নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখক নই আমি। কোন চলচ্চিত্র দেখা মাত্র মনের কথা গুলি লিখে ফেলি আর কি।

রাজিন

আমি অসাধারণ মায়ায় আবৃত সাধারণ একজন মানুষ

রাজিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজিন রিভিউ- Tanhaji

২৩ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:২৭


https://www.facebook.com/rajinreview/
মুক্তি – ২০২০
অভিনয় – অজয় দেবগান, সাইফ আলি খান, শরদ কেলকার।
নির্দেশনা – ওম রাউত

ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস বেশ রোমাঞ্চকর। সেকারণে বলিউডে বেশ ভালো কিছু ইতিহাসের মুভি আছে। “বাজিরাও মাস্তানি” নামক মুভিটি আসার পর সবার মারাঠা সম্রাজ্য নিয়ে মুভি করার কথা মাথায় আসে। যদিও মারাঠা সম্রাজ্য ভারতের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, স্কুলের বইগুলিতে তেমন কোন তথ্য পাইনি। সেকারণে অজয় দেবগানের “Tanhaji” মুভিটি নিয়ে বেশ অপেক্ষায় ছিলাম। সাথে আবার সাইফ আলি খান, কাজল, এবং শরদ কেলকার এর মত তারকায় ভরপুর থাকায় ভেবেছিলাম এই মুভিতো খারাপ হতেই পারে না। ভাইরে ভাই, যে এক খান ফালতু মুভি বানাইসে যে মারাঠারাও লজ্জায় ইতিহাসের বইয়ের পাতা খাওয়া শুরু করবে।

কাহিনী জানা যাক। তখন ভারতে আওরঙ্গজেবের শাসন। এদিকে মারাঠা সম্রাজ্য বিস্তারে ব্যস্ত শীবাজি মহারাজ (শরদ কেলকার)। কিন্তু কোনঠানা নামক একটি দুর্গটি দখলে থাকলে ভালো হতো। ডাক পড়ে বিরাট যোদ্ধা সুবেদার তানাজি (অজয় দেবগান) এর। এদিকে তানাজির ৮ বছরের ছেলের বিয়ে। বিয়ের কাজ করবো নাকি যুদ্ধে যাবো? ওদিকে কেল্লা পাহাড়া দেবার দায়িত্ব পড়েছে উদয়ভান (সাইফ আলি খান) এর উপর। উদয়ভান লোকটির পোশাক আরব দেশের। নিজেকে রাজস্থানী দাবি করে। কথা মাঝে মাঝে উর্দুতে বলে আবার রাজস্থানীতেও বলে। এদিকে সে মুঘলদের পক্ষে। এই চরিত্র যে কোন ক্ষেতের গাঞ্জা খাইয়া লিখসে আল্লাহ মালুম।

যাই হোক মুঘলদের কামানের সাইজ আবার অনেক লম্বা। নাম রাখসে “নাগিন”!! মুঘল সম্রাট পুরো দরবারকে তার কামানের সাইজ দেখায়। সাইফও পারলে সেই কামানে চুম্মা দেয়। যাই হোক সেই কামান (গোলাবারুদ ওয়ালা কামান, অন্য কিছু মনে কইরেন না) নিয়ে উদয়ভান কোনঠানা পৌছায়। যাওয়ার পথে নির্দেশক একটা ডার্ক নাইটের নকল দৃশ্য ঢুকায় দেয়।

তানাজির খুব শখ নাগিন নামক কামানটি দেখার। পৌছে যায় সে কেল্লার ভিতরে। হুদা কামে তো ঢুকা যাবে না। নাচ দেখাইতে হবে। অজয় দেবগান তো আর ক্যাটরিনা কাইফ না যে শিলা কি জাওয়ানি দেখাবে। কী আর করা। শুরু হইলো “শংকরা রে শংকরা” নামক এক নাচের দৃশ্য। “নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা” শুনেছি কিন্তু “নাচতে না জানলে গায়ে চুলকানি” শুনি নাই। এখনই গলা চুলকায়, আবার হাটু চুলকায়। এত খারাপ নাচ দেখার পর সাইফ আটক করে তানাজিকে। সিনেমা আগানোর খাতিরে তানাজি ঔখান থেকে পালায়।। কিন্তু ওস্তাদের মাইর দেওয়ার জন্য আবার কেল্লা দখল করার চেষ্টা করে।

মুভিটি কি সাধারন মুভি না বলে কার্টুন বলা উচিত। পুরা মুভিটাই গ্রাফিক্স দিয়ে তৈরী। অজয় দেবগন একটি দৃশ্য খুবই অদ্ভুতভাবে ঘোড়া চালাচ্ছে। ঘটনাটা কী? পরে দেখলাম ঘোড়া গ্রাফিক্সের। পরে দেখি কিছু মানুষও গ্রাফিক্স দিয়ে তৈরি। আমিও কী নিজে আসল? নাকি গ্রাফিক্সের, যে এই ফালতু মুভি দেখছি?

মুভিটির নির্দেশনা, চিত্রনাট্য নিম্নমানের হলেও সবচেয়ে খারাপ হলো সংলাপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন গুলিতে যেভাবে ডাল তৈরি করে সেভাবেই এই সংলাপগুলি লেখা হয়েছে। মারাঠা, উর্দু, হিন্দী, সিলোটি, নোয়াখাইল্লা ইত্যাদির সংমিশ্রণগুলি খুব খারাপভাবে চোখে পড়ে।

একশান গুলাও খুব একটা যুইতের না। শেষের দিকে সাইফ পুরা টাইম তলোয়ারের ধারের দিকে হাত দিয়ে হ্যান্ডেল দিয়া সবাইরে পিটাইতেছিল। কী আর কইতাম! ব্যাচারা তলোয়ারে ধার নাই। অবশ্য হ্যান্ডেলে করোনা ভাইরাসও থাকতে পারে।

খুবই হতাশ হয়েছি অজয় দেবগান ও সাইফের অভিনয় দেখে। অজয় দেবগানের বয়সটা খুব চোখে পড়ছিল। মারামারি দৃশ্যগুলিতে নড়তেই পারছিলো না। এছাড়া অভিনয় বেশ খারাপ করেছেন। রণভির সিং এর খিলজির চরিত্রের নকল করা যদি সাইফের দায়িত্ব থেকে থাকে তাহলে হয়তো ভালোই করেছেন। তবে সিনিয়র অভিনেতা হিসেবে সাইফের কাছ থেকে এরকম লজ্জাহীন নকল আশা করি নাই। শেষের দিকে খালিবালি গানের একটা নকলের চেষ্টায় সাইফকে পুরা হাস্যকর লাগছিল। কাজলের কোন রোলই নাই। সেকারণে ভালো খারাপ বলার দরকারও নাই্।

যে একজন শুধুমাত্র ভালো অভিনয় করেছেন সে হলেন শীবাজি চরিত্রে শরদ কেলকার। বাহুবালির হিন্দী কন্ঠের এই গুণবান শিল্পীটিকে বলিউড কখনই পাত্তা দিলো না। খুবই দুঃখজনক। এই মুভিতে যদি ভালো কিছু থাকে সেটা হলো শীবাজির চরিত্রটি। খুবই অবাক করা বিষয় হচ্ছে যে মারাঠা ইতিহাসেও শীবাজি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মুভি করা হলো একটি সুবেদার নিয়ে।

অনেকে মনে করতে পারেন হয়তো মুভিটিতে হয়তো মুসলমানদের ছোট করে মারাঠাদের মহান দেখানো হয়েছে বলে খারাপ লেগেছে। কিন্তু ব্যাপারটি সেটা নয়। মারাঠাদের নিয়ে এরকম বস্তাপঁচা মুভি করলে তাদেরই অপমান।

খুবই অবাক করা বিষয় হলো যে এই মুভি সুপার হিট হয়েছে। এদিকে পানিপাত, ছাপাক সব ফ্লপ। সবই কেয়ামত (পড়ুন করোনাভাইরাস মহামারি) এর লক্ষণ।

কারো সময় ও মাথার চুল দুটিই নষ্ট করার ইচ্ছা থাকলে দেখতে পারেন। কারো ভালো লাগলে তার কাছে মাফ চাই এবং দোয়াও চাই। এক কথায় ফালতু।

রেটিং – ০.৫ / ৫.০

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: ইউটিউবে এলে মুভিটা দেখব।

২| ২৩ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৩১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: Ok

৩| ২৩ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:২৫

রাশিয়া বলেছেন: আমি ভেবেছিলাম যে অন্তত একটা ব্লগ পড়ব যেখানে করোনা শব্দটি নেই। হতাশ হলাম।

৪| ২৩ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:১৪

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: সিনেমাটি তে ইতিহাস বিকৃতি করছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.