নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনান্দ। আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ ....

রাজজাকুর

রাজজাকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

শ্রমিক মহাশয় নিরব হয়ে নয়, আওয়াজ হয়ে উঠো।

০২ রা মে, ২০১৫ রাত ১২:৫৭

শরীরের নাম মহাশয় যাহা দিবেন তাহাই সয়!! এই যাহা তাহা দিয়ে শ্রমিকের পিঠের বোঝা, গাঁধার বোঝার মত ভারী ও উচু করা হচ্ছে। ছাটাই বাছাই এর গ্যাঁড়াকলে পড়ে গাঁধার মতই অনেকে বলে বসছেন, জনাব, আরো কিছু দিলে দেন!!
যেন, নিজেকে খানিকটা হলেও যোগ্য গাঁধা প্রমানিত করাই ব্রত। কারন মৌলিক চাহিদা নিবারণের জন্য কাজটা তার প্রয়োজন।

আক্ষেপের বিষয় এই, দেশের অনেক শ্রমিকই জানেন না, কি কিংবা কতটুকু তাদের অধিকার, শ্রমের মূল্যই বা কত? অভাব তাদের মস্তিষ্কে একটি ম্যাসেজ দিয়ে রেখেছে যে, দু'ছটাক চালের সেদ্ধ ভাত খেতে চাইলে শ্রম বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করতে হবে! নইলে নিজে ও পরিবারকে উপোষ করতে হবে। পহেলা মে ১৮৮৬তে শ্রমিকের আত্মত্যাগ, আট ঘন্টা শ্রম বিনিময়ের স্বীকৃতি, ট্রেড ইউনিয়ন, অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ও অধিকার! শ্রমের ন্যায্যমূল্য ইত্যাদি সম্পর্কে তাদের কোন ধারনা নেই এসব ভাবার সময়ও নেই!

শিল্প কারখানাগুলোর একটি প্রসঙ্গে বলি, এই জায়গাগুলোতে দূষণীয় কিছু থাকাই স্বভাবিক কিন্তু লক্ষ্য করলেই দেখা যায়, নিরাপত্তা জনিত যেসব সরঞ্জাম দেয়ার কথা থাকে তা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত বা উভয়প্রকার উদাসীনতার কারনে দেয়া হয় না। ওঁনারা মনে করেন শ্রমিক শ্রেণী মহাশয়, দিলেও সয় না দিলেও সয়। ফলশ্রুতিতে শ্রমিকরা সেফটি ছাড়াই কাজে নিজেদের অভ্যস্ত করে ফেলেন। ওই যে বললাম না, জনাব, গাঁধা....!!

এতে এই সম্পর্কিত যাবতীয় খরচ, উল্টা লভ্যাংশররুপে মালিকপক্ষের পেটের চামড়া ডবল করে। যখন ভুঁড়ি নিয়ে হাঁটতে কষ্টহয় তখন কারখানাকে সমৃদ্ধ করতে হয়তো অনেকে নামকাওয়াস্তে মাথার হেলমেট থেকে শুরুকরে একহাত উচ্চতার প্লাষ্টিকের জুতা জড়োকরে কারখানাগুদামের শ্রীবৃদ্ধি করেন।

কেউ হয়তো হঠাৎ বেফাঁস বকেন, কি রে অমুক, মুখের মাস্ক, হাতের গোলফস টা লাগিয়ে নিলেই পারিস!
আর শ্রমিক বিষের যন্ত্রনায় হুক্কু হুক্কু কাশেন ও মাথা দুলিয়ে হাসেন আর বলেন স্যার আমার কিচ্চু হইব না।।

যে নতুন শ্রমিক কাজে যুক্ত হচ্ছে তারাও অন্যদের দেখে নিরাপত্তা বিষয়ক সরঞ্জামাদি নেন না, অনেক অংশে খুঁজেও পান না। এ দেশের কতশত কারখানায় বরাবরই ১২-১৬ ঘন্টা কাজে (৮ ঘন্টা তো স্বপ্ন) মৃত্যুর সাথেই শ্রমিকেরা কাজ করছেন। এই অমানুষিক শ্রমের মূল্য যথাসামান্য!! যেখানে খাওয়া গোসলের সময় নাই সেখানে ট্রেড ইউনিয়ন!
ফলে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য যোগ্য শ্রমিকনেতৃত্ব গড়ে উঠছে না, মালিকপক্ষ যোগ্যহয়ে উঠতে দিচ্ছে না। আর এখনকার শ্রমজীবী মানুষের নেতা মানেই যিনি কোনদিন শ্রমিক ছিলেন না আর কোনদিন হবেও না। মাঝখানথেকে লাভ এতোটকু যে, শ্রমিক ছাড়া সবার একদিনের সরকারি ছুটি।

রানাপ্লাজা ধসের ২বছর হয়ে গেছে এখনো সব ক্ষতিগ্রস্তরা নামকাওয়াস্তে অর্থ সহায়তাও পায় নাই! শ্রমিক মহাশয়গণ নিরবে সয়ে যাচ্ছেন। এভাবে সয়ে গেলে বাংলাদেশের শ্রমিকদের আরো লম্বা সময় ধরে বঞ্চনার শিকার হতে হবে।(চলবে)

শ্রমিকেরা নিরব হয়ে নয়, আওয়াজ হয়ে উঠো।
কন্ঠের বারুদ জ্বলে উঠুক, প্রতিবাদের ভাষা হয়ে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.