![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটু ভাবুন তো__
→কোন আরবি শিক্ষিত মাওলানা গেরুয়া রঙের পোশাক পড়ে, নেড়া মাথা হয়ে, টুপি ছাড়া মসজিদে প্রবেশ করছে...
আবার,
→ ভগবান বুদ্ধ মাথায় টুপি এবং মুখভর্তি দাড়ি নিয়ে যোগাসনে বসে আছেন...
কিংবা,
→ভগবান রাম সাদা লম্বা আলখাল্লা পড়ে, গলায় ক্রুশ ঝুলিয়ে রাবন বধে যাচ্ছে...
অথবা,
→কোন এক পাদ্রী শিবের বেশে অর্ধ লেংটু হয়ে, মোমবাতি হাতে জিসাসের কাছে প্রার্থনা করছে...
উপরের ঘটনাগুলো কাল্পনিক... তারপরেও স্ব স্ব ধর্মের মানুষ ক্ষেপে উঠবে... আমি কিন্তু কিছুই করিনি... কল্পনায় শুধু তাদের পোশাক অদলবদল করেছি মাত্র... ঘটনার প্রতিটি ব্যক্তি তাদের ধর্মের ধারক ও বাহক... শুধুমাত্র পোশাক পরিবর্তনে তাদের ব্যক্তিত্বে আঘাত লেগেছেই, সাথে সাথে তাদের ধর্মীয় দীক্ষারও অবমাননা হয়েছে... পোশাক যে একটি মানুষের ব্যক্তিত্ব প্রকাশে কি রকম প্রভাব ফেলে তার বুঝানোর জন্যই আমি উপরের ঘটনা গুলোর অবতারনা করলাম...
শিক্ষক হচ্ছেন পরম পূজনীয় জ্ঞানের দূত... প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে একজন শিক্ষক দেবতা স্বরুপ... শিক্ষক শুধুমাত্র পাঠ্যক্রমে সহায়তা করেন তা নয়, তিনি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্ব গঠনেও নির্দেশকের ভূমিকা পালন করেন... একজন শিক্ষককে তখনিই সম্মান করা যায় যখন তাকে সম্মানিত মনে হয়... একজন মানুষকে যখন শিক্ষক হিসেবে ভেবে নেওয়া হয়, সাথে সাথে তার একটি শালীন এবং মার্জিত অবয়বও চোখের সামনে ভেসে উঠে... কোন শিক্ষক যখন টকটকে লাল স্কীন ফিট প্যান্ট এবং কালো শার্ট পড়ে হনহন করে ডিপার্টমেন্ট চষে বেড়ায় তখন তাকে শিক্ষক বলতে একটু রুচিতে বাঁধে... দেখে মনে হয় কোন একটি বখাটে হাতে সিগারেট নিয়ে গার্লস স্কুলের সামনে এপাশ ওপাশ করছে...
পোশাক নিয়ে কথা বলে আমি কারো ব্যক্তিগত কিংবা সাংবিধানিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে চাই না... যদি সাংবিধানিক কিংবা ব্যক্তিগত অধিকারের দোহাই দিয়ে ভগবান রাম তার পোশাক পরিবর্তন করে তাহলে ব্যাপারটা কেমন হবে একটু ভেবে দেখুন...
tongue emoticon
অর্থাৎ প্রতিটি বিষয়ের কিছু অলিখিত নিয়ম থাকে যেগুলো ব্যক্তিগত ইচ্ছে কিংবা আইনের ফ্রেমে বাঁধা যায় না...
আমরা ক্লাসে যাই কেন?? কঠিন বিষয় গুলো সহজ করে জানার জন্য... সেকশনের লাইন টু লাইন বাংলা ট্রান্সলেট করার জন্য আমাদের শিক্ষকের প্রয়োজন হয় না... নীলক্ষেত থেকে আইনের একটা বাংলা লিখা বই কিনেও আমরা তা জানতে পারি...
→ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অনেক জ্ঞানী এবং ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন শিক্ষকের সান্নিধ্য পেয়েছি... যাদের সান্নিধ্যে নিজেকে ভাগ্যমান মনে হয়েছে... একেকজন যেন জ্ঞানের মহারথী... একজন শিক্ষকের কথা বলব, যিনি আমার বিভাগের না... সাংগঠনিক কাজে স্যারের সাথে আমি অনেক সময় কাটিয়েছি...স্যার যখন কথা বলতেন তখন অপলক তাকিয়ে থাকতাম... স্যারের চোখের ফ্লুয়িড যেন জ্ঞানের সমুদ্র... মাঝখানে গুঞ্জন উঠে স্যার চলে যাবেন... আমি তখন নামাজে বসে প্রার্থনা করেছিলাম স্যার যেন না যাই... এমনিভাবে স্যার নিজের জ্ঞান এবং ব্যক্তিত্বের পবিত্র শিকলে আমাদের বেঁধে রেখেছিলেন...
আরেকজন শিক্ষক, যিনি আমাদের পি.ডি.আর. এক্ট পড়াতেন... স্যার একজন রম্য লেখক এবং উঁচুদরের রসিক মানুষ... উনি এতো প্রাঞ্জলভাবে পড়াতেন যে ক্লাস শুরু এবং শেষের সময়ের পার্থক্য খুব কম মনে হত... মনে হত মাত্রই তো ক্লাস শুরু হল, এরমধ্যেই শেষ হয়ে গেল!! এক ক্লাসে ২০ টার উপর সেকশন পড়িয়েছেন এমনও রেকর্ড আছে... বিশ্বাস করুন, আমরা বিন্দুমাত্র বিরক্ত হইনি... সেমিস্টার শেষ হওয়ার পর নোটিস বোর্ডে তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি নেক্সট সেমিস্টারে স্যারের কোন সাবজেক্ট আছে কিনা...
এরাই শিক্ষক, এরাই যুগ যুগ ধরে শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে দেবতার আসনে আদিষ্ট থাকেন...
এখন প্রশ্ন রইলো বখাটে শিক্ষকরা শিক্ষকতা পেশায় আসেন কিভাবে?? টিচার সিলেকশন বোর্ড যখন শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নেয় তখন তারা নিজের গুড় মেনার সো অফ করে এবং বস্তা ভর্তি সার্টিফিকেট নিয়ে ইম্প্রেসড করে... কোয়ান্টিটি সবসময় মেরিট জাস্টিফাই করে না... কোয়ালিটিরও প্রয়োজন আছে...
→সুতরাং, কোয়ান্টিটি নয়, কোয়ালিটি টিচার চাই...
©somewhere in net ltd.