নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
স্বপ্নে দেখলাম, ঢাকার অভিজাত চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি লেখক সম্মেলন বসেছে। দেশের নামি দামি মাল্টি কর্পোরেট অর্গানাইজেশানগুলো সেই লেখক সম্মেলনের স্পন্সর। তাদের বাছাই করা কয়েকজন কথা সাহিত্যিককে তিন দিনের জন্য ওখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রত্যেকে একটা করে উপন্যাস লিখবেন। সম্মেলনের উদ্দেশ্য হল- যাঁর উপন্যাস সস্পন্সরদের নির্বাচিত প্যানেল বিচারকদের যাচাই বাছাইয়ে শ্রেষ্ঠ হবে তাঁকে বাংলাদেশী নোবেল পুরস্কার দেওয়া হবে। তারা বলছেন, লেখকদের জন্য সময় মাত্র তিন দিন। আর পুরস্কারের মূল্যমান দশকোটি টাকা। খাবার দাবার, ঘুমানোর ব্যবস্থা, লাইব্রেরি, ডিকশোনারি, বিনোদন সকল বিষয়ের যথেষ্ট সাপোর্টও রয়েছে সেখানে। নাচ, গান, বিনোদন, সুইমিং, এ ধরনের সুযোগ সুবিধাও রয়েছে। কিন্তু আয়োজকরা শর্ত জুড়ে দিয়েছেন যে, ওই তিন দিন অংশগ্রহনকারী কোনো লেখক তাদের উপন্যাস লেখা কার্যক্রম শেষ না করে বাসায় যেতে পারবেন না। উপন্যাস তাঁকে তিন দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। তো চলুন আমরা সেই লেখক সম্মেলনে লেখকদের কোনো ধরনের ডিসটার্ব না করে কে কি লিখছেন একটু পড়ে আসি। গোটা বাংলাদেশের চোখ তখন ওই লেখক সম্মেলনের দিকে। কে পাচ্ছেন বাংলাদেশী নোবেল!
কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ শুরু করেছেন- একটা আজিব টাইপের নয়া হিমু ক্যারেক্টার দিয়ে। দিনের বেলায় এই হিমু সম্মেলন কেন্দ্রের ছাদে উঠে বসে থাকে। রাতের বেলায় সে হলে ঢুকে কাপের্টের নিচে তার নিখোঁজ প্রেমিকাকে দুরবীন দিয়ে খোঁজে। হিমুর ধারণা, তার প্রেমিকা হয়তো হাওয়া খেতে পাশের চন্দ্রিমা উদ্দ্যানে একা একা ঘুর ঘুর করছে। কিন্তু তার নাগাল সে কিছুতেই পাচ্ছে না। প্রফেসর মুহম্মদ জাফর ইকবাল শুরু করেছেন- সূর্যের আলট্রা-ভায়োলেট রশ্মি নিয়ে আদম নামের এক বিজ্ঞানীর গবেষণা দিয়ে। আকাশের অদৃশ্য সেই ফুটোটি বন্ধ করার উপায় বের করবেন এই আদম। আর এজন্য তার সঙ্গে আছে তেরো জন লিলিপুট বিজ্ঞানী। যাদের বয়স তেরো থেকে ঊনিশ। যারা আন্ডারগ্রাউন্ডে দিনরাত আদমের নের্তৃতে গবেষণায় মত্ত। পৃথিবীর তাপমাত্রা স্বাভাবিক করতে গ্রিন হাইজ এফেক্ট তারা যে করেই হোক ঠেকাবেন। নইলে পৃথিবীকে নাকি আর রক্ষা করা যাচ্ছে না। সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। পরিবেশ প্রকৃতি দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আদম মনে করেন, তাদের গবেষণা ব্যর্থ হলে পৃথিবী নিশ্চিত ধ্বংস হয়ে যাবে।
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক শুরু করেছেন, এক অদ্ভুত মানুষ টাকু সোলায়মানের গল্প। এই টাকু সোলায়মান শুধু হাওয়া খেয়ে বেঁচে থাকতে পারেন। জন্মের সময় টাকু সোলায়মান দেখতে হয়েছিল একশো কুঁড়ি বছরের বৃদ্ধের মতো। মাথায় তার বিশাল টাক। মুখ ভরতি খোঁচা খোঁচা দাড়ি। যতোই তার বয়স বাড়ে ততোই এই টাকু সোলায়মান বৃদ্ধাবস্থা থেকে ইয়ং হতে থাকে। সবার বয়স বাড়লে যেমন বুড়ো হয় এই টাকু সোলায়মান তার ঠিক উল্টো। তার লাইভ সাইকেল উল্টো। বৃদ্ধ থেকে ধীরে ধীরে সে একদিন শিশু হয়ে যাবে। এবং একেবারে ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো হয়ে যাবার পর এই টাকু সোলায়মানের হয়তো মৃত্যু হবে। তার একমাত্র মেয়ের মেয়ে মানে তার নাতনী তখন তাকে কোলে করে ঘুরবে। কারণ, টাকু সোলায়মানের বউ ততোদিনে একশো বছরের বৃদ্ধা। কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন শুরু করলেন, এক মুক্তিযুদ্ধের সাহসী নারীকে দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই নারীর বিয়ের রাতেই তার স্বামী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ঘর ছাড়েন। আজো তার স্বামী বেঁচে আছেন কীনা সখিনা বিবি তা জানেন না। সারা বাংলাদেশের বদ্যভূমি গুলো সে এখনো চষে বেড়ায়। সখিনা বিবির ধারনা, তার স্বামী যদি যুদ্ধে মরেও যায় বদ্যভূমিতে সে তাঁর লাশ খুঁজে পাবেন।
জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন শুরু করলেন ভারত বাংলাদেশ বর্ডারের নো ম্যানস ল্যান্ডে বিএসএফের গুলিতে নিহত এক কিশোরীর গল্প দিয়ে। ছিটমহলের বাসিন্দা এই কিশোরী'র নাম হেনা। কিশোরী হেনা গুলিতে নিহত হবার আগে কয়েকজন দুষ্টু কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছিল। অমাবস্যার রাতে সে ছিটমহলের বাড়ি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে গিয়েই বিএসএফের গুলির মুখে পরে। তারপর যত্তোসব বিপত্তি। কথা সাহিত্যিক নাসরিন জাহান শুরু করেছেন, অদ্ভুত এক কালো বিলাই দিয়ে। এই কালো বিলাই দিনের বেলায় সম্মেলন কেন্দ্রে লেখকদের টেবিলের নিচে আরামে ঘুমিয়ে থাকে। রাতের বেলায় এই কালো বিলাই ভৌতিক সব কর্মকাণ্ড শুরু করে। কালো বিলাইকে আটক করার জন্য সিকিউরিটির লোকজনদের সাথে বিশাল এক ঝামেলা হয়। সেখানে আমাদের এলিট ফোর্স র্যাবকে দায়িত্ব দেওয়া হয় বিড়াল আটকানোর। ঘটনা কোন দিকে যাবে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।
লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন শুরু করেছেন এক গোয়েন্দার গল্প দিয়ে। এই গোয়েন্দার নাম মাসুদ রানা। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় যে বিডিআর বিদ্রোহ হয়েছিল তার নেপথ্যে কে বা কারা জড়িত ছিল তাদের খুঁজে বের করতেই মাসুদ রানা অভিযান শুরু করেছেন। বর্তমানে সে বিভিন্ন বিডিআর ক্যাম্পে ইমাম সেজে তার গোয়েন্দা কাজকর্ম করছেন। সম্মেলন চলাকালীন সময়ে মাসুদ রানা কুড়িগ্রামের রৌমারী ক্যাম্পে যাবার জন্য পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ঘাটে অপেক্ষা করছেন। জনপ্রিয় লেখক আনিসুল হক শুরু করেছেন, এক বোবা মেয়ের প্রেমের গল্প দিয়ে। বোবা মেয়েটি ইন্টারনেটে চ্যাট করতে করতে এক সময় শহরের সবচেয়ে ভয়ংকর সন্ত্রাসী, পুলিশের তালিকায় যে কীনা এক নম্বর দাগী আসামী, তাকে ভালোবাসতে থাকে। যেদিন বোবা মেয়েটি তার প্রেমিকের সাথে দেখা করবে, সেদিনই বাংলাদেশ পুলিশ ওই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। মেয়েটি যে বোবা তা সে ওইদিন-ই প্রথম বুঝতে পারে। জেলখানায় বসে সে মনে মনে শপথ করে, ছাড়া পেলে সে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছেড়ে দিয়ে বোবা মেয়েটিকে বিয়ে করে বিদেশে কোথায় চলে যাবে।
ঘুরতে ঘুরতে আমরা যখন আমাদের প্রিয় কথা সাহিত্যিক জাকির তালুকদারের সামনে আসি তখন দেখি, তিনি শুরু করেছেন চলনবিলের নিচে এক বিশাল রত্ন ভাণ্ডারের খোঁজে একদল খনিশ্রমিক দিনরাত খনন করে যাচ্ছেন, এমন এক জটিল আজগুবি গল্প দিয়ে। সেখানে উপস্থিত বাংলাদেশী ভূ-তাত্ত্বিকবিদগণ, খনি গবেষকগণ, প্রকৌশলী আর খনিশ্রমিকদের ধারনা- পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী পারমানবিক বোমা তৈরির উপাদান ইউরেনিয়াম আর সাদা গ্রাফাইটে চলনবিলের তলদেশ নাকি পুরোপুরি ভরপুর। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বাংলাদেশী যে সকল ভূতাত্ত্বিক এই কাজে জড়িত তাঁরা সবাই এটা ঠিকমতো বুঝতে পারছেন না। রাজনৈতিক দলগুলো আবার এটা নিয়ে মহা ক্যাচাল শুরু করেছে। কেউ বলছেন, রাশিয়া বা ভারত থেকে খনি বিশেষজ্ঞ আনা হোক। কেউ বলছেন, আমেরিকা বা পাকিস্তান থেকে আনা হোক। একদল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর ছাত্রছাত্রীরা আবার দেশী বিশেষজ্ঞ দিয়ে কাজটা করানোর জন্য মহা আন্দোলনে যাবার হুমকি দিচ্ছেন। খনি থেকে ইউরেনিয়াম আর সাদা গ্রাফাইট তোলার কাজ আপাতত বন্ধ। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কোনদিকে যায় সেই অপেক্ষায় সবাই। তার মধ্যে গুজব শোনা যাচ্ছে, কে বা কারা যেনো রাতের অন্ধকারে চলনবিলের নানা পয়েন্টে খনন কাজ করছে। তারা কখন কি করছে, কি নিয়ে যাচ্ছে এই নিয়ে জনমনে তখন নানা প্রশ্ন। পত্র পত্রিকা টেলিভিশনের একটা বিশাল অংশ চলনবিলের অজ্ঞাত ওই গুপ্ত সম্পদের খবরাখবর নিয়ে ইদানিং ভারী ব্যস্ত।
আমরা যারা লেখক সম্মেলনে ঘুরে ঘুরে লেখকদের চলমান প্রতিযোগিতার লেখার অংশ বিশেষ পড়ছিলাম, হঠাৎ নাসরিন জাহানের কালো বিলাইয়ের দেখা মিলতেই আমরা সবাই ভয়ে দ্রুত সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরে চলে আসলাম। চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরে আমরা 'কে জিতবে প্রথম বাংলাদেশী নোবেল' এই নিয়ে আড্ডায় ব্যস্ত। হঠাৎ কে যেনো চিৎকার করে বললো, ওই যে হিমু ...চন্দ্রিমা উদ্যানের দিকে যাচ্ছে। সেই হৈ হল্লায় হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙে গেল।
২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:২৬
পাকাচুল বলেছেন: আমাদের রেজা ঘটক ভাই বিশ্বমানের লেখক----পাকাচুল!
৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: বাংলাদেশ নো _ বেল পুরস্কার
লেখক স্বপ্ন রেজা ঘটক পাখি ভাই ২০০৫০ পুরস্কার ঘোষণা
৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:১৩
প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: এই জাতিকে একদিন রেজা ঘটককে মূল্য না দেবার জন্য পস্তাতে হবে । সেদিন চুষার জন্য হাতের আঙ্গুলও অবশিষ্ট থাকবে কিনা কে জানে ? _ প্রত্যাবর্তন@
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:২৪
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: আমাদের রেজা ঘটক ভাই বিশ্বমানের লেখক-----উদাসী স্বপ্ন!