নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনান্দ। আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ ....

রাজজাকুর

রাজজাকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্লাস্তনস্ত (পর্ব- ১)

০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:০৯

কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি আদায়ের জন্য আমরা কতটা ক্ষতি মানতে প্রস্তুত? কিছু পেতে হলে তো কিছু বিসর্জন দিতে হয়! এই প্রাণের আন্দোলন নিয়ে যতটা আবেগ কাজ করছে বাস্তবে হয়তো ততটা ক্ষতি মানতে আমরা প্রস্তুত নই। কেননা এটা ১৯৫২ সাল নয় যে, আমরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেব রাজপথে। সামনের দিনে টিয়ার শেলের আঘাতে যখন একটা ছেলের দুইটা চোখ নষ্ট হয়ে যাবে তখন তাকে শহীদের তকমা দিলে তার কী লাভটা হবে? আরে, শুধু চোখ কেন- জীবন দিতে রাজি আছি; কিন্তু কাকে দেব? দেশ আমার, রাষ্ট্র আমার, সরকার আমার, রাজপথ আমার, যাঁরা কোটা সুবিধা পায় তারাও আমার, আমিও আমার- তাহলে জীবনটা দেব কোথায়? বলেন? তবুও অহেতুক দেয়া যেতে পারে কিন্তু সেটি হবে নির্বুদ্ধিতার পরিচয়।

২৫ ফেব্রুয়ারি খুব শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার পরেও দিনশেষে তিনজন জেলে ছিল! তার পরেরবার তো অনেকজনকে আটক করেছে আবার ছেড়েও দিয়েছে। যদিচ তেমন কিছু হয় নাই কিন্তু আগামীতেও যে কিছু হবে না তার নিশ্চয়তা নাই। এর চেয়ে বেশি আবেগ, বেশি শ্রম, বেশি খরচ, বেশি উপস্থিতি, সবার বেশি বিনয়ী আচরণ সামনের দিনগুলোতে পাওয়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার হবে। আন্দোলনে উপস্থিত ছাত্র জনতা স্বীকার না করলেও এটি সত্যি যে, ওখানে পৌঁছানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কমবেশি সবার মনে দৌড়ানি খাওয়ার খানিকটা আশঙ্কা তো থাকেই! কি জানি কী হয়! এই ভয় জয়কে করেই সবাই উপস্থিত হয়েছিলাম; বিজয় ছিনিয়ে আনতে। যদিচ কাজ হয়ে গেছে- তা বলা যাচ্ছে না আবার কিছুই যে হয় নাই- তাও সঠিক নয়। শুনেছিলাম, টার্গেট যদি হয় ১০ মাইল তাহলে থামতে হয় ১১ মাইল পথ পারি দিয়ে। আরো খানিকটা পথ চলতে হবে সংঘবদ্ধ ও সুশৃঙ্খল হয়ে। কেননা ইতোমধ্যে অনেকেই এই ইস্যুকে সরকার বিরোধী ইস্যুর তকমা দিয়ে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় উঠেপড়ে লেগেছে। ওঁরা জানেনা যে, সমষ্টিক স্বার্থ ব্যক্তি স্বার্থের অনেক ঊর্ধ্বে। যাউকগা ওদের কথা বাদ দিয়ে সরাসরি পয়েন্টে আসি...

মানব ঢাল হয়ে রাজপথে দাঁড়িয়ে, মানুষের পথ আগলে মানুষকে জিম্মি করা মানে তো নিজেও রাজপথে জিম্মি হয়ে থাকা। ইতিহাস শিক্ষা দেয় আন্দোলন মানেই রাজপথ, আর রাজপথ মানেই রক্তক্ষরণ। আমাদের ইতিহাসকে একটু আপডেট করা দরকার। যেন আন্দোলন হয় কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি না হয়, কোন রক্তক্ষরণ না হয়। এখনো আমরা মিডিয়া খুঁজে বেড়াই কিন্তু এমন কিছু করা দরকার যাতে মিডিয়া আমাদের খুঁজে বেড়ায়। ডেমো হিসাবে কেন্দ্রীয় কমেটি থেকে এক আধ বেলা শুধু ক্লাস বন্ধের ডাক আসতেই পারে। সব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীগণ যেহুতু কোটা সংস্কারের দাবির পক্ষে একমত তাই প্রতিষ্ঠান কে ছুটি দিয়ে ঘরেবসে নিরব ও নিরাপদ আন্দোলন বেশি যুক্তিযুক্ত এবং তাতে জয়ও খানিকটা সুনিশ্চিত বলা চলে। শুনতে খারাপ শোনালেও এটা নতুন কিছু নয়। তাছড়া রাস্তায় মানুষের পথ আগলে জিম্মি করাই বা কোন দৃষ্টি থেকে ন্যায়সঙ্গত?

রাজপথে অবস্থান নিয়ে হয়তো রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশের টনক নড়ানো যায় কিন্তু রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত নয়। আমাদের এমন গঠনমূলক কিছু করা দরকার যাতে রাষ্ট্রযন্ত্রের টনক ইতিবাচকভাবে নড়ে উঠে এবং ফলে দ্রুত কোটা ব্যবস্থা সংস্কারে জনাবের মর্জি হয়। কোটা বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে সেই ২০১৩ থেকে! আরো কতটা ধীরে এগুলে লক্ষ্যে পৌঁছা যাবে? এবার বুঝি আন্দোলনের মাত্রা পরিবর্তনের সময় এসেছে...। এ সংগ্রাম সমাপ্ত হোক, কোটা ব্যবস্থা সংস্কার হোক।

(রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে, আশঙ্কা ও আবেগে নানান কথা বিক্ষিপ্তভাবে আসতেই পারে কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত নিতে হবে এসবের ঊর্ধ্বে থেকে)।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.