![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সাধারণ একটি মানুষ।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির মধ্যে বেশ কয়েকজন অ-রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আছেন। যারা তৃণমূলে রাজনীতি করে এ পদে আসীন হননি। যাদের কোনো সংঘবন্ধ কর্মী বা অনুসারী নেই। যাদের কথা শুনে মানুষ বা কর্মীরা রাস্তায় ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। তবে তারা যদি হরতালে যার যার বাসার আশে-পাশে একটা মিছিল নিয়েও বের হন। তাহলেও কর্মীরা কিছুটা চাঙ্গা থাকতেন। তারা তা করেন না। তাহলে এই স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকে কী লাভ?
দলের সর্বোচ্চ পদে থেকে এসব শেকড় এবং মেরুদণ্ডবিহীন নেতারা দুই-ভাবেই দলের ক্ষতি করেন। বিরোধী দলে থাকতে সরকারের কারো কারো সাথে আঁতাত করে বা না করে নিজেকে সেভ সাইডে রাখার জন্য নিষ্ক্রিয় থাকেন। আর ক্ষমতায় গেলে নিজেদের আত্মীয়-স্বজন বা ঘনিষ্ঠ লোকদের পুলিশ, প্রশাসনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানোর ব্যবস্থা করেন। যারা প্রায়শই দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চলে যান। কোনো সুবিধা দিতে চান না। উল্টো আমি ওমুকের লোক, তমুকের লোক বলে দলের আসল নেতা-কর্মীদেরই দৌড়ের উপর রাখে। ফলে ওসব নেতা-কর্মীরাও অসহায় বোধ করেন। কোনো কাজ ঠিকমতো করতে পারেন না।ফলে কর্মীদের মনেবলেও ভাটা পড়ে, যা বিরোধী দলে এসে টের পাওয়া যায়।
ওসব নেতাদের কারণে আর একটা সুবিধাবাদী পেশাজীবি শ্রেণী তৈরি হয়। যারা বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে বিএনপি সেজে সুবিধা নেয়। নানা ভাবে দলের বারোটা বাজায়। আর বিরোধী দলে গেলে খুঁজেও পাওয়া যায়না।আওয়ামী লীগও হয়ে যায় কেউ কেউ। বলে যে, আমি তো বিএনপি করি না। আত্মীয় ছিল। সুবিধা নিয়েছি। ব্যাস। এটুকুই। ফলে দুর্দিনে বিএনপি এদেরও পাশে পায় না। এভাবে দল হিসেবে বহুমাত্রিকভাবে দুর্বল হচ্ছে বিএনপি।আর আওয়ামী লীগ অনেক পরীক্ষা- নিরীক্ষা করে সুবিধা দেয়। ফলে বিরোধী দলে তারা গেলেও অন্যায্যভাবে হলেও জনতার মঞ্চ হয়। আর বিএনপি’র দাবি জাতীয় দাবি হওয়া সত্ত্বেও সচিবালয়ে কেউ সাহস করে মুখ খুলছে না বা আগাচ্ছে না। কারণ তারা জানে বিএনপিতে ঢুকতে কোনো কার্যক্রম দেখানো লাগে না। চুপচাপ থেকে একটা লাইনে যোগাযোগ রাখলেই হয়। তাছাড়া যোগ্য আর নিরপেক্ষ লোকদের তো বিএনপি জায়গা নেয়ই। তাদের দল করা লাগে না। এভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিএনপি।
এবার আন্দোলন প্রসঙ্গে আসি। এখন আওয়ামী লীগ ও তাদের মিডিয়াসহ অন্যান্যরাও বলছেন, হরতাল দিয়ে নেতারা ঘরে বসে থাকেন। বিশেষ করে ঢাকায় কোনো নেতা রাস্তায় নামেন না। কথা সত্যি। অথচ কর্মীরা সাহস করে পুলিশের গুলির ঝুঁকি মাথায় নিয়ে মিছিল-পিকেটিং করেই যাচ্ছেন। তাহলে করণীয় কি? সহজ কথায় সরাসরি চেয়ারপার্সনকে ঢাকার সব থানার মুল দল, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিদের নিয়ে দফায় দফায় মিটিংয়ে বসতে হবে। তাদের সমস্যা বা কথা মতামত সরাসরি শুনতে হবে। এতে তারা নেত্রীর দেখা পেয়ে অনেক বেশি চাঙ্গা হয়ে যাবেন। পরের দিনই আন্দোলনের তীব্রতা বেড়ে যাবে। এসময় কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের প্রয়োজনে বাইরে রেখে ওসব থানার নেতাদের মুখে আসল চিত্রটা শুনতে হবে। সে অনুযায়ী সরাসরি তাদের নির্দেশনা দিতে হবে।
বলা হয় শেখ হাসিনা ঢাকার ছাত্রলীগের অনেক থানা সভাপতি-সেক্রেটারির নাম জানেন বা যোগাযোগের সুযোগ দেন। এটাও বিরোধী নেত্রীকে বর্তমানে করতে হবে। বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে বিএনপি কিন্তু এখনো টিকে আছে শুধুমাত্র তৃণমূল কর্মী আর নিরব সমর্থকদের কারণে। এখানে উপরের সারির নেতাদের ভূমিকা খুবই গৌণ। নেতৃত্ব টিকে আছে শুধুমাত্র চেয়ারপার্সনের একক দৃঢ়তায়। সেই সাথে দু’একজন রিজভী আহমেদরা তো আছেন ই। তাই উপরের সারিতে ধরে এনে বানানো নেতাদের দিন দিন পাত্তা কম দিতে হবে। আর মূল দলের থানার সভাপতি-সেক্রেটারিদের বলে দিতে হবে। কারা কারা নমিনেশন পেতে চাও। আমি হরতালে রাজপথের অবস্থান দেখে তা মূল্যায়ন করবো। যে থাকবে না সেই কমিটিও বদলে দেবো। দেখবেন কী টনিকের মতো কাজ করবে।কারণ এখন তারা বসে আছেন এই ভেবে যে, আমার ব্যাপারটা দেখবেন ওই ভাই। আমারটা দেখবেন ওই কাকা, আমারটা ওই খালু। সুতরাং আগামী দিনে রাস্তায় না নামলেও আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তাই এসব বন্ধ করতে, আর দলকে চাঙ্গা করতে চেয়ারপার্সনকে বিশেষ করে ঢাকার মনোয়নে নিজেই সবগুলো প্রার্থী বাছাই করতে হবে। কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। ত্যাগীদেরই মূল্যায়ন করবেন। এই ম্যাসেজ পৌঁছে গেলেই সব হিসাব-নিকাশ পরিবর্তন হয়ে যাবে। অনিচ্ছ সত্ত্বেও অনেক নেতাই চাঙ্গা হবেন। অন্তত টিভি ক্যামেরা ডেকে চেহারাটা একবার দেখানোর জন্য হলেও রাস্তায় আসা শুরু করবেন।
আর এখন সবাই গা ঢাকা দিয়ে আছেন। কারণ তারা বসে আছেন। যা করার ম্যাডাম করবেন। আওয়ামী লীগের পরাজয় নিশ্চিত। আমরা ক্ষমতায় আসছি। সুতরাং এখন জানবাজি রাখার কোনো মানে হয় না। কারণ ক্ষমতায় গেলে ওমুক নেতার সাথে আমার খাতির আছেই। সব ম্যানেজ করে ফেলবো। এভাবে দিন দিন বিএনপিকে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করা হচ্ছে। এটা চেয়ারপার্সন যতো তাড়াতাড়ি বুঝবেন ততোই দলের জন্য মঙ্গল।
মনে রাখতে হবে, বর্তমানে বিএনপি’র জনপ্রিয়তা বাড়ার পেছনে খালেদা জিয়া ব্যতীত আর কোনো নেতার রাজপথে কোনো সক্রিয়া ভূমিকা নেই। তবে এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর দ্বিতীয় প্রধান বিএনপির ভূমিকা হাজার হাজার ত্যাগী তৃণমূল নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের। তারাই ভোট দিয়ে সিটি কর্পোরেশনে বিপুল ভোটে জিতিয়ে দিয়ে বিএনপি’র অবস্থান মজবুত করেছে। অনেক কর্মীর জীবনও গেছে গত প্রায় পাঁচ বছরে। আর পার্টির মহাসচিব বোরখা পড়ে চুরি করে আদালতে জামিন নিতে যান। একটু এদিক-সেদিক হলে অনেক নেতা আত্মগোপনে চলে যান। বিএনপির দরকার নেই এসব নেতার।
বিএনপি চালাতে এক খালেদা জিয়া আর কয়েকজন রিজভীই যথেষ্ট। কারণ ভোট দেবে জনগণ। আর ভোট বাড়াবে আওয়ামী লীগ। সুতরাং এতো নেতা তোষণের তো কোনো দরকার নেই। বরং এরা এ দলকে দুর্বল করে দিতে জেনে হোক না জেনে হোক তৎপর রয়েছেন। দল থেকে চলে গেছেন অনেকে। গড়েছেন নতুন দল। কী হয়েছে তাতে বিএনপির? দেশের কোথাও কি খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় তারা ধস নামাতে পেরেছেন? পারেননি। সুতরাং সামনেও পারবেননা। বিএনপি’র ভয়ের কোনো কারণ নেই। তবে ভয় আছে যদি এসব ছাল-বাকলা ছাড়া নেতাদের পদ-পদবি দিয়ে তৃনমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়।
আজকে সাহসী ছেলেরা বিএনপির রাস্তায় নেই। কারণ ওই যে, ক্রসফায়ার, ক্লিনহার্ট করে অনেক সাহসী ছেলেকে হত্যা করেছে বিএনপি নিজেই। নারায়ণগঞ্জে যুবদল নেতা ডেভিডকে হত্যা করে বিএনপি মহা অন্যায় করেছে। আওয়ামী লীগ তার চেয়েও কয়েক ধাপ নিচের সরাসরি অস্ত্রহাতে হত্যাসহ সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত ছিল। এরকম একজন যুবলীগ নেতাকে বিশাল এক জাতীয় নেতা নিজ দাযিত্বে জোর-জবরদস্তি, অনিয়ম করে জিতিয়ে এমপি বানিয়ে এনেছেন। এটা নিয়ে কোনো মিডিয়া প্রশ্ন তুললো না। অথচ একই কাজ বিএনপি করলে খবর করে ফেলতো মিডিয়া। সরাসরি খুনি, মহা দুর্নীতিবাজদের পক্ষে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে প্রশ্রয় দেয়া হয়। মিডিয়া সব জানে। তবু তাদের পছন্দের সরকারকে ওসব নিয়ে বিব্রত করতে চায় না। ফলে এসব জলজ্যান্ত বিষয় তারা এড়িয়ে যায়। বিএনপির জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নাইকো কোম্পানির কাছ থেকে গাড়ি ঘুষ নিয়েছেন। এরকম অভিযোগে মিডিয়া রিপোর্টে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রীত্ব কেড়ে নেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ আওয়ামী লীগ, মিডিয়া এক সুরে তোলায় বাণিজ্যমন্ত্রীর পদ থেকে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে সরিয়ে দেয়া হয়। আল্লার মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে-(একটি শিশু দু-পক্ষের গোলাগুলিতে ক্রসফায়ারে মারা গেলে) এ কথা মিডিয়ায় বলায় সেই সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদ ছাড়িয়ে ছেড়েছে মিডিয়া। অথচ দেখেন এখন শেয়ারমার্কেট লুট হলো, হলমার্ক কেলেংকারি হলো, ডেসটিনিসহ আরো মাল্টিপারপাসের নামে জনগণের শতো শতো কোটি টাকা লুট হলো অথচ অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ চায়নি মিডিয়া, বিরোধী দল ভবন ঝাঁকি দিয়ে রানা প্লাজা ফেলে দিয়েছে- এ রকম শতাব্দীর সেরা কৌতুক করার পরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্ত্রীত্ব বহাল থাকলো শেষদিন পর্য্ন্ত।
বিরোধী দলীয় চিপ হুইপকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা ডিসি হারুণকে রাষ্ট্রীয় পদক দেয়া হলো। সেখানে এ পেটানোর বিষয়টাকেও বিবেচনা করা হয়েছে-এরকম কথাও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন। মিডিয়া কিন্তু এর কোনো প্রতিবাদই করেনি। তার এ বক্তব্য ধরে নিউজ করেই খালাস।
দ্রব্যমূল্য চড়ার পাশাপাশি মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে পেঁয়াজ কিনে খাচ্ছে ১১০ টাকা কেজিতে। বাণিজ্যমন্ত্রীর কোনো তৎপরতা নেই। তবুও তাদের পদ হারাতে হয়নি। মিডিয়াও এ নিয়ে মাতামাতি করেনি। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানকে অন্য মন্ত্রণালয় দেয়া হয়েছে। সেখানে মোটেও জনস্বার্থের কোনো বিষয় ছিল না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সাহারা খাতুনকে সরিয়েছেন অনেক ঘটনার পরে। যোগাযোগ মন্ত্রীর পদ থেকে আবুল হোসেনকে সরিয়েছেন পানি অনেক ঘোলা করে। দেশপ্রেমিকের বিরাট সার্টিফিকেট দিয়ে।
আর সেজন্য বিএনপিকে রাজনীতির মাঠে ভালোভাবে টিকে থাকতে হলে এসব মিডিয়ার গতিবিধি নজরে রাখতে হবে। মিডিয়ার পালস বুঝে তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে কার্যক্রম নিতে হবে। মিডিয়া কিছু একটা লিখে দিলেই সেটাকে এতো পাত্তা দেয়া যাবে না। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের কাছে শিখতে হবে। তাদের মিডিয়া উইং কিভাবে কাজ করে। সেটার একটা সঠিক রিপোর্ট চেয়ারপার্সনকে দিতে হবে। পাশাপাশি বিএনপি’র উপরের দিককার অ-রাজনৈতিক নেতাদের কদর কমাতে হবে। সর্ব অবস্থায় কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। তবেই আন্দোলনও চাঙ্গা হবে। রাজপথ দখলে থাকবে।
লেখা - মাহবুব জামান: লন্ডন প্রবাসী
২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪১
রাসেল মাহমুদ মাসুম বলেছেন: এই পোস্টটি বিএনপি কে যারা ভালবাসে তাদের জন্য ।
২| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৩
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন: Click This Link
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২৮
দিশার বলেছেন: এতে তারা নেত্রীর দেখা পেয়ে অনেক বেশি চাঙ্গা হয়ে যাবেন।
৬০+ বয়স হইসে, এখন আর কি চাঙ্গা করবে।? তার চেয়ে জামাতি দোসর গুলার কাসে গেলে কবিরাজি সালসা দিতে পারে।