![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্ন দেখা কিন্তু খুব মজার একটা ব্যাপার। সেটা জেগে হোক আর ঘুমের মধ্যে, কোন রেস্ট্রিকশন আর বাউন্ডারি কন্ডিশন নাই। খুব ছোটবেলা যখন ঘুমতে গিয়ে ঘুম না আসলে, ঘুম আসার আগ পর্যন্ত স্বপ্ন দেখতাম। অদ্ভুত ছিল স্বপ্ন গুলো, যখন যেটার দরকার ছিল সেটা নিয়ে এ স্বপ্ন দেখতাম। যেমন, আম্মুর বকা ছাড়া সারাদিন পুকুরে গোসল করা, কয়েক শত ডানো গুড়া দুধের কৌটা আর মেগগাইবার বিস্কিট নিয়ে বেলুনে করে আকাশে উড়ে যাওয়া, মাটির নিচে গোয়েন্দা হেডকোয়ার্টার বানানো, একটু বড় হওয়ার পর ফোর্ড এর মুসতাং জিটি কনভার্টিবল গাড়ি, রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব এ খেলা কিনবা অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার মত উদ্ভট চিন্তা মাথায় এসেছে। বাই ডেফিনেশন এগুলো সবই দিবাস্বপ্ন যা পূর্ণ হবার নয়। কিন্তু আমি এমনও স্বপ্ন দেখেছি যা পুরন হতেই পারত কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা হয়নি। স্বপ্ন দেখা থেমে থাকে নি।
টিউশনি করে রাস্তা দিয়ে যখন হেটে আসতাম, চাকুরী পেয়ে এখন যখন রিকশা সিএনজি তে চড়ি তখন পাশ দিয়ে সাঁই সাঁই করে ছুটে ধুলি উড়িয়ে যাওয়া টয়োটা টাকে দেখে আমি স্বপ্ন দেখি একদিন আমিও ওই রকম একটা গাড়ির পিছনের সিটে বসে থাকব। এ রকম হাজারো স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো দিবাস্বপ্ন না, এবং পুরন হওয়া হয়ত সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু সে স্বপ্নগুলো পুরন হওয়ার আনন্দ কমতে কমতে প্রায় শূন্যে এসে পৌঁছে গেছে। কিন্তু আমি এখনও স্বপ্ন দেখি।
বেশ কিছু দিন আগের কথা পরীবাগ থেকে বাসাবো আসছিলাম রিকসা করে। একা রিকসায় চড়লে রিক্সাচালকদের সাথে কথা বলতে ভালো লাগে। তারা খুব সহজ মানুষ হয়, মন খুলে কথা বলে। সহজ মনের মানুষদের সাথে ৫-১০ মিনিট কথা বললে মন ভালো হয়ে যায়। আর কিছু মানুষ আছে কথা শুনার আগেই পকেটে হাত দিতে হয় হেডফোন এর জন্য। যাইহোক লোকটা এইচ এস সি পাস, এদিক ওদিক থেকে কিছু টাকা মেনেজ করে একটা প্রাইভেট কলেজে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়েছে। একটা সেমিস্টার কোনোমতে রিকশা চালিয়ে লেখাপড়া করেছে, কিন্তু এর পরের সেমিস্টার এর জন্য টাকা মেনেজ করতে পারে নাই। আর সারাদিন রিকশা চালিয়ে লেখাপড়াও করা যাচ্ছে না। তাই সে সেই কলেজে ইস্তফা দিয়ে তার এসএসসি আর এইচএসসি এর সার্টিফিকেট আনতে যায়। তখনি বাধে বিপত্তি সেই কলেজ তাকে সোজা বলে দেই তাকে ওখানে পরতেই হবে টাকা দিয়ে নতুবা একটা বড় অঙ্কের টাকা দিতে হবে তার নিজের অর্জিত এসএসসি আর এইচএসসি সার্টিফিকেট এর জন্য। বেচারা সোজা মানুষ টাকার ভয়ে সার্টিফিকেট এর কথা ভুলে গেছে। সে এখন রিকশা চালানোকে পেশা নিয়ে নিয়েছে। ভাবলাম সার্টিফিকেট গুলো উদ্ধারের অনেক পথই তো আছে কিন্তু এতে এই লোকের কিচ্ছু আসে যায় না। লোকটা বেশ স্মার্ট, সে আমাকে বলতেছিল আমি জানি আমরা গরিব কিন্তু আমরা আপানাদের থেকে ভালো আছি কারন আমদের চিন্তা কম। আপনারা যা আয় করেন তা দিয়ে আপনাদের সমাজের মানুষের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে বেশ কষ্ট হয়, কিন্তু আমারা দিন শেষে গিয়ে আরামের ঘুম দিতে পারি। লোকটা অপটিমিস্টিক, রিয়েল অপটিমিস্টিক। অন্যের কথা না ভেবে নিজের যা ইচ্ছে করা পরে রিগ্রেট এর পরিবর্তে বলা আমি অপটিমিস্ট, এরা ভণ্ড আর খুব ভয়ংকর মানুষ। যাইহোক আমি জিজ্ঞেস করলাম আপনার স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে করে না? সে সোজাসুজি উত্তর দিল না, আমি আমার জীবন থেকে যা পাওয়ার পেয়ে ফেলসি। আমি আর স্বপ্ন দেখি না। হা ঠিক বলছেন উনি, উনার মত সবাই হার মেনে নিচ্ছে নিয়তির কাছে। আর আমাদের দেশে স্বপ্ন দেখা মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এর ভবিষ্যৎ নিয়ে পজেটিভ চিন্তা করার মানুষ খুব কম। বাংলাদেশ এর বেশির ভাগ মানুষ এখনও জীবনযাত্রার সর্বনিন্ম মানের চেয়ে নিচে বসবাস করছে। তাঁদের কাছে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল সারভাইব করা। এসব স্বপ্ন টপ্ন দেখার টাইম নাই।
কিন্তু আমি এখনও স্বপ্ন দেখি। হোকনা সেটা গুড়া দুধ আর মেগগাইবার বিস্কিট এর।
পুনশ্চ, আর সবার মত, সুশ্রী স্মার্ট রুচিশীল
একটা বউ যারা সাথে সারাদিন ফিফা আর এনএফএস খেলতে পারব, পোড়া কপাল আমার এই স্বপ্ন মনে হয় না আর এ জীবনে পুরন হবে।
২| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৪:২৪
কেএসরথি বলেছেন: হাহা আজকাল অনেক মেয়েরাও কিন্তু ভিডিও গেম খেলে।
++
৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৮:১৫
***মহারাজ*** বলেছেন: ভালো লাগলো পড়ে
৪| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৮:৪১
অচেন১৯৯১ বলেছেন: কিন্তু সে স্বপ্নগুলো পুরন হওয়ার আনন্দ কমতে কমতে প্রায় শূন্যে এসে পৌঁছে গেছে। কিন্তু আমি এখনও স্বপ্ন দেখি| ভাল লাগল
৫| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:২৭
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
আশা কির ফিফা আর এনএফএস যোগ্য সাথী পেয়ে যাবেন।
৬| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:৫৭
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: সুন্দর উপস্থাপন। ভালো লেগেছে। দিবাস্বপ্ন চলুক।।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ২:৩১
চাঁন_মিয়াঁ বলেছেন: ভালো লিখেচেন।