নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় কন্যা আমার- ৮৭

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৭



প্রিয় কন্যা আমার-
বিরাট দিকদারির মধ্যে পড়ে গেলাম। হঠাত আমার ডায়বেটিস দেখা দিয়েছে। তুমি শুনলে অবাক হবে- অলরেডি আমার পায়ে একটা ঘা হয়েছে। সেই 'ঘা' ভালো হচ্ছে না। সুগার টেষ্ট করি, আর অবাক হই। খালি পেটে প্রায় ৯/১০ এবং ভরা পেটে ১২/১৩। আমার বাবারও ডায়বেটিস ছিলো। গত তিন মাস ধরেই আমি বুঝতে পারছিলাম, আমার শরীরে কোনো একটা সমস্যা হচ্ছে। সাধারনত অসুখ বিসুখ আমার হয় না। এবার ডায়বেটিকস আমাকে বেশ কাহিল করে দিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা পায়ে ঘা হয়েছে, সেটা শুকাচ্ছে না। আমি চিনি খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। চিনি ছাড়া চা খাই। ভাত অল্প খাই। রুটি আগে তিনটা খেতাম, এখন একটা খাই। ফাজ্জা দেখো অবস্থা, আমার প্রিয় খাবার হচ্ছে ভাত। ধবধবে সাদা ভাত। প্লেট ভরতি ভাত! সেই ভাত এখন আমি অল্প খাই। যাইহোক, ব্যাপার না। কথায় বলে, কপালের লিখন না যায় খন্ডন।

ফারাজা তাবাসসুম খান-
এদিকে তোমার মায়ের অবস্থা ভালো না। তোমার মায়ের পায়ের উপর পাটা পরে গেছে। একটা শিল পাটার ওজন তো কম না। অনেক ওজন। তোমার মা রান্না করছিলো। হঠাত পাটা তোমার মায়ের পায়ের উপর পড়ে যায়। পা অনেক ফুলে গেছে। এখন তোমার মা ঠিক করে হাঁটতে পারছে না। তোমার মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম। এক্স-রে করানো হলো। পায়ের আঙ্গুলের হাড়ে সমস্যা হয়েছে। ব্যান্ডেজ করতে হবে। পায়ের আঙ্গুল ঠিক করতে কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে। এখন চিন্তা করে দেখো অবস্থা- তোমার মা যদি তিন মাস শুয়ে থাকে- তাহলে ঘর সংসার কে দেখবে? তোমাকে স্কুলে কে নিয়ে যাবে? বছরের শেষ প্রান্তে এসে বিরাট সমস্যায় পড়ে গেলাম। সারা বছরটা ভালোই গেলো। এদিকে কিছুদিন পর তোমার জন্মদিন।

প্রিয় কন্যা আমার-
ঘটনাটা শোনো- হাসপাতালে গেলাম। বড় হাসপাতাল। ডাক্তারের সিরিয়াল দিয়ে বসে আছি। ডাক্তার আর আসেন না। জিজ্ঞেস করলাম- ডাক্তার কখন আসিবে? বলে, স্যার এখনই চলে আসবেন। আমি সুরভিকে রেখে বাইরে চলে এলাম। সাথে করে তোমাকেও নিয়ে এলাম। কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটি করে আবার হাসপাতালে গেলাম। ভাবলাম, আমারও ডাক্তার দেখানো উচিত। ডায়বেটিস হুহু করে বেড়ে যাচ্ছে। সিরিয়াল দিয়ে বসে আছি। ডাক্তার আসেন না। অথচ ডাক্তারের আসার কথা আরো এক ঘন্টা আগে। এদিকে সুরভির ডাক্তার দেখানো শেষ। সে গেছে এক্স-রে করতে। ডাক্তার শুধু এক্স-রে দেয় নাই, সাথে আরো অনেক গুলো টেষ্ট দিয়েছেন, থাইরয়েড এবং সুগার। সব মিলিয়ে টেষ্ট পাঁচ টা। পাচ হাজার টাকার মতো। ফাজ্জা এই হলো অবস্থা। আমি ডাক্তার না দেখিয়েই ফিরে গেলাম। তুমি বললে বাবা রেস্টুরেন্টে খাব। নিয়ে গেলাম তোমাকে রেস্টুরেন্টে।

ফারাজা তাবাসসুম খান-
আজ কি হয়েছে শোনো- তোমার দিদা বাইরে গিয়েছিলো। সে মাথা ঘুরে রাস্তায় পড়ে গেছে। হাত পা আর মুখে আঘাত পেয়েছে। বাসায় কেউ নেই। যদিও আজ ১৬ই ডিসেম্বর সবার'ই ছুটি। সবাই সবার মতো করে ছুটি কাটাচ্ছে। যেমন তুমি আর তোমার মা গেছো তোমার নানা বাড়ি। ডিসেম্বর মাস আসলে ঘুরে বেড়ানোর মাস। ফাজ্জা, আমার পাহাড় আর সমুদ্র ভালো লাগে। অনেকদিন হয়ে গেলো পাহাড় আর সমুদ্রে যাই না। এজন্য হয়তো মন মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। আমি একা গেলে তো আজ রাতের বাসেই উঠে পড়তে পারি। কিন্তু একা যাবো না। তোমাদেরও সাথে নিয়ে যেতে হবে। তোমার মায়ের অদ্ভুত ব্যাপার কি জানো? দেশে বা দেশের বাইরে গেলে, তোমার মা আমাকে এক মিনিটের জন্য চোখের আড়াল করে না। এমন করে কেন? আমি কি তাকে রেখে পালিয়ে যাবো?

প্রিয় কন্যা আমার-
চলছে ডিসেম্বর মাস। বিজয়ের মাস। আজ ১৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো। টানা ৯ মাস যুদ্ধ হয়েছে। সেই যুদ্ধে আমরা জয়ী হয়েছি। তবে এই নয় মাসে আমাদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ত্রিশ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। মেয়েদের তুলে নিয়ে গেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিস্ট ধরে বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করেছে। ওরা চেয়েছিলো বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দিতে। কিন্তু ওরা পারেনি। পাকিস্তানীদের সাহায্য করেছে, আমাদের দেশের কিছু কুলাঙ্গার। রাজাকারেরা। তুমি শুনলে অবাক হবে- দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫৪ বছর হয়ে গেছে, কিন্তু দেশে আজও রাজাকার মানসিকতার লোকের অভাব নেই। ৭১ এর পরাজিত শক্তি জামাত শিবির আজ (১৬ ডিসেম্বর) আমাদের পতাকা হাতে নিয়ে র‍্যালী করে। মূলত এরা মসকরা করছে জাতির সাথে। ফাজ্জা, তুমি বড় হও। লেখাপড়া করো। সব জানতে পারবে, বুঝতে পারবে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করছি ।

২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯

নজসু বলেছেন:



শুনে খারাপ লাগলো ভাই। আমি একদম নিয়ম কানুন মেনে চলতে পারছিনা। বাসায় মাঝে মাঝেই পিঠা, সেমাই, পায়েস খাওয়া পরে। চিনি ছাড়া খাওয়ার মধ্যে শুধু চা খাই। ভাত মেপে খাচ্ছিনা। হাঁটাহাঁটিও তেমন হয়না। আমারও আব্বার ডায়াবেটিস আছে। উনি আবার সব নিয়ম কানুন মেনে চলেন। আসলে আমাদের নিয়ম কানুন মেনে চলা উচিত। আপনি ডাক্তার না দেখিয়ে ভুল কাজ করলেন। কাল পরুশুই দেখিয়ে নেবেন আশা করি। ভাবীর জন্য দোয়া রইলো। উনি দ্রুত সেরে উঠবেন ইনশায়াল্লাহ। কন্যার জন্য অনেক দোয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.