নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বন্ধুদের আমলনামা-৮ : : টপ্পার একনিষ্ট সাধক নয়ন মনি চৌধুরী ।। রেজা ঘটক

২৫ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৫৪

'সোনো গো দক্ষিণ হাওয়া, প্রেম করেছি আমি'...কিংম্বা 'না না আমারে শশী চেয়েও না'...বা 'তুমি এসেছিলে পরশু আজ কেন এলে না'...শচিন দেব বর্মণের এই গানগুলো সব সময় যার কণ্ঠে বাজে সে হল আমার বন্ধু নয়ন মনি চৌধুরী। নয়নের গানের গলা খুবই ভালো। কিন্তু বেচারা তার এই শক্তির সঠিক প্রয়োগ করলো না, এটাই আফসোস। বাংলাদেশে সঙ্গীত হয় না তবুও অনেকে শিল্পী, তারা আবার টেলিভিশনেও গায়। শুনলে বমি আসে। আর নয়ন সেই প্রতিভা থাকা স্বত্ত্বেও তার লালন পালন করলো না। নিধি বাবুর টপ্পা নয়ন এতো ভালো গায় যে, কেউ ভুল করে বলে বসতে পারে নিধি বাবু তোথায় গাইছে দেখি। 'কি করি আমি কি করি'..করতে করতে নয়ন শেষ পর্যন্ত টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গেই রয়ে গেল।

১৯৭০ সালের ৯ জুন চট্টগ্রামে নয়ন মনি চৌধুরী'র জন্ম। ছোটবেলায় বাবা হারাোনা বন্ধু আমার খুব কষ্ট করে নিজে লেখাপড়া শিখেছে। পাশাপাশি টিউশনি করে ছোটবোনকে ডাক্তারি পড়ার খরচ যুগিয়েছে। চিটাগাং পোর্ট প্রাইমারি স্কুল থেকে প্রাইমারি, চিটাগাং পোর্ট হাইস্কুল থেকে এসএসসি-তে ফার্স্ট ডিভিশান, চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ফার্স্ট ডিভিশান পাওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্টে এমবিএ ভর্তি হয় নয়ন। অনার্স মাস্টার্স শেষ করে সেই টিউশনির সঙ্গেই দীর্ঘদিন জড়িত ছিল। চট্টগ্রামের ডিভিশনাল কমিশনার, চট্টগ্রামের ডিসি, চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনারের ছেলেমেয়েরা প্রায় সবাই নয়নের ছাত্রছাত্রী। টিউশনি করার ফাঁকে নয়ন আড্ডা মারতো কলতান ক্লাবে। ছবি দেখা আর গান শোনা নয়নের নেশা।

কাঁঠালবাগানের আমিন নিলয়ে আমরা যখন আমিনুর রহমান মুকুলের নের্তৃত্ব পালাকার নাট্য দল গঠন করি, নয়ন তখন ঢাকায় ধানমন্ডিতে একটা অফিসে একাউন্ট্যান্টের চাকরি করতো। শেষ পর্যন্ত সেই চাকরিটা ছেড়ে দিল। নয়ন পালাকারের একজন ফাউন্ডার মেম্বর। পালাকারে যে দুইটি আনুষ্ঠানিক পদ তাতে আমরা দলের প্রধান অধিকারী বানালাম মুকুলকে। আর ম্যানেজার বাবু বানালাম নয়ন মনি চৌধুরীকে। পালাকার নাট্য দল নয়নের নের্তৃত্বে সিলেটে নাটক করতে গিয়েছিল একবার। ২০০৯ সালে ময়মনসিংহে পালাকারের একটি দলীয় সম্মেলন হয়েছিল জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে। সেই সম্মেলনে নয়নও হাজির ছিল। আমারও সেখানে থাকার কথা ছিল। কিন্তু ২৭ জানুয়ারি আমার মা মারা গেল। আমি ময়মনসিংহ যেতে পারলাম না। দলের সবাই ময়মনসিংহ বসেই আমার মায়ের মৃত্যু খবরটি পেয়েছিল।

চট্টগ্রাম ইপিজেডে কোরিয়ান কোম্পানি ইয়ং অনে নয়ন কিছুদিন এক্সিকিউটিভ পদে বেশ সুন্দর একটা চাকরি করেছিল। তখন অফিসের কাজে নয়ন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাওয়া আসা করতো বিমানে। সেই চাকরিও নয়ন ছেড়ে দিল। পরে ঢাকায় সেটেলড হবে এটাই ছিল ইচ্ছা। কিন্তু হল না। এক ফাঁকে নয়ন বিয়ে করলো। নয়নের দুই ছেলে। অঙ্কুর আর অরিন্দম। বর্তমানে নারায়নগঞ্জে একটি টেক্সটাইলে চাকরি করে নয়ন। গানে কেরিয়ার করতে চাইলে নয়নকে বাংলাদেশের অনেক গুনি শিল্পীদেরই কদর করতে হতো। কিন্তু নয়ন সেদিকে গেল না। নয়নের বক্তব্য সেই সচীন কর্তার গানের সঙ্গে মিলে যায়। 'কি করি আমি কি করি...বলরে সুবল বল রাধা...কি করি আমি কি করি... ব্রজেশ্বরী রায়কিশোরী..কি করি আমি কি করি...বৃন্দাবনের মধুবনে, এখন কোনো মধু নাই...বৃন্দাবনের যতো মধু, নিয়ে গেল রায় গো রায়...ব্রজেশ্বরী রায়কিশোরী আয় না রে ওই রাধেরে...আমি দূষিব না কারেও...দোষ দিয়া কি হবে রে..কপালে যা লিখন ছিল, তাই তো ফলে গেল রে...ব্রজেশ্বরী রায়কিশোরী আয় না রে ওই রাধেরে..কি করি আমি কি করি...বল না সুবল বল রাধা.....''

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:১৯

মানুষ নই বলেছেন: আমিও নয়নদার ছাত্র, আমি ও আমার বড় বোনকে দাদা দীর্ঘদিন পড়িয়েছেন। আমরা একসঙ্গে ক্রিকেটও খেলতাম রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমীর মাঠে; আহ, সেইদিনগুলো যদি আবার ফিরে পেতাম। অনেক ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন আর দেখা হলে নয়নদাকে তাঁর ছাত্রের তরফ থেকে আদাব বলবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.