নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রহসনের রায় বাংলার মানুষ মানবে না। রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ।। রেজা ঘটক

১৫ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৩

গোলাম আযম ৭ নভেম্বর, ১৯২২ সালে ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের শাহ সাহেব বাড়িতে তার মাতুলালয়ে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম গোলাম কবির ও মায়ের নাম সৈয়দা আশরাফুন্নিসা। ১৫ জুলাই ২০১৩ সালে গোলাম আযমের বয়স হল ৯০ বছর ৮ মাস ৮ দিন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গোলাম আযম পাকিস্তানের পক্ষে এদেশে রাজাকার, আলবদর, আলশামস গঠনে নের্তৃত্ব দেন। শান্তি কমিটি গঠন করে দেশের বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা করেন। ১১ জানুয়ারি, ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কর্তৃক গোলাম আযম ১৯৭১ সালে মানবতা ও শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের মামলায় গ্রেফতার হন। অনেক তামাশার পর আজ ১৫ জুলাই ২০১৩ গোলাম আযমের বিচারের রায় ঘোষণা করা হয়।

গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৫ ধরনের ৬১টি অভিযোগ আনা হয়। যার সবগুলোই প্রমাণিত হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। ৬১টি অভিযোগের মধ্যে- মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ মোট ৬টি। মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনার অভিযোগ ৩টি। মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ ২৮টি। মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ২৩টি এবং হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে একটি।



প্রথম ও দ্বিতীয় অভিযোগে ১০ বছর করে ২০ বছর, তৃতীয় অভিযোগে ২০ বছর, চতুর্থ অভিযোগে ২০ বছর, পঞ্চম অভিযোগে ৩০ বছর কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, “তিনি (গোলাম আযম) যে অপরাধ করেছেন, তা মৃত্যুদণ্ডতুল্য। কিন্তু তাঁর বয়স বিবেচনা করে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।



মাননীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারক আপনার কি নিজের কোনো বিচারবোধ আছে? আপনার বিবেক তো আওয়ামী লীগের অঙুলি নির্দেশের অপেক্ষায় যবুথবু। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আতাত করে অনেকে বিচারক হয়েছেন। আপনি কোন দলের বিচারক? গোটা বাংলাদেশের বিবেকে লাথি মারার দুঃসাহস আপনাকে কে দিল মাননীয় বিচারক? গোলাম আযমের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে যে বিচার হচ্ছে তা ১৯৭১ সালে তিনি যেসব কুকর্ম করছেন তার বিচার হচ্ছে। বিচার হচ্ছে অপরাধের। বিচারে বয়স কেন অযুহাত হিসেবে আসবে? আপনাদের কোন আইনে বিচারের মাপকাঠীতে বয়স একটা বিবেচ্য বিষয় আছে? সেই আইনে আমরা থু থু মারি। সেই আইন আমরা নতুন প্রজন্ম মানলাম না। একজন বিচারক হিসেবে আপনি জাতির সঙ্গে বেঈমানী করেছেন। এজন্য আপনার জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। কারণ, আপনি একটি প্রহসনের রায় দিয়েছেন। যা গোটা জাতি মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। যুদ্ধাপরাধী প্রধান ব্যক্তির যদি রায় হয় কারাদণ্ডের, তাহলে লিলিপুটদের কেন আপনি/আপনারা ফাঁসি দিলেন? সোজা কথায় এটা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেনি। আপনি বিচার করবেন একটি প্রতীকের। সেই যুদ্ধাপরাধীর প্রধান প্রতীক হল গোলাম আযম। আপনারা কান কথায় কান দিয়ে একটি সাজানো নাটকের রায় দিলেন। এই তামাশার রায় বাংলাদেশকে অপমান করেছে। এই রায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে অপমান করেছে। এই প্রহসনের রায় বাংলাদেশের ৩০ লক্ষ শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানী করেছে। কালো অঙুলির গোপন নির্দেশিত এই রায় দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থাকে ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছে। এই কুখ্যাত রায় বাংলাদেশের প্রতিটি জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের দারুণভাবে আহত করেছে। এই রায় সাধারণ মানুষের কাঙ্খিত রায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তাই এই রায় আমরা নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা মানলাম না।

বিগত ৪২ বছরে যে দেশের বিচার ব্যবস্থাকে আমাদের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো তীলে তীলে ধ্বংস করেছে, এই রায়ের মাধ্যমে সেই সত্য আবারো প্রতিষ্ঠিত হল।

দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এই ট্রাইবুনালের প্রতি এখন সাধারণ মানুষ আর আস্থা রাখবে কিভাবে? মাননীয় বিচারপতি, আপনার নিজেকে একজন মানুষ হিসেবে কি মনে হয়? এই রায় কি সঠিক হয়েছে? এই রায়টি শুধু একজন ব্যক্তি গোলাম আযমের বিরুদ্ধে নয়। এই রায় ১৯৭১ সালে এই ব্যক্তির নের্তৃত্বে যে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, সেই অপরাধের বিরুদ্ধেই যাওয়ার কথা ছিল। এই রায়টি একটি সম্মিলত সংগঠনের বিরুদ্ধে রায়। সেই রায়টি এমন খেলো করে দিয়ে দেশের গোটা বিচারবিভাগকে আবারো প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল। মানে বাংলাদেশের বিচারবিভাগ মোটেও স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নয়। এটি সরকার দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের একটি হাতিয়ার মাত্র। ব্যক্তি গোলাম আযমের বয়স এখন ৯১। যে কোনো দিন তিনি এমনিতেই মরে যাবেন। কিন্তু তাকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে গোটা জাতির সঙ্গে প্রহসনের একটি তামাশা করা হল। জাতি হিসেবে আমরা সভ্য না হয়ে অসভ্যই রয়ে গেলাম। যে দিন জাতি হিসেবে বাংলাদেশের কলংক মোচনের কথা ছিল, সেদিন বাংলাদেশের ললাটে লেখা হল আরেকটি কালিমা। এই রায় একটি ঐতিহাসিক কালো রায়। এই রায় বাংলার মানুষ মানবে না।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দেশে ৯৩ হাজার পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দী এখনো বাংলাদেশের আলো বাতাস, খাবার নষ্ট করছে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের সুযোগে নিষিদ্ধ জামায়াতে ইসলাম ও তাদের দোসররা এদেশে রাজনীতি করছে। আর এই রায়ের মাধ্যমে সেই দোষরদের আরো ক্ষমতায়ন করা হল। তাই এই রায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে বেমানান। এই রায় বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়েছে। আমরা নতুন প্রজন্ম এই রায় মানি না।

গোলাম আযম একটি অশুভ শক্তির প্রতীক। ব্যক্তি গোলাম আযম এখানে বিবেচ্য নয়। সেই অশুভ শক্তির কাছে দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা আজ এই রায়ের মাধ্যমে মাথানত করলো। তাই এই দিনটি আগামীতে কালো দিবস হিসেবে পরিচিত পাবে। মাননীয় বিচারপতি এই রায়ের মাধ্যমে আপনি আপনার শপথ ভঙ্গ করেছেন। অবশিষ্ট বিচারগুলোর প্রতি সাধারণ মানুষের আর কোনো কৌতুহল থাকবে না। কারণ, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই প্রহসনের রায়গুলো সময় ক্ষেপণ করে ঝুলিয়ে রাখা হবে। বাংলাদেশ আজ থেকে আবার পেছনের দিকে হাঁটা শুরু করলো। মাননীয় বিচারপতি আপনার মাথায় কি ৯১, ৯৩, ৯০ এই সংখ্যাগুলো খেলা করছিল? গোলাম আযমের বয়স ৯১, পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দী ৯৩ হাজার। আর এই রায়ে গোলাম আযমের কারাদণ্ড ৯০ বছর!! হায় বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। আর বাঙালি ঠায় সেই দায় মাথা পেতে নেয়। বড় কষ্ট পেলাম আজকের এই রায় দেখে। মাননীয় বিচারপতি আপনি দীর্ঘায়ু লাভ করুন। আমীন।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০০

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: রাজাকার রাজাকার
এই মুহূর্তে বিবি ছাড়
অইতাছে কি ব্যবিচার

২| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৬

ইউরো-বাংলা বলেছেন: জয় বাংলা
জয় গোলাম আজম
জামাত -আওয়ামী লীগ ভাই ভাই
আম জনতার বেইল নাই।

৩| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৯

আশরাফ মাহমুদ মুন্না বলেছেন: .
কী হেডিং দিয়েছেন ............ "............রুখে দাড়াও বাংলাদেশ.....।

বালসুলভ কথা আর কি! বাত কে বাত।

জানেন না বুঝি? ............

এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয় বাইরে। আদালত একটা নাটক।

সাদ্দামের ব্যাপারেও ছিলো বাইরে। ভুট্টোও তাই।

রাজনীতিবিদদের ফাঁসি দেশীয় আদালতে নির্ধারিত হয় না। এসব হয় বাইরে।

আদালত একটি রুটিন কাজ মাত্র।

ক্ষমতার পালাবদলও ভোট দ্বারা হয় না। নির্বাচন দ্বারা হয় না। হয় বাইরের লোক দ্বারা। গতবার হয়েছিলো "টু্‌ইস ডে গ্রুপ" দ্বারা। এবারও তাই। তবে এদের নাম বোধহয় পরিবর্তন হয়েছে। এবার হয়েছে " বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস্ গ্রুপ", - না-কি, এরকম কিছু একটা।

তবে বাইরের সিদ্ধান্ত ছাড়া ভোট হলে এবার আওয়ামী লীগ ৫০ এর নীচে সিট পাবে।

জামাত শিবির হচ্ছে আম জনতার কাছে আওয়ামী মুলা , যা' দিয়ে রাজনীতি করা হয়।

ব্যারিষ্টার আবদুর রাজ্জাক ও ড. আবদুল্লা মো. তাহের এর সাথে শেখ হাসিনার উপদেষ্টা হওহর রিজভীর গোপন বৈঠকই বলে দেয় "রাজনীতি" আসলেই কী চীজ্???

হায়! নির্বোধ জনতা!!!

৪| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১০

এন ইউ এমিল বলেছেন: জাতি হিসেবে আমরা সভ্য না হয়ে অসভ্যই রয়ে গেলাম

৫| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৮

ল্যাটিচুড বলেছেন: গোলাম আজমের আইনজীবি ব্যারিষ্টার আবদুর রাজ্জাক ও জামাত নেতা ড. আবদুল্লা মো. তাহের এর সাথে শেখ হাসিনার উপদেষ্টা হওহর রিজভীর গোপন বৈঠকই বলে দেয় "রাজনীতি" আসলেই কী চীজ্???

হায়! নির্বোধ জনতা!!!

৬| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৫

তুহিন সরকার বলেছেন: প্রহসনের রায়! জাতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
একেবারে হাস্যকর রায় বয়স বিবেচনা। বয়স বিচেনা করে কুলাঙ্গার গুলো সেদিন তো কাউকে ক্ষমা করেনি আজ কেন তাকে ক্ষমা করা হল।
কসাই কাদের, রাজাকার শিরোমণি গোলাম আযমসহ সকল মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি।

৭| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: দুই নৌকায় পা দেবার স্বাধ আমুলিক ইতোমধ্যেই পেয়ে গেছে...
কর্মফল থেকে মুক্তি দেবার সাধ্য কারও নেই

৮| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:১২

তানজিয়া মোবারক মণীষা বলেছেন: সত্যিকার বাঙ্গালী যদি একজনও হয়ে থাকে, সে জীবনেও এই রকম রায় মেনে নিতে পারবে না। যতই তামাশা করুক, ফাসি ঠিকই হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.