নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাজেট বিশ্লেষণ-পর্ব ১ ।। রেজা ঘটক

০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৫৫

আগামী অক্টোবর থেকে জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হবার কথা। সেই হিসেবে এই বাজেট বাস্তবায়নের দায়িত্ব পড়বে তিন সরকারের উপর। বর্তমান সরকার, নির্বাচন কালীন সরকার এবং নির্বাচনের পর যে সরকার ক্ষমতাসীন হবে, তারা। তাই এই বাজেটের পুরোপুরি বাস্তবায়ন নিয়ে প্রথমেই একটা সংশয় রয়েছে। তাই এটাকে নির্বাচনমুখী উচ্চাভিলাষী বাজেট বলাই ভালো। এই বাজেট জনগণের তেমন কোনো কাজে লাগবে না।



ক). নির্বাচনের বছর নির্বাচন কমিশনের জন্য বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে অনুন্নয়ন রাজস্ব খাতে ১ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা আর অনুন্নয়ন মূলধন খাতে ১০ কোটি টাকা। এই ১১৮৭ কোটি টাকা দিয়ে আগামীতে শাসক কে হবেন তা নির্ধারণের জন্য জনগণের টাকায় একটা তামাশার ভোট হবে!!! বাংলাদেশের মতো একটি গরিব দেশে শুধুমাত্র নির্বাচনের নামে এক হাজার কোটি টাকা খরচ করা গরিবের ঘোড়া রোগ ছাড়া আর কিছুই নয়।



খ). রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জন্য ২৩৯ কোটি টাকা। জাতীয় সংসদের জন্য ১৫৮ কোটি টাকা, যার মধ্যে অনুন্নয়ন রাজস্বের নামে (যা আসলে সাংসদের বেতন ভাতা) বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৩৯ কোটি টাকা। জনপ্রশাসন খাতে বাজেটে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩০ হাজার ২৮ কোটি টাকা। এই টাকা দিয়ে সরকারি চোর বদমাস বাটপার কালোবাজারীদের বেতন দেওয়া হবে। আর আমজনতার কর দিয়ে তা পরিশোধ করা হবে। বাজেটের এই চিত্র দেখেই বোঝা যায় একেই বলে মাথাভারী প্রশাসন। দুই লাখ টাকার উপরে বাজেট অথচ উন্নয়ন ব্যয়ের চেয়ে অনুন্নয়ন ব্যয় প্রায় সাড়ে তিন গুন বেশি। তারপর চুরি চামারি তো আছেই।



গ্). স্থানীয় সরকারের ব্যয় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়ের জন্য ২৬৩ কোটি টাকা আর পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য ২৫৬ কোটি টাকা। মোট স্থানীয় সরকারের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। সারা বাংলাদেশের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়ের চেয়ে তিন পার্বত্য এলাকার বরাদ্দ প্রায় সমান!! হায়রে পল্লী উন্নয়ন??? বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার সারা বছর কি করে? চুরি চামারি, লুটপাট, টেন্ডাবাজি, ঠিকাদারী, চাঁন্দাবাজি এসব। বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত স্থানীয় সরকারই কার্যকর হল না। নামে মাত্র ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান মেম্বার আছে। উপজেলা প্রশাসন তো সরাসরি স্থানীয় সাংসদের সঙ্গেই সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশে এলজিআরডি হল দুর্নীতির একটি বড় আকড়া। বাজেটে দুর্নীতি দমনের কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য নেই। তার মানে যে যেভাবে পারো চুরি করো, আমাদের দলে ভোটটা মারো। এভাবে বাজেট হয় না রে ভাই।



ঘ). বাজেটে কলা হচ্ছে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ। অংকের হিসেবে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ ১৭ হাজার ২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে ৬ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। এই টাকা কোথায় কিভাবে ব্যয় হয়? দলীয় পোলাপাইনদের মধ্যে নানাভাবে এই টাকা ভাগ হবার হিরিক বাংলাদেশে দেখে আসছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে গ্রেডিং সিস্টেমে এনে যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে তা আর দুনিয়ায় কোথাও নাই। যে হারে গোল্ডেন প্লাস বাড়ছে সে হারে শিক্ষার আসল চেহারা ধ্বংস হচ্ছে। ক্লাশরুমে পড়ানো হয় না। কোচিং সেন্টারের উপর গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। বছর বছর এতো টাকা কোথায় কিভাবে খরচ হয় আমজনতা কিছুই জানতে পারে না। তারপর রয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা, যখানে প্রতিবছর ইসলামের হেফাজত করার জন্য জঙ্গি প্রশিক্ষণ হচ্ছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে চলছে সার্টিফিকেট ব্যবসা। শিক্ষা খাত এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ একদিন শিক্ষাহীন ঝুড়িতে পরিনত হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ মাত্র ২০৪ কোটি টাকা যা দিয়ে ল্যাবের ঝাড়ু কেনার পয়সাও হবার কথা নয়। মাদ্রাসায় যা বরাদ্দ যায় তা যদি ল্যাবরেটরিতে যেতো তাহলে হয়তো একটা সুবাতাস দেখার সম্ভাবনা ছিল। বাজেটে শিক্ষা খাতের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট বলিষ্ট পদক্ষেপের কথা নেই। মুখে ২০১৪ সালের মধ্যে দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করার ধান্ধার মধ্যে দেশীয় ও আন্র্তজাতিক বাটপারেরা জড়িত। যাদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশনুা করে। আর এখানের আবদুলদের অক্ষর জ্ঞান দানের স্বপ্ন দেখে টাকা পয়সা ধান্ধা করার একটা স্থায়ী করাবার পাতানোর তামাশা চালাচ্ছে।



ঙ). বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে কম বরাদ্দ ধরা হয়েছে। মাত্র ৫ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা। ১৮ কোটির জনসংখ্যার দেশে স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ ৬ হাজার কোটি টাকাও না। তার মধ্যে আবার অনুন্নয়ন ব্যয় ৫ হাজার ৭০১ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রীর মাথা ঠিক আছে তো? আমাদের রাজনীতিবিদরা নিজেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান আমেরিকা, বৃটেন, সৌদি-আরব, থাইল্যান্ড সিঙ্গাপরু নিদেন পক্ষে ভারত। আর দেশের আম জনতার জন্য কোনো সুষ্টু স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার নাম গন্ধ নেই। নামে মাত্র এমবিবিএস পাসেরাও গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে চায় না। আর ভুয়া ডাক্তারের সংখ্যা, ভুয়া ল্যবের সংখ্যা, ভুয়া চিকিৎসা দেবার চিত্রের কথা তো বলাই বাহুল্য। কারণ, আমজনতার আবার চিকিৎসা!!!এভাবে হয় না রে ভাই।



বাজেট বিশ্লেষন ধারবাহিকভাবেইে করবো। তার আগে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর একটি সতর্কবাণী উল্লেখ করতে চাই। 'আগামী নির্বাচনে নির্বাচন করবো মাগার মন্ত্রী হবো না'-এই অমর বাণী দিয়ে মুহিত সাহেব হয়তো একটি রাজনৈতিক সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন! কিন্তু প্রায় সোয়া দুই লাখ কোটি টাকার বাজেটের অর্ধেক টাকা যে চুরি চামারি হবে, একথা প্রায় চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়। ভাই, সামনে নির্বাচন। নির্বাচনী খরচ কি গোয়ালের গরু বিক্রি করে জাগার করমু? পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল দল। সো, খরচ তুলতে হবে না। অতএব সাধু সাবধান। দেয়ালেরও কান আছে!!!



...................চলবে..............

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:১৫

সরকার৮৪ বলেছেন: ভালো লিখছেন

২| ০৮ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:১২

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: ভাল লেখা,,,,,,,,,,,,সময় উপযোগী,,,,,,,,,,,চলুক

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.