নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোটা নিয়ে কিছু খোটা ।। রেজা ঘটক

১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৫

বাংলাদেশে কোটা পদ্ধতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মাননীয় বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যা কন্যা হবার কারণে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের প্রধান। আবার দল ক্ষমতায় থাকলে তিনি প্রধানমন্ত্রী। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সুযোগ্যা স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাই তিনি দলের প্রধান, আবার দল ক্ষমতায় গেলে তিনি হন প্রধানমন্ত্রী। এই কোটা পদ্ধতিতে আগামীতে জয় বা তারেক জিয়াও একই রাস্তায় হাঁটবেন। কোটা পদ্ধতির আড়ালে যাকে বলা যায় অঘোষিত রাজতন্ত্র। অথচ পাশের দেশ ভারতে রাজীব গান্ধীর সুযোগ্যা স্ত্রী হয়ে সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের সভাপতি হলেও তিনি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মানমোহন সিংহকে। এটা করে সোনিয়া গান্ধী গোটা ভারতের কাছে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। এখন রাহুল গান্ধীকে রাজনীতিতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। রাজনীতিতে ঝানু হলে আগামীতে ভারতের জনগণ চাইলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু বাংলাদেশে?

শেখ হাসিনার সামনে এবার সেই সুযোগ ছিল। দল নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্টতা অর্জনের পর একটি সর্বদলীয় শক্তিশালী সরকার গঠন করে অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী করে দিলে বাংলাদেশের মানুষ একজন নতুন শেখ হাসিনাকে পেতো। আমরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছি। উল্টো এমন সব আবলু-হাবলু-গাবলু-রে নিয়ে কেবিনেট গঠন করলেন যে, সাড়ে চার বছরের মধ্যে সেই নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা আগামী নির্বাচনে একটি নিশ্চিত পরাজয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে!! কারণ, আবলু-হাবলু-গাবলুদের দিয়ে যা অর্জন করা যায় তা দেশের মানুষ দেখেছে। এ টিমকে সাইড লাইনে বসিয়ে রেখে বি-টিম, সি-টিম, ডি-টিম দিয়ে দেশ চালালে যা হবার কথা তাই হয়েছে। এখন সরকারের বাকি আর তিন মাস। এই তিন মাসে সাড়ে চার বছরের ভুল সংশোধন করে দলকে বিজয় ছিনিয়ে আনার জন্য শেখ হাসিনার সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র এখন এ-টিমের সাইড প্লেয়াররা। তারাও কতোটা পারবে এই সরকারের সাড়ে চার বছরের দুর্বল নের্তৃত্বের সীমাহীন দৌরাত্মকে সামাল দিতে সেটা অন্য প্রসঙ্গ। খালেদা জিয়ার দুই পুত্রের কার্যাকলাপ সম্পর্কে দেশের মানুষ সবই জানে। নতুন করে বলার কিছু নেই । কিন্তু ভোটের হিসাব আলাদা।

যুদ্ধাপারাধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগের গণ-জাগরণ মঞ্চের আন্দোলন ছিল একটি স্বতস্ফূর্ত বিস্ফোরণ। সেই আন্দোলনকে দলীয় লেবাস দিতে গিয়ে বা সেই আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে গিয়ে আওয়ামী লীগের দুর্বল অদূরদর্শী নের্তৃত্বের কারণে শাপলা চত্বরে একটি এন্টি মুভমেন্ট রাতারাতি গজিয়ে উঠলো। হেফাজতে ইসলামের পেছনে জামায়াতে ইসলাম এবং বিএনপি কলকাঠি নাড়লেও এখন রাজনৈতিক ময়দানে সবচেয়ে বড় ভয়ংকর শক্তি হেফাজতে ইসলাম। গুজব রটিয়ে হোক, মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে হোক আর বেহেসতের টিকিটের হাতছানিতে হোক, পাঁচ সিটি কর্পোরেশানের নির্বাচনে ৫-০ গোলে তারা আওয়ামী লীগকে পরাজিত করেছে।

কোটা পদ্ধতির কারণেই এখন স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আর মুখে সবাই বলেন স্থানীয় প্রশাসন সরকারের প্রভাব বলয়ের বাইরে স্বাধীনভাবে কাজ করে। কিভাবে এটা সম্ভব? যে কিনা দলীয় প্রার্থী, তারা নির্বাচনে বিজয়ী হলে তো প্রথমেই দলীয় পাণ্ডাদের টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি জায়েজ হয়ে যাবে। স্থানীয় প্রশাসন আর কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সাংঘর্ষিক সম্পর্ক তৈরি হলে কিভাবে স্থানীয় প্রশাসন শক্তিশালী হবে? বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্থানীয় প্রশাসন শক্তিশালী মানে হল দলীয় নেতাকর্মীকে দিয়ে নির্বাচন করানো। তখন আর কাজের কাজটা কিছুই হয় না। কারণ এরা সারা বছর চুরি চামারি করবে। চাঁদা তুলবে। টেন্ডারবাজি করবে। দখল করবে। খুন গুম করবে। কারণ, কেন্দ্রে দলের ক্ষমতা। আবার বিরোধী দলের কেউ স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচিত হলে তার জন্য কেন্দ্র থেকে কোনো বরাদ্দ নেই। তখন তার হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার নিয়ম।

বাংলাদেশে নির্বাচনের নামে দেশে যেভাবে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় সেই পরিবেশ যদি উন্নয়নের ক্ষেত্রে সৃষ্টি হত তাহলে দেশ আনেক আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হত। কলেজে ভর্তিতে কোটা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে কোটা। সরকারি চাকরিতে কোটা। কোটায় কোটায় গোটা বাংলাদেশ ফুটা হয়ে গেছে। সরকারি চাকরিতে ১০% জেলা কোটা, ১০% মহিলা কোটা, ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ৫% উপজাতি কোটা আর অবশিষ্ট ৪৫% মেধা কোটা। অর্থ্যাৎ মেধাবীদের যোগ্যতা থাকা স্বত্ত্বেও সুযোগ আছে মাত্র শতকরা ৪৫ ভাগ। বাকি শতকরা ৫৫ ভাগ দুর্বল অযোগ্য মেধাহীন কোটায় উদর পিণ্ডি হয়। এভাবে একটা দেশ সময়ের তুলনায় পিছিয়ে যায়। মেধাবীদের যারা যোগ্য সম্মান দিতে পারে না সেদেশে মেধা শূণ্য করার জন্য বুদ্ধিজীবী হত্যার দরকার নেই। এমনিতেই জাতি মেধা শূণ্য হয়ে যাবে।

স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীরা যে পরিমাণ মেধাবীদের হত্যা করেছে, তারচেয়ে বেশি মেধাবীদের দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বিগত ৪২ বছরের তামাশার রাজনীতির মাধ্যমে। বাংলাদেশ থেকে ব্রেন ড্রেইন হয়ে বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের দেশের মেধাবী সন্তানরা পড়ান। কারণ, তাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাই নিজেরাই বিশ্ববাজারে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে নিজেদের ড্রেইন করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতি এখন সুযোগ্য অদক্ষ অপরিপক্ক অদূরদর্শী মেধাহীন দুর্বল নের্তৃত্বের তামাশার তাবেদারীতে বন্দি। কারণ ওই রাজনৈতিক কোটা। এমপি মারা গেলে তার ছেলে বা মেয়ে এমপি নমিনেশান পায় দল থেকে। ওই এলাকায় সারা বছর যারা দলের কাজ করেন তারা সব ভেউ। তারা দলীয় নের্তৃত্বের কাছে কেবল সংগঠনের প্রয়োজনে নেতা। সর্বশেষ কিশোরগঞ্জে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সংসদীয় আসন শূণ্য হলে সেখানে রাষ্ট্রপতি'র সুযোগ্য পুত্রকে সাংসদ বানিয়ে আনার মাধ্যমে রাজনৈতিক কোটাকে আরো শক্তিশালী করার সর্বশেষ উদাহরণ।

বৈষম্য লালন পালন করে আপনারা গাইবেন শোষণমুক্ত সমাজের গান!! আহারে আমার শ্যাম, সেই গানে সুর করবে কেঠায়? ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সরকারি চাকরিতে শতকরা ৫০ ভাগের উপরে কোটা বন্ধের জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন। শুধুমাত্র কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন আদালতে অনেক মামলা ঝুলে আছে। অনেক মামলা রায়ের অপেক্ষায় আছে। ভারতের সরকারি চাকরির নিয়ম কানুন আর বাংলাদেশের সরকারি চাকরির নিয়ম কানুন প্রায় হুবহ এক। বৃটিশদের কলোনি ছিলাম বলে তাদের অনেক আইন কানুন আমরা আমাদের দেশের সঙ্গে মানান সই হোক আর হোক হুবহু তাই দিয়ে দেশ চালাচ্ছি। কারণ, মেধাবীরা তো সংসদে যাচ্ছে না। ওই আইন কে বানাবে? যারা সংসদে নির্বাচিত হয়ে যাচ্ছে, তাদের মেধাশূণ্য বানানো আইনে অনেক ফাঁক ফোকর রয়ে যাচ্ছে। আদালতের কাঠগড়ায় সেই আইনের ফাঁক গলিয়ে দুর্ধর্ষ আসামীরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। আর সেই কোটা পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ভারতের চেয়েও এক ধাপ এগিয়ে কোটা এখন ৫৫% করেছে। আগামীতে মুক্তিযুদ্ধের নাতি-নাতনি কোটা আসবে। আরে ভাই, মুক্তিযোদ্ধারা কেউ আপনার কাছে কোটার দাবি নিয়ে যায় নি। আপনি মনগড়া একটা চালিয়ে দিছেন। সেটা হাজার বছর ধরে চলতে পারে না। দেশের সকল অঞ্চলের উন্নয়নের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা সরকারের দায়িত্ব। কোটা পদ্ধতিতে এলাকার কোনো উন্নয়ন হয় না। এমন কি প্রায় বছরই জেলা কোটা পূরণ না হবার হাজার হাজার উদাহরণ আছে। তবু কোটার পক্ষে রাজনৈতিক নের্তৃত্বের দুর্বলতা। কারণ, নিজেরাও তো কোটার জোরে গাদ্দারি করছেন। বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলে কোটা নেই? কোন দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা আছে? এক কথায় নেই। তারা কিভাবে রাষ্ট্রের গণতন্ত্র ঠিক করবে? এক কথায় কোন দিন করবে না। আরেক কথায় কোন দিন এদের দিয়ে তা করা সম্ভব না। নতুন প্রজন্মকে এখন দায়িত্ব নিয়ে এসব বৈষম্য দূর করতে বলিষ্ঠ নের্তৃত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। নইলে হাজার বছরে বাংলাদেশ কোটা পদ্ধতির খপ্পরে পড়ে মেধাহীন হয়ে হেনরি কিসিঞ্জারের কথিত সেই তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিনত হবে। সো, সময় থাকতে সাধু সাবধান। সকল ধরনের কোটা পদ্ধতির যতো দিন না অবসান না হবে, ততো দিন সমাজ থেকে রাষ্ট্র থেকে বৈষম্য দূর হবে না। কোটা পদ্ধতি একটি সাময়িক সমাধান। আর আমাদের মেধাহীন নের্তৃত্ব সেই কোটা পদ্ধতিকে বছরের পর বছর বাড়িয়ে অর্ধেকেরও উপর নিয়ে গেছে। শতকরা ৫ ভাগ কোটা চালু রাখা যেতে পারে টোটাল সরকারি চাকরি বিধিতে। কোনো মতেই শতকরা ৫৫ ভাগ কোটা পৃথিবীর কোনো দেশে নেই। সেই হিসেবে বাংলাদেশ খারাপ কাজে আরেকটি বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করেছে।

যারা মুক্তিযোদ্ধ করলো তাদের সবাইকেই তো আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো টানাহেচড়া করে বিতর্কিত করে ফেলেছে। আসল সার্টিফিকেট জাল সার্টিফিকেট নকল সার্টিফিকেট দিয়ে গোটা মুক্তিযোদ্ধাদের কলংকিত করা হয়েছে। এখন অনেক রাজাকারের মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট আছে। আবার অনেক আসল এবং খাঁটি মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট তুলতে যায় নি। অথবা তার নামে আসলেই কোনো সার্টিফিকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। কে সার্টিফিকেট দেওয়ার মালিক? তাকে সেই ক্ষমতা কে দিল? গ্রামের চেয়ারম্যান মেম্বারদের পছন্দের সবাই একবাক্যে সার্টিফিকেট পেয়ে যান। যারা তাদের অপছন্দের তারা যুদ্ধ করলেও পাবেন না। এমপি সাহেবের যারা কাছের মানুষ তারা তো বাড়ি বসেই সার্টিফিকেট পেয়ে যান। আর যারা খাঁটি দিলে যুদ্ধ করেছিল তারা অনেকই সার্টিফিকেট চাইতে যায় নি। তাদের কি হবে? বছর বছর সুযোগ সুবিধা তো ঘরে তুলছে তথাকথিত ওই সার্টিফিকেট ধারীরা।

মেধাশূণ্য রাজনৈতিক নের্তৃত্ব দিয়ে এরকম হাজার হাজার সার্টিফিকেট বিলি করা সম্ভব কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের এমন কি সঠিক ইতিহাস পর্যন্ত তাদের দিয়ে লেখানো সম্ভব না। আজকে কোটা পদ্ধতির ধুয়া তুলে মেধাশূন্য রাজনৈতিক নের্তৃত্ব আমাদের মহান জাতীয় সংসদে নারী কোটায় যাদের সাংসদ বানিয়েছেন, তাদের মুখের বুলি শুনে তো দেশবাসীর বাংলা ভাষা ভুলে যাবার উপক্রম। শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়া কাদের নমিনেশান দিয়ে নারী কোটায় এমপি বানালেন? তাদের কথাবার্তার শ্রী দেখে তো তাদের আমাদের আইনপ্রণেতা হিসেবে মেনে নিতে বিবেকে লাগে। আমরা তো তাদের ভোট দিয়ে এমপি বানাই নি। কোটি টাকা খরচ করে সংসদে তারা আমাদের কি কথা শোনান? মেধাশূণ্য রাজনৈতিক নের্তৃত্ব দিয়ে এইসব খুব সহজে করা সম্ভব। এর বেশি কিছু আশা করা যায় না।

নতুন প্রজন্মের মধ্যে অনেক মেধাবী ছেলেমেয়েরা আছে। তাদের রাজনীতিতে আসতে হবে। দুর্বল রাজনৈতিক নের্তৃত্ব থেকে বেড়িয়ে এসে রাজনৈতিকভাবে দূরদর্শি নের্তৃত্বকে সেই ভার নতুন প্রজন্মকেই নিতে হবে। মাত্র ৪২ বছরে রাষ্ট্রযন্ত্রের সবগুলো প্রতিষ্ঠান এরা ধ্বংস করে ফেলেছে। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে নতুন প্রজন্মকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। বাংলাদেশের প্রথম ৫০ বছর এরা ধ্বংস করবে। নতুন প্রজন্মকে পরের ৫০ বছরে তা তীলে তীলে গড়ে তুলতে হবে। ২০২১ সালে আমরা যে ধ্বংসস্তূপ নিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী পালন করব, স্বাধীনতার জন্ম শতবার্ষিকীতে নতুন প্রজন্ম নিশ্চয়ই একটি শক্তিশালী নতুন বাংলাদেশ উপহার দেবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। যেখানে হরতাল থাকবে না। সহিংসতা থাকবে না। দুর্নীতি থাকবে না। দলীয় স্বজনপ্রীতি থাকবে না। চাঁদাবাজী থাকবে না। টেন্ডারবাজী থাকবে না। কথায় কথায় খুন গুম থাকবে না। প্রাইমারি স্কুলে শিশুদের পড়াবে মেধাবী শিক্ষকরা। শিশুদের জন্য স্কুলের বাইরে কোনো পড়াশুনা থাকবে না। শিশুদের মনের সৃজনশীলতা বাড়াতে বাড়িতে গাদা গাদা বই এবং হোম ওয়ার্ক একটি বিশাল চাপ। শিশুর মনের বিকাশ ঠিক মতো হয় না এই পড়ার চাপে। বেশি নম্বর তুলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হওয়া যাবে না। শিক্ষক হওয়ার মতো গুনাগুন যার মধ্যে আছে সেই শিক্ষক হবেন। বাজারে ব্যবসায়ীরা খাদ্যে আর ফরমালিন দেবেন না। মরা মুরগির মাংস বিক্রি করবেন না। বর্ষাকালে রাস্তা খোড়াখুড়ি হবে না। সেবা প্রদান কারী সংস্থার মধ্যে একটি সুন্দর সমন্বয় থাকবে। দলীয় কন্ট্রাকটর দিয়ে কাজ হবে না। প্রফেশনাল টিম সেই কাজগুলো করবে। গ্রামে গ্রামে কমিউনিটি রেডি্ও থাকবে। সত্যিকারের একটি সোনার বাংলা গড়ে তুলবে আমাদের নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। আমরা ৫০ বছরে যা পারব না, নতুন প্রজন্ম পরবর্তী ৫০ বছরে তা করে বিশ্বকে দেখিয়ে দেবে। এটাই আমি নিশ্চিত করেই স্বপ্ন দেখি। তখন দেশে কোনো কোটা পদ্ধতির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেই আমি বিশ্বাস করি। কেবল দুর্বল ভঙ্গুর অদূরদর্শী মেধাহীন রাজনৈতিক নের্তৃত্বেরই এসব সাময়িক কুইক রেন্টাল বা কোটা প্রয়োজন হয়। নতুন প্রজন্মের তা প্রয়োজন হবে না।

২০২১ সালের মধ্যে বর্তমানে যারা রাজনীতি করছেন, তাদের অবসরে যাওয়া উচিত। বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যার কোনো বিকল্প নেই। নতুন প্রজন্মের হাতে আগামী ৫০ বছরের দায়িত্ব দিন। তাদের এই আট বছর আপনারা আপনাদের অভিজ্ঞতাটুকু দিয়ে তাদের প্রশিক্ষিত করুন। দেখবেন আপনারা জীবিত থাকা অবস্থায়ই নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যায়। চোখের সামনে দেখতে পাবেন। আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলতে চাই, ২০২১ সালের পর দশ বছরে আপনারা ঠাওর করতে পারবেন নতুন প্রজন্ম কি করবে। ২০৩১ সালে নতুন প্রজন্মের কাছে আপনারা একটা হিসাব নিয়েন। ২০১৩ থেকে ২০২১ এই ৭ বছর আপনারা নতুন প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ দিন। রাজনৈতিক ভাবে দক্ষ করে তুলুন। তারপর ২০২১ সালে আপনারা দয়া করে সবাই অবসরে যান। আপনাদের আছে করজোড়ে এই মিনতী।

নতুন প্রজন্মকে এখন থেকেই সকল বিষয় চুলচেড়া বিশ্লেষণ করে কর্ম পদ্ধতি ঠিক করে আগাতে হবে। কোটা পদ্ধতি বাতিলের নামে আমরা আমাদের মহান মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করতে পারি না। তাদের যথাযথ সম্মান দেখানোই আমাদের কাজ। সেই সম্মান কোটা দিয়ে আসবে না। খোটা দিয়েও আসবে না। নিরব অবদান রেখেই সেই সম্মান দেখাতে হবে। রাজনীতি থেকে যারা অবসরে যাবেন, তাদেরও আমরা সঠিক ভাবে সম্মান করব। আর যারা অবসর নেবেন না তারা নিজেদের অদূরদর্শীতায় এমনিতেই আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। কালের ইতিহাসের কলমটি বড় নির্মম। সেই কলমে আপনাদের সকল অপকর্ম খোদাই করা রয়ে যাবে। সো, কোটা নিয়ে আমরা যেনো আর বাড়াবাড়ি না করি, সেই কথাটি আমাদের মনে রাখতে হবে। আগামী ৭ বছরের মধ্যে এই কোটা শতকরা ৫ ভাগে নামিয়ে আনতে হবে বর্তমান রাজনৈতিক নের্তৃত্বকেই। নইলে আগামী ৫০ বছরের জন্য যে নতুন প্রজন্মের কাঁধে আপনারা একটি তলাবিহীন বাংলাদেশ চাপিয়ে দিতে চাইছেন, সেটি আমরা মানবো না। সো, মেইক কমিউন অ্যাকর্ডিং টু ইয়োর পিপল অ্যান্ড কাট ইয়োর কোট অ্যাকর্ডিং টু ইয়োর ক্লথ।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৭

বাতায়ন এ আমরা কজন বলেছেন:
কঠিনভাবে সহমত।

কিন্তু যারা বোঝার তারা কী কখনও বুঝবে?

তরুন প্রজন্ম যতদিন নেতৃত্বে না আসবে কোন আশা নাই।

১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৫৭

রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

২| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪৭

হাটহাজারী, চট্ট্রগাম। বলেছেন: আপনি কি সারা দিন শুধু লিখতে থাকেন?


কিছু হাস্য গল্প, রম্য, মজার কিছু লিখেন, যেন পড়ে মজা পায়।

লেখার মর্ম ছোট আকারে হলে পড়তে ইচ্ছা হয়, প্রতি দিন প্রচুর লেখা, এত লম্মা করে লিখলে পড়তে মন চায় না।

সরি, আপনি আমার প্রিয় ব্লগার বলে কথা গুলো বললাম।

১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০২

রেজা ঘটক বলেছেন: আমার চারটি গল্পের বই, 'বুনো বলেশ্বরী', 'সোনার কঙ্কাল', 'সাধুসংঘ', 'ভূমিপুত্র', একটি উপন্যাস 'মা', একটি সমালোচনা 'শূণ্য দশমিক শূণ্য', দুইটি শিশুতোষ 'ময়নার বয়স তেরো', 'গপ্প টপ্পো না সত্যি' ও একটি কিশোর গল্প সংকলন 'বয়োঃসন্ধিকাল'। অপ্রকাশিত লেখা প্রকাশ করলে আরো দশ বারোটি বই হবে। এখন লিখছি একটি উপন্যাস। আর লিখছি একটি সত্য ঘটনার সংকলন। এছাড়া প্রচুর সমালোচনা লিখি। এটাই আমার কাজ। অনেক চিত্রনাট্য করতে হয়। এই ভাবে দিন যায়। আপনি বাতিঘরে খোঁজ নিলে আমার বই পাবেন। ধন্যবাদ

৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪৯

হাটহাজারী, চট্ট্রগাম। বলেছেন: আপনার প্রিয় পোষ্টের তালিকায় দেখতেছি সব আপনার নিজের পোষ্ট ব্যাপার কি বুঝতে পারলাম না।

১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০৫

রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৪১

*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীরা যে পরিমাণ মেধাবীদের হত্যা করেছে, তারচেয়ে বেশি মেধাবীদের দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বিগত ৪২ বছরের তামাশার রাজনীতির মাধ্যমে।


সহমত

১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২২

রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:০৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: *কুনোব্যাঙ* বলেছেন স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীরা যে পরিমাণ মেধাবীদের হত্যা করেছে, তারচেয়ে বেশি মেধাবীদের দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বিগত ৪২ বছরের তামাশার রাজনীতির মাধ্যমে।সহমত।

১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২২

রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫০

হাসিবুল ইসলাম বাপ্পী বলেছেন: ভাই, আমি এতো কিছু বুঝি না
আমার কথা কোটা বাতিল করতেই হবে.।
নইলে আমার মতো মেধাবিরা কি করবে?
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের সম্মান অবশ্যই করতে হবে, তাই বলে আমাদের অবহেলা করে?
মুক্তিযোদ্ধাদের ঢাকায় একটা করে ফ্লাট দিক, মাস মাস ৫০০০ টাকা দিক, আমার আপত্তি নাই, কিন্তু তাই বলে দেশের মেধাবিদের মেধার অবমূল্যায়ন করে কেন তাদের এই সম্মান?????????????????????????????????????????

সরকার যা খুশি করুক, কিন্তু আমাদের মতো সাধারন ছাত্রদের মেধার উপরে কেন এই হস্তক্ষেপ?
তাদের যদি জজ্ঞতা থাকে তবে তারা কম্পিটিশন করুক না কেন আমাদের সাথে???????????????????????????????
এমনিতেও ভার্সিটি তে যখন ভর্তি হই তখনও কিন্তু এই কোটা এর জন্য তাদের কিছু সিট ছেড়ে দিছিলাম।
তাদের তো একবার করে চান্স দিছিলাম, তবে এখন আবার কেন???????????????????
সো, আমার কথা, কোটা বন্ধ করতেই হবে
এই লিঙ্ক দেখেন।

১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২২

রেজা ঘটক বলেছেন: জি...ধন্যবাদ

৭| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪৮

বিভ্রান্ত মানুষ বলেছেন: কুমার সাহা নামে একজন অনলাইনে লিখেছেন, ‘অতি দুঃখ ভারাক্রান্ত হূদয়ে লিখছি। আমি সুনীতি কুমার সাহা। আমি ৩১তম বিসিএস পরীক্ষায় লিখিত (সাধারণ ও কারিগরি) ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার রেজি: নম্বর ০২২৫২৭। আমার প্রথম পছন্দ ছিল কৃষি ক্যাডার। কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে আমাকে পিএসসি কর্তৃক কোনো পদে সুপারিশ করা হয়নি (উল্লেখ্য, কোটা প্রার্থী না থাকায় পিএসসি ৭০টি পদ খালি রাখে)। গত ২৭ ডিসেম্বর, ২০১২ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কৃষি ক্যাডারে ২২০টি পদের বিপরীতে ১৩৬ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, পিএসসি কর্তৃক ১৫০ জনকে সুপারিশ করা হয়েছিল। যে ১৪ জন বাদ পড়েছেন, হয়তো তাঁদের কেউ কেউ স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি বা পুলিশ প্রত্যয়ন পাননি বা ৩১তম বিসিএসের আগে অন্য কোনো ভালো পদে কর্মরত আছেন। আমার দুঃখ, এই জায়গায় ৮৪ পদ খালি থাকা সত্ত্বেও আমার চাকরি পাইনি। আমার সমস্ত পরিশ্রমের ফলাফল কোটা সংরক্ষণজনিত নিয়মের কারণে শূন্য। যাঁরা এসব নিয়ম তৈরি করেন, তাঁরা কি একবারও ভেবে দেখেছেন আগামী ১০-২০ বছর পর আমাদের দেশের প্রসাশনের কী অবস্থা হবে?’

পার্থ নামে আরেকজন লিখেছেন: ‘আমি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। গতকাল প্রকাশিত বিসিএস ৩৪তম প্রিলিমিনারির ফল বের হয়েছে। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে ৭৫+ পেয়েও সাধারণ পরীক্ষার্থী চান্স পায়নি অথচ কোটার কারণে ৫৯+ পেয়েও অনেকে চান্স পেয়েছে। মেধার বিচারে ৫৯=৭৫ হতে পারে না। ফলে প্রকৃত মেধাবীরা বঞ্চিত হয়ে চরম হতাশ ও বিপথগামী হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশ একসময় মেধাশূন্য হয়ে যেতে পারে।
সদ্য প্রকাশিত বিসিএস রেজাল্ট, ৩২তম স্পেশাল বিসিএস এবং সাম্প্রতিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে (সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, আইসিবি ইত্যাদি) শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের আবেদন করার যোগ্যতা কি সাধারণ প্রার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক নয়? কোটা কি শিক্ষিত বেকার বৃদ্ধির জন্য দায়ী নয়?’

১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২৪

রেজা ঘটক বলেছেন: খুবই দুঃখজনক। এটাই চলছে বাংলাদেশে। আরেক দল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নামে, প্রজন্ম ৭১ নামে এবং আরো নানান ব্যানারে এসব না জেনেই কুতর্ক করছে। আরে ভাই যোগ্যতা তো বানিয়ে দেওয়া যায় না রে ভাই। ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.