নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জলের ধারায় মুক্তো খুঁজে বেড়ানো রূপকথার কোনো এক ঘোড়সওয়ারী

মানুষের ভালোবাসাই তো মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় শক্তি,সফল হওয়ার পেছনে।"

মোঃ নুর রায়হান

বন্ধুরা ভুল বুঝে আমাকে, আমি কেমন তা কেউ বুঝতে পারে না, যা সবচেয়ে পীড়াদায়ক। মুখলুকিয়ে কেঁদে কেঁদে সুসময়কে বিদায় দেয়ার আনন্দে মত্ত থাকি। সরাসরি কথা বলতে ভালো লাগে। খুব কষ্ট হয় যখন কেউ আমাকে ভুল বুঝে। আড্ডা মারতে ভালো লাগে না তেমন, কোথাও ঘুরতে যেতেও ভালো লাগে না। চরম ফাঁকিবাজ, বিশেষ করে পড়াশোনায়। আত্মবিশ্বাসী, চঞ্চল, ভাবুক এবং কিছুটা অহংকারী। অবসরে কবিতা লিখতে ভালবাসি, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করা আমার নেশা। যুক্তিবাদী হতে শিখছি, সাথে একজন ভালো মানুষ। সব মানুষকেই সমান চোখে দেখি। উপকার করতে ভালবাসি কোনো প্রকার প্রতিদান ছাড়া। উপকার করে বাঁশ খেতেও ভালো লাগে। ভালবাসতে পারি অনেক, বাবা মা, ভাই বোন সকলকে। আমি আমার আকাশটা ছুঁতে চাই।যাতে আমি সবার আকাশকে রাঙাতে পারি। আমি স্বারথপর নই,আমি চাই সবাই তার বিবেক কে চিনুক;আবেগ কে নয়। মানুষের ভালোবাসাই তো মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় শক্তি,সফল হওয়ার পেছনে। আমার ফেসবুক আইডি https://www.facebook.com/osfutoartonad/info

মোঃ নুর রায়হান › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা অসমাপ্ত ভালোবাসা

২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৪

রক্তিম আর সুপ্তির মাঝে চমৎকার একটা ভালোবাসার সম্পর্ক। একজন আরেকজনকে জান দিয়ে ভালোবাসে। বর্তমান যুগে এরকম সম্পর্ক খুব কম দেখা যায়। তাঁদের মাঝে বিশ্বাসটাও প্রবল। তাঁদের মাঝে না আছে কোনো অপূর্ণতা, না আছে কোনো ঝগড়া। খুব ভালোভাবেই কেটে যাচ্ছিল তাঁদের ভালোবাসার দিনগুলো।



তাঁদের সম্পর্কের দেড় বছর পর রক্তিম হঠাৎ আবিষ্কার করে যে সুপ্তি ফেসবুকে মোটামোটি পপুলার একজন হয়ে উঠেছে। দেশের অনেকেই তাকে চিনে। আর এই পপুলার হওয়ার সুবাদেই দেশ ও দেশের বাইরের বেশ কয়েকজনের সাথে ঘনিষ্ঠতা হয়ে উঠে সুপ্তির।



এর মাঝে একজনের নাম অরণ্য। রোমে থাকে। অরণ্য সাহিত্যপ্রেমী মানুষ। গল্প, কবিতা উপন্যাস ভালো লেখে। সুপ্তির আবার সাহিত্যের প্রতি প্রবল আকর্ষণ আছে। তাই অল্প কয়েকদিনের ভেতরেই অরণ্যর সাথে সুপ্তির চমৎকার একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সুপ্তি অরণ্যর সাথে রাত ৪টা পর্যন্ত চ্যাট করে ফেসবুকে। অবশ্য রক্তিম এর কিছুই জানে না। মানে, পুরোটাই রক্তিমের অজান্তে।



রক্তির আর সুপ্তির মাঝে অরণ্য ঢুকে যায় পুরোপুরি। অরণ্য রোমে সেটেল বড়লোক বাবার একমাত্র সন্তান। অবশ্য সুপ্তির মাধ্যমে রক্তিমের সাথেও অরণ্যর বন্ধুত্বের একটা ভাল সম্পর্ক হয়ে যায়। আর এটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। এই সম্পর্কের কারণেই রক্তিম অরণ্যকে কিছু বলতেও পারে না।



ধীরে ধীরে সুপ্তি, রক্তিমের প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। মনমালিন্য, ঝগড়া শুরু হয়ে যায়। তাঁদের সম্পর্কের মাঝে মিথ্যা ঢুকে যায়। বিশ্বাসটাও নষ্ট হতে থাকে। দিনরাত ঝগড়া থাকলে কোনো সম্পরকই টিকে না। অবশ্য রক্তিম সুপ্তিকে আগের মতোই ভালোবাসে। তাঁদের মাঝে যোগাযোগটাও ধীরে ধীরে কমে আসে। অবশ্য তখনো তাঁদের মাঝে ভালোবাসার সম্পর্ক বিদ্যমান।



একদিন রাত মাঝে ১১টা ৪৭। রক্তিম আর সুপ্তির মাঝে কথোপকথন।



রক্তিমঃ জান, শরীরটা ভালো লাগছে না। শুয়ে পড়বো।

সুপ্তিঃ ওকে শুয়ে পড়। আমারও প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে। গুড নাইট।



এই ছিল সেই রাতে তাঁদের দুজনের কথোপকথন।



রাত ৩.৪১ এ রক্তিমের প্রচণ্ড পেটব্যথা আর রক্তবমি শুরু হয়ে যায়। অবস্থা খুব খারাপ দেখে রক্তিমের রুমমেটরা রক্তিমকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। যাওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে প্রচণ্ড ব্যথা সত্ত্বেও রক্তিম সুপ্তিকে এসএমএস করে, “জান, আমার প্রচণ্ড পেটব্যথা। খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার জন্য দোয়া করিও। “



ঠিক একমিনিট পরেই রিপ্লাই আসে। “ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকো। সব ঠিক হয়ে যাবে।“



রক্তিম ফিরতি এস এম এস করে। “ তুমি ঘুমাও নাই! তুমি না বললে ঘুমাবে! এইজন্য তোমাকে ফোন দিয়ে আর জাগালাম না। এসএমএস দিলাম!”



সুপ্তিঃ আরে, আমি এতো তাড়াতাড়ি ঘুমাই না। তোমাকে এমনি বলেছিলাম। অরণ্যর সাথে চ্যাট করছি।

রক্তিমঃ এতো রাতে?

সুপ্তিঃ হুম, রোমে এখনো এতো রাত হয় নাই। তাই কথা বলছি। ও একটা চমৎকার ঘটনা বলছে। মজা পাচ্ছি। পরে এসএমএস করবো তোমাকে।

রক্তিমঃ জান, আমি মারা যাচ্ছি ব্যথায়।

সুপ্তিঃ কিছুই হবে না। চুপচাপ শুয়ে থাকো।



রক্তিম সুপ্তির চ্যাটে আর ডিস্টার্ব করলো না। শুধু এসএমএস দিয়ে বলল,” ওকে জান, আই লাভ ইউ। মিস ইউ লট।“



সুপ্তি এই এসএমএস আর কোনো উত্তর দেয় নাই। সে তখন অরণ্যর সাথে সরেস চ্যাটে ব্যস্ত। ভোর ৬.১১ তে রক্তিম মারা যায় হাসপাতালের বেডে। ডাক্তার বলে ফুড পয়জনিং এ রক্তিম মারা গিয়েছে। রক্তিমের ফ্রেন্ডরা রক্তিমের বাসায় ফোন করে জানিয়ে দেয়। এরপর সুপ্তিকে ফোনের পর ফোন করে। কিন্তু সুপ্তি ফোন ধরে না। হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে, অথবা এখনো অরণ্যর সাথে খোশ চ্যাট করছে। উপায় না দেখে রক্তিমের বন্ধুরা সুপ্তির মোবাইলে এসএমএস করে রাখে দুঃসংবাদটা।



সুপ্তি যখন ঘুম থেকে উঠে এসএমএস চেক করে, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। সবশেষ ততক্ষণে। তখন বাজে দুপুর ১.৪৯। সুপ্তি সেদিন ভোর ৫.৩৭ পর্যন্ত অরণ্যর সাথে চ্যাট করেছিল। রক্তিমের লাশ রক্তিমের পরিবার হাসপাতাল থেকে ততক্ষণ নিয়ে গেছে। রক্তিমকে শেষ দেখাও দেখতে পারে নাই সুপ্তি।



এরপর সুপ্তির কী হয়েছিল লেখক তা জানতে পারে নাই।



রক্তিমের মারা যাওয়ার ঠিক ৯৭ দিন পর ইতালির পুলিশ অরণ্যকে গ্রেফতার করে। অরণ্য ছিল আন্তর্জাতিক মাফিয়া। অবৈধ অস্ত্র আর ড্রাগসহ রোমের পুলিশের হাতে ধরা পড়ে অরণ্যর গ্যাং।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.