নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
আপনাদের নিশ্চয়ই ইরানের সেই বিখ্যাত রিফিউজি মেহরান করিমি নাসেরি'র কথা মনে আছে? ১৯৮৮ সালের ২৬ আগস্ট নাসেরিকে ফ্রান্সের চার্লস ডি গলে এয়ারপোর্টে লাগেজ হারিয়ে জীবনের ১৭ টি বছর এয়ারপোর্টের 'টার্মিনাল-১'-এ কাটাতে হয়েছিল। নাসেরি'র লাগেজ চুরি হয়েছিল, যার সঙ্গে ছিল তার বেলজিয়ামে আশ্রয় নেয়া পাসপোর্ট। ইরানের শাহ সরকার ১৯৭৭ সালে নাসেরিকে ইরান থেকে বহিস্কার করার পর নাসেরি বেলজিয়ামে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন। আর চেষ্টা করছিলেন বৃটিশ নাগরিক মায়ের (স্কটল্যান্ডের) সূত্রে বৃটেনে বৈধভাবে বসবাসের। কিন্তু কপালে দুর্গতি থাকলে যা হয়, পাসপোর্ট আর লাগেজ হারানোর পর ১৯৮৮ সালের ২৬ আগস্ট থেকে ২০০৬ সালের ৩০ জুলাই পর্যন্ত নাসেরিকে ফ্রান্সের চার্লস ডি গলে এয়ারপোর্টের 'টার্মিনাল-ওয়ান'-এ কাটাতে হল। দীর্ঘ ১৭ বছর নাসেরি এয়ারপোর্টের টার্মিনালে বসে বই পড়েছেন, ডায়েরি লিখেছেন আর এয়ারপোর্টের কর্মচারীদের খাবার খেয়ে জীবন বাঁচিয়েছেন। এছাড়া এয়ারপোর্টের ওই কর্মচারীরা অবশ্য নাসেরিকে খবরের কাগজ পড়তে দিতেন। নাসেরি'র সেই ১৭ বছরের দুঃসহ জীবনের স্মৃতি নিয়ে নাসেরি যে বইটি লিখেছেন, সেটির নাম 'দ্য টার্মিনাল ম্যান'। অবশ্য নাসেরি একা ওই বইয়ের লেখক নন। সঙ্গে কো-রাইটার হিসেবে যুক্ত ছিলেন বৃটিশ লেখক এন্ড্রু ডনকিন।
পরবর্তীতে আমেরিকান ফিল্মমেকার ইস্টেভেন স্পিলবার্গ নাসেরি'র সেই ১৭ বছরের টার্মিনাল জীবন নিয়ে নির্মাণ করলেন কমেডি ফিল্ম 'দ্য টার্মিনাল'। যেখানে নাসেরি'র চরিত্রে অভিনয় করেন টম হ্যাংকস এবং তার বিপরীতে অভিনয় করেন ক্যাথেরিন জেটা জোন্স। অনেকে হয়তো স্পিলবার্গের 'দ্য টার্মিনাল' দেখে নাসেরি'র কথা মনে করতে পারবেন। ঠিক তেমন আরেকটি নাটক হতে যাচ্ছিল সাম্প্রতিক কালের মার্কিন নাগরিক এডোয়ার্ড জোসেফ স্নোডেনের ক্ষেত্রে। স্নোডেন একজন মার্কিন গোয়েন্দা। আমেরিকার ও বৃটেনের কিছু গোপন নথিপত্র ফাঁস করে দেওয়ায় সারা দুনিয়ায় মার্কিন গোয়েন্দারা স্নোডেনকে এখন খুঁজে বেড়াচ্ছে।
স্নোডেন হাওয়াই থেকে হংকংয়ে যাচ্ছিলেন। হংকংয়ে বসেই তিনি আমেরিকার সেই বিখ্যাত 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে'র কিছু গোপন তথ্য ফাঁস করে দেন। ২০ মে ২০১৩ সালে স্নোডেন সেই তথ্য বোমাটি ফাটান হংকংয়ে বসে। তারপর থেকেই তার উপর মার্কিন রেড এলার্ট জারী হয়। ২৩ জুন ২০১৩ সালে স্নোডেন রাশিয়ায় গমন করেন। ২৩ জুন ২০১৩ সালে স্নোডেন মস্কো'র শেরেমেটেভো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে নামেন। কিন্তু রাশিয়ায় ঢুকতে তার বৈধ কাগজপত্র ছিল না। দীর্ঘ ৩৯ দিন স্নোডেন মস্কো'র এয়ারপোর্ট টার্মিনালে নাসেরি'র মতো এক অনিশ্চিত জীবন শুরু করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত গতকাল ১ আগস্ট ২০১৩ তারিখে রাশিয়া স্নোডেনকে এক বছরের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান করেছে। স্নোডেনকে নিয়ে এখন আমেরিকা - রাশিয়া আরেকটি নতুন কূটনৈতিক টানাপোড়ন শুরু হয়ে গেল। খেলা হয়তো জমে উঠবে। দেখা যাক, রাশিয়া এবার কেমন খেলা দেখায়!!!
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:১৮
তন্ময় ফেরদৌস বলেছেন: খুব হাসিমুখে প্রেস কনফারেন্স করলো দেখলাম। তবে এইবার ওবামা পুতিন মিটিং এ সংশয় দেখা দিবে।