নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই আমি

একদিন জন্মের চিৎকারে পৃথিবীতে এসেছিলাম। আবার একদিন কিছু চিৎকারের মাঝ দিয়েই চলে যাব।

rashedur rhman

অতীতে যে মানুষ আমি দেখেছি বর্তমানে তা দেখি না। আবার বর্তমানে যা দেখি আমি নিশ্চিত ভবিষ্যতেও তা দেখব না। পরিবর্তন তো হবেই। কিন্তু এই পরিবর্তন আমাদের এখানে ভাল হয় না। এই আমার চরম দুঃখ।

rashedur rhman › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুঃখের, তবে তার চেয়েও বেশি লজ্জার

১০ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ২:৪১

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৫তম ব্যাচের ছাত্রী সুমি ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে আত্নহত্যা করেছেন। হলে নিজের রুমে এই ঘটনা তিনি ঘটিয়েছেন। সংবাদটি আমি ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই জানতে পারি। আমারই এক বন্ধু ফোনে সংবাদটি আমাকে জানিয়েছিল। আত্নহত্যার কারণ হিসেবে মৃত মেয়েটির দুটি চিঠি থেকে স্পষ্ট। মেয়েটির অনেক স্বপ্ন ছিল। তার একটিও বাস্তবায়ন হওয়ার আশু লক্ষণ ছিল না তার সামনে। এমনকি যাকে বিয়ে করবে বলে ভেবেছিল তারও মতিগতি ঠিক ছিল না। মাস্টার্স পরীক্ষা মাত্র কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে। নিজের বিভাগের শিক্ষক হওয়ার সুযোগও ছিল তার সামনে। ব্যাচের সেরা ছাত্রী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি।



তার প্রশংসা কিংবা দোষ বর্ণনা করা আমার উদ্দেশ্য নয়। একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমার মনে তার মৃত্যূতে যে দুঃখ পাওয়ার কথা ছিল তা আমি পাইনি। এই বর্ণনায় কেউ কি আমাকে তিরস্কার করবেন? করতে পারেন। কিন্তু আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন? সারা পৃথিবী মিলেও তো আমরা একটি প্রাণের সৃষ্টি করতে পারি না। তবে একটি প্রাণকে হত্যা করি কিভাবে? তাও নিজেকেই?

আশা ভঙ্গ হয়েছে তো কি হয়েছে? স্বপ্ন একটি ব্যর্থ হয়েছে তো কি হয়েছে? আরো স্বপ্ন দেখতে হবে। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা আমরা সত্যিকার অর্থে স্বপ্নই দেখতে জানি না। কিংবা বলা যায় স্বপ্নের অর্থই জানি না। আমি পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় বিজ্ঞানী কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হবো। এটি একটি স্বপ্ন বটে। কিন্তু তার চেয়েও বড় সম্ভবত একজন মানুষ হওয়া। একজন সত্যিকারের দেশ প্রেমিক হওয়া। একজন মানব প্রেমিক হওয়া। যারা নিজেদের পাওয়াটাকেই সবচেয়ে বড় করে দেখতে অভ্যস্ত। তারা তো হতাশ হবেই। কিন্তু নিজের পাওনার মাঝে অপরের লাভ খুঁজে দেখেছেন কখনো? আমাকে এখন নিশ্চয়ই পাগল ছাড়া কিচ্ছু মনে হচ্ছে না। সত্যি বলতে আমরা জাতিগতভাবেই পাগল। একথা বলার অধিকার এই কারণে আমার আছে যে আমি এই জাতিরই একজন সদস্য। এবং জাতটাকে আমি বড় বেশি চিনেছি।

আমরা বড় বড় কথা বলি দূর্নীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার হলে সেই দূর্নীতিকেই প্রশ্রয় দিই হেসে হেসে। যেমন বাসে করে যাচ্ছেন। আপনার লেন বামে। কিন্তু ড্রাইভার যাচ্ছে ডান লেন দিয়ে। আপনার হয়ত একটু তাড়াতাড়ি হচ্ছে। কিন্তু এই দূর্নীতির প্রতিবাদ কি কেউ করেছেন? নিজের স্বার্থোদ্ধার হলে কি দূর্নীতি ভাল হয়ে গেল? একদিন আব্দুল্লা আবু সায়ীদ স্যার বলেছিলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই ভাল। কিছু সংখ্যক দূর্নীতিবাজদের কারণেই আমরা দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হই। আমি দুঃখিত স্যার। আপনার কথার সঙ্গে দীর্ঘদিন পর দ্বিমত পোষণ করছি। বরং আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই দূর্নীতিবাজ। সেকারণেই আমরা চ্যাম্পিয়ন।

বলছিলাম অন্যকথা। সত্যি বলতে এখানে এত সমস্যার কারণ আমরাই। এই সমস্যার সমাধান করা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। কেন? কিছুদিন আগে আমাদের এক শিক্ষককে আমি বলেছিলাম, স্যার আপনি যেদিকে চলতে যাচ্ছেন সেদিকের স্রোত খুবই দুর্বল। উল্টো দিক থেকে আসা স্রোতের সঙ্গে আপনিও ভেসে যাবেন ( এই শিক্ষক গতানুগতিক পদ্ধতির বাইরে অনেকটা আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ্ধতিতে পড়ান)। পরে অবশ্য স্যারকে উৎসাহ দিয়েছি। স্যারের পাশে আছি এখনো।

আমি স্যারকে বলেছি বটে, যে আমাদের উল্টো স্রোতের ক্ষমতাই বেশি। কিন্তু একথা মনে রাখতে হবে ভাল পানির স্রোত দুর্বল হলেও তাকে প্রবাহিত হতেই হবে। না হলে কেউ বাঁচবে না।

যে আত্নহত্যাটি ঘটে গেল এর পিছনে হয়ত অনেক দুঃথ রয়েছে। কিন্তু সেই দুঃখের চেয়ে বেশি করে আমি লজ্জা পাচ্ছি। সেই দুঃখের চেয়েও বেশি করে আমি অপমানিত বোধ করছি। জীবন এতটা মূল্যহীন নয়, যে কিছুতে ব্যর্থ হলেই মরে যেতে হবে। সেই মেয়েটি আর কোনদিনই পৃথিবীর আলো দেখতে পাবে না। সে আর কোনদিনই তার বন্ধুর মুখ থেকে নিজের নামটি শুনতে পাবে না। এমনকি সে আর কোনদিনই কোন পরীক্ষাও দিতে পারবে না। তার সেরা ছাত্রী হওয়ারই বা স্বার্থকতা কোথায়? এই ধরণের মুত্যূতে আমি যতটা না দুঃথিত তার চেয়েও বেশি লজ্জিত। তার চেয়েও বেশি অপমানিত।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ২:৫৫

সেলিম জাহাঙ্গীর বলেছেন: খুব সুন্দর হয়েছে পোস্টটি।

১০ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৩:০৪

rashedur rhman বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১০ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ২:৫৮

জাহাজী পোলা বলেছেন: /:)

৩| ১০ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৩:০১

জীবন্ত জীবাশ্ম বলেছেন: দুর্নীতি বিষয়ক মন্তব্যগুলোর সাথে শতভাগ সহমত পোষণ করছি।

৪| ১০ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৩:১৩

অন্ধকারের রাজপুত্র বলেছেন: /:) :(

৫| ১০ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৩:৩০

মিঠাপুর বলেছেন: এই ধরণের মুত্যূতে আমি যতটা না দুঃথিত তার চেয়েও বেশি লজ্জিত।






ভাবলে হাসি পায় আমি মাত্র ১০,০০০/- টাকা দেনার জন্য আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম----- :P :P




আর এখন মাসে এর কয়েক গুন খরচ করি :)

১০ ই আগস্ট, ২০১১ ভোর ৪:১০

rashedur rhman বলেছেন: আপনার মন্তব্যটি দারুণ লাগল। ধন্যবাদ

৬| ১০ ই আগস্ট, ২০১১ ভোর ৪:১৮

বিষন্ন পথিক বলেছেন: সব মানুষের ইমোশন তো আর সমান না। তার কাছে যেটা চরম হতাশা বা লজ্জার মনে হয়েছে, আপনার বা আমার কাছে সেটা তুচ্ছ মনে হতে পারে। লেখা ভালো হয়েছে।

৭| ১০ ই আগস্ট, ২০১১ ভোর ৪:২৯

েবদনা বলেছেন: একজন মানুষ মরে গেলে হয়তবা সে বেচে যায়, কিনতু ারো অেক মানুষকে সে মৃত করে দিয়ে যায়..যারা তাকে অনেক বেশি ভালোবাসত...

৮| ১০ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৭:৪৪

মেলবোর্ন বলেছেন: তিনি নাকি ভাল ছাত্রী ছিলেন, মাস্টার্স পরীক্ষা মাত্র কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে। নিজের বিভাগের শিক্ষক হওয়ার সুযোগও ছিল তার সামনে। ব্যাচের সেরা ছাত্রী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। তিনি কি এও ভাবেননি তার মা বাবা তার জন্য কত কস্ট করে এই পযন্ত সহায়তা করেছিল তিনি নিজের বিভাগের শিক্ষক হওয়ার মাধ্যমে তাদের সপ্ন পুরনের মাঝেই বেছে থেকে কি সুখি হতে পরতেন না। যেমন বেদনা বলেছেন: একজন মানুষ মরে গেলে হয়তবা সে বেচে যায়, কিনতু আরো অনেক মানুষকে সে মৃত করে দিয়ে যায়..যারা তাকে অনেক বেশি ভালোবাসত...

৯| ১০ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ১০:৩৭

আজিজুল হাকিম শাওন বলেছেন: বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়ে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে-পরে ভাল লাগে নি, তাই বিয়ে করে নি। এতে আত্নহত্যার কি আছে?

বিয়ের প্রস্তাব দিয়েই যদি সব পাওয়া যায়, তো বিয়ে করবে কোন বলদ? মেয়েটা মেধাবি কিন্তু বোকা। আর শিক্ষকটা মেধাবি ও বুদ্ধিমান।

মেয়েরা সাবধান(বুদ্ধিমান) হোন।

১০ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ১১:২২

rashedur rhman বলেছেন: সাংঘাতিক ভাল মন্তব্য। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.