![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অর্নব শহরে বেড়ে উঠা অস্থির নাগরিক। রাত তার খুব প্রিয়। রাত হলেই সে নিজেকে খুজে পায়, অন্যরকম নিষিদ্ধ আবেগে। এক রাতে মুঠো ফোনের কল্যানে হঠাত পরিচয় হয় শিমুল নামক একটি মেয়ের সাথে। কিন্তু অর্নব তার প্রিয় রাতে খুজে পায় নিজেকে এবার অন্য ভাবে.....................এবং শুরু হয় কথোপকথন, (এস, এম,এস এর মাধ্যমে)..................
১. শিমুল, কবিতা কেমন লাগে? কার কবিতা? নাকি ভালোবাসেন নাগরিক ব্যস্ততা?
২. যদি ব্যস্ত থাকেন, তাড়া দিতে চাই,
মুখে মুখে নয়, যেন (এস, এম, এস) পাই....
৩. শব্দে শব্দে হচ্ছে খেলা,
শব্দে শব্দে কামড়,
শব্দের মাঝে স্বপ্ন বুনি
শব্দ হচ্ছে অমর.............
৪. সখি আমি মর্তের বিষ,
করিতে চাও কি পান,
পুড়ে যাবে , মরে যাবে,
দহনে সইবে না এই প্রান......
৫. মুঠো ফোন কইতে চায় কথা,
হাতে নয় , চোখে নয় , হৃদয়ে বাজে ব্যথা...............................
দ্বিতীয় রাত……..(প্রেম বাড়ছে দিবস ও রজনী )
৬. আমি তোমার জন্য এনে দিব স্বপ্ন রাঙ্গা ফুল,
যদি হাতে রাখ, ফুটবে কাটা,
বুকে রাখ বিধবে ব্যথা, খোপায় রাখ সাজবে খোপা,
রোদন ভরা বসন্তে হবে তুমি স্বপ্নীল।
৭. কি লাগে ভালো?
উড়ে যাওয়া স্কার্ফ, নাকি অল্প নিভু আলো….
৮. এখন বড্ড দুপুর, হৃদয়ে বাজে নুপুর…..
৯. মুঠো মুখ চুপ করে,
কুট কুট করে এই মনে,
দেয় না কোন সাড়া
পদ্ম নয়, শঙ্খ নয়
হৃদয়ে লাগে তাড়া।
১০. শব্দ এখন শান্ত
মন তাই ক্লান্ত
মেঘ আছে ফাকা
তুমি আমি দূরে একা…….
তৃতীয় রাত……..( অর্নব ও শিমুলের নি:শ্বাস একই আকাশে ভাসে, তারা হাসে, তারা পরস্পর বিনিময় করে,,,তাদের নিকটতা)
১১. আমি তো সুখের ডানায়
উড়ছি আকাশে,
তোমার আকাশ বৃষ্টির ছোয়ায়
রং ধনু হাসে……
১২. মরে যাওয়ার আগে
বেচে উঠা চাই,
ভালবাসার আগে
প্রেমে পড়া চাই………….
১৩. চোখে চোখে ফুলের ছোয়া
অন্ধ হয়ে আছি,
মুঠো ফোনে কইতে কথা,
স্তব্ধ হয়ে আছি.
চতুর্থ রাত……….( গভীরে জড়িয়ে যায়, তাদের আবেগ গুলো, গুনিতক হারে)
১৪. কল ওয়েটিং
টিং টিং টিং,
রাত বিরাতে বাড়ে কথা
জলদি ফোন দিন……..
১৫. ফোনের মেয়াদ গেছে ফুরে,
তুমি কি এখন কুড়ে?
মুঠোমুখে লেগেছে তালা,
কর্পোরেটের যুগে?
১৬. ভাজ করা শরীরে,
ছুতে দাও না আমায়,
পুড়তে চাই, জ্বলতে চাই,
ভালবাসতে চাই তোমায়…….
১৭. কাম রসে এত ভয় কেন?
দীর্ঘ কালীন অজ্গতা?
সমাজ তোমাকে কি দিয়েছে?
শুধু এক টুকরো নগ্নতা…..
পন্চম রাত……………..( শিমুল বুজতে পারে, অর্নবের ভালোবাসার গন্ধ, কাম ও অস্থিরতা,,,তবে?)
১৮. রাজ কন্যা তুমি কোথায়?
কোন নগরীর আড়ালে,
নগর জুড়ে কোলাহল
রাজকুমার খুঁজে মরে………
১৯. আমি তো শুধু দিয়েছি কবিতা
পূজোর থাল ভরে,
দেবী তুমি করেছ গ্রহন
সকল চিত্ত স্বরে……….
২০. মুক্তো ঝরা বৃস্টি , নুপুর পায়ে নাচে,
বন্ধ হওয়া শব্দ গুলো, সুর তুলে হাসে………………
২১. গ্রীলে ঢাকা অন্ধকারে, হাতরে বেড়াই সুখ,
খুজে পাই, পুরানো ব্যথা ভরা নারী মুখ……
২২. বিনিদ্র নগরীর আধোঘুমো রাতে,
শিমুল নিয়ে এসেছ তুমি, তুলে দিতে হাতে,
বাতাস বলেছে, কেদোনা তুমি,
মেঘ বলেছে, যেয়ো না তুমি,
সকল স্বপ্ন যাবে ধুয়ে……………
ষষ্ঠ রাত…. ( অর্নব এর মুঠোফোন থেকে ক্রমশ উত্তাপ ছড়াচ্ছে, শিমুলের মনের কোষে, শরীরের মানচিত্রে)
২৩. তোমার শরীর আমাকে অবশ করে দেয়,
শিরশির করে উঠে, রগ কাটা হৃদয়ে
পিষে যদি মারতে চাও আমায়
আমিও শহীদ হতে চাই, তোমার দেহের মানচিত্রে
২৪. নীল আঁচল কখন খসে পড়বে,
ভাবতেই আমি ভেসে যাই, ফুলের বাগানে,
শরীরে ফুটে উঠে শীত, গ্রীষ্ম।
তোমাকে ছুঁয়ে দিলে, আমি অবশ হয়ে যাই,
উড়ে চলে যেতে চাই পাখিদের নীড়ে…………….
২৫. শরীরের কথা বললে,
নারী তুমি কাদোঁ,
আমি জ্বলি, না পাওয়ার বেদনায়,
তুমি শরীরকে ধুয়ে মুছে বেধে রাখ….
২৬. নিভু নিভু এত কথা বলো কেন,
প্র্রকাশ্য অন্ধকারে?
তৃন্জায় অত চিকার কেন?
সঙ্গমে মথিত নগ্ন দেহ নিয়ে?
৭ম রাত……………….(অর্নব আস্তে আস্তে বুঝতে পারে, শিমুলের জড়তা, সামাজিক ভয়, স্থিরতা, তাই অর্নবের দূনিবার আর্কষন ও বেড়ে যায় , প্রেমের আঙ্গিনায়)
২৭. তোমার উৎসুক চোখ,
আমাকে ভীত করে তুলে,
প্রেমময় আকাশে
ঘন বরষা ঝড়ে…..
২৮. অভিমানে ভেজানো মনে,
সবুজ পাতার জল খেলা করে,
পাহাড়ী বন্যার ঢল,
কম্পন তুলে হৃদয়ের মাঝখানে….
২৯. আকাশ আজ সিঁদুর পড়ে,
দেবী সেজেছে,
তোমার চোখে রাগের মায়া
চুমু খেয়েছে,
দেখো বৃষ্টি নেমেছে….
৩০. তোমার সাথে দেখা হলে কথা হয় না,
কথা হলে দেখা হয় না…..
৩১. আমাকে ফেরাতে পারবেনা,
অতিরিক্ত মৃত্যু ছাড়া…..
অষ্টম রাত.……….( এখন অর্নবের আবেগে নিজেই নিজের কাছে অবিরত প্রশ্ন চলছে………ক্রমশ…..)
৩২. মরে যাওয়া পদ্য,
গদ্য হতে চায়,
গদ্য গুলি শুকিয়ে,
পদ্য হয়ে যায়………..
৩৩. এক মুঠো ফোন থেকে
আরেক মুঠো ফোনে
যায় না তা বলা,
ঘটছে শুধু মনের গভীরে..
বিশাল ক্ষতের খেলা….
৩৪. খুলো মনে ধুলো উড়ে,
ঝড়া পাতার কান্না,
অমাবস্যার রাত নিকষ আধার,
তোমার হাতে প্রেম বন্যা….
৩৫. শরীরের সাথে কথা কও কি তুমি?
নাকি এও অংকিত পটভূমি?
আমি শরীর বলতে ন্যূজমান,
শরীরের সাথে অভিনয় খুজি…..
৩৬. রাতের চাঁদ ছোটাছুটি করে,
কালো মেঘের মাঝে,
আমার মন, প্রেম খোজে,
তোমার হৃদয়ের ভাজে……………
নবম রাত..……( অত:পর শিমুল, স্পষ্ট হতে চাইলো, কি চায় অর্নব? শুধুই কি শরীর ? কথোপকথনে, অর্ণব শুধু ভালোবাসার কথা বলে , কিন্তু বলে না, প্রথাগত সম্পর্কের স্থায়ীত্বতার কথা…………তাই শিমুলের মনে দ্বিধা………..আর অর্ণবের এস, এম,এস এ ফুটে উঠছে………….অনেক শব্দ, এবারে ও কি অর্নব কে কেউ বুঝবে না? হ্যা যদি কবির হৃদয় মন চায়, তবে শরীরে কি আধার? )
৩৭. আজ সকাল টা,
ঠিক আজ সকালের মতো নয়,
গত কালের মতো ও নয়,
আজ সকাল টা ঠিক তোমার ভালবাসার মতোন,
যেমনটা এটম বোমায় মারা গেছে হিরোসিমার মানুষ…………
৩৮. নাগরিক যোগাযোগ বড়ই মধুর,
নি:শব্দে স্বপ্ন বিলাস,
নিয়ন আলো যতোই কাছাকাছি থাকুক,
জলজ শব্দে তোমার আমার বসবাস,
৩৯. এক নদীতে দুই জল,
সবুজ শ্যওলা বয়ে যায়,
দূর তীরে কিশোরী তুমি,
দূরত্ব শুধু রয়ে যায়……..
৪০. নীল ডামাডোল বয়ে নিয়ে যায়,
নাগরিক ভালোবাসা,
বৃষ্টির বদ্ধতায় জমে উঠে, কিছু জলজ বিরহ,
আমি শুধু কথা চাই না,
চাই তোমার দেহের সান্নিধ্য…………..
৪১. বন্ধনে সুখ কোথায়?
অন্ধ বন্ধনে তীব্র নীল………..
নীল মেঘেদের দলে
চেয়ে দেখ আনন্দ,
তারাও তো বন্ধন হীন…………
দশম ও শেষ রাত……............
যে অর্নব প্রতি রাত ফোনে ডুবে থাকতো শিমুলের প্রতীক্ষায়,,, আজ কেন সে শিমুল কে দূরে ঠেলে দিচ্ছে, শুধুই কি মতের অমিল……..নাকি শিমুলের প্রয়োজন ফুরিয়ে এসেছে………নাকি আবার অর্ণব অন্ধকারের জগতে ফিরে যেতে চায়……সে চায় না, কোন প্রথা গত সম্পর্ক,,,,,,,,,, যেখানে শিমুল ভীষন বেমানান…………….তাই বলে কি অর্নব এর মুঠোফোনে…….এই সুর? এই ভাবেই বিদায়?
৪২. এত দিন তো একাই ছিলাম,
তুমি তো কয়েক দিনের সঙ্গী,
মেয়ে তুমি নাটক বোঝ না,
এ কেমন তোমার নতুন ভঙ্গী…….?
৪৩. সবাই কি স্তব্ধ তোমার মতোন করে,
হাতরে বেড়ায় স্থায়ী সুখ ?
গড়ে সোকেস, গড়ে দালান কোঠা ।
শিশ্ন ভিজিয়ে উ্যপাদন করে, গড়ে উঠা অসুখ?
সমগ্র পাঁচ টনের বাংলাদেশ কে
শৃঙ্খল করতে চাও কেন? সবুজ পোষাকের বিশেষ আইনে?
আমি শৃঙ্খলিত নই…….
আমি বেয়াড়া প্রেমিক, নতজানু উদ্ধত প্রেমে…
৪৪. খেলা রাম তুই খেলে যা,
নিহারিকার চোখে তাকিয়ে,
প্রেমিকার ঠোটে স্বপ্ন একে,
তুই সরে যা,
খেলা রাম তুই খেলে যা……………
৪৫. প্রতি নিয়ত কথাটার সাথে,
আমি বিশ্রী ভাবে অভ্যস্ত,
এতে আমার ক্লান্তি আসে,
ঘুম আসে না,
প্রেম আসে না,
বোধ আসে না,
আমি হয়তো বেঁচে আছি,
অনেক হাসি নিয়ে,
বুক ভরে তা সুখ আসে না!
৪৬. ফিরিয়ে দিয়েছি বলে,
কাদছো তুমি ?
কাদে নদী সাগরের কাছে,
বানভাসি মানুষের জীবন থেমে থাকে কি?
অনাহুত নিরাশার খোজে?
৪৭. চেয়ে দেখো, আকাশ কাঁদে,
কাঁদছো যেমন তুমি,
আমার চোখ অশ্রু শুন্য,
গঙ্গা তাই মরুভূমি....
৪৮. জনে জনে প্রেমে পড়া,
আমার স্বভাব,
মুগ্ধ তো হবই, স্বপ্ন তো দেখবোই,
তবে তোমার কেন সরব প্রতিবাদ?
৪৯. আমার তো ফুল নেই,
শুকিয়ে গিয়েছে, গত ফাগুনে,
আমার কাছে আছে শুধু বর্ষা,
ভিজিয়ে দিলাম তোমার চোখে...
৫০. প্রিয়, শিমুল………
তোমাকে আমি দিয়েছি ব্যথা,
দিয়েছি বৃষ্টির ঘ্রান,
এখন দিলাম শেষ কবিতার
পাঠানো শেষ লাইন…
ভালো থেকো………………………..
অত:পর, অর্ণবের ফোনের লাইনটা অফ হয়ে যায়, মিল বা অমিল, স্বপ্নীল কিংবা বাস্তবতা কিছু্ই শিমুল বুঝতে পারে না, শুধু তার চোখের সামনে ভেসে উঠে, মুঠোফোনের ছোট ছোট কবিতা, যা নিয়ে সে ভালোবাসতে শুরু করে ছিল, সরল ভাবে। কিন্তু অর্ণব, মায়া ছড়িয়ে উধাও হয়ে গেল, আততায়ীর বেশে,,, শুধু পড়ে রইলো, রাত শেষে ভোরের আলো ও ক্রন্দন রত মুঠো ফোন…………..।
(শেষ)
©somewhere in net ltd.