নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

।। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাই বর্তমান সমাজের অনাচারের জন্য দায়ী।।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

বাংলাদেশের বয়স ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে ৪২ বছর পূর্ণ হবে। অথচ এই ৪২ বছরে দেশে একটি আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হতে পারেনি। শিক্ষা পদ্ধতির বর্তমান যে চিত্র বিদ্যমান তা অনেকটা জগাখিচুরির মতোন। একদিকে বাংলা মিডিয়াম। যে পদ্ধতির দিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি গড় মানুষের ঝোক। নিম্নবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও আংশিক উচ্চ মধ্যবিত্তের সন্তানরা এই বাংলা মিডিয়ামের স্টুডেন্ট। দ্বিতীয়টি ইংলিশ মিডিয়াম। উচ্চ বিত্ত ও আংশিক উচ্চ মধ্যবিত্তের সন্তানরা এই ইংলিশ মিডিয়ামের স্টুডেন্ট। আর তৃতীয়টি হল মাদ্রাসা শিক্ষা। একেবারে গরিব, নিম্নবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্তের সন্তানরা এই মাদ্রাসার স্টুডেন্ট। এটি একটি সাধারণ চিত্র বর্তমান বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে।

উচ্চ বিত্তের কোনো সন্তানকে মাদ্রাসায় বাটি চালান দিয়েও পাওয়া যাবে না। আবার একেবারে গরিব বা নিম্নবিত্তের কারো সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামের কোনো স্কুলে হাজার তল্লাশি চালিয়েও পাওয়া যাবে না। তাহলে, আমাদের রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা যখন বলেন, সবার জন্য শিক্ষার সমান সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই কথাটি একটি ডাহা মিথ্যা কথা। গরিব, নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত (আংশিক) এই পরিবারগুলোকে শিক্ষা ব্যবস্থার চলমান পদ্ধতির মাধ্যমেই দাবিয়ে রাখার একটি সুস্পষ্ট কৌশল বিরাজমান। এই কৌশলটি উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তের (আংশিক) ক্ষমতা ও সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার একটি হাতিয়ার মাত্র।

মধ্যবিত্তের সন্তানরা উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মেধার যোগ্যতায় হাজির হয়। সেখানে এই প্রভাবশালী মহলটি ছাত্র-রাজনীতি'র নামে একটি স্বপ্নের মূলা ঝুলিয়ে রেখেছে। সেই মূলার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ এবং প্রচ্ছন্ন মদদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা এখন হুমকির পথে। ছাত্র ধর্মঘট, দলীয় বিরোধ, নানামুখী রাজনৈতিক ক্যাচালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অস্থির। নির্দিষ্ট সময়ে কোর্স শেষ হয় না। শিক্ষকরা ক্লাশে নিয়মিত আসেন না। তাদের অনেকে আবার কনসালটেন্সি নিয়ে ব্যস্ত। শিক্ষক রাজনীতি তো আছেই। আর যারা ক্ষমতায় বা ক্ষমতার অপেক্ষায় তাদের সবার সন্তানরা বিদেশে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-রাজনীতি মুক্ত পরিবেশে উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছেন।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো যে সকল বিষয়ে পড়ানো হয় এগুলো উন্নত বিশ্বে অনেক আগেই সেকেলে হয়ে গেছে। আমাদের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজাসটার ম্যানেজমেন্ট সাবজেক্ট নেই। অথচ বাংলাদেশে এটাই হওয়া উচিত সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নাম্বার সাবজেক্ট। ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট সাবজেক্ট নেই। অথচ বাংলাদেশে পানি একটি বড় সমস্যা। ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট সাবজেক্ট নেই। অথচ আমাদের মহানগরগুলো যানজটে হাজার হাজার শ্রমঘণ্টা নষ্ট করছে বছরের পর বছর। মোট কথা আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কর্মমুখী শিক্ষার একটি বড় ধরনের ঘাটতি চলমান শিক্ষা পদ্ধতিতে ক্ষমতাধররা ইচ্ছে করেই রেখে দিয়েছেন। নইলে রাজনীতি পানসে হয়ে যাবে।

আমাদের মাদ্রাসাগুলোতে যারা পড়াশুনা করছে, তাদের ভবিষ্যৎ কি? সেখান থেকে কেউ কি কোনো দিন ব্যাংকার হবেন? বা সচিব হবেন? বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হবেন? এককথায় কোনো দিন সেই সুযোগ তাদের নেই। তারা বড় জোর কোনো একটা মসজিদের ইমাম হবেন। কেউবা কাঁচামাল বা সবজি বিক্রেতা হবেন। কেউবা বড়লোকের বাসায় হাউস টিউটর হবেন। কারণ, বড়লোকের ছোট্ট সন্তানটিকে একটু কোরআন শেখাবেন। একটু আরবি পড়া শেখাবেন। অথবা বাসার মিলাদে নিমন্ত্রণ রক্ষা করবেন। আর জানাজা পড়ানোর জন্য দু'একজন ডাক পাবেন।

আমাদের রাজনীতির দুষ্ট চক্রের ব্যবসায়ীক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন মাদকের ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল কলেজে ইয়াবা, ফেন্সি-ডাইল, ট্যাবলেট, মদ। বাংলা মিডিয়ামে ফেন্সি-ডাইল, মদ-গাঁজা। আর মাদ্রাসায় অন্ধ বিশ্বাস। এগুলো সবই মাদক। আমাদের ক্ষমতাধররা বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এগুলোর রমরমা ব্যবসার কথা জেনেও না জানার ভান করছেন। আর গোপনে সেই কারবারের লাভক্ষতি হিসাব করছেন। আর একটি জিনিস স্টুডেন্টদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে মেটা হল চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি। এটাও মাদকের মত শক্তিশালী একটি অস্ত্র। আমাদের নষ্ট রাজনীতির দূবৃত্তায়নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এই মাদক এখন ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে।

সেই ভয়ংকর মাদকের খপ্পরে এখন নতুন প্রজন্ম। তাই এখানে ইফটেজিং একটি সামাজিক ব্যাধি। তাই এখানে ইয়াবা একটি টিনএজ ফ্যাশন। তাই এখানে মদ-গাঁজা-ট্যাবলেট একটি তারুণ্যের উচ্ছ্বাস। গোটা জাতি এভাবে নষ্ট রাজনীতির দুষ্ট চক্রে তীলে তীলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের ক্ষমতাধরগণ কিভাবে এই প্রলয় ধ্বংসের মধ্যে আগামীতে আরো মূলা ঝুলিয়ে কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে সেই প্রহর গুনছেন।

জাতির শরীরে এখন পচন ধরেছে। সেই পচনের জন্য আমাদের নষ্ট রাজনীতি সবচেয়ে বেশি দায়ী। ৪২ বছরে সেই পচনে এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। যতোদিন আমরা একটি আধুনিক যুগোপযুগী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে না পারবো, ততোদিন এই দুর্গন্ধ, এই পচন থামানো যাবে না। সমাজকে শ্রেণীবিভাজনে আবদ্ধ রেখে সমাজের গোড়ার ক্ষত সারানো যাবে না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৭

নিষ্‌কর্মা বলেছেন: কতগুলো কথা সোজাসুজি বলেছেন, অভিনন্দন সে জন্য।

২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:০১

রাফসান আরিফ বলেছেন: আপনি হয়ত জানেন না, কারণ আপনি যে কয়টি বিষয়ের নাম বললেন তার সব কয়টিই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আছে। ঢাবি তে ডিজাসটার ম্যানেজমেন্ট এর উপর পোষ্ট গ্রাজুয়েট কোর্স আছে ( স্নাতক আছে কি না জানিনা)। সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই ট্রান্স পোর্টেশন ইজ্ঞিনিয়ারিং (ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট) এ পোষ্ট গ্রাজুয়েট কোর্স আছে। বুয়েট এর পানিসম্পদ বিভাগ দীর্ঘদিন থেকে পানিসম্পদ প্রকৌশল বিষয়ে (ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট) ডিগ্রি প্রদান করে আসছে।

৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:৪০

অস্থির পোলাপাইন বলেছেন: অনেকদিন পর লগড ইন হৈলাম শুধু লেখায় +++ দেওয়ার জন্য
বইলা লাভ নাই তারপরও ভালো বলসেন।
এইরকম লেখায় মানুষের ডিসকাশন নাই কিন্তু ঐশীরে নিয়া কিসু দেন মাইনষে ঝাপায়া পড়ব। আস্তিক - নাস্তিক মার্কা টপিক দেন মানুষ কোপাইবো একটা আরেকটারে কিন্তু যেইটা সবচেয়ে বড় ইস্যু হওয়া দরকার এমনকি রাজকারের বিচারের চাইতেও ইম্পোর্টেন্ট ইস্যু হওয়া উ্চিত বাল মার্কা শিক্ষা ব্যাবস্হা চেন্জ করা সেইখানে মানুষের কোনো ইন্টারেস্ট নাই। এই দেশে এই বালের শিক্ষা ব্যাবস্হা পরিবর্তন না করতে পারলে আমরা আরো ৪২ বছর পর নিজেরাই নিজেগো রাজাকার কমু।


রাফসান আরিফ বলেছেন: আপনি হয়ত জানেন না, কারণ আপনি যে কয়টি বিষয়ের নাম বললেন তার সব কয়টিই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আছে। ঢাবি তে ডিজাসটার ম্যানেজমেন্ট এর উপর পোষ্ট গ্রাজুয়েট কোর্স আছে ( স্নাতক আছে কি না জানিনা)। সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই ট্রান্স পোর্টেশন ইজ্ঞিনিয়ারিং (ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট) এ পোষ্ট গ্রাজুয়েট কোর্স আছে। বুয়েট এর পানিসম্পদ বিভাগ দীর্ঘদিন থেকে পানিসম্পদ প্রকৌশল বিষয়ে (ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট) ডিগ্রি প্রদান করে আসছে।

ভায়ে এই ডিপার্টমেন্ট গুলা থেইকা পোলাপাইন গুলা বাইর হয়া কি করে? হয় বাইরে চইলা যাই নাইলে ব্যান্ক এ ঢুকার লেইগা পাগল হয়৭। আল্টিমেটলি যেই লাউ হেই কদুই থাইকা যায়।

৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৪৯

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটির জন্য প্রজন্ম ধ্বংসের পথে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় সর্বোচ্চ যা পাওয়া যায়, তা হলো লেখতে ও পড়তে পারা। এরচেয়ে বেশি যারা জানে, তা তাদের নিজের এবং পারিবারিক কারণে।

আপনার অভজারভেশনে যুক্তি আছে। তবে আপনি নিজে আরও যুক্তি এবং তথ্যে দিতে পারতেন। বিশাল বড় শিরোনামের বিপরীতে লেখাটি অতিরিক্ত ছোট হয়ে গেলো।

তবু ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.