নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠকের মুগ্ধতাই আমার লেখার প্রেরণা, সত্য প্রচার আমার লেখার উদ্দেশ্য আর মিথ্যাকে বিনাশ করে দিকেদিগন্তে সত্যের আলোকচ্ছটার বিচ্ছুরণই আমার লেখার চূড়ান্ত লক্ষ্য।

বিদ্রহীসূত

রাকীব আল হাসান, সহকারী সাহিত্য সম্পাদক, দৈনিক বজ্রশক্তি।

বিদ্রহীসূত › বিস্তারিত পোস্টঃ

মূল্যায়নের মাপকাঠি যখন কেবলই অর্থ

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৭

যখন থেকে মূল্য কেবল অর্থ দ্বারা নির্ধাণ করা শুরু হলো তখন থেকে কিছু অমূল্য সম্পদ মূল্যহীন হতে থাকলো। সত্যবাদিতা, আতিথেয়তা, সেবাপরায়ণতা, ন্যায়পরায়ণতা, দয়া, মায়া, ভালোবাসা, বিশ্বাস ইত্যাদি অমূল্য সম্পদ তার দ্যুতি হারিয়ে নিষ্প্রভ হয়ে যাচ্ছে, অর্থ দ্বারা এগুলির মূল্যায়ন সম্ভব নয় বলে মূল্যহীন হয়ে যাচ্ছে।

মায়ের ভালোবাসা, পিতার অপার স্নেহ, শিক্ষকের জীবনগড়া শাসন ইত্যাদি মহামূল্যবান সম্পদগুলোও আজ সমাজ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। শিক্ষকের মর্যাদা আজ বেতনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। আমরা যে পাশ্চাত্যদের অন্ধ অনুকরণ করে চলেছি সেই পাশ্চাত্য সমাজে মা-বাবার ভালোবাসা প্রায় অনুপস্থিত। শুধু অর্থ দিয়েই সন্তানের প্রতি কর্তব্য পালন করে তারা। সন্তানও তাই সে ঋণ অর্থ দ্বারাই পরিশোধ করে, কখনো বা সেটাও করে না। আমাদের সমাজও দিন দিন সেদিকেই যাচ্ছে।

তরুণীরা এখন টাকাওয়ালা স্বামী পেতে চায়, মেয়ের বাবা-মায়ের দৃষ্টিও জামায়ের পকেটের দিকেই। ভালোবাসা, সচ্চরিত্র- এগুলোর কোনো মূল্য নেই এখন। ছেলেরাও টাকাওয়ালা শ্বশুর খোঁজে।

সমাজে তারই সম্মান বেশি যার অর্থ বেশি। ভোটে জিতে বিত্তশালী ব্যক্তিগুলোই জনপ্রতিনিধি হচ্ছে, চরিত্রবাণ লোকগুলো সর্বত্র তিরস্কৃত হচ্ছে। লেখকরা লিখছে অর্থের জন্য, ছাত্ররা পড়ছে অর্থ উপার্জনের জন্য, ডাক্তাররা অর্থের জন্য চিকিৎসা করছে (রোগীরা তাদের খদ্দেরে পরিণত হয়েছে), নামের সাথে অনেকের সমাজসেবক, দানশীল ইত্যাদি বিশেষণ যুক্ত করা হলেও দেখা যাচ্ছে মূলত আর্থিক স্বার্থেই সে এগুলো করছে।

যখনই কোনো জিনিসের মূল্য কেবল অর্থ দ্বারা নির্ধারণ করা হয় তখন সেটা পণ্যে পরিণত হয়। সেবাগুলো যখন পণ্যে পরিণত হয় সমাজ থেকে তখন মানবতা হারিয়ে যায়। এখন সাধারণ জনগণ খদ্দেরে পরিণত হয়েছে। পুলিশের কাছে তারা খদ্দের, ধর্মজীবীদের কাছে তারা খদ্দের, ডাক্তারের কাছে খদ্দের, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ সকলের কাছেই তারা কেবল খদ্দের। এভাবে পাশ্চাত্যের কনজিউমারিজম সমস্ত কিছুকে পণ্য বানিয়ে ফেলেছে আর সাধারণ মানুষকে খদ্দেরে পরিণত করেছে।

এই সিস্টেমের কারণে আমাদের সমাজ এখন চরম স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছে। সমাজ থেকে নীতি-নৈতিকতা সব হারিয়ে যাচ্ছে, চরমভাবে অন্যায়, অবিচার, অশান্তি, হত্যা, ধর্ষণ, রাহাজানি ইত্যাদি বেড়ে যাচ্ছে, সমাজ ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে। এ থেকে মুক্তি দিতে পারত যে ধর্ম সেই ধর্মকেই বানিয়ে ফেলা হয়েছে পণ্য। ধর্ম বলতে মানুষ এখন বোঝে মোল্লাকে টাকা দেওয়া, মসজিদ-মাদ্রাসায় দান করা, হজ্জ করা, নামাজ-রোজা করা।

এখন সমাজকে বাঁচাতে হলে ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে- ধর্ম এসেছে মানুষে কল্যাণে, নিঃস্বার্থভাবে মানুষের কল্যাণ করা, মানুষের দুঃখ, কষ্ট হৃদয়ে ধারণ করা ও সেটা দূর করবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করাই ধর্মের মূল কাজ। স্বার্থপর মানুষ কখনো জান্নাতে যেতে পারবে না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩

তারেক ফাহিম বলেছেন: বিশ্লেষন ভালো লাগলো।

ব্লগের প্রথম অংশটি একটু বেশি ভাবায়।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৭

বিদ্রহীসূত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। মানুষ তো ভাবছে না, অন্ধভাবে পাশ্চাত্যের অনুকরণ করে চলেছে। বস্তুবাদ ও পুঁজিবাদের ফল এটা।

২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: ভাইরে এখনব মানুষ শুধু টাকা চিনে। সেই টাকা চুরি বা দুর্নীতির হোক, কোনো কিছু আসে যায় না।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২১

বিদ্রহীসূত বলেছেন: সেটাই তো সমস্যা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.