নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনান্দ। আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ ....

রাজজাকুর

রাজজাকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিষয়ঃ প্রেম-ভালবাসা

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩১

স্কুল জীবন, কলেজ জীবন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন ও কর্মজীবন পর্যন্ত জীবনকে যতটুকু পর্যবেক্ষণ করেছি তাতে দেখলাম এইসব জীবনের অন্তরালে যে বিষয়টি খুব বেশি আলোচনা হচ্ছে সেটি হলো প্রেম-ভালোবাসা। বিশেষকরে শিক্ষার্থীরা তাদের স্বর্ণ সময়কে এই জিনিস ভাবতে ভাবতে কয়লা বানিয়ে ফেলছে। যদিচ এইসত্য তাদের অভিভাবকগণ জানননা এমনকি ব্যক্তি নিজেও বুঝতে পারেনা সে প্রেম-ভালবাসারমত একটা পবিত্র কাজ করতে গিয়ে জঘণ্যভাবে নিজেকে প্রতারিত করছে।

বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করলে প্রথমে দুটি শব্দ মাথায় আসে একটা হলো ভালবাসা আর অন্যটা হলো আসক্তি। অনেকেই প্রেমঘটিত নানান সমস্যায় জর্জরিত তাদের সমস্যার মাথায় ভীষণ এক টোকা দিয়েই মূল আলোচনায় যাব। যাতে সমস্যারা চরমপত্র পেয়ে যায় যে, তারা ক্ষণস্থায়ী তাদের চলেযাওয়ার সময় হয়ে গেছে।

ভালবাসা হলো এক প্রকারে ব্যথা কিন্তু এটা হলো ‘সুখের মত ব্যথা’। আপনি যাকে পছন্দ করেন তাকে ভালবাসেন কি না এটা বুঝতে প্রথম যে জিনিসটা বুঝতে হবে সেটা হলো পছন্দের মানুষের দেয়া আঘাতে শুধু ব্যথা লাগে নাকি সুখেরমত ব্যথা অনুভুত হয়। যদি শুধুই ব্যথা লাগে তাহলে বুঝতে হবে সেটা আসক্তির কারনে ঘটছে আর যদি সুখেরমত অনুভুত হয় তাহলেতো অঘটন ঘটে গেছে। ভালবাসার সংজ্ঞায়ন করছি না কিংবা এই সম্পর্কে টিপস দিচ্ছিনা কেননা আমি লাভগুরু নই। আসলে প্রচলিত পুরোনো কথাগুলোকে আওড়িয়ে একটা গভীর আলোচনার সুচনা করছি মাত্র। ভালবাসা যেহুতু একটা পুরোনো বিষয় তাই পুরোনোকথা তো আসবেই।

ভালবাসা ও আসক্তিকে আরো স্বচ্ছভাবে পৃথককরণ করবার জন্য এভাবে ভাবা যেতে পারে যে, ভালবাসা মানে চিমটিচিমটি সুখ আর থাবায় থাবায় দুঃখকষ্ট বেদনা যাতনা অপেক্ষা প্রতিক্ষা ইত্যাদির সমষ্টি। তো যাকে পছন্দ করেন তার জন্য সারা জীবন সমস্ত দুঃখকষ্ট বেদনাকে ‘হাসিমুখে’ মেনে নিতে পারবেন? উত্তর যদি 'হ্যাঁ' হয় তাহলে ডাকেন কাজী। উত্তর যদি 'না' হয় তাহলে এটা হলো শুধুই 'আসক্তি'। আর উত্তর যদি হ্যাঁ না এর মাঝামাঝি হয় তাহলে এটাও নিঃসন্দেহে 'আসক্তি'। অনেকে এই যায়গায় এসে আটকে যায় ফলে সন্দেহকে পজেটিভ বলে ধরে নেয়। ভুলটা ওখানেই হয় জনাব, যে ভালবাসা এই সামান্য সন্দেহকে অতিক্রম করতে পারেনা তাকে ভালবাসা বললে ভালবাসার অমর্জাদা করা হয়।

ভালবাসা তথা আবেগ অনুভুতিকে বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করছে ডোপামিন হরমোন নিঃসরণের উপর ভিত্তি করে। এটা একটা দারুণ আলোচনা ফার্মাসিউটিকাল কেমিষ্ট্রি পড়তে গিয়ে একটু একটু জেনেছিলাম। কিন্তু মনই বুঝিনা বিজ্ঞানের কি বুঝব! তাই এদিকটা বাদ দিয়ে ব্যক্তি পরিবার ও সমাজের ভাবাবেগ-সংস্কৃতি নিয়ে কথা বললেই ভালবাসার তামাসা বুঝতে সুবিধা হবে।

মনের মানুষ ছিঃনেমায় লালনের একটা উক্তি ছিল এমন যে, শরীরের টানে নাকি শরীর জাগে কিন্তু মন তো জাগে না! কৈশোরে অজানাকে জানতেগিয়ে আমাদের মন জেগেউঠে আর অন্যদিকে বয়ঃসন্ধিকালে আপনাথেকেই শরীর জেগে উঠে ফলত দুয়ে দুয়ে চার। একদিকে কৈশরের উরুউরু মন অঘটন-ঘটন-পটীয়সী আর অন্যদিকে অন্যদিকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অভিভাবক কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে চেয়ে থাকেন। এহেন পরিস্থিতিতে মরার উপর খারার ঘা হিসেবে আমাদের সমাজে যুক্ত হয়েছে ভারতীয় সংস্কৃতি ও পাশ্চাত্ব সংস্কৃতির কুপ্রভাব। মিডিয়াগুলোতে সবসময় নাটক সিনেমা গান গল্প কবিতা বেশিরভাগের বিষয়বস্তু প্রেম-ভালবাসা সম্পর্কিত। সেখানে নেচেগেয়ে দেখানো হচ্ছে, শরীর দুলয়ে বোঝানো হচ্ছে প্রেম পবিত্র, প্রেম মহান, প্রেম অন্ধ, প্রেম অমুক তমুক হাবিজাবি ফাইজলামি সবকিছু। মিডিয়ার রমরমা ব্যবসার গ্যাড়াকলে বলি হচ্ছে অবুজ ছেলেমেয়েরা ও তাঁদের মহামূল্যবান অবুজ ভালবাসা। এর সাথে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যোগ হয়ে ব্যপারটার একটা মহাবিষ্ফোরণে পরিণত হয়েছে। হাতের মুঠোয় ফোন তার মধ্যে ইন্টারনেট... টুককরে গুঁতা দেয়ার আগে সিদ্ধ-নিষিদ্ধের পার্থক্য করা মুস্কিল বটে! আর যার নেট নাই তাকেতো গ্রামীনফোন থেকে ফোনকরে সুরসুরিজরিত কন্ঠে বলা হয় আপনি কি মনের মানুষের সাথে কথা বলতে চান তাহলে ১ চাপুন। মনের মানুষ ভাড়া দেয়ার ব্যবসাটা পতিতালয়ে হতো জানতাম কিন্তু এখন নতুন করে জানছি বায়োমেট্রিক রেজিষ্ট্রেসন করা সিমেও এসব করা যায়। যাক সেসব কথা, পয়েন্টে আসি...

জনস্বার্থে যদি কেউ রীট করেন তখন আদালত নাকি প্রথম প্রশ্ন করেন তার রীট করার অধীকার আছে কি না? আপনি বাপের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রেম করছেন, নাজানি আরো কী কী করছেন অথবা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করছেন! তো প্রথম প্রশ্ন হলো, আপনার কি সে অধীকার আছে কি না? সাথে এও বলেরাখি আপনাকে এ প্রশ্ন করবার অধিকার আমার নেই। কিন্তু একটা বিষয়ের গভীরে যাওয়ার জন্য প্রশ্ন করা জরুরী। প্রশ্ন করলে যদি সরাসরি উত্তর পাওয়া যায় তখন বিষয়টি স্পষ্ট হয়। যখন কোন পরিবার সমাজ একটি বিষয় সম্পর্কে দুর্বোধ্যতার আবহ সৃষ্টি করে রাখে তখন বুঝতে হবে ব্যপার তারাই ঠিকমত বোঝেননা! তাহলে বোঝাবেন কি? ভালবাসা এমনি একটি ব্যপার, যেটা বুঝতে গেলেই পরিবার তার পারিবারিক অনুশাসন কিংবা সমাজ তার সামাজিক শৃঙ্খলা চাপিয়ে দিয়ে ভুজুংভাজুং বুঝিয়ে বলবে খবরদার প্রশ্ন করবি না। প্রশ্ন করলেই ধরে নেয়া হবে তুমি গোল্লায় গেছ। যারা পরিবার কিংবা সমাজের এহেন আচরণের সমর্থন করেন বা প্রশ্ন করাতে বিব্রতবোধ করেন অনুগ্রহ করে তারা এই আলোচনাকে ইগনোর করেন। কারণ সামনে আরো বৃহৎ আলোচনা সো বৃহৎ প্রশ্নের মোকাবেলা করতে হবে। তবে আলোচনার মূল উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত করা নয় বড়ং বিষটি সম্পর্কে নিজে স্পষ্ট ধারণা রাখা ও উত্তরসুরীদের সঠিকপথে পরিচালিত করা।

ইদানিং কেন যেন মনেহয় কোথাও হয়তো ভুল হচ্ছে পরিচিত মানুষগুলো ভুলপথে অগ্রসর হচ্ছে। ভুলপথে যেতেই পারে তাতে খুব একটা আসে যায়না, কারণ মোহকাটলে একসময় সঠিক পথে ফেরত আসবে। কিন্তু ঘটনা অন্য যায়গায়, তারা এই ভুলপথকেই চূড়ান্ত সঠিক পথ বলে বেছে নিচ্ছে ফলে ভবিষ্যতেও মোহকাটিয়ে সঠিক পথে ফেরত আসার পথ রুদ্ধ করে রাখছে! এটা বড়ই চিন্তার বিষয় কিন্তু এর সমাধানে কলম ধরার সাহস এখনো অর্জিত হয় তবে কী বোর্ডের উপর মাস্তানি করার দুঃসাহসটুকু সমানুপাতে বেড়ে যাচ্ছে।

খেয়াল করলে দেখাযায় প্রথমে পিচ্ছিগুলা প্রশ্ন করে আব্বু এটা কি? ওটা কি? সেটা কি? কিন্তু একটাসময় দাবাড়নি খেতেখেতে চুপ হয়ে যায়। আর প্রশ্ন করে না। কারণ কি? কারণ দাবড়ানি খাওয়ার চেয়ে চুপ থাকাটা সুবিধাজনক। মানে প্রশ্ন না করাটা প্রশ্নের উত্তর হিসেবে ধরে নেয়। তাহলে ব্যপারটা দ্বাড়াচ্ছে আমরা প্রশ্ন করি উত্তরটা নিজেদের সুবিধাজনক একটা স্থানে এনে প্রশ্নটা ছেড়ে দেই। ধরে নেই এটাই উত্তর। কিন্তু উত্তরটার বাম পার্শ ইকুয়ালটু ডান পার্শ হলো কিনা ভাবিনা অর্থাৎ উত্তরটা আবার যাচাই করিনা। এজন্য নিজেই নিজেদের প্রশ্ন করতে হয়, উত্তর পেলে সেটা যাচাই করতে হয়। অনেকে এটাকে আত্ম সমালোচনা বলেন কিন্তু সেদিকে গেলে পয়েন্ট হারিয়ে যাবে। সো ঐদিকে নাগিয়ে প্রশ্ন করি, প্রেম কি পবিত্র? ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে প্রেমকে পবিত্র বলে দেখানো হয় বলেই কি প্রেম পবিত্র? কেন পবিত্র? কেন পবিত্র নয়? প্রেম কি জৈবিক? কামের প্রেমের সম্পর্ক কতটা? ভেতরে ভেতরে কেউ আবার প্রেমকে বেশি পবিত্র নামকরণ আপনাকে-আমাকে বোকা বানিয়ে ব্যবসা করছে না তো? সমপূরক ও সংশ্লিষ্ট অসংখ্য প্রশ্ন হতে পারে আসুন এগুলোর ব্যাখ্যা কী হতে পারে ভাবতে থাকি...। প্রশ্ন যদি তৈরী হয় তবে উত্তর নিশ্চয় পাওয়া যাবে।

(চলবে...)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৩

Niaz Aziz Dip বলেছেন: কিন্তু এখন দেখছি সবাই প্রেম করে কাপড় খোলার ধান্দায়

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৪

রাজজাকুর বলেছেন: হা হা হা । ভাই এক লাইনে অনেক কিছু বুঝিয়ে দিয়েছেন।
ধন্যবাদ।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৪

Niaz Aziz Dip বলেছেন: কিন্তু এখন দেখছি সবাই প্রেম করে কাপড় খোলার ধান্দায়

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৪

রিজন আহম্মেদ বলেছেন: ঠিক ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.