![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বজরঙ্গী ভাইজান সিনেমা নিয়ে সবার আবেগে উথলে উঠা ঢল দেখে কিছু কথা বলতে ইচ্ছা করছে। সিনেমা এবং বাস্তবতা কতটা আলাদা হতে পারে তার প্রাসঙ্গিক একটি উদাহরণ হচ্ছে সালমান খানের এই বজরঙ্গীর চিত্রায়ন।
সমগ্র ভারতের চরমপন্থী হিন্দুত্ববাদী একটা যুব সংগঠন হচ্ছে বজরং দল। এই বজরং দলের অনুসারী বা সদস্যদের বলা হয়ে থাকে বজরঙ্গী। প্রচন্ডভাবে উগ্রতা লালন করে যাওয়া এই দলটি গুজরাট দাঙ্গার অন্যতম সংগঠক। এবং গুজরাট দাঙ্গার নৃশংসতার মাত্রাকে চূড়ান্ত পাশবিকতায় নিয়ে গিয়েছিলো এই বজরঙ্গীরা। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় নারোদা পাতিয়া গণহত্যায় (আহমেদাবাদ এলাকায়) সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলো বাবুভাই প্যাটেল নামক এক হিন্দু উগ্রবাদী। এই বাবু ভাই প্যাটেল সারা বিশ্বজুড়ে পরিচিত হয়েছিলো ‘বাবু বজরঙ্গি’ হিসেবে। বাবু বজরঙ্গি কিভাবে গুজরাটে গণহত্যা করেছিলো সেই কথা জানার জন্য ২০০৭ সালে তেহেলকার ম্যাগাজিনের এক সাংবাদিক হাজির হয়েছিলো বাবু বজরঙ্গির কাছে। ঐ সময় বাবু বজরঙ্গি খুব গর্বের সাথে সাংবাদিকের কাছে সেই গণহত্যার নির্মম বর্ণনা দেয়, কিন্তু সেই বর্ণনা শরীরে ধারণ করা গোপন ক্যামেরায় ভিডিও করে ফেলে ঐ সাংবাদিক। ঐ গোপন ভিডিও প্রকাশের পর সারা বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠে, নতুন করে বিচার শুরু হয় বাবু ভাই প্যাটেল ওরফে বাবু বজরঙ্গির।
সেপ্টেম্বার ২০০৮ সালে কংগ্রেসে মনিশ তিওয়ারী বজরং দলকে নিষিদ্ধ করার দাবী উত্থাপন করেছিলেন। মাসিক পত্রিকা কম্যুনালিজম্ কম্ব্যাট আগস্ট ২০০৮ সালে বজরং দলের তাৎক্ষণিক নিষেধাজ্ঞার দাবি তোলে। রাজ্যসভা সাংসদ রাম বিলাস পাসোয়ান থেকে শুরু করে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী (১৯৯৪-১৯৯৬) ও একই সাথে ভারতের ১১ তম প্রধানমন্ত্রী ডেভে গৌড়া ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী বজরং দলের পাশাপাশি শ্রী রাম সেনার উপরও নিষেধাজ্ঞার দাবি তোলেন।
বজরং দল এবং দলের সদস্য বজরঙ্গীদের নিয়ে ভয়াবহ সব ঘটনাবলি অন্তর্জালে ছড়ানো আছে। সেগুলো আগ্রহী পাঠকরা খোঁজ করলেই জানতে পারবেন। কিন্তু আমার প্রশ্ন অন্য জায়গায়। হঠাৎ করে বজরঙ্গীদের মত একটা উগ্র যুব সংগঠন যখন সালমানের নায়োকোচিত বিবেকবান, আহামরি- আহামরি মানবাত্মায় পরিণত হয় তখন ব্যাপারটা যথেষ্ট হাস্যকর। দৃশ্যায়নের বাস্তবতা কতটা লাগামছাড়া এবং অপ্রাসঙ্গিক হলে এইধরনের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে এতটা পজিটিভলি উপস্থাপন করা যায়, তার জন্য "বজরঙ্গী ভাইজান" এর নির্মাতা একটা হাততালি পেতে পারেন।
তবে, সিনেমাটি মহৎ উদ্দেশ্যেও নির্মিত হতে পারে। হয়তো, উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদেরও মানবতা আছে, এটা প্রমাণ করার বদলে, উগ্রবাদীদের মনে স্বাভাবিক মানব প্রকৃতির উন্মেষ ঘটাতেই সিনেমাটিই প্রস্তুত হয়েছে। সিনেমাটি দেখে যদি অন্তত কোনো একজন বজরঙ্গী মানবাত্মার আর্জি শুনতে পায়, মূলবোধের গর্জন এবং বিবেকের দংশনে মানুষের মত মানুষ হয়ে উঠতে পারে, সেটাকে আমি এই সিনেমার সবচেয়ে বড় সাফল্য বলতে পারবো।
২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪
রাজীব বলেছেন: মানুষ হতে পারলো না।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৩৭
আল্লাহ আমাদের দেখছেন বলেছেন: গুজরাট দাঙ্গায় বাবু বজরঙ্গি কি করেছিলো তার নিজ মুখেই শুনি:
“কেটে টুকরা করা, পুড়িয়ে দেয়া, আগুন ধরানো অনেক কিছুই করা হল, অনেক কিছুই। আসলে আমরা মুসলমানদের আগুনে পুড়াতেই বেশি পছন্দ করি, কারণ এই জারজরা তাদের দেহ মৃত্যুর পর চিতায় পুড়াতে চায় না।
আমার শুধু একটি ইচ্ছা,......শুধু একটি শেষ ইচ্ছা...... আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হোক,.......আমাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হলেও তা গ্রাহ্য করব না.........তবে আমাকে ফাঁসিতে দেওয়ার আগে মাত্র দুইদিন সময় দেয়া হোক, আমি জুহাপুরা (মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা) চলে যাব। সেখানে ৭-৮ লক্ষ লোক বাস করে। আমি তাদের শেষ করব........কমকরে হলেও তো সেখানে আমার ২৫-৫০ হাজার মুসলমানকে হত্যা করা উচিত।
গণহত্যার পর থানায় মামলার নথিতে লেখা হয়, এক গর্ভবতী মুসলিম মহিলার পেট চিরে আমি ৯ মাসের ভ্রুনকে বের করেছি, নিক্ষেপ করেছি আগুনে। আসলে আমি তাদেরকে দেখিয়েছি, দেখ! আমাদের বিরোধীতার শাস্তি কি। একজনকেও ছাড়া যাবে না। এমনি তোদের ভূমিষ্ট হতেও দেয়া যাবে না। আমি বলেছি, যদি মহিলাও হয়....., যদি শিশু হয় তবু তাদের কেটে ফেল.....চিড়ে ফেল..........টুকরো করে ফেল......আগুনে পুড়াও সকল মুসলমানদের।
আমাদের অনেকে তাদের ঘরবাড়ি লুট করতে অযথা সময় নষ্ট করছিল। আমি বলেছি, অযথা এ কাজ না করে তাদের কাউকে বাঁচতে দিও না, এরপর সবাই তো আমাদের। আমরা দল বেধে বেধে মুসলমানদের ঘরে ঘরে ঘুরছিলাম। প্রত্যেকেই মুসলমান মারছিল অতি উন্মাদনার সাথে।
আমরা এসআরপি (স্টেট রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স) ক্যাম্পের পাশেই এই গণহত্যা চালাই। (আসলে একসাথেই করা হয় সে গণহত্যা) তবে পুলিশরা মাত্র একজন মুসলমানকে সেভ করেছিল। সে ছিল তাদের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।
নরেন্দ্র মোদি ? মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাকে শাস্তি থেকে বাচানোর জন্য তিনতিন বার বিচারককে পরিবর্তন করে দেয়।
মুসলমান মারতে এত্ত মজা লাগে না....সাহেব, আসলে তাদের মারার পর আমার নিজেকে রানা প্রতাপ বা মহেন্দ্র প্রতাপের মত (মুসলিম নিধনকারী রাজা) মত মনে হয়েছে। এতদিন শুধু তাদের নাম শুনেছি, কিন্তু সেই দিন আমি তাই করলাম.... যা তারা আমার জন্য করেছিল।”
(গোপন ধারণকৃত সেই ভিডিওটি দেখতে: https://www.youtube.com/watch?v=mfnTl_Fwvbo)