নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠকের মুগ্ধতাই আমার লেখার প্রেরণা, সত্য প্রচার আমার লেখার উদ্দেশ্য আর মিথ্যাকে বিনাশ করে দিকেদিগন্তে সত্যের আলোকচ্ছটার বিচ্ছুরণই আমার লেখার চূড়ান্ত লক্ষ্য।

বিদ্রহীসূত

রাকীব আল হাসান, সহকারী সাহিত্য সম্পাদক, দৈনিক বজ্রশক্তি।

বিদ্রহীসূত › বিস্তারিত পোস্টঃ

সবসময় কি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়?-২য় পর্ব

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩০

আমার এক ডাক্তার বন্ধু আছে। সে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ। তার চেম্বারে একদিন গেছি দেখা করতে, চিকিৎসার উদ্দেশ্যে নয়, শুধুই দেখা করার উদ্দেশ্যে। তার কাছে একজন চর্মরোগে আক্রান্ত রোগী এসেছে, তার সমস্ত শরীরে চুলকানি, কিন্তু রোগীর অদ্ভুত চাওয়া। সে তার চুলকানি সারাতে চায় না, সে শুধু চুলকানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। সে চায় তার চুলকানি থাক, কিন্তু যেন খুব বেশি না ছড়ায়, সে মৃদু ভাবে যেন চুলকাতে পারে। আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, আপনি চুলকানি সারাতে চান না কেন? সে বলে- চুলকাইতে অনেক ভাল লাগে। এর আগেও নাকি সে ঔষধ খেয়ে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, কিন্তু মাঝে মধ্যেই এটি সাংঘাতিক রকম বেড়ে যায়, তখনই লোকটি দুশ্চিন্তায় পড়ে। কিছুক্ষণ পর আমার বন্ধু প্রেসকিপশন লিখে দিলে সে চলে গেল।

আমার বন্ধু আমাকে বলল- লোকটি নিজেই তার অসুখ সারাতে চায় না, নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়, আমিই বা কেন সারাতে চাইব? আমি তো কিছুদিন পর পর মোটা অঙ্কের ভিজিট পাব, সুতরাং রোগ না সারলেই ভাল।

আসলে রোগ কখনো নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় না, এটি নির্মূল না করলে বাড়তেই থাকে এবং এক সময় ছোট্ট রোগও বিপদের কারণ হতে পারে, এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে।

আজকে আমরা যে সিস্টেমের মধ্যে আটকা পড়ে আছি সেখানে যে সরকারই নির্বাচিত হোক না কেন, ক্ষমতায় এসে তারা সমাজের চুলকানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। সুদ, ঘুষ, দুর্ণীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসায়, বেশ্যাবৃত্তি ইত্যাদির মতো সামাজিক চুলকানিগুলি পুষে রেখে, নিয়ন্ত্রণে রেখে, আচতে আচতে চুলকিয়ে মজালুটতে চায়, স্বার্থ সিদ্ধি করতে চায়, ফায়দা হাসিল করতে চায়। না হলে মদের লাইসেন্স, বেশ্যালয়ের অনুমোদন, সুদের পূর্ণ সমর্থন, ঘুষের সুযোগ সৃষ্টি, সন্ত্রাসকে লালন করার প্রয়োজন কোথায়? এই সামাজিক চুলকানিগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলেও কি সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়? এক সময় এটি বিপদের কারণ হতে পারে, এমনকি মৃত্যুও ঘটাতে পারে।

হরতাল, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলি নির্মূল করতে চায় না, তারা চায় এগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রেখে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে। না হলে আওয়মী সরকার এতসব আইন পাশ করতে পারে, কিন্তু হরতালের বিরুদ্ধে তো কোন বিল উত্থাপিত হোল না। মোটকথা হোল গণতন্ত্রের নামে আমরা যে বিষ বড়ি খেয়েছি তা যতদিন আমাদের পেটে থাকবে ততদিন আমাদের এই রোগ বয়ে নিয়ে বেড়াতেই হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.