নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জিরো

জিরো

জিরো › বিস্তারিত পোস্টঃ

অফ-হোয়াইট শার্ট

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৩:৪০


লাবণ্য বলল- আপনি একদিন একটা অফ-হোয়াইট কালার এর শার্ট , ব্লাক জিন্স আর রিমলেস একটা চশমা পরবেন। ঠিক আছে???
রিয়াদ মুখে একটা হাসি নিয়ে বলল- ওকে তাই হবে। এই কমপ্লিমেন্ট টা রিয়াদ এর সারাজীবন এর একটা বড় পাওয়া। এমন করে কেউ কখন ও বলে নি। কিন্তু সেই সাথে একটা অপূর্ণতার কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে রিয়াদ এর। রিয়াদ এর মন চাচ্চে এখন ই যেয়ে এমন সব পরে লাবন্যর সামনে হাজির হতে। কিন্তু , দুঃখের বিষয় এইটা যে অফ হোয়াইট কালার এর শার্ট, ব্লাক জিন্স , রিমলেস ফ্রেম এই গুলার একটা ও নেই তার। সবকিছুই কিনতে হবে। রিয়াদ সবে মাত্র জবে ঢুকছে। এখন ও একমাস ও হয়নি। প্রথম মাসের বেতন পেলে সে এই সব গুলা কিনে তার স্বপ্ন কন্যার সামনে হাজির হবে।

রিয়াদ ঠিক ই বেতন পেল, সে সবই কিনলো , সব কিছু একসাথে পরলো, কিন্তু !!! আফসোস! সে লাবণ্য কে দেখাতে পারলো না। সে এইসব পরে অনেক খুজেছে লাবণ্যকে শুধু একবার দেখানোর জন্য, কিন্তু দুর্ভাগ্য , লাবণ্যর ইচ্ছামত সেজে তার সামনে দাড়ানর মত কপাল তার হয়নি। লাবন্যর অনেক সময়ের অনেক ইচ্ছার কথা রিয়াদ চুপ করে শুনেছে, কিন্তু পুরন করতে পারে নি, হয়ত অর্থের জন্য সবকিছু অনর্থ হয়ে গেছে।

লাবন্যর ছোট ছোট চাওয়া গুলা, ছোট ছোট চাহিদা গুলা রিয়াদ এখন পুরন করতে পারে, সেইসব এর থেকে আরো বড় বড় চাহিদাও পুরন করার মত সামরথ আল্লাহ হয়ত রিয়াদ কে দিছে, কিন্তু শুধু সেই মানুষ টাই পাশে নাই। হয়ত আর কিছুটা দিন কাছে থাকলে রিয়াদ তার সব ইচ্ছা, চাহিদা, শখ গুলা লাবন্যর পায়ের কাছে এনে দিতে পারতো।

অনেক স্বপ্ন ছিল রিয়াদ এর চোখে লাবণ্যকে নিয়ে।রিয়াদ এর তেমন কোন স্বপ্ন ছিল না, লাবন্যর স্বপ্ন গুলা পুরন করায় ছিল রিয়াদ এর জীবনের সব থেকে বড় স্বপ্ন। যে স্বপ্ন পুরন করার জন্য হয়ত নিজের দিকেও তখন খেয়াল দিতে পারে নি রিয়াদ। রিয়াদ এর চেহারা, শরীর দিন দিন কেমন যেন ভয়ংকার হয়ে যাচ্ছিল। চেহারা কালো হয়ে গেছিল, শরীর এর ওজন কমতে শুরু করেছিল। দেখলে আসলেই তেমন কণ সুশ্রী ছিল না। নিজের চেহারা, নিজের শরীর দেখে নিজেই কাদতো তখন। তারপর ও মনে অনেক সাহস ছিল, সে জানতো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। লাবন্যর মুখের দিকে তাকালে , ওর হাসি দেখলে কেমন যেন সব ক্লান্তি, ক্ষুধা সব নিমেষেই হারিয়ে যেত। সেই যেন তখন তার বাচার ওসিলা ছিল, আল্লাহ হয়ত লাবণ্যকে তার বাচার অসিলা হিসেবে পাঠিয়েছিলেন, রিয়াদ এর শক্তি হিসাবেই তাকে পাঠিয়েছিলেন।

আজ লাবণ্য নেই, কিন্তু এখন ও রিয়াদ জীবন যুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে সেই লাবন্যর অপেক্ষায়। আর তার শক্তি এখন ও সেই লাবণ্য, লাবন্যর হাসি আর মায়া মাখা মুখ খানা। এখন আর লাবন্যর মুখ দেখতে পারে না রিয়াদ , কিন্তু যখন অনেক বেশী ক্লান্ত থাকে, অনেক বেশী ক্লান্ত থাকে লাবন্যর মুখটা ভেসে উঠলে সব ক্লান্তি কেমন যেন হারিয়ে যায়। ডুবে যায় রিয়াদ যেন অন্য কোন জগতে, মায়ার জগতে হারিয়ে যায় । কিছুক্ষন অন্ধকারে হাতড়ানর মত হাতড়িয়ে বেড়ায় রিয়াদ ঠিক যেমন কোন অন্ধ মানুষ তার ছড়িটা হাতড়িয়ে বেড়ায় তেমন রিয়াদ ও সেই মায়ার জগত এ হাতড়িয়ে বেড়ায় লাবণ্যকে।

সময় টা আসলেই অনেক নিষ্ঠুর। কিছু কিছু মানুষের কাছে সময় আসে না। আজো লাবন্যর সেই ছোট ছোট চাওয়া গুলা নিয়ে অপূর্ণতায় দিন কাটায় রিয়াদ। জানে না সে আদৌ কোন দিন লাবন্যর ইচ্ছা গুলা পুরন করতে পারবে কি না?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.