নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ কি ভারতের অঙ্গরাজ্য হওয়ার দ্বারপ্রান্তে

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০

‘‘১৯৭১ সালে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যে যুদ্ধ হয়েছিল তাতে পাকিস্তান ভারতের কাছে হেরে যায় এবং পাকিস্তানের ৯৩ হাজার সৈন্য ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে । যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়” না পাঠক, এটা আমার কথা নয় । সাম্প্রতিক সময়ে বলিউড থেকে মুক্তি পাওয়া ‘যশদেব সিং প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত গুন্ডে ছবিতে এমন করেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে । শুধুমাত্র উপমহাদেশের মধ্যেই নয় বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী বলিউডের সেন্সর বোর্ডও গুন্ডে ছবিটিকে মুক্তি দেয়ার আগে ইতিহাস বিকৃতির ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে ছবিটিকে মুক্তি দিয়েছ । অনেকেই ধারণা করছেন, আগামী পঞ্চাশ বছর বা তার চেয়েও কম সময়ের মধ্যে হুন্ডে ছবির ইতিহাসই এদেশের শিক্ষার্থীদের পাঠ করতে হবে । অন্তত বাংলাদেশে সরকার বদলের সাথে স্বাধীনতার ইতিহাস যেভাবে বদলায় তাতে ভারত আমাদের অঙ্গরাজ্য বানাতে চাইলে আমরা তেমন কোন প্রতিবাদ করব বা করতে পারব সেটা আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় না । হুন্ডে ছবির পরিচালক বা স্ক্রিপ্ট লেখকের দোষ দিয়ে লাভ নাই বরং দোষটা আমাদের কপালের । নইলে বিশ্বের অন্যসব দেশ রেখে আমরা ভারতের প্রতিবেশী হতে যাব কেন ?



স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠার পেছনে ভারতের ভূমিকা অনেক তবে সেটা হুন্ডে ছবির কাহীনির মত অতটা গভীর নয় । হুন্ডে ছবির পরিচালক ইতিহাস বিকৃতির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন কিন্তু ছবির ঐ অংশটা বাদ দেয়ার কোন কথা বলেন নি । ক্ষমা মহত্বের লক্ষণ । যিনি ক্ষমা করতে জানেন তিনিই মহৎ । আমাদের ভূলে গেলে চলবে না, কতটুকু অপরাধ করলে তার জন্য ক্ষমা চাওয়া যায় বা করা যায় । বর্তমান সময়ে সমাজে সবচেয়ে প্রচলিত শব্দ `sorry’ । যত্রতত্র এই শব্দটির ব্যবহার দেখে আশ্চার‌্য না হয়ে উপায় নাই । যে যতবড় অপরাধ করুক না কেন সবাই যেন `sorry’ বলে মাফ পেতে চায় । হুন্ডে ছবির পরিচালকও বোধ হয় সে পথেই হাটছেন । এ যেন স্ত্রী স্বামীর গালে কষে চড় মেরে `sorry’ বলার অবস্থা । দিনের পরিক্রমায় হয়ত ইতিহাস বিকৃতির কালিমা বাংলাদেশীদের মন থেকে চিরতরে মুছে যাবে কিন্তু ভারতের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা ইতিহাস বিকৃতির সে সূচনা করেছেন সে ধারা রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে প্রবেশ করতে কতক্ষণ ? কোন জাতিকে পরিবর্তন করার জন্য সবার আগে পরিবর্তন করতে হয় তার সংস্কৃতিকে । ভারত সেটাও খুব কৌশলে বাংলাদেশে শুরু করেছে । ভারতে পারিবারিক কাঠামো অনেক আগেই ভেঙ্গে গেছে এখন সে আগ্রাসন চালানে শুরু হয়েছে বাংলাদেশে । এর পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে স্টার জলসাসহ বেশ কয়েকটি চ্যানেল । ভারতীয় সংস্কৃতির এমন কোন নোংরামী নাই যা দিনের ২৪ঘন্টা জুড়েই এদেশে ঢোকানো হচ্ছে না । সমাজে এর প্রতিফলনও বেশ ভালভাবে শুরু হয়েছে । বীজ রোপণ করলে তাতে অঙ্কুর তো গঁজাবেই, আর একটু যত্ন করলে বিশাল বৃক্ষ হতে দোষ কোথায় ?



এইতো কয়েকবছর আগে স্বতন্ত্র, স্বাধীন ও সার্বভৌম শক্তিময় একটি রাষ্ট্র ছিল নেপাল । কিন্তু আজ নেপালের ইতিহাস বরই করুন । মেরুদন্ডহীন একটি রাষ্ট্র হিসাবে নেপাল বিশ্বদরবারে আজ বেশ পরিচিত । বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভারতের শাসকগোষ্ঠীর যতটুকু কর্তৃত্ব আছে তার চেয়ে ঢের বেশি কর্তৃত্ব নেপালে । নেপালের সমাজনীতি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রনীতি পর‌্যন্ত সবকিছুই ভারতীয় শাসকগোষ্ঠীর ইশারায় চলে । একসময়ের অত্যন্ত শক্তিশালী সিকিম আজ ভারতের অন্যতম অঙ্গরাজ্য । অথচ এই সিকিমমের উপর বৃটিশরাও কর্তৃত্ব করতে ব্যর্থ হয়েছিল । একজন লেন্দুপ দর্জির বিশ্বাস ঘাতকতায় সিকিমের করুণ পরিনতি । বাংলাদেশে লেন্দুপ দর্জিদের অভাব নাই । অর্থনৈতিকভাবে বাঙালী যতদিন গরীব থাকবে ততদিনই সেটা বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশীদের জন্য মঙ্গল । অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হলেই রাক্ষসগোষ্ঠী আর বসে থাকবে না । এখন যে অবস্থায় বাংলাদেশ চলছে সেটা ভারতের জন্য কম কীসে ? না চাইতেই যদি জীবন-যৌবন সব পাওয়া যায় তবে আর চেয়ে লাভ কি ? বিদ্যুত পাচ্ছে, ট্রানজিট পাচ্ছে, গ্যাস পাচ্ছে, সমুদ্রসীমা পাচ্ছে আর কি চাই ? যখন যা লাগবে সেটাই পাওয়া যাবে । এমনভাবে জাল বুনিয়েছে কোন গতি নাই । বাংলাদেশের মঙ্গলের জন্য গোটা বিশ্ব একদিকে আর ভারত অন্যদিকে জয়টা ভারতেরই হচ্ছে ? পাকিস্তানের সাথে যুক্ত থাকাকালীন সময়ে পাকিস্তান যতটা ক্ষতি করতে পারে নি তার চেয়ে অনেক বেশি আমাদের কথিত বন্ধু ভারত নির্বিগ্নে করে চলছে । নীরব দর্শক হয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার নাই । বাংলাদেশের পররাষ্ট্র, স্বররাষ্ট্রসহ সকল বিষয়ের সিদ্ধান্ত ভারত দিয়ে যাচ্ছে আর আমরা সেমতেই চলছি । বড় দাদাদের কথা না রাখলে বেয়াদবী হবে না ? আমরা কি অত বেয়াদব ! বিশ্বের অন্যকোন দেশ বাংলাদেশের ব্যাপারে কোন কথা বললে তাতে কত ধরণের প্রতিবাদ অথচ বর্তমান সরকার ভারতের ব্যাপারে একেবারে নির্বিকার । দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে ভারতের এত জঘণ্য মিথ্যাচার নিয়ে দেশব্যাপী যখন প্রতিবাদের দাবানল জ্বলছে তখনও সরকারী বা বিরোধীদল একেবারে নির্বিকার । এমনকি অন্যকোন রাজনৈতিকদলও এব্যাপারে এখনও কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানায়নি । এটা আমাদের জন্য অবশ্যই হতাশার এবং দুঃখের ।



পাকিস্তান থেকে মুক্ত হয়ে কিছুদিন স্বাধীন স্বাধীন মনে হয়েছিল । কিন্তু কালের বিবর্তনে ধারণা বদলাতে শুরু করেছে । ভূত ছাড়াতে গিয়ে শয়তান ঝেঁকে ধরেছে । কতদিন এভাবে চলবে সেটা বলা মুশকিল । ভারত আমাদের গিলছেওনা আবার ওগড়াচ্ছেও না । যেভাবে আছি তার চেয়ে একেবারে গিলে ফেলা ভালো । আমরা অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভারতের গোলামী করে চলছি । এ যেন স্বেচ্ছায় বাধ্যতামূলক অবস্থা । ভারতকে আহ্বান করব, একেবারে গিলে ফেলূন । অবশ্য সেটা বাঙালীলরা সহজে মানবে না । আবার একটা যুদ্ধ হবে। হয় আমরা জয়ী হব নতুবা চিরতরের জন্য গোলামী করব । দোদ্যুল্যমান অবস্থা আর ভালো লাগে না । একটু সুযোগ চাই । আমাদের সন্তানেরাও মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় চাকরি পাক অথবা আমাদের রাজাকার হিসেবে বিচার হোক । ..... আজ থেকে সময় গুনতে শুরু করলাম । কবে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তির আওতাভূক্ত হতে পারি !



রাজু আহমেদ

[email protected]

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৪৬

বাংলার ঈগল বলেছেন: ভারতকে আহ্বান করব, একেবারে গিলে ফেলূন । অবশ্য সেটা বাঙালীলরা সহজে মানবে না । আবার একটা যুদ্ধ হবে। হয় আমরা জয়ী হব নতুবা চিরতরের জন্য গোলামী করব ।

---------------- মন্তব্যটা ভালো লেগেছে, একমত পোষণ করছি। ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.