নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
এক.
জলের পাশেই জেলের বাড়ি। এই জল খাল-বিল-নদী'র নয় স্বয়ং সমুদ্রের উথাল পাথাল জল। বর্ষার আগমনীতে সেই জলে নামে যৌবনের নাচন। সেই নাচতরঙ্গের সাথে যুদ্ধ করে জেলে সমুদ্রে জাল মারেন। বর্ষায় সমুদ্রে যতো হয় তুফান ভারী, জেলের জালে মাছের ততোই ঘোরাঘুরি। জেলের জালে অধিক মাছের সেই ঘোরাঘুরিতে জেলেনী'র চোখেমুখে তখন কষ্টের বাউলী বাতাসে নতুন স্বপ্নরা দেয় উঁকি। আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র-আশ্বিন এই চার মাস সেই স্বপ্ন বুকে নিয়ে জেলেনী'র ঘোর কাটে। বছরের বাকী সময় ধরে আবারো শুরু হয় একঘেয়ে জীবন যুদ্ধের ঘানি টানার অফুরন্ত দিনযাপন। সে এক যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। জীবন বাজী রেখে সেই যুদ্ধে নিত্য ওঠাবসা যাদের তারাই কৈবর্ত। অনেকে বলেন জলদাশ। জলের দাশ।
সমুদ্রের এপিঠ-ওপিঠ খুব ভালো করে চেনেন চন্দ্রমনি কৈবর্ত। বারো বছর বয়সে বাবা'র কাছে সমুদ্রে মাছ ধরায় হাতখড়ি চন্দ্রমনি'র। তারপর থেকেই সমুদ্রের জোয়ার-ভাটার সঙ্গে নিত্য ওঠাবসা তার। বয়স কুঁড়ি না পেরোতেই চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গার সমুদ্র ঘেঁষা জেলেপল্লী'র জরাজীর্ন শীর্ণ কুটিরে শৈলীরানী তার ঘরে বধূ হয়ে আসলো। শৈলীরানী'র বয়স তখন কতো? বড়োজোর বারো। শৈলীরানী'র বাবাও একজন কৈবর্ত। বাড়ি চট্টগ্রামের কৈবল্যধামে। সেখান থেকেও সমুদ্র ভারী নিকটে।
সাধারণত কৈবর্ত সমাজে বিয়ে হয় দুই ভাবে। নামন্ত পদ্ধতি আর চলন্ত পদ্ধতি। বিয়ের একদিন বা দুই দিন আগে বরপক্ষ কনের বাড়িতে যায়। সঙ্গে থাকে সাধ্যমতো বাদক দল। বাজনার তালে তালে চলে কৈবর্ত নিত্য। তখন নিত্য করতে করতে কনে নিয়ে বরপক্ষের বাড়িতে এসে শাস্ত্রমতে লগ্ন সময়ে যে বিয়ে হয়, তা হল নামন্ত পদ্ধতিতে বিয়ে। আর কৈবর্ত বর যখন শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে শাস্ত্র অনুযায়ী লগ্ন সময়ে যে বিয়ে করে, তা হল চলন্ত পদ্ধতিতে বিয়ে। কোন পদ্ধতিতে বিয়ে হবে তা উভয় পক্ষ আলাপ আলোচনা করেই ঠিক করেন। তার আগে উভয় পক্ষ 'দাভা' নিয়ে বেশ প্যাচাল পারেন। দাভা হল বিয়ের যৌতুক। প্রাচীনকালে কনেপক্ষ বরপক্ষ থেকে টাকা নিতেন। এখন আর সেই নিয়ম ততোটা নেই কৈবর্ত সমাজে। এখন উল্টো বরপক্ষকে কনেপক্ষের দাভা মেটাতে হয়। সে এক গুরুচণ্ডালি নিয়ম।
তো, চন্দ্রমনি'র বাবা ঘোষণা দিলেন, একমাত্র ছেলের বিয়ে নামন্ত পদ্ধতিতেই হবে। প্রয়োজনে দাভায় কিছুটা ছাড় দিতে রাজী তিনি। এর আগে পাঁচ কন্যার বিয়েতে চন্দ্রমনি'র বাবাও দাভা প্রদান করেছেন। একমাত্র ছেলের বিয়েতে সেটা উসুল করার সুযোগ যেহেতু নাই, তাই নামন্ত পদ্ধতিতে বিয়ে দিয়ে কৈবর্ত সমাজে নিজের অবস্থান ঘোষণা করতে চান চন্দ্রমনি'র বাবা যুধিষ্টির কৈবর্ত। শৈলীরানী'র বাবা হরিপদ কৈবর্ত বা কম কিসে? বন্ধু'র ছেলের সঙ্গে আদরের ছোট মেয়েকে বিয়ে দেবেন, এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে? তাই শখ করে নিজেই ঘোষণা দিলেন, শৈলীরানী'র জন্য এগারো কুঁড়ি নগদ নারায়ন তার দাভা হিসেবে জমা আছে। কৃষ্ণ বৈরাগী'র পঞ্চ বাদক দলের বাজনা দিয়ে চন্দ্রমনি'র বরযাত্রা শুরু হল। শ্রাবণ মাসের বাঁইশ তারিখে মা গঙ্গাকে স্মরণ করে চন্দ্রমনি আর শৈলীরানী'র বিয়ে হল।
.......................চলবে..................
২৪ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৩২
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ। অবশ্যই ভালো লাগে। আসলে আমি প্রিয়তে রেখে নিজের লেখা সংরক্ষণ করি। এতে এডিট করতে সুবিধা হয়। বামপাশে চোখ ঘুরালেই চলে...অবশ্যই অন্যের লেখাও পড়ি। এবং অনেক পড়ি....
২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:১৯
আম্মানসুরা বলেছেন: দ্রুত পরের পড়ব পোষ্ট করেন
পোস্টে প্লাস
২৪ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১২
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ। আজ দিলাম পর্ব দুই।....
৩| ২৪ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:১১
আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: ভালো লেগেছে। প্লাস্
২৪ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৩
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ। আজ দিলাম পর্ব দুই।....
৪| ২৪ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১৩
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অপেক্ষায় রইলাম পরের পর্বের।
২৪ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৩
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ। আজ দিলাম পর্ব দুই।....
৫| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:১৫
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: চলুক।
২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৩৪
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২৯
খেয়া ঘাট বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম....................
ভালো লেগেছে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছ প্লাস।
প্রিয় পোস্টের তালিকায় সব দেখি আপনার নিজেরই পোস্ট। অন্য কারো লিখা কি ভালো লাগেনা অথবা অন্য কারো লিখা কি আপনি পড়েনা না?