নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিভাবে পালাকার নাট্যদল গঠিত হল: কিছু সত্য কথন। পর্ব দশ। রেজা ঘটক

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৯

২০০২ সাল। আমরা তখন কাঁঠালবাগানের আমিন নিলয়ের বাসিন্দা। আমরা মানে আমিনুর রহমান মুকুল, আলী আহমেদ মুকুল (ছোট মুকুল), সুদত্ত চক্রবর্তী পবন, অজয় দাস, রিয়াজুল হক শিকদার, রেজাউল কবীর নাছিম, বসনিয়ান হ্যারি, ঐতিহাসিক মনি'দা, শেষের দিকে পুলক বিশ্বাস। তো ছোটো মুকুল আলাদা বাসায় চলে গেল। তখন আজিজ সুপার মার্কেটে দুই মুকুলের 'কীর্তি' নামে একটা প্রতিষ্ঠান ছিল। বিকালে অনেক সময় আমরা র্কীতি'র অফিসে গিয়েও আড্ডা মারতাম। একদিন আমিন নিলয়ে মুকুলের সাথে আসলো সোহাগ। আলিম আল রাজি (সোহাগ) আমার ভাইগ্না। আইসা দেখে নয়ন, হ্যারি, অজয় আর আমি গাঁঞ্জা ভাইয়া টাল। সোহাগ জিগাইলো, মামু, তুমি মুকুলের লগে মিশলা কেমনে? জিগাইল, ক্যান? কোনো সমস্যা? সোহাগ কইলো, মুকুল তো আমার বন্ধু, ও আবার তোমারও বন্ধু। দুনিয়াডা বড় ছোট্টরে মামু। সোহাগরে আড়ালে ডেকে নিয়া জিগাইলাম, আর কোনো সমস্যা? সোহাগ কইলো, আমাগো বন্ধুদের মধ্যে কেবল মুকুলই গাঁঞ্জা খায়। হের লগে তোমার বন্ধুত্ব? ভালোইতো? সোহাগরে আবারো জিগাইলাম, এছাড়া আর কোনো সমস্যা? সোহাগ জবাবে কইলো, না, মুকুল এমনিতে ছেলে ভালো। আর কোনো অসুবিধা নাই। তুমি, মামু এই জিনিস ধরলা কবে? কইলাম, এইডা তো কাদেরের আমলের কথা। সোহাগের বাবার নাম কাদের। আমার দুলাভাই। ভাইগ্নার কাছে কোনো কিছুতে ধরা খাইলেই আমি সব সময় কাদের দুলাভাইরে টাইনা আনি। সোহাগ কইলো, না মামু, কও না তুমি কবে থাইকা খাও? কইলাম, কাদের-ইতো আমারে ইহা খাওয়া শিখাইলো, এখন হের পোলারে কেমনে কই? সোহাগ আর আগায়নি। বাপের ইজ্জ্বত লইয়া টানাটানি আরকি। সোহাগ তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটকের উপর পড়াশুনা শেষ করে এমফিল করছিল। সম্প্রতি সোহাগ পৃত্র সন্তানের জনক হয়েছে। তো, আমরা কিছুক্ষণ আমিন নিলয়ে আড্ডা মেরে আজিজে গেলাম। পালাকারের দাপ্তরিক কাজ কারবার তখন ওই 'কীর্তি'তে হতো। যেমন চিঠি টাইপ করা, বা লোগো বানানো, বা ব্যানার বানানো, বা কোনো কিছু প্রিন্ট দেওয়ার মামলা থাকলে সব মুকুলের সেই অফিসে করতাম আমরা।

সেদিন থেকে বন্ধু মুকুল থেকে আমি হয়ে গেলাম মুকুলের মামু। কারণ, আমি সোহাগের যে মামু এটা মুকুল জানতো না। সেই থেকেই আমরা পরস্পর পরস্পরকে 'মামু' ডাকি। সোহাগকেও মুকুল পালাকারে আসার ব্যপারে বলেছিল। কিন্তু সোহাগ একটা এনজিওর চাকরি আর এমফিলের ঝামেলা রেখে আর আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেনি। তবে পালাকারের সকল খবরাখবর আর মুকুলের সর্বশেষ আপডেট সোহাগ আমার মাধ্যমেই পেতো। সোহাগদের বাড়ি বাগেরজাটের রামপাল। ওদের বাড়ির রান্নাঘরে বসে খেতে খেতে হরিণ দেখা যায়। ওদের বাসার ঠিক লাগোয়া খাল। খালের ওপারেই সুন্দরবন।

সোহাগ নাটকের উপর পড়াশুনা করলেও এনজিও'র চাকরি করতে গিয়ে ক্রিয়েটিভিটি সব খুইয়েছে। এখন পোলার বাপ। সেই হিসেবে আমি এখন নানা। বয়স তো কম হল না। তাই এই লেখায় আগের কথা কখনো পরে আসছে, পরের কথা কখনো আগে আসছে। এর লাই আপনেরা আবার মাইন্ড খাইয়েন না, ভাইজানেরা। খোকন কায়সারের একটা বিখ্যাত ডায়লগ মনে পড়ে গেল। খোকন ভাই চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসার আগেই আমাকে ফোন করতো। বলতো, ভাইজানেরা, আছেন ক্যামুন? মুই তো একটু গঞ্জে আইতাছি। আন্নেরা কি ঢাহায় আছেন? নাকি গেরামে গ্যাছেন গিয়া? খোকন কায়সার পালাকারের ফাউন্ডারদের একজন। আমিন নিলয়ের পরে আমরা কাঁঠালবাগানের বাজারের সাথে ১৯ নাম্বারে যখন উঠলাম, তখন খোকন ভাই ভাবীকে চট্টগ্রাম রেখে আমাদের সঙ্গে পুরাই ব্যাচেলর মাল হিসেবেই ছিলেন। শাহবাগের বাংলাদেশ বেতারে খোকন ভাইয়ের অফিস। সম্প্রতি ডিডি হয়েছেন। কিছুদিন কক্সবাজারের বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্রের প্রধান ছিলেন। এখন বান্দরবনে বাংলাদেশ বেতারের আঞ্চলিক প্রধান। খোকন ভাই পটুয়াখালীর মানুষ। দীর্ঘদিন চট্টগ্রামে থাকার কারণে এখন পুরাই চাঁটগাই। আমাদের সঙ্গে কথা বলার সময় বরিশালী টান যেমন থাকে, তেমনি চাঁটগার মিশ্রণে মিলিয়ে এক অন্য সুরসুরি তৈরি করেন। ভাইজানেরা, গঞ্জে আইলাম। রাজধানী ঢাকায় আসা মানে খোকন ভাইয়ের কাছে গঞ্জে আসার মতো ব্যাপার। হাট শেষে আবার ফিরে যান। এখন খোকন ভাই কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপ নিয়ে একটা মজার উপন্যাস লিখছেন। ধারাবাহিক ছাপা হচ্ছে কানাডা থেকে একটি অনলাইন পত্রিকা নতুনদেশে। সোনাদিয়ার টোটাল মজাটা খোকন ভাই'র উপন্যাসে পাওয়া যাচ্ছে। মুকুল জেলেদের জীবন নিয়ে একটা সুন্দর নাটক লিখেছিল। ওটা চট্টগ্রামের সম্ভবত অরিন্দমের প্রযোজনা। জলকন্যা না মৎস্যকন্যা কি যেনো নাম? আহারে বয়স? বয়স বাড়লে মেমোরি একটু আধটু বিট্টে করে। আমার সমস্যা হল, জীবনের কোনো ঘটনাই আমার কাছে ফেলনা মনে হয় না। গাঁজা খাওয়া। আড্ডা মারা। নাটক করা। গান করা। বিচি চুলকানো। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ও প্রাক্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হাবিবুর রহমান (শেলী) কইতেন, বিচি চুলকাতে নাকি ভারি মজা। কথাটা মিথ্যে না। যখনই সময় পাবেন, কোনো কাজ না থাকলে বিচি চুলকাবেন, ভাইজানেরা।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.