| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজীব নুর
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আজ আপনাদের একটা হুজুর পরিবারের গল্প বলব।
তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো। পাইকারী ব্যবসা। কিসমিস থেকে শুরু করে কাজু, পেস্তা, তেল-চাল-ডাল ইত্যাদি সব পাইকারী বিক্রি করে। তুমুল বেচাকেনা হয়। দুই ভাই ব্যবসা পরিচালনা করে সাত জন কর্মচারী নিয়ে। এই দুই ভাই হুজুর এবং সৎ ব্যবসায়ী। খাটি ধার্মিক বলতে যা বুঝায়, দুই ভাই সেটাই। কোরআন হাদিসের বাইরে দুই ভাই যায় না। ঘটনা চক্রে এই দুই ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় হয়। দুই ভাইয়ের সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ, দেখা সাক্ষাৎ অব্যহত আছে। সাধারণ মানুষ থেকে দুই ভাই সম্পূর্ন আলাদা। তাদের জীবনযাপন এবং ব্যবসার ধরন আলাদা। ব্যবসা মানে যে লোক ঠকানো নয়, এই দুই ভাইকে দেখলে স্পষ্ট বুঝা যায়। দুই ভাই যখন দোকানে নতুন কর্মচারী রাখে- তাদের জিজ্ঞেস করা হয় না, কাজ পারবে কিনা? জিজ্ঞেস করা হয়- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই পড়তে হবে। নামাজ না পড়লে এই দোকানে কর্ম মিলবে না।
এই দুই ভাই, দুই বোনকে বিয়ে করে।
আত্মীয়র মধ্যেই বিয়ে। অল্প বয়সে দুই বোনের বিয়ে হয়। দুই বোনও ধার্মিক। কঠিন ধার্মিক। এই দুই বোনকে আমি কখনও দেখিনি। এরা বাইরের মানুষের সামনে আসে না। দুই বোন সারাদিন রান্না নিয়েই থাকে। কারণ তাদের তিন বেলা রান্না করতে হয়। দুই ভাই ছাড়াও দোকানের সাত জন কর্মচারীর জন্য। প্রতিদিন মোট সতের জন মানুষের রান্না। দুই বোনের বয়স সতের- আঠারো। এরা স্বামীর হুকুম অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। কোরআন হাদিসে স্বামীর হুকুম মানতে বলা হয়েছে। না মানলে মাইর (প্রহার)। ধর্মের বাইরে যাওয়া যায় না। আমি একদিন দুই ভাইকে বললাম, বাসায় একজন বুয়া রেখে দিন। এত গুলো মানুষের রান্না! দুজন মানুষের উপর চাপ পড়ে যায় নিশ্চয়ই। দুই ভাই আমার কথা শুনে বিরক্ত। মহা বিরক্ত। দুই ভাইয়ের বাসায় আমাকে প্রায়ই যেতে হয়। বাসায় কোনোদিন দুই বোন আমার সামনে আসে নাই। পর্দার আড়াল থেকে নীচু স্বরে কথা কয়।
দুই ভাইয়ের দোকানে যারা কাজ করে, তারা সুখে আছে।
প্রায়ই ছেলে গুলোকে দেখি বস্তায় হেলান দিয়ে কাজু, পেস্তা বা কিসমিস খাচ্ছে। তাদের থাকা খাওয়ার চিন্তা নাই। তিন বেলাই মাহাজনের (দুই ভাই) বাসায় গিয়ে খেয়ে আসে। মাহাজন তাদের থাকার ব্যবস্থাও করে দিয়েছে। মাস শেষে সেলারি যেটা পায় সেটা কর্মচারীদের পুরোটাই থেকে যায়। কোনো কর্মচারী ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গেলে- দুই ভাই তাদের লুঙ্গি, গামছা, জামা সব কিনে দেন। সাথে আসা যাওয়ার যাতায়াত ভাড়াও দিয়ে দেন। কর্মচারীরা এই দোকানে সুখে আছে। যাইহোক, দুই ভাইয়ের দোকানে বেচাকেনা ভালো। সৎ ব্যবসায়ীদের কাস্টমারের অভাব হয় না। ধর্মীয় কারণে দুই ভাই ব্যাংকে টাকা রাখে না। হাদিসে আছে সুদ হারাম। অথচ লাখ লাখ মানুষ সুদের ব্যবসা করে টিকে আছে, বেঁচে আছে।
একদিন বাজারে গিয়েছি দুই ভাইয়ের সাথেও দেখা করতে।
তারা আমাকে ধরে জোর করে তাদের বাসায় নিয়ে গেলেন। দুই ভাই বললেন, আজ একসাথে খানা খাবো। আমার মানা তারা শুনবেই না। গেলাম তাদের বাসায়। ঘরে দেয়ালে কোনো ছবি নেই, পশু পাখির কোনো শো-পিছ নেই। খেতে বসলাম ফ্লোরে। এদের খাবার টেবিল নেই। এটাও হয়তো ধর্মীয় কোনো নিয়ম। দুই বোন অনেক কিছু রান্না করেছে। আমি কিছুই খেতে পারলাম না। কোনো রান্নাই স্বাদ হয়নি। কিন্তু দুই ভাই খুব মজা করে খেলো। বাজার করে বড় ভাই। একেক দিন একেক খাবার। আজ রান্না হয়েছে গরুর মাংস। সাত কেজি গরুর মাংস। বললাম, এত মাংস কেন? বড় ভাই বলছেন- সতের জন মানুষ খাবে। সাত কেজিও কম পরে যাবে। বড় ভাই যখন ইলিশ মাছ কেনেন একসাথে এক ডজন ইলিশ মাছ কিনেন। বড় ইলিশ। উনি অন্যের ইচ্ছায় বাজার করেন না। তার যেটা ভালো লাগবে সেটাই বাজার করা হবে। কারো কোনো কথা শোনা হবে না। তার পছন্দেই খেতে হবে।
দুই ভাইয়ের বাবার অনেক জমিজমা ছিলো।
বাবা সেই জমি বিক্রি করে সুখ বিলাসিতা করে গেছেন। শেষ জীবনে মদের পেছনে সব টাকা খরচ করে গেছেন। দুই ভাই সাবালক হয়ে দেখেন তারা পথের ফকির। কোনো জমি নেই। টাকা নেই। বাবা সব বিক্রি করে গেছেন। রেখে গেছেন পাঁচ কন্যা সন্তান ও দুই পুত্র। এই দুই পুত্র ব্যবসা করে তাদের অবস্থার পরিবর্তন করেছে আল্লাহর রহমতে।। নতুন করে জমি কিনেছেন। সম্প্রতি ছোট ভাই ঢাকায় একটা ফ্লাট কিনতে চাইছেন, কিন্তু বড় ভাই শহরে কিছু করতে পছন্দ করে না। যা করার নিজ গ্রামে করতে হবে। বড় ভাইয়ের কথা ছোট ভাই ফেলতে পারে না। ঢাকায় ফ্লাটের বদলে গ্রামে বাজারে দোকান নেওয়া হলো। দুই ভাই সব সময় বলেন, আল্লাহর পথে আছি বলেই- ভালো আছি। পথের ফকির থেকে এখন সুন্দর ভাবে খেয়েপরে বেঁচে আছি। ভালো আছি। যতদিন বেঁচে থাকবো, কোরআন হাদিসের বাইরে যাবো না। নো নেভার।
২৭ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: এটা নিছক গল্প নয়।
২|
২৬ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:০৮
কলাবাগান১ বলেছেন: রাজাকার এর দলেরা এখন ১৮ মাস পরে এসে ৮০০ ভরি স্বর্ন নিয়ে মাতম লাগায়াছে..... ৮০০ ভরি তো কম দেখায়াছে..এখন যদি বলে ৮০০০ ভরি পাওয়া গিয়েছে, তাও রাজাকার এর দল বিশ্বাস করবে বলবে যে কম বুদ্ধির রাজাকার গনতে ভুল করেছে। কোনটা উপহার আর কোনটা দূর্নিতীর টাকায় সেটার কোন ফয়সালা না করেই ঢালাও ভাবে কথা বলে যাচ্ছে....অপেক্ষা করি উনি বা উনার পরিবার থেকে কি ব্যাখা আসে.....
৫-৬ বছর আগের হিসাবেও ১০০ ভরি ১ কোটি টাকা, তো ৮ কোটি টাকার স্বর্ন নিয়ে এত মাতম???? এখনকার জামাতি জুলাই যোদ্ধা আর উপদেস্টা দের সেক্রেটারী দের কাছে ১০০ কোটঈ কোন টাকাই না
যখন খালেদা জিয়ার বেডরুম থেকে উদ্ধার হয় নানান কিসিমের জিনিষ তখন রেন্টুর বইয়ের এক্জাম্পল টানে না ২৫ এর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা
৩|
২৬ শে নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
হুজরামি আমার অপছন্দ।
৪|
২৬ শে নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পড়লাম ।
৫|
২৭ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫০
বাকপ্রবাস বলেছেন: ধর্ম + অন্ধ = গল্প.............
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৪
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: গল্প ভালো হয়েছে।