নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও রাজনীতি।। রেজা ঘটক

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১

চেতনা একটি আপেক্ষিক বিষয়। চেতনা থাকলে বা না থাকলে কারো কিচ্ছু যায় আসে না। সেই অর্থে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের চেতনা অনেক ভালো এবং শক্তিশালী। দেশের মানুষের চেতনা সক্রিয় না থাকলে তারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তো না। চেতনা না থাকলে তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াতো না। চেতনা না থাকলে তারা স্বৈরাচার এরশাদকে রুখে দিতো না। চেতনা না থাকলে তারা ১৫ ফেব্রুয়ারি' ৯৬-এ খালেদা জিয়ার নির্বাচনকে অবলিলায় মেনে নিতো। চেতনা না থাকলে ছাত্রলীগের কুকর্মের বিরুদ্ধে মানুষ কথা বলতো না। চেতনা না থাকলে ২০০১-এর নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় সংখ্যালঘু মানুষ এভাবে মার খেতো না। চেতনা না থাকলে মঈন-ফকরুদ্দিন ক্ষমতায় আসতো না। চেতনা না থাকলে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেতো না। চেতনা না থাকলে শাহবাগের গণ-জাগরণ মঞ্চের সৃস্টি হতো না। এমনি কি চেতনা না থাকলে হেফাজতে ইসলামের আমদানি হতো না।



চেতনারা দুই ভাই। হাবলু আর কাবলু। হাবলু শুধু ভালো কাজের প্রেরণা জোগায়। আর কাবলু শুধু খারাপ কাজের ইন্ধন জোগায়। দুই ভাইয়ের সেই কর্মপদ্ধতি'র দুটোই চেতনার অংশ। মানুষের কাজ দুটোকেই গ্রহন করা। কেউ বুঝে গ্রহন করে। কেউ না বুঝে গ্রহন করে। গোলাম আজমও মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি চেতনায় বিশ্বাস করতেন। সেটি হল পাকিস্তান রক্ষার চেতনা। চেতনারা মরে না। চেতনা সদা জাগ্রত। চেতনা'র শক্তি বাতাসের মতো। কেউ না বললেও, কেউ প্রচার না করলেও, কেউ চেতনারে না খাওয়ালে চেতনারা বেঁচে থাকে মানুষের রক্তের শিরায় শিরায় ধমনিতে ধমনিতে।



আইন ভাই, আপনি এখন বলতে পারেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানুষ কিভাবে মনে রেখেছে? মানুষের মনে রাখার দরকার হয় তখনই যখন এর প্রয়োজন হয়। আওয়ামী লীগের একমাত্র ভোটের সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দরকার হয়। চুরি চামারি লুটপাট দখল খুন গুম টেন্ডারবাজির সময় তাদের চেতনার ঘুমিয়ে থাকার নিয়ম। ঠিক বিএনপি'র বেলায় ভোটের সময় জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার একটা আংশিক ক্রেডিট প্রয়োজন হয়। বাকি সব দুর্নীতি, লুটপাট, ছিনতাই, দখল, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, ধর্মের দোহাই, সহ অন্যসব আকাম কুকাম করার সময় চেতনা তাদের ঘরে ঘুমিয়ে থাকে।



একমাত্র সাধারণ মানুষের চেতনা ঘুমায় না। হরতালে তার রিক্সাটা ভেঙে দিয়ে আপনি কিসের চেতনা ফুটাবেন? গাড়িতে আগুন দিয়ে আপনি কোন চেতনা জাগাবেন? আপনার দরকার ভোট। সেটা গুজব রটিয়ে এই অশিক্ষিত জনতার মাঝখান থেকে অনায়াসে ভাগাতে পারবেন। আমজনতা শিক্ষিত হলে তো আপনার রাষ্ট্রের পয়সার বিদেশ সফরের হিসাব চাইবে। আমজনতা চেতনার প্রমাণ দিতে চাইলে তো আপনার মাসিক আয়ের হিসেব চাইবে। আমজনতা চেতনায় আবেগ আপ্লুত হলে তো আপনার বাথরুমের এসির খবর বেড়িয়ে আসবে। আমজনতা চেতনায় জাগ্রত হলে তো আপনার কুইক রেন্টালের পার্সেন্টেসের হিসাব ধরা পরবে। আমজনতা চেতনায় নিবিষ্ট হলে তো আপনাদের রাতের ডিনারে একই টেবিলে বিদেশী মদ খাওয়ার খবর বেড়িয়ে আসবে। আমজনতা চেতনায় শিক্ষিত হলে তো আপনার ছেলেমেয়েরা কোথায় পড়াশুনা করছে আর আমরা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কি করছি, সেই গোপন রহস্য ফাঁস হয়ে যাবে। সো, চেতনাকে বুক পকেটে আটকে রাখার নিয়ম বাংলাদেশে।



আওয়ামী লীগ আর বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সুযোগে ব্যবহার করে। সুযোগ না পড়লে বুক পকেটে বন্দি করে রাখে। চেতনা এদেশে বুক পকেটে নিয়ে ফেরি করার জিনিস। যখন দরকার হবে তখন বিক্রি হবে। চেতনা এখানে বিক্রি হয়। আমাদের রাজনীতি ব্যবসায় চেতনা ভারী মূল্যবান। খবরদার আইন ভাই, চেতনা নিয়ে কথা বললে, আপনাকে কিন্তু চেতনার কাঠগড়ায় দাঁড় হওয়া লাগতে পারে। সো, সাধু সাবধান।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৬

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: সাধু সাবধান
ঘটকের বিয়ে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.