![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালোবাসার সংজ্ঞা কি তা আমি জানি না। এর বিশেষ কোন ব্যাখ্যা আছে কিনা তাও জানি না। ভালবাসা টা কি এখন পর্যন্ত আমার কাছে অজানা। মাঝে মাঝে অনেক কিছুকেই ভালবাসা মনে করি, কিন্তু আমি নিশ্চিত না। তবে প্রায় বুকের ভেতর একটা চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করি, ব্যাথাটা আস্তে আস্তে কেমন যেন বাড়তে থাকে, সেই ব্যাথাটা বিষের মত মাথায় উঠে যায়। নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে। একটা সময় নিজেই বুঝতে পারি আমি আমার প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছি, কিন্তু কেমন যেন মনে হয় নিজের হাত পা বাঁধা কোন একটা অদৃশ্য সুতা দিয়ে। চাইলেও মুক্ত করতে পারি না সেই সুতা থেকে। তখন মনে হয় এইটাই হয়ত সাইড ইফেক্ট অব লাভ। যা হচ্ছে এইগুলা আমার ভালবাসার পার্শ্ব - প্রতিক্রিয়া থেকেই হচ্ছে ভাবতে ভাবতেই রিয়াদ একসময় ক্লান্ত হয়ে শরীর এলিয়ে দেয় বিছানায়, অফিসের চেয়ার এ, কিছু সময় চুপচাপ পড়ে থাকে এমন করে। অবশ্য তার কাছের মানুষদের কাছে এটা পরিচিত হয়ে গেছে। তারা এখন আর কেউ ভয় পায় না এই পরিস্থিতিতে।
লাবণ্য নেই অনেক দিন হয়ে গেছে। দিন এগোতে এগোতে প্রায় দুই বছরের দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু আজ ও কোন কিছুই স্বাভাবিক হয়নি রিয়াদের। আজ ও একটা মুহূর্তের জন্য ভুলতে পারেনি লাবণ্য কে। তার সারা পৃথিবী জুড়ে এখন ও লাবন্যর বসবাস। কোন কিছুই ভাবতে পারে না লাবণ্যকে ছাড়া। আজ পর্যন্ত কোন মেয়ের ডাকে ও সাড়া দিতে পারে নি সে, এমন কি কারোর সাথে একটু কথা বলে হাল্কা হবে সে উপায় ও নেই তার, ভালোই লাগে না কিছুই।
রিয়াদ এর পরিবার থেকে অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছে সবাই বিয়ে দেবার জন্য। কোন কিছুতেই রাজী হচ্ছে না রিয়াদ। এমন কি একবার বাড়ি থেকে রাগারাগি করে বের হয়ে গেছে, এর পর থেকে সাবধান এ সবাই বিয়ের কথা তুলে, বাবা-মা নিজে আর কিছুই বলে না, কিন্তু অনেক কে নিয়োগ করেছে রাজী করানোর জন্য।
রিয়াদ এর কাছে মনে হয় লাবণ্য ছাড়া বুঝি আর কোন মেয়ে নেই। সে যেন তার পাশে অন্য কাওকে চিন্তায় করতে পারে না। কারোর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা ও বলতে মন চায়না তার। কেউ তার পাশে বসলেও তার বিরক্ত লাগে, কেউ ফোন দিয়ে তার সাথে কথা বললে ও মেজাজ টা খারাপ লাগে, মনে মনে বলতে থাকে কেন কেউ ফোন দিবে।
কেউ যদি তাকে ফোন না দেয় তাতেই সে খুশি। কেউ যদি তার কেয়ার নেয়ার চেষ্টা করে সেইটা তার আরো বিরক্তির। যে কেয়ার নিবে সে তার কাছে কনফার্ম খারাপ ব্যাবহার পাবে। সেই মানুষ গুলা অবাক হয়ে ভাবতে থাকে , কি করলাম আমি!!! মাঝে মাঝে প্রশ্ন করে বসে , কি করেছি আমি??
--- রিয়াদ একটু বিরক্তি নিয়েই বলে - কিছু হয়নি, আমাকে আমার মত থাকতে দেন, আমার কেয়ার নেয়া লাগবে না প্লিজ। মানুষ এর থেকে দূরে থাক্তেই কেন জানি অনেক ভাল লাগে তার।
রিয়াদ এর কাছে সব থেকে হাস্যকর লাগে কেউ যদি প্রেম এর কাহিনি বলে/ প্রেম বিসয়ক কিছু বলে। এত হাসি মিরাক্কেল/ কমেডি নাইট দেখলেও লাগে না। অনেক দিন আগে থেকেই একা হয়ে গেছে সে, তার কেন জানি কোন মানুষ ই সহ্য হয়না। একা থাকতেই বড্ড ভাল লাগে তার।
ভালবাসা কি তা না বুঝলেও ভালবাসার সাইড ইফেক্ট টের পায় রিয়াদ। লাবন্যর সাথে কথা না বলতে পারায় এখন তার কথা বলতেই মন চায় না। কথা গুলাও কেমন জানি হারিয়ে গেছে। একসময় লাবণ্য রিয়াদকে ফাজলামি করে বাঁচাল বলত, কিন্তু আজ সেই রিয়াদ হয়ে গেছে একদম চুপচাপ একটা মানুষ। এমন ও দিন আছে যেদিন পুরা দিন এ একটা কথাও বলে না কারোর সাথে রিয়াদ। কথা বলার মত কোন ইচ্ছা, উৎসাহ পায়না রিয়াদ। আফসোস !!! লাবণ্য যদি দেখতো আজ রিয়াদ কে, তাহলে হয়ত চিনতে পারতো না। হয়ত অবাক হয়ে কিছু সময় ভাবতো এই কি সেই রিয়াদ??? সেই বাঁচাল স্বভাবের মানুষ টা এখন কথা হারিয়ে ফেলেছে।
এমন অনেক কিছুই আজ রিয়াদ হারিয়ে ফেলেছে। বেচে আছে ,কিন্তু নিজের বলতে আজ তেমন কিছুই অবশিষ্ট নেই তার, হারাতে হারাতে সে সব ই হারিয়ে ফেলেছে, এমনকি নিজেকে ই হারিয়ে ফেলেছে। শুধু লাবণ্য টুকুই আজ রিয়াদ এর জীবনে অবশিষ্ট আছে, আর সেই টুকুই তার বাচার অবলম্বন ।
©somewhere in net ltd.