নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাতের আকাশের নাম না জানা একটি অজানা তারা.........................

রাত জাগা তারা ও আমি

রাত জাগা তারা ও আমি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আইন নয়,নারীদের নিরাপত্তা শিক্ষায়,সামাজিক সচেতনতায়।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৩৯


স্বাতী মালিওয়াল রবিবার অনশন ভাঙলেন।কাঠুয়া গনধর্ষন-কান্ড এ সমাজের যে বর্বর চেহারাটা সামনে এনে দিয়েছিল,তাকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি নয়াদিল্লির রাজঘাটে অনশনে বসেছিলেন।সেই রাজঘাট,যেখানে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি সৌধ রয়েছে।ন্যায়ের,সুবিচারের পথ খুঁজতে এর থেকে উপযুক্ত আর কোন যায়গা হতে পারে কি?আর অন্য কোন মহিলা যদি এখানে অনশনে বসতেন,তাহলে তিনি এই প্রচার ও আকর্ষন টানতে পারতেন কিনা সন্দেহ,যা আদায় করে নিয়েছেন স্বাতী।কারন,তিনি দিল্লী মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন।তার দাবী ছিল নারী সমাজের সুরক্ষা।আর তার খাতিরে কঠোর আইন প্রনয়ন।যাতে শেষ মেশ সাড়া দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার।সাড়া দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।একটি আর্ডিন্যান্সের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।যাতে বিজেপী নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার ঘোষনা করেছে,১২ বছরের কম বয়সী কোনও শিশুকে ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদন্ড।কিংবা ২০ বছর জেল।যা কিনা পরিস্থিতির বিচারে আজীবন কারাবাসেও বদলে যেতে পারে।এমনকি ১২ থেকে ১৬ বছরের বালিকা ধর্ষনের সাজাও সাত থেকে ১০ বছড় করে দেওয়া হয়েছে।সই করে দিয়েছেন রাস্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।এবার ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই অর্ডন্যান্সকে সংসদের দুই কক্ষেই পাশ করাতে হবে।তারপর এই সংশোধনী আইনে পরিনত হবে।
দেশের অন্দরে তো বটেই ,একের এক নাবালিকা ও শিশু ধর্ষনের ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলেও মুখ পুড়িয়েছে ভারতের।প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে,এ দেশ কি আদৌ নারীদের পক্ষে নিরাপদ?এক নির্ভয়ার মর্মান্তিক পরিনতি নাড়িয়ে দিয়েছিল আসমুদ্রহিমাচল।২০১৩ সালে তৎকালীন ইউপিএ সরকার বাধ্য হয়েছিল অর্ডিন্যান্স আনতে।আজ ২০১৮।ফের একবার এল অর্ডিন্যান্স।তাও কিন্তু ঐ একই কারনে..নারীর নিরাপত্তা।আর ভারতের সামাজিক দৈন্য।আজও আমরা ধর্ষনের জন্য নারীর পোষাককে দায়ী করি।দাবি তুলি পঞ্জিকা দেখে তারা যেন ঃরের বািরে বের হয় এবং রাস্তা ফাঁকা হওয়ার আগে বাড়ী ফেরে।এই দাবী কি খুব কাম্য?ন্যাশনাল ক্রাইমস ব্যুরোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী,২০১৫ সাল থেকে ২০১৬ সাল অথ্যাৎ এক বছরে শিশু ধর্ষনের হার বেড়েছে ৮২ শতাংশ।২০১৩ সালের অর্ডিন্যান্সে যদি কাজের কাজ কিছু হত,তাহলে এমন একটা তথ্য কি লজ্জায় ভারতবাসীর মাথা নিচু করে দিতে পারত?যেখানে শিশু সুরক্ষার জন্য পকসোর মত একটা আইন ভারতের ফৌজদারী আইনের গলায় অলঙ্কারের মতো ঝুলছে।এবং নিশ্চিতভাবে তা অলংঙ্কার।কারন,এরপরও যে ইন্ডোরে চার মাসের এক শিশুকে এক মানসিকভাবে বিকৃত পুরুষের যৌন লিপ্সার শিকার হতে হয়।যার এই দুনিয়ার আলো অন্ধকার এবং মায়ের কোল ছাড়া কিছু চেনারই বোধ তৈরী হয়নি!কোন আইন থামাবে এই পশুদের?নাকি পাশবিক বললে পশুরাও সুপ্রিম কোর্টে মানহানির মামলা ঠুকবে!নয়া সংশোধনীতে বলা হয়েছে ,নয়াশনানাল ক্রাইম ব্যুরো একটি জাতীয় তথ্যপঞ্জী তৈরী করবে।তাতে যাবতীয় যৌন হেনস্তা সংক্রান্ত অপরাধের বিস্তারিত রিপোর্ট থাকবে।সেই রিপোর্ট এনসিআরবি আদান প্রদান করবে রাজ্যগুলির সঙ্গ্গে।এতে গোটা দেশ সতর্ক হয়ে যাবে অমুক ব্যাক্ত সম্পর্কে,যার আগের রেকর্ড ভালো নয়।তাতে কি শিশুদের ওপর অত্যাচার কমবে?কত জন ধর্ষনে সাজাপ্রাপ্ত দ্বিতীয়বার একই অপরাধে জেলের ঘানি টানে?এই অপরাধের শিকড় কোনও একজন দুজন মানুষের মনে নয়,সে যে লুকিয়ে আছে আমাদের সমাজেরই অন্দরে!আমাদের শিক্ষায় ,সচেতনতায়।নারীজাতিকে যথাযথ সন্মান দেওয়ার শিক্ষা কেন আমরা আমাদের বাড়ীর ছেলেদের দেব না?যে বিকৃতির শিকার আসিফা ,নির্ভয়া কিংবা কামদুনির সেই মেয়েটি,সেই জীবানুকে কেন আমরা গোড়াতেই পিষে দেব না?আর নাবালিকা ধর্ষনের সাজা যদি মৃত্যুদন্ড হ্য়,তাহলে বাকীদের ক্ষেত্রে অন্য ধারা কেন?১২ বছর ১ দিন বয়েসের মেয়েটি কি এতটাই বড় হয়ে গিয়েছে ,যার এমন একটা আতঙ্কের মুহুর্ত জীবনভর বয়ে নিয়ে যাওয়ার শক্তি আছে?নাকি তেমন কোন ঐশ্বরিক ক্ষমতা রয়েছে বছর পচিশের কোন যুবতীর?এর উত্তর কে দেবে?আবার কোনও অর্ডিন্যান্স?আরও কোন আসিফার বলিদান?

স্বাতী কিন্তু বলেছেন,তাঁ অনশন শেষ হচ্ছে।কিন্তু নারী সমাজের নিরাপত্তার সংগ্রাম নয়।আজকের ভারতীয় নারীরাই যে তার দেশকে বিশ্বাস করে না!কারন এই সমাজ নারীকে শুধু ভোগ্য হিসাবেই দেখে।আজও।যেদিন এই দৃস্টিভঙ্গী বদলাবে,ঐ দিনটা হবে বিশ্সাসের ঘরে ফেরার দিন।নারীর মনে সন্মান জাগানোর দিন।অপেক্ষা যে সেই মুহুর্তের........।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.