তার বাবার লুঙ্গি ছিড়ে ফেলে। তখন হাফেজের বাবা বলে, আপনারা কমেন্টে জানান আর কি কি করতে হবে? একজন কমেন্ট করে, হাফেজ ভাই আপনার বাবার মাথায় ভাতের গামলা দিয়ে বারি দেন। হাফেজ সত্যি সত্যি সিলবারের বোল দিয়ে তার বাবার মাথায় বাড়ি দেয়। সিলবারের বোল টেপ খেয়ে যায়। হাফেজ চিৎকার করে বলে, এটাই আমার লেভেল। এটাই আমার কোয়ালিটি। আর কি করতে হবে কমেন্টে জানান। এই হচ্ছে হাফেজের টিকটক। প্রতিদিন সে অনেক গুলো করে ভিডিও করে। হাফেজের স্বপ্ন একদিন সে টিকটক সেলিব্রেটি হবে। হাফেজের বাবা কেন হাফেজকে সাপোর্ট করে যাচ্ছে।
৩। খুব চালাক কিছু প্রানী টাকা ইনকাম করার জন্য-
ভিডিও তৈরি করে। সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়- ইউটিউব, ফেসবুক আর টিকটকে। যেমন এক ছেলে ভিডিও বানালো- একটা ক্রিম দেখিয়ে বলল, এই ক্রিম ব্যবহার করলে আপনি ফর্সা হয়ে যাবেন। তার দেখাদেখি আরেকজন ভিডিও করলো- এই জুস খেলে আপনি স্থায়ী ভাবে ফর্সা হয়ে যাবেন। দেখা গেলো- লোকজন ফর্সা হওয়ার জন্য পাগলের মতো- ক্রিম/ ট্যাবলেট কিনতে থাকলো। মুহুর্তে লাখ লাখ টাকা ইনকাম। সরকার থেকেও এইসব প্রতারকদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। আরেকটা ঘটনা বলি- দুইজন ছেলে আছে। এরা মেয়েদের মতো মুখে অনেক মেকাপ করে। দেখতে অতি কুৎসিত লাগে। এদের পোশাক আশাক চাল-চলন একদম হিজড়াদের মতোন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এদের বিশেষ অতিথি করা হয়। এরা বলেন, তাদের জামা আমেরিকা থেকে আনা হয়েছে। তার চশমার দাম দুই লাখ টাকা। জুতোর দাম তিন লাখ টাকা। দুটা কুৎসিত মানুষকে নিয়ে লোকজন নাচানাচি করছে। তাদের সাক্ষাতকার নিচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের ডেকে নিয়ে পুরস্কার দিচ্ছে। দেশে এসব কি হচ্ছে? রুচির এত দুর্ভিক্ষ? এই দুই ছাগলকে ধরে টানা এক ঘন্টা থাপড়াতে পারলে ভালো লাগতো। সেই সাথে যারা এই দুই ছাগলকে নিয়ে নাচছে তাদেরও থাপড়াতে পারলে শান্তি পেতাম। সরকারের উচিৎ এদের থামানো। এদের দেখাদেখি- আরো লোক ভুল পথে যাচ্ছে।
৪। এযুগের ছেলেরা বন্ধুকে মামা ডাকে।
বন্ধুকে মামা ডাকবে কেন? এটা কেমন কথা! রিকশা চালককে মামা ডাকে সেটা মেনে নিয়েছি। কিন্তু বন্ধুকে মামা ডাকবে কেন? এযুগের ছেলের জ্ঞান বুদ্ধি একদম কম। এদের মধ্যে এক শ্রেনী রাতের বেলা বাইক নিয়ে তিনশ ফিট যায়। স্প্রীডে বাইক চালায়। এটাই তাদের কাছে বিশাল আনন্দের ব্যাপার। আরেক শ্রেনী নেশা করে, এটাই তাদের কাছে আনন্দের ব্যাপার। আরেক শ্রেনী প্রেম ভালোবাসা করে। এটাই তাদের কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার। আরেক শ্রেনী টিকটক ইউটিউব নিয়ে মহা ব্যস্ত। এরা স্বচ্ছ পবিত্র জ্ঞান অর্জন করতে চায়। জটিলতা কুটিলতায় এরা এক্সপার্ট।
এযুগের ছেলেমেয়েরা সত্যের অনুসন্ধান করে না। এরা মিথ্যা নিয়ে বড় হয়। মিথ্যাটাকেই সত্য বলে জীবনযাপন করে। এরা লেখাপড়া করে না। এদের লজ্জাশরম নাই। এদের বাবা মা কি এদের শুধু জন্মই দিয়েছে? কোনো ভালো শিক্ষা দেয়নি? আমার যখন এদের মতো বয়স ছিলো- সহজ সরল ছিলাম। কোন দিন মুখ দিয়ে একটা বাজে শব্দ উচ্চারণ করিনি। মেয়েদের পেছনে ঘুরিনি। মুরুব্বিদের সম্মান করেছি। কেউ বিপদে পড়লে সাহায্য করেছি। স্কুলে যেতাম। পড়াশোনা করতাম। বিকেলে মাঠে ফুটবল খেলতে যেতাম। সন্ধ্যায় পড়তে বসতাম। রাত ৯ টার মধ্যে খেয়ে ঘুম দিতাম। সহজ সরল জীবন ছিলো।
৩১ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: হিহি
ধন্যবাদ।
২| ৩০ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:৫০
কামাল১৮ বলেছেন: ইউনুসকে জুতার মালা পরিয়ে ঘুরানো হচ্ছে এই টিকটকটা আমার দেখার ইচ্ছা।
৩১ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: উফ আল্লাহ!!!
কি যে বলেন!!!!
৩| ৩০ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৪৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পড়লাম।
৩১ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: অশেষ শুকরিয়া।
৪| ৩১ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:৩৫
ইএম সেলিম আহমেদ বলেছেন:
বউ ব্যবসায়ী বা কপাল ভ্লগার বাদ পড়ে গেছে।
৩১ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা হ্যা ভালো একটা পয়েন্ট বাদ পড়ে গেছে।
৫| ৩১ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৯
আহমেদ রুহুল আমিন বলেছেন: অনেক উন্নত দেশেও টিক টক নিষিদ্ধ রয়েছে । তবে, টিক টক এর একটা ভালো দিক হলো - অনেক পোপুলার বা দুষ্প্রাপ্য গান কিংবা ভিডিও প্রতিবেদনের শর্ট ভিডিও গুলো দিয়ে মুল গান বা প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায় ।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:৩১
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: হুজুর, দাঁড়িওয়ালা কোন মাওলানাকে টিকটকে পাননি? আপনার জীবনের চলার পথে হুজুর দাঁড়িওয়ালাদের নিয়ে কাহিনী শেষ নাই। কোন হুজুর দশ পদের তরকারি দিয়ে ভাত খায় আবার কেউ লোকাল বাসে মেয়েদের ফিতায় হাত দেয়।