| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজীব নুর
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আমাদের পাশের বাসায় নতুন ভাড়াটে এসেছে।
নতুন বলতে প্রায় এক বছর হয়ে গেছে। স্বামী স্ত্রী আর দুই ছেলে। প্রতিদিন দুইবার স্বামী স্ত্রী ঝগড়া করে। একবার সকালে, একবার রাতে। লোকটার সাথে আমার পরিচয় আছে। বারান্দায় গেলে লোকটার সাথে আমার দেখা হয়। লোকটা মাত্রই স্ত্রীর সাথে চিল্লাচিল্লি করে এসে বারান্দায় সিগারেট ধরিয়েছে। বললাম, কি হয়েছে? লোকটা বলল- এমন এক মহিলাকে বিয়ে করেছি ভাই, জীবন শেষ। বললাম, কি হয়েছে? লোকটা বলল- ভাত খেতে বসেছি। তরকাতি নেওয়ার জন্য আমাকে স্যুপের বাটির চামচ দিয়েছে। আপনিই বলেন, স্যুপের বাটির চামচ দিয়ে তরকারী নেওয়া যায়? আমি বললাম, থাক বাদ দেন। লোকটা বলল, আমি ভদ্রলোকের সন্তান। চিল্লাচিল্লি করা আমার স্বভাব নয়। কিন্তু এই বেটি, এমন সব কাজ-কারবার করে যে, আমার মত শান্ত স্বভাবের মানুষের মাথায় রক্ত উঠে যায়। আফসোস, বিরাট আফসোস। কেন যে বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে করলাম না!!
আরেক দিনের কথা-
সকালবেলা ভদ্রলোক রাগ করে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ফোস ফোস করে সিগারেট টানছে। বললাম, কি হয়েছে। লোকটা এক আকাশ হতাশা ও কষ্ট নিয়ে বলল, আমার স্ত্রী বলেছে- আমি নাকি ছাগলেরও অধম। আমি হেসে বললাম- আপনি সহজ সরল ভালো মানুষ। লোকটা মন খারাপ করে বলল- আমার স্ত্রী বলেছে, আমি 'ছাগলেরও অধম'। কোনো স্ত্রীলোক তার স্বামীকে বলতে পারে- ছাগলেরও অধম!! আমি বললাম, কোনো অপরাধে আপনাকে এই কথা বললো? লোকটা বলল, অপরাধ লাগে না। মহিলার মন চেয়েছে, বলে দিয়েছে। আমার জায়গায় অন্য কোনো লোক হলে এখন এই বেটিকে টেনে হিচড়ে বাসা থেকে বের করে দিতো। আমি ভদ্র লোকের ছেলে। আমি তো ভাই খারাপ ব্যবহার করতে পারবো না। খারাপ গালাগালি দিতে পারিব না। লোকটা আরেকটা সিগারেট ধরালো। আমি জানি এবং বিশ্বাস করি- একজন স্ত্রী তার স্বামীকে সবচেয়ে ভালো চিনে, জানে এবং বুঝেও।
এই লোকের স্ত্রীকে আমি চিনি।
আমাদের বাসায় অনেকবার এসেছে। ভালো একটা মেয়ে। হাসিখুশি। সহজ সরল, ভোলাভালা। সুরভির সাথে খুব ভাব। যখনই আমাদের বাসায় আসে- ফারাজার জন্য কিছু না কিছু রান্না করে নিয়ে আসে। আমি ভেবে পাই না- এই মেয়ে কেন তার স্বামীকে 'ছাগলের অধম' বলেছে? কেন তরকারী নেওয়ার জন্য স্যুপের চামচ দিয়েছে? কেন তাদের প্রতিদিন ঝগড়া হয়? সমস্যাটা কোথায়? অন্যের সমস্যা বাদ দিয়ে আমি নিজের পরিবার নিয়ে ভাবি। আমি পরিবার নিয়ে ভালো আছি। ঝামেলাহীন জীবন পার করে দিচ্ছি। সুরভির সাথে ঝগড়া হয় না। চিল্লাচিল্লি হয় না। সংসারে শান্তির জন্য মন্ত্র জানতে হয়। মন্ত্রটা হচ্ছে 'ছাড়' দেওয়া। স্বামী স্ত্রী দুজনকেই 'ছাড়' দিতে হবে। 'ছাড়' দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। দুজনে মিলে যত 'ছাড়' দিবে, সংসার তত আনন্দময় হয়ে উঠবে।
ছোটবেলা আমি আমার বাবা মাকে ঝগড়া করতে দেখেছি।
তখনই আমি ঠিক করেছিলাম, আমি কোনোদিন স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করবো না। আমার বাবা মার মধ্যে ভালোবাসার অভাব নেই। কিন্তু হঠাত ধুমধাম ঝগড়া লেগে যায়। দুজনে হয়তো ভিসিআরে সিনেমা দেখছে। হাসছে। আব্বা বলল, চা দাও। মা চা করে দিলো। আব্বা বলল- চিনি বেশি হয়েছে। তুমি জানো না আমি চিনি কম খাই। মা বলল, হয়তো সামান্য বেশি হয়েছে। কি করবো? খেয়ে ফেলো। তখন আব্বা বললো, কাপও তো সামান্য ভাঙ্গা। ভাঙ্গা কাপে আমাকে চা দাও! মা বলে কই ভাঙ্গা? এটা একটা দাগ। এরকম এক কথায়, দুই কথায় মা বাবা ঝগড়া শুরু করে দেয়। এরপর আব্বা রাগ করে বাইরে চলে যায়। আমি জানি মায়ের মন মেজাজ খারাপ। তাই নিজেই ভাত বেড়ে খেয়ে নিই। লক্ষ্মী ছেলের মতো ঘুমিয়ে যাই। সকালে স্কুল আছে।
ঝগড়া অতি কুৎসিত একটা বিষয়।
ঝগড়া করে শেষমেশ কিছুই পাওয়া যায় না। তবু মানুষ ঝগড়া করে। নিয়মিত ঝগড়া করে। প্রতিদিন রাস্তাঘাটে আমি অসংখ্য ঝগড়া করি। ঝগড়া না করে একপক্ষ চুপ থাকলেই তো ঝগড়া মিটে যায়। সবাই সবার সাথে ঝগড়া করছে। বাস কন্টাকটর পাঁচ টাকার জন্য ঝগড়া করছে, রিকশাচালক যাত্রীর সাথে ঝগড়া করছে, উলটো পথে আসা গাড়ির ড্রাইভার ঝগড়া করছে, ট্রাফিক পুলিশ ঝগড়া করছে, সরকারি চাকরি করা মহিলা ব্লগার ঝগড়া করছে। আমি ভাই কারো সাথে ঝগড়া করি না। কেউ ঝগড়া করতে এলেও আমি চুপ থাকি। ঝগড়াটে মানুষ থেকে আমি একশ হাত দূরে থাকি। আমি শান্তি প্রিয় মানুষ। কেউ আমাকে ঠকালেও আমি ঝগড়া করি না। ক'দিন আর বেঁচে থাকিব এই পৃথিবীতে? তাহলে ঝগড়া কেন করিব?
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২
রাজীব নুর বলেছেন: অথচ আমাদের রবীন্দ্রনাথ বলে গেছেন, সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে।
২|
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১১:২২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পড়লাম ।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১২:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি হাজার পড়লেও লাভ নাই।
আপনার মাথায় শুধু পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত।
৩|
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১২:২৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পাক সার জমিন বাদ ।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: ধ্বংস নিশ্চিত।
৪|
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১২:২৭
নতুন বলেছেন: লেখক বলেছেন: অথচ আমাদের রবীন্দ্রনাথ বলে গেছেন, সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে।
পুরুষেরা নিরহ প্রানী বুদ্ধিমতী রমনীরা তাদের মায়র বাধনে ধরে রাখে, তারা স্বামীদের রাজার মতন ট্রিট করে এবং স্বামীরাও তাদের স্ত্রীকে রানীর মতন রাখে।
আর নিবোর্ধ রমনীরা ঝগড়া করে দাবী আদায় করতে চায়। এবং বোঝেনা যে তাতে স্বামী আরো দুরে চলে যায়।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: সঠিক বলেছেন।
৫|
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
লেখা উত্তম হৈয়াছে।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: এটা আসলে আপনাদের ভালোবাসার প্রতিফলন।
৬|
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ২:২৪
কালমানব বলেছেন: অনেক সময় ঝগড়া মানে হলো ভালবাসার প্রকাশ । চুপ করে না থেকে কথা বলার, অভিমানেরজুহাত আর উপহার আদায়ের ফন্দি বের করা । নারী জাতিরে মন বিচিত্র বৈকি । লেখা ভাল্লাগছে, এমন আরো লিখুন ।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:১১
রাজীব নুর বলেছেন: অভিমান ভালো। ঝগড়া ভালো না।
ঝগড়া একবার শুরু হলে শেষমেশ কুৎসিত রুপ নেয়।
৭|
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৭
আফলাতুন হায়দার চৌধুরী বলেছেন: ভাইজান আপনার লেখার আগা মাথা কিছু বুঝলাম না, ঘটনা কাল্পনিক হইলে এই লাইনের পরে আর পইড়েন না।
আপনার প্রতিবেশী আর তাঁর স্ত্রী সকাল-বিকাল দুই বেলা ঝগড়া করে। শুধুমাত্র দুইটা উদাহরণ দিলেন, এত অল্পে কি পেট ভরে?
যাউগ্গা,
উদাহরণ ১:- স্বামী তরকারীর চামচ চাইলো, ইস্তিরি স্যূপের চামচ দিছে। বাহ্, মহাভারত অশুদ্ধ হইয়া গেছে, আর নবাব সাহেবের মাথা গরম হইয়া গেছে।
- আমার কথা হইলো, জনাব স্বামী, আন্নে কোথাকার কোন হরিদাস পাল যে আন্নেরে তরকারীর চামচের জায়গায় স্যূপের চামচ দিলে চিল্লাচিল্লি শুরু কইত্তে হবে? কষ্ট কইরা নিজে গিয়া নিয়া আসলেই তো হইতো। কোন ক্ষেতের মুলা আপনে? (কি অবলীলায় নিজের বৌ সম্পর্কে প্রতিবেশীর কানে মন্তব্য ঢাইলা দিলো, কিন্তু এই বেটি, এমন সব কাজ-কারবার করে যে, আমার মত শান্ত স্বভাবের মানুষের মাথায় রক্ত উঠে যায়।)[/sb] - হেতে শান্ত? কইছে আপ্নেরে? হেতে একটা খবিস!
উদাহরণ ২:-
উনার ইস্তিরি উনাকে বলেছেন তিনি নাকি ছাগলেরও অধম। কারন জানতে চাইলে বললেন কোনো কারন লাগেনা।
- আর আপনিও মেনে নিলেন কোনো কারন লাগেনা। আসল কথা হইলো তিনি কোনো একটা আকাম কইরা বৌএর ঝাড়ি খাইয়া আপনার কাছে গিয়া পেট খালি কত্তেছে।
আফসোস, বিরাট আফসোস। কেন যে বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে করলাম না!! - এর মানে হইলো তেনারা ইয়ে করে বিয়ে করেছেন। প্রেমিকাবধুর ধমকধামক অতিশয় স্বাভাবিক বিষয়। (আশা করি, দোয়া করি, যেন কোন ভায়োলেন্স না হয়)
এখন প্রশ্ন হইলো এই সমস্যার সমাধান কি?
প্রানপ্রিয় রাজীন নুর ভাই, সমস্যা হইলেন গিয়া আপনি মিঞাঁ। আপনে ওগো থিক্কা দুরে থাকেন। দেখবেন সব ঠিক।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০
রাজীব নুর বলেছেন: আমার লেখা মানেই অগোছালো এবং এলোমেলো।
আসলে আমি লিখতে জানি না। তারপরও মন চায় লিখতে। লিখি। ভুল ত্রুটি ক্ষমা চাই।
উদাহরন অনেক দিতে পারেই। কিন্তু সেসব উদাহরন কুৎসিত।
স্যুপের চামচ দিয়ে কেন তরকারি নিতে হবে? ঘরে তো তরকারির চামচ আছে। একোন অসভ্যতা? স্ত্রী ভালো করেই জানে তার স্বামী এসব পছন্দ করে না। সারাদিন বেচারা খেটেখুটে আসে। তাকে একটু যত্ন করবে না?
স্ত্রী গহনা পছন্দ করে। স্বামী তাকে গহনা দেয়নি, এজন্য হয়তো স্বামীকে ছাগলের অধম বলেছে। স্বামী বেচারা ঘর সামলাতে হিমিসিম খাচ্ছে। এদিকে স্ত্রী শুরু করছে, বিয়ের পর বলেছিলো গহনা দিবে। ৭ বছর পার হয়ে গেছে। গহনা দাও নাই। আরে মেয়েলোকের আসল গহনা তো তার স্বামী।
তারা দুজনেই ভালো। প্রতিবেশি আমাদের।
৮|
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৮
খাঁজা বাবা বলেছেন: স্বামীর সাথে ঝগড়া মহিলাদের কাছে একটা রোমান্টিক ফ্যান্টাসি। ঝগড়া তাদের কাছে অনেকটা এন্টারটেইনমেন্টের মত।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: হয়তো আপনি স্বামী স্ত্রীর ঝগড়ার কুৎসিত রুপ দেখেন নাই।
আর সবচেয়ে বড় কথা ছোট ছোট দুই ছেলে, তাদের মানসিক অবস্থা কি হয় বুঝেন?
৯|
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৮:৩৫
কামাল১৮ বলেছেন: নারীর প্রথম চাওয় উচিত তার নিজের বাড়ী।বাড়ি থেকে বের করে দিবে এর থেকে বড় অপমান আর হয় না।যাকে হলে সেই অনুভব করতে পারে,এটা কতবড় অপমান।পুরুষকে চাকরিথেকে বেরকরে দিলে সে কিছুটা বুঝতে পারে।
১০|
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:১৪
dupur১২৩ বলেছেন: পড়িলাম , ভালো লেগেছে। আমার ধারণা , আপনি লেখিকার থেকে ভালো লেখেন।
পরে এসে আবার দেখে যাবো কে কি কমেন্ট করলো। খিচুড়ির দায়ত এর অপেক্ষায় আছি
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:৩৭
নতুন বলেছেন: তাদের সমস্যা অণ্য খানে।
ছুপের চামচ আর ছাগল বলা একটা সিমটম।
সংসারে শান্তির জন্য মন্ত্র জানতে হয়। মন্ত্রটা হচ্ছে 'ছাড়' দেওয়া। স্বামী স্ত্রী দুজনকেই 'ছাড়' দিতে হবে। 'ছাড়' দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। দুজনে মিলে যত 'ছাড়' দিবে, সংসার তত আনন্দময় হয়ে উঠবে।
এটাই বেশারভাগ মানুষ করতে পারেনা। তাই অশান্তিতে থাকে।