| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রেজা ঘটক
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
আলোকিত মানুষ গড়ার কাজে সর্বদা নিয়োজিত কবি অলক চক্রবর্তী। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি নিয়ে সারা ঢাকা শহর ঘুরে বেরায় অলক। হৃদয়ে যার কবিতার আঁকর তার এমন লাইব্রেরি নিয়ে ঘোরাই কেবল মানায়। তবু যদি কিছু মানুষ বই পড়ে আলোর সন্ধান পায় ক্ষতি কি!
কবি অলক চক্রবর্তী'র জন্ম ১৯৭৬ সালের ১০ নভেম্বর চট্টগ্রামের পটিয়া থানার সুচক্রদণ্ডী গ্রামে। ছোটবেলা থেকেই কবি জাফর আহমদ রাশেদের কাছে সাহিত্যের অলিগলি'র পাঠ নিয়ে নিজেও সাহিত্য চর্চা শুরু করলো। রাশেদের সম্পাদনায় সাহিত্যের কাগজ 'আড্ডারু'র একজন নিয়মত কবি অলক।
আমার সঙ্গে অলককের পরিচয় রাশেদের মাধ্যমে। অলক ঢাকায় আসল একটা চাকরির ইন্টারভিউ দিতে। এক ইন্টারভিউতেই চাকরি হয়ে গেল। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি নিয়ে জগত ঘুরে বেড়ানোর চাকরি। বইয়ের সঙ্গে সব সময় ওঠাবসা। ব্যাপারটা খারাপ না। সন্ধ্যায় আমরা ধানমন্ডি নদীর পারে আড্ডা দিচ্ছি। রাশেদের সঙ্গে আসল অলক। দু'এক কথার পর থেকেই আমরা বন্ধু। তারপর প্রায় আট দশ বছর হয়ে গেল। মাঝে অলক খুলনা ছিল বছর তিনেক।
ওই সময় বিয়ে করেছে। বউয়ের নাম সুমী চক্রবর্তী। অলক-সুমী'র এক ছেলে। রবীন্দ্রনাথের গল্পের নায়ক অভীক। অভীক চক্রবর্তী। নিক নেম অক্ষয়। অলক খুলনা ঘুরে আবারো ঢাকায়। কিন্তু অনেক দিন দেখা হয় না। কারণ ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি নিয়ে সপ্তাহের ছয় দিন অলক গোটা রাজধানীর মানুষকে বই পড়তে দেয়। তারপর ছুটির আগের রাতে চট্টগ্রাম দৌড় মারে। ছুটি'র দিনটি পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে তারপর রাতে আবার ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দেয়। টাইট সিডিউল। আগের মতো আমরা যেহেতু ধানমন্ডি নদীর পারে আড্ডা মারি না। তাই ধানমন্ডি'র দিকে অলক বইয়ের লাইব্রেরি নিয়ে গেলেও আমাদের সঙ্গে দেখা হয় না।
অলকের একটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। 'তারা খসতে দেখলে ফুলের নাম নিতে হয়'। যদি কেউ তারা খসে পড়ার সময় ফুলের নাম না নেয়, তার কপালে নাকি দুঃখ আছে। সেই দুঃখের কোনো মা-বাবা নেই। তারা সাত ভাই এক বোন। তাদের বাড়ি বান্দরবনের চুম্বক পাহাড়ের চূড়ায়। সেখানে বোনটি সারাদিন বসে বসে ভাইদের জন্য রান্না করে। আর সাত ভাই গোটা বান্দরবনের সব উঁচু উঁচু পাহাড় ডিঙ্গিয়ে আচ্ছা মতো ক্ষুধা লাগিয়ে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে বলে আজও পেলাম না। কি পেল না সাত ভাই? বোনের জন্য সুন্দর একজন পাত্র।
পাত্রকে হতে হবে হিমালয়ের মতো দুঃসাহসী। নীলগীরির মতো তাগড়া জোয়ান। নাগেশ্বরী মন্দরি বোনের বিয়ে হবে বলে পবন ঠাকুরকে বসিয়ে রাখা হয়েছে সেখানে। কারণ, বোনের জন্য পাত্র মিললেই বিয়ে। আর তারপর একে একে সাত ভাইও বিয়ে করবেন একসঙ্গে। পবন ঠাকুরের একসঙ্গে পরপর অষ্ট বিয়ে পড়াতে হবে। এই নিয়ে কেওক্রাডাং পর্বতের চূড়ায় মিস্টার তাজিং ডং বেওক্রাডাং আর বাবা আদিনাথের মধ্যে এক গোপন বৈঠক বসলো। সাত ভাইকে নিজেদের পক্ষে রাখার জন্যে তাজিং ডং ও কেওক্রাডাং বাবা আদিনাথকে বোঝালেন, অন্তঃত আপনার একটি মেয়ে যেনো সাত ভাইয়ের মধ্যে কারো জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। তাহলে ভবিষ্যতে পাহাড়ের দখলটা আমাদের মধ্যেই থাকবে। বাবা আদিনাথের সঙ্গে সেই গোপন বৈঠকের খবর কারা যেনো ফাঁস করলো। এক সময় সেই খবর বাবা আদিনাথের মেয়ের কানেও পৌঁছালো। মেয়ে সাত ভাইয়ের প্রবল প্রতাপে ভয় পেয়ে গেল। সে কান্না জুড়ে দিল। সেই কান্নায় কেওক্রাডাং পাহাড়ের অদূরে বিশাল এক লেকের সৃষ্টি হল। যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ লেক। কেউ যদি বান্দরবানের রুমা হয়ে বম পাড়া মারিয়ে কেওক্রাডাং চড়তে যান, পাহাড় চূড়ায় সেই সর্বোচ্চ লেকের সন্ধান পাবেন।
আর তারা খসতে দেখার সময় কেউ যদি ফুলের নাম নেন, তার পরের বছর বিয়ে হবে। শর্ত থাকে যে, মেয়েদের বেলায় বয়স অন্তঃত একুশ হতে হবে। কারণ, বাবা আদিনাথের মেয়ের বয়স ছিল একুশ। আর যদি ছেলেরা তারা খসতে দেখে ফুলের নাম কেউ নেয়, তাদের মিনিমাম বয়স পঁচিশ হতে হবে। কারণ, বাবা আদিনাথ সাত ভাইয়ের মধ্যে যাকে মেয়ের-জামাই বানানোর কথা মনে মনে ভাবছিলেন, তার বয়স ছিল পঁচিশ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৭
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: +++++++++++্