নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এফ আই রাজীব

এফ আই রাজীব › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ যেন ভালোবাসার অনন্য আকুতি "ভালো থাকুক ঢাকা"

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:০১



টরন্টো বাংলাদেশ থেকে ১০ ঘন্টা পেছনে। অর্থাৎ বাংলাদেশে যখন সকাল নয়টা লোকজন অফিস, স্কুল, ভালো কাজ, খারাপ কাজ.....যে যার মতো দিন শুরু করে আমরা তখন টরন্টোতে আগের দিন রাত এগারটায় থাকি। আমাদের দিন শেষ। ভালোমন্দ সব কাজ শেষ। বিনোদন শেষ......এবার ঘুম।

এর পর বাংলাদেশে ঘটনা-দূর্ঘটনা শুরু হয়। আমি তখন গভীর ঘুমে।

ঘুম থেকে উঠি সকাল সাতটায়। তারপর পড়িমরি..দৌড়-ঝাপ..স্কুল..অফিস। বেলা এগারটার দিকে হাতে কফি নিয়ে একটু সময় পাওয়া গেলো। কোন একটা বাংলা পত্রিকা বা নিউজ পোর্টাল খুলে বসি। বাংলাদেশে তখন রাত সাড়ে আটটা। সারা দিনে যতো কান্ড-কুকান্ড-সুকান্ড হয়েছে সবগুলোর আগা-পাশতলা, খোঁল-নলচে, আঁচড়ে-খামছে ছিঁবড়ে ত্যানা বানানো শেষ। আমার জন্য কিছুই অবশিষ্ট নাই।

জাফর ইকবাল সাহেবের উদাহরন বিবেচনা করি। উপরের ফর্মুলা অনুযায়ী আমি খবরটা ঘটনার ১০-১২ ঘন্টা পরে জানলাম। পত্রিকা, পোর্টাল, ফেইসবুক খুললাম।
সেখানে ততক্ষনে-

• এক শ্রেনীর চুড়ান্ত কষ্ট পাওয়া শেষ।
• এক শ্রেণীর চুড়ান্ত আনন্দ পাওয়া শেষ।
• এক শ্রেনীর কষ্ট আর আনন্দের নানান কম্বিনেশনে নানান দ্রবনে দ্রবিভুত হওয়া শেষ।
• এক শ্রেনীর বাংলাদেশের পরাজয় দেখা শেষ।
• এক শ্রেনীর ‘মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েনি’ বলা শেষ।
• ছাত্রলীগ জড়িত না বলা শেষ।
• ছাত্রলীগ নামধারীরা জড়িত বলা শেষ।
• নানান ধরনের ষড়যন্ত্র আর আপোষ আবিস্কার করা শেষ।
• এমনকি....যাদের যাদের নিরব থাকার কথা তাদের নিরব থাকাও শেষ।

জ্ঞানীজন ঠিকই বলেন: ‘Time and tide wait for none.’

মধ্যবিত্ত ছা-পোষা বাংগালী হিসাবে, দিন-রাত আপোষ করা বাংগালী হিসাবে, (অনেকের ভাষায়) বিদেশে পালিয়ে বাঁচা বাংগালী হিসাবে, কোনো কিছুতেই বলার মতো কিছু করতে না পারা বাংগালী হিসাবে, কোনোদিন জলে না নেমেও নিজেকে ওস্তাদ সাতারু ভাবা বাংগালী হিসাবে, পৃথিবীর যে কারো যে কোনো কাজের সমালোচনা করার যোগ্যতা সম্পন্ন বাংগালী হিসাবে....…
...............নিরাপদ দুরত্ব থেকে একটু যে মনের সুখে ফেইসবুকে এর তার ভারচুয়াল চামড়া তুলবো তাও আমার ভাগ্যে নেই।

এই অযোগ্য বাংগালী জীবন লইয়া আমি কি করিবো! (ফারুকী ষ্টাইল)

ঢাকা শহর বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এ বিষযেও সবার সব কথা বলা শেষ। যাই বলতে চাই তাই দেখি “উত্তর পূর্বেই দেওয়া হইয়াছে’ ক্যাটেগরীতে পড়ে যাচ্ছে।

দেশে ভাই-বোন-বন্ধু-স্বজনরা আছেন। তাদের জন্য খারাপ লাগছে। কিছু বলতে ইচ্ছে করছে।

কিছু ব্যক্তি খুব আগ্রহ নিয়ে টরন্টো শহর যে বছর দুয়েক আগে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গিয়েছিলো তার ছবি দিয়ে সহানুভুতি জানাচ্ছেন।

২০১৩ সালের সেই বৃষ্টিতে আমার চুড়ান্ত ভোগান্তির ছবি আমি ফেইসবুকে পোষ্ট করেছিলাম। অফিস থেকে আমার বাসা মাত্র ৩০ মিনিটের পথ সেই দিন ৫ ঘন্টায় ভিজে ভিজে পায়ে হেঁটে, বাসে চড়ে..নানান ভাবে এসেছিলাম।

টরন্টো শহরের বাড়ী-গাড়ী সাধারনত: ইন্সুরেন্স করা থাকে। তাই সেই বৃষ্টি/বন্যার পর ইন্সুরেন্স কোম্পানীগুলোকে প্রায় ১০০ কোটি ডলার বা ৬ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা তাদের ক্লায়েন্টদের ক্ষতিপূরন দিতে হয়েছিলো। টরন্টো সিটি কর্পোরেশন দশ বছরে বন্যার পানি ও পয়নিষ্কাসন খাতে ৩২০ কোটি ডলার খরচ করছে। এর অর্ধেকই ব্যয় করা হচ্ছে ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক উন্নত করার জন্য।

টরন্টোর বন্যার পাশাপাশি এই খবরগুলোও বলা দরকার।

দেশে চেতনায় উদ্বুদ্ধ সরকার বাহাদূর আছেন (এই প্রথম আবিষ্কার করলাম আমি বাহাদূর এর স্ত্রী লিঙ্গ জানি না..... একবার ‘বাহাদূরী’ লিখলাম...দেখি...এটার অন্য মানে হয়ে যাচ্ছে....ভয়ে বাদ দিলাম...), টাকা কে তেজপাতা মনে করা মালামাল সাহেব আছেন, ড্রয়িংরুমে সাজিয়ে রাখার মতো স্মার্ট আর অনবদ্য কথা বলা মেয়র সাহেব আছেন। তারা প্রত্যেকেই অসাধারন! নিশ্চয়ই আমাদের চেয়ে ভালো বুঝবেন এখন কি করা উচিৎ হবে।

আমার মোটা বুদ্ধিতে আমি শুধু এটুকুই চাইতে পারি: আমার স্বজনরা ভালো থাকুক। ঢাকা ভালো থাকুক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.