নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
নৃত্যসঙ্গিনী
--------------- রমিত আজাদ
আমার তখন বয়স কুড়ি, ছাত্র ছিলাম ভীনদেশে;
লেখাপড়া করার আশায় উড়াল দিলাম বৈদেশে।
নতুন দেশে গিয়ে কত নতুন বিষয় দেখি,
তরুণ চোখে সতেজ স্রোতে নবীন ধারা মাখি।
তুহীন শীতে তুষার মাখা বৃক্ষগুলো কাঁদে,
শীতের দেশে গ্রীস্মঋতু নতুন সাজে মাতে।
পত্রবিহীন গাছের শাখায় সবুজ পাতা আসে,
নবীন সাজে পাতায় পাতায় মিষ্টি সবুজ হাসে।
শীতল নীরব মানুষগুলোও সতেজ হয়ে ওঠে,
গ্রীস্ম রাঙা রবির আলোয় নতুন প্রভা ফোটে।
পিঁয়াজ খোসার মতন পড়া ড্রেসের উপর ড্রেস,
নিজের চেয়ে পোষাক ভারী, এমনতরো দেশ!
অবশেষে গরম এলে হালকা পোষাক গায়ে,
ফুরফুরা মন হল্লা যাচে, সবুজ বনের ছায়ে।
কেউ ছুটে যায় নদীর পারে, কেউ ছুটে যায় বনে,
কেউ বা হ্রদের তীরে শুয়ে, উলের কাটা বোনে।
তরুণ নয়ন দৃষ্টি হানে নও বালিকার চোখে,
বহ্নিশিখা ঝলকে ওঠে বিজলী রোমান্স সুখে!
এমন দিনে কেউবা আবার টেবিল সাজায় ভোজের,
খানাপিনার আসর হবে, নৃত্য হবে সাঁঝের।
অতিথিরা আসে সবাই ক্যাফে বারের হলে,
রঙ বেরঙের সাজে সবাই নামে খুশির ঢলে।
এমন একটি ভোজের সভায় পেয়েছিলাম নিমন্ত্রণ,
তখন আমার বয়স কুড়ি, নও জীবনের আমন্ত্রণ।
টেবিল ঘিরে বসে গেলাম, থালায় থালায় অন্ন অশন,
কোনটা রেখে কোনটা খাবো, কোনটা হবে নব্য প্রাশন?
কেউবা আবার খানার চেয়ে পিনায় বেশি উৎসাহী,
শরাব পিয়ে গুলিস্তানে মনের ডেরায় বাদশাহী!
নেশার চোখে যারেই দেখে তারেই ভাবে নূরজাহান,
সাকির পিয়াস জেগে ওঠে, নেশার ঘোরে শাজাহান!
পেটের পূজো মিটলে কিছু, উঠলো বেজে বাজনা,
এবার হবে নাচের আসর, তাল বেতালের সাজনা।
ধম ধমাধম ড্রামের বিটে দ্রুত লয়ের নৃত্য-নাচ,
নাচ জানো আর নাইবা জানো লাফিয়ে চলাই কাজ!
একটা দুটো ধমধমা গান, তারপরে হয় ধীরের লয়,
জোড়ায় জোড়ায় নাচবে এবার, আলতো হাতে জড়িয়ে তায়!
কেউ এসেছে জোড়া বেঁধে, কেউ এসেছে একজনা,
জোড় বাঁধারা চলছে নেচে, একলা খোজে অঙ্গনা।
পড়লে চোখে অঙ্গনা এক, হাত বাড়িয়ে দেয় তরুণ,
অপেক্ষাতেই থাকে তারা, ললনাদের এই ধরন।
হাত বাড়ালেই ধরে সে হাত, আলিঙ্গনে রয় আধো,
জড়িয়ে কটি আলতো হাতে নাচের তালে রয় বাঁধো।
এমন করে সেই আসরে চলছিলো নাচ খানাপিনা,
হঠাৎ করেই সবার চোখে পড়লো যে এক রূপ ললনা।
অষ্টাদশী হবে সে যে, সদ্য ফোটা কস্তুরী ফুল,
পূর্ণ শশীর রূপের ছটায়, ছাপিয়ে ওঠে নদীর দুকূল!
শ্লথ লয়ের গান বাজলেই ছুটছে সবাই শশীর কাছে,
হাত বাড়িয়ে আমন্ত্রণে ডাকছে তাকে জোড় নাচে।
মিষ্টি হেসে অষ্টাদশী সব লোকেরেই দেয় ফিরিয়ে,
ব্যর্থ হয়ে ফিরছে সবাই, এই আসরে মন হারিয়ে!
কি হলে ঐ রূপ ললনার, কেন সে আজ একরোখা?
সবার পুরুষের এক জিগীষা, ঐ ললনার মন রাখা!
আড় চোখে কেউ দেখছে তাকে মন তিয়াসা চায় তারে,
আলিঙ্গনের সুখ পেতে চায়, জড়িয়ে কোমর নাচ ঘরে।
আমার তখন বয়স কুড়ি, ছাত্র আমি ভীনদেশে;
ঐ ললনার রূপের শায়ক আমার মনেও বিঁধলো এসে!
শেতাঙ্গিনী অষ্টাদশী চাই তোমাকে আলিঙ্গনে,
এটাই হবে আমার চ্যালেঞ্জ জেদ চেপে যায় এই মনে!
রঙিন আলোর নাচের ঘরে বাজনা বাজে দৃশ্যপটে,
ধীর গতিতে গেলাম আমি অষ্টাদশীর সন্নিকটে।
হাত বাড়িয়ে আমন্ত্রণে ডাকটি দিলাম জোড় নাচে,
মুখের ভাবে আস্থা আছে, কাঁপছে তবু বুকটা যে!
পূর্ণ শশী অষ্টাদশী চাইলো আমার নয়ন পাতে,
মিষ্টি হেসে হাত বাড়ালাম, চোখ রেখে চোখ দৃষ্টিপাতে!
রূপসীও হাত বাড়ালো, রাখলো সে হাত আমার হাতে,
তার আঁখিও উঠলো নেচে, চিরল দাতে মধুর হেসে!
ঘর ভরা সব ব্যর্থ পুরুষ চাইলো এবার আমার পানে,
আমার কি আর সময় আছে, ঐ ইর্ষার জবাব দিতে?
আলিঙ্গনের সুখে তখন বিভোর আমি জলসা ঘরে,
নৃত্যসুধা পান করে যাই, শেতাঙ্গিনীর কোমর ধরে।
আমার তখন বয়স কুড়ি, তরুণ আমি ভীনদেশে;
সমর্পিত অষ্টাদশীর রূপ ভেসেছে আমায় ঘেসে।
পেলব তাহার কায়ার মায়ায় মনটা আমার ছন্নছাড়া।
যুদ্ধে জয়ী যোদ্ধা আমি, আনন্দে হই আত্মহারা!
-------------------------------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১৮ই জুন, ২০২০ সাল
রচনা সময়: রাত ০২টা ৩৫ মিনিট
Dance Partner
---------------------- Ramit Azad
(পেইন্টিং আকাশজাল থেকে নেয়া)
২| ১৮ ই জুন, ২০২০ সকাল ৭:৫৪
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
সুকান্ত ভট্টাচার্যের আঠারো বছর বয়স'র পরে আপনার কুড়ি বছর বয়সের উদ্দামতায় এক অন্য ফ্লেভার পেলাম। তারুণ্যে আর উচ্ছ্বাসে ভরপুর। কবিতায় ভালোলাগা। ++
শুভেচ্ছা নিয়েন।
৩| ১৮ ই জুন, ২০২০ সকাল ১০:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার।
৪| ১৮ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:১১
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর । দারুন রোমান্টিক ।
যৌবনের উদ্দমে যেন উঠেছে নেচে আনন্দ প্লাবন
৫| ১৮ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৩৮
শায়মা বলেছেন: হা হা তারপর সেই নৃত্যসঙ্গী কোথায় এখন ভাইয়া?
৬| ১৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৩৩
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: নৃত্য যুদ্ধে জয়ীকে শুভেচ্ছা!
৭| ১৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ৯:৪৬
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
অভিনন্দন! সত্যিই ঈর্ষণীয় জয়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জুন, ২০২০ ভোর ৪:৩০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: কবিতা পড়ে গান মনে হলো । আই এ্যাম এ ডিসকু ড্যান্সার।