নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠকের মুগ্ধতাই আমার লেখার প্রেরণা, সত্য প্রচার আমার লেখার উদ্দেশ্য আর মিথ্যাকে বিনাশ করে দিকেদিগন্তে সত্যের আলোকচ্ছটার বিচ্ছুরণই আমার লেখার চূড়ান্ত লক্ষ্য।

বিদ্রহীসূত

রাকীব আল হাসান, সহকারী সাহিত্য সম্পাদক, দৈনিক বজ্রশক্তি।

বিদ্রহীসূত › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাংবাদিকদের প্রতি ডাক্তারদের বিরূপ মনোভাব কেন?

০৯ ই মে, ২০১৪ রাত ১:৪১

গত কয়েকমাস ধরে বিষয়টি খুব বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতালে সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে ডাক্তারদের হামলার শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। অনেক হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে কর্তৃপক্ষ। ইদানীং কোন কোন হাসপাতালে সাংবাদিকদের চিকিৎসা দিতেও অস্বীকৃতি জানাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। সাংবাদিকদের প্রতি ডাক্তার বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, সাংবাদিকদের প্রতি তাদের এই বিরূপতার কারণ কী?

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘ডাক্তারদের অবহেলায় এক রোগীর মৃত্যু’র ঘটনায় রোগীর স্বজনদের সাথে ইন্টার্নি ডাক্তারদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষানবিস চিকিৎসকরা রোগীর ৮-১০ জন স্বজনকে মারধর করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে একুশে টেলিভিশনের একজন প্রতিনিধি হাসপাতালে গেলে শিক্ষানবিসরা তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন ও তাকে মারধর করে বের করে দেন। খবর পেয়ে সাংবাদিক নেতারা হাসপাতালে ছুটে গেলে আরেক দফা হামলা চালান তারা। এ সময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। তাদের ক্যামেরাও ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এর প্রায় ২ মাস পর গত এপ্রিলে মেডিক্যাল কলেজটির জরুরি বিভাগ ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের নোটিস বোর্ডে একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি সাটিয়ে দিয়ে তাতে লেখা হয়, “দালাল ও সাংবাদিক প্রবেশ নিষেধ” এবং “কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেনা”। অবশ্য গণমাধ্যমে এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে তা সরিয়ে ফেলা হয়। এই ২ মাস সময়ের মধ্যে দেশের আরো কয়েকটি হাসপাতালে সাংবাদিকরা ডাক্তারদের হামলা, মারধর ও ক্যামেরা ভাঙচুরের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও রাজধানীর মিডফোর্ট হাসপাতালের ঘটনায় গণমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এপ্রিলের শেষ দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজেও সাংবাদিক প্রবেশের ক্ষেত্রে নীতিমালা আরোপ করে সীমাবদ্ধতা জারি করা হয়। পরে অবশ্য তা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ গত ৬ তারিখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে ও তার বন্ধুদের সাথে ইন্টার্নি ডাক্তারদের বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এবারও সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ইন্টার্নি ডাক্তাররা সাংবাদিকদের উপর অহেতুক চড়াও হয়ে কয়েকজনকে আহত ও ক্যামেরা ভাঙচুর করে। এদিকে ৭ তারিখে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি একজন স্থানীয় সাংবাদিককে হাসপাতালের কয়েকজন ইন্টার্নি ডাক্তার জানান, ঐ হাসপাতালে সাংবাদিকদের কোন চিকিৎসা দেওয়া হবে না। ফলে তিনি ঐ হাসপাতাল ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। যদিও পরবর্তীতে ঐ সাংবাদিকের চিকিৎসায় দায়িত্বরত ডাক্তার ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তিনি ইন্টার্নি ডাক্তারদের এই বক্তব্যের ব্যাপারে অবগত নন বলে দাবি করেন।

এভাবে সাংবাদিকদের উপর ডাক্তারদের বিশেষ করে শিক্ষানবিস ডাক্তারদের হামলা, হাসপাতালে ঢুকতে সাংবাদিকদের উপর কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু কেন? সাংবাদিকদের সাথে তাদের বিরোধ কোথায়? ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অধিকাংশক্ষেত্রেই তাদের অনিয়ম, অবহেলা, রোগীর স্বজনদের সাথে বিবাদ বা কোন দুর্নীতির সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করতে গেলেই তারা সহিংস হয়ে উঠছেন। তারা সাংবাদিকদের ঢুকতে দিচ্ছেন না, আটক করে মারধর করছেন, ক্যামেরা ভেঙে ফেলছেন, সাংবাদিকদেরকে বের করে দেওয়ার মত বে-আইনী কর্মকাণ্ডের আশ্রয় গ্রহণ করছেন। প্রশ্ন উঠা খুব স্বাভাবিক, তারা কি কিছু লুকাতে চাচ্ছেন? তারা কি আশঙ্কা করছেন যে সাংবাদিকদের অবাধ বিচরণে তাদের কোন স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটছে বা ঘটবে? তারা কি তাদের অনিয়ম বা অন্যায়গুলো লুকিয়ে রাখতে চাইছেন? ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে এমনটা মনে হওয়া অযৌক্তিক হবে না। তথ্য, সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করতে রাষ্ট্রের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত জায়গা ছাড়া যে কোন জায়গায় প্রবেশের অধিকার রয়েছে সাংবাদিকদের। রাষ্ট্রের আইনই তাদের এই অধিকার দিয়েছে। সুতরাং সংবাদ সংগ্রহে কোন সাংবাদিককে বাধা দেওয়া স্পষ্টত আইন লঙ্ঘন। তবে তারা যদি অনাকাক্সিক্ষত কোন ঘটনার কথা বিবেচনা করে সাংবাদিকদের প্রবেশে নীতিমালা জারি করতে চান, তবে তা অবশ্যই হতে হবে প্রচলিত আইনে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সাথে সঙ্গতি রেখে যা সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে পরিলক্ষিত হয় নি। এই ধরনের আচরণ ডাক্তারদের স্বচ্ছতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তাছাড়া ডাক্তার বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের আচরণের পশ্চাতে প্রকৃত কারণও অনুসন্ধান করা দরকার।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মে, ২০১৪ রাত ২:৪৮

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: কিছু মনে করেন না, আমার ব্যক্তিগত ধারণা, সাংবাদিকদের সামনে আরো কঠিন দিন আসতেছে। এবং এজন্য একমাত্র দায়ী আবহমান কাল ধরে চলে আসা হলুদ সাংবাদিকতা।

চিকিতসকেরা যদি সত্যি সাংবাদিকদের প্রতি বিরূপ হয়, তাহলে আসলেই খারাপ।

আপনার কি ধারণা সাংবাদিকদের উপর চিকিতসকেরা, মেডিকেল ছাত্র, ইন্টার্ন রা খেপে উঠতেছে কেন ?

২| ০৯ ই মে, ২০১৪ রাত ২:৪৯

অফ দ্যা পিপল, বাই দা পিপল, ফর দা পিপল বলেছেন: আপনি সাংবাদিকদের ভালো বলছেন কি? ডাক্তারদের চেয়ে সাংবাদিকরা কয়েক কোটি গুন বেশি বদ নয় কি? ইনিয়ে বিনিয়ে সত্যকে মিথ্যা মিথ্যাকে সত্য বানানোর অপরাধে কয়েকজন সাংবাদিকরে আইনের আওতায় আনা উচিত নয় কী?

৩| ০৯ ই মে, ২০১৪ রাত ৩:০২

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: আর একটা প্রশ্ন আছে, কোন কোন দেশে দুর্দান্ত প্রতাপশালী সাংবাদিকেরা চিকিতসক, নার্স, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কারো অনুমতির তোয়াক্কা না করে স্টেরিলাইজেশন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা না রেখে ক্যামেরা আর ফ্ল্যাশলাইট নিয়ে অপারেশন টেবিলে শোয়া রোগীর অনুভুতি জানতে চায় ?


এরকম যদি কখনো ঘটে, এবং আপনার স্ত্রী বা আপনার সন্তান যদি অপারেশন এর টেবিলে থাকে, সার্জন চিন্তিত কিভাবে কি করবে, এমন সময় মহা ক্ষমতাশালী সাংবাদিকেরা ঢুকে পড়ল, তখন আপনি করবেন রোগী হলে ? বা আপনার সার্জন কি করবেন বলে আশা করবেন ?

আমার ক্ষেত্রে এমন হলে, বেয়াদব সাংবাদিক যারা এমন করে ঢুকে পড়বে, তাদের কে অনুরোধ করতাম না, সরাসরি কান ধরে বের করে দিতাম।

ধন্যবাদ।

৪| ০৯ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৮

উড়োজাহাজ বলেছেন: Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.