নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী'র প্রতি খোলা চিঠি

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী'র প্রতি খোলা চিঠি-



আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। বিগত ৪২ বছরের রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিবেচনা করে আমি বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী'র প্রতি সদয় বিবেচনার জন্য এখানে কিছু প্রস্তাব পেশ করতে চাই। চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ সোনার বাংলা নির্মাণ করার জন্য আপনারা দুইজন একত্রিত হয়ে আমার এই প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করলে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম আপনাদের চিরদিন অন্তরের অন্তস্থল থেকে ভালোবাসবে। আপনারা দুইজন বাংলাদেশকে সেই ভবিস্যৎ নির্মাণের পথে একটি যুগপথ সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারেন।



আমি আমার প্রস্তাবগুলো এখানে পয়েন্ট আকারে পেশ করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী আপনারা দুইজন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি। আপনারা দুইজন একত্রিত হয়ে মহান জাতীয় সংসদে আমার প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করে আইন পাশ করে, তা বাস্তবায়ন করলে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে একটি নতুন দিকে অগ্রসর হবে।



১. স্বাধীনতা দিবস:

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে লাখ লাখ বাঙালি জনতার সামনে যখন ঘোষণা করলেন- 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম'। এটাকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার আনুষ্ঠানিক নির্দশনা ধরে এবং ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা নিয়ে এবং ঘোষক নিয়ে বিভ্রান্ত দূর করতে, ৭ মার্চকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালনের আহবান জানাচ্ছি। আর নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সেই ঘোষণাটি দিয়েছিলেন লাখ লাখ বাঙালি জনতার সামনে বাঙালি'র প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।



২. শাসন ব্যবস্থা:

বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা হবে মন্ত্রী পরিষদ শাসিত সরকার দ্বারা। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে যেহেতু আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। তাই আমাদের মন্ত্রী পরিষদে মন্ত্রী হবেন ১৬ জন। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সেই মন্ত্রীসভা হবে ১৭ সদস্যের। সেই মন্ত্রীসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন একজন বিরোধীদলীয় সাংসদ। বাংলাদেশের যে কোনো জরুরী পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি'র নের্তৃত্ব প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা ও ১৬ সদস্যের মন্ত্রীসভা- এই ১৯ জন একত্রে বৈঠক করবেন। প্রতি মাসে অন্তঃত একবার রাষ্ট্রের এই সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পরিষদের বৈঠক হবে।

প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ও জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা যেদিন শপথ নেবেন, সেদিন থেকেই তারা হবেন রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি। আর রাষ্ট্রপতি সহ এই ১৯ জন তখন থেকেই দলীয় পদ ত্যাগ করবেন। দলীয় সভা-সমাবেশ ত্যাগ করবেন। আর নিজ নিজ দলে দলীয় প্রধান নির্বাচিত হবে সংসদীয় সদস্যদের ভোটে। রাষ্ট্রীয় যে কোনো অনুষ্ঠানে যদি প্রধানমন্ত্রী চিফ গেস্ট হন তাহলে একই অনুষ্ঠানে প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা হবেন স্পেশাল গেস্ট। যেমন একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠান, স্বাধীনতা পদক প্রদান অনুষ্ঠান ইত্যাদি।



৩. মন্ত্রী পরিষদ ও মন্ত্রণালয় বণ্টন:

রাষ্ট্রের জনগণের পাঁচটি মৌলিক অধিকারকে অগ্রাধীকার দিতে পাঁচটি মন্ত্রণালয় কাজ করবে। সেই পাঁচটি মন্ত্রণালয় হল- খাদ্য মন্ত্রণালয়, বস্র মন্ত্রণালয়, বাসস্থান মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ১৬ সদস্যের মন্ত্রীসভায় এই পাঁচটি মন্ত্রণালয়ে অন্তঃত দুইজন মন্ত্রী হবেন বিরোধীদলের সদস্য। এছাড়া যেসব মন্ত্রণালয় থাকবে সেগুলো হল- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জনসম্পদ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আন্তঃসংযোগ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণায় এবং বিজ্ঞান-কারিগরি মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের বিদ্যমান মন্ত্রণালয়গুলোকে এই ১৬টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় করা হবে।

মন্ত্রী পরিষদ আকারে ছোট রাখার কারণ হল, প্রধানমন্ত্রী এই ১৬ টি মন্ত্রণালয়কে খুব সহজেই নজরদারী করতে পারবেন। আর সরকারী ব্যয় কমানো হবে একটি মোক্ষম উপায়। এই ১৬ টি মন্ত্রণালয়ের মাত্র ৬টি থাকবে রাজধানী ঢাকায়। অবশিষ্ট ১০টি মন্ত্রণালয় ঢাকার বাইরে ৬টি বিভাগীয় সদরে এবং ৪টি পুরাতন জেলা সদরে স্থানান্তর করা হবে। যেমন- দুর্যোগ মন্ত্রণালয় বরিশালে, শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামে, বাসস্থান মন্ত্রণালয় সিলেটে, খাদ্য মন্ত্রণালয় খুলনায়, বস্র মন্ত্রণালয় রাজশাহীতে ইত্যাদি।



৪. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল:

দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল হবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। যদি কোনো প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতাল কেউ করতে চায়, তাকে রাষ্ট্রের কঠোর দিক নির্দেশনা মেনেই তা করতে হবে। সেক্ষেত্রে সেই সব একাডেমি বা ক্লিনিকের খরচের দিকটা রাষ্ট্র ঠিক করে দেবে।



৫. রাজনীতি ও বয়সসীমা:

দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। রাজনীতি বিষয়ে পাঠ নেওয়া যাবে। রাজনীতি করার বয়স হবে ৩০ থেকে ৬০ বছর। ৩০ বছর বয়স না হলে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। আবার বয়স ৬০ পূর্ণ হলেই তাকে বাধ্যতামূলক রাজনীতি থেকে অবসর নিতে হবে। দেশের যারা পেশাজীবী আছে তাদের কোনো ধরনের রাজনীতি করা চলবে না। কেউ যদি রাজনীতি করতে চায় তাকে পেশা হিসেবে রাজনীতি করতে হবে। একই সঙ্গে ডাক্তারি, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, শিক্ষক, উকিল থেকে রাজনীতি করা যাবে না। রাজনীতি করতে চাইলে তাকে রাজনীতি পেশায় আসতে হবে। আর বয়স ৬০ পূর্ণ হলেই রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিতে হবে।



এই পাঁচটি পরিকল্পনা যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় বিরোধীদলীয় নেতা চলতি সংসদে আইন করে পাস করেন এবং আগামী দশম জাতীয় নির্বাচন থেকেই এই আইন কার্যকর করা হয়, তাহলে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে একটি গঠনমূলক দিকে অগ্রসর হবে। বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কিছু দুবৃত্ত সিন্ডিকেটের বলয়ে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা চলে গেছে। সেই রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী সদয় উদ্যোগ গ্রহন করলেই কেবল বাংলাদেশ একটি সুন্দর আগামী'র পথে অগ্রসর হবে। নইলে বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বাংলাদেশ একটি কঠিন বাস্তবতার দিকে রওনা করেছে।



যদি জনসেবা করাই রাজনীতি'র মূল আদর্শ হয়, তাহলে সরকারের মন্ত্রীসভায় বিরোধীদলের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ব্যয় কমাতে মন্ত্রী পরিষদের আকার ছোট করা এবং রাজধানী ঢাকাকে রক্ষা করার জন্য মন্ত্রণালয়গুলো ডিসেন্ট্রালাইজড না করা হলে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কতিপয় স্বার্থান্বেসী মহলের সেবাই করা হবে। জনগণ ধীরে ধীরে রাজনীতি বিমুখ হয়ে যাবে। আর দেশ এক চলমান কঠিন সংকটের মত বারবার জড়াবে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটি নতুন মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভের পাশাপাশি একটি গঠনমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিয়ে অগ্রসর হবে।



মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী, যদি আপনাদের সত্যিকার দেশপ্রেম থাকে, যদি আপনারা বাংলাদেশকে নতুন প্রজন্মের কাছে একটি নিরাপদ বাসস্থান হিসেবে উপহার দিতে চান, যদি আপনাদের সত্যি সত্যিই জনসেবা করার ইচ্ছে থাকে, তাহলে আপনাদের দুইজনকে এক টেবিলে বসে আগামী বাংলাদেশের দিকনির্দেশনা ঠিক করতে হবে। নইলে বারবার বাংলাদেশ পেছনের দিকে যাবে। আর ধীরে ধীরে দেশের সকল সম্পদ দুবৃত্তায়নের বলয়ে চলে যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী, আমার প্রস্তাবগুলো আরো সুবিবেচনা করে আরো ঢেলে সাজানো যেতে পারে। আমি একটি ধারণা উপস্থাপন করেছি মাত্র। পঞ্চশালা এই পরিকল্পনাটি আরো গুছিয়ে আরো পরিপক্ক আকারে ভবিষ্যতে গঠন করা যেতে পারে। কিন্তু বিদ্যমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা থেকে বের হবার জন্য রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এখন জরুরী হয়ে গেছে।



সবশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী'র সর্বাঙ্গীন সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। নতুন প্রজন্মের হাতে বাংলাদেশ একটি সুনির্দিষ্ট গতিপথেই একটি সত্যিকার সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে উঠবে, এটাই হোব আমাদের সবার কামনা। বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০

মহসিন৭১ বলেছেন: আপাতত দুই নেত্রী এক টেবিলে বসে আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে তা ঠিক করুক। তাহলে কিছু প্রাণ বেচে যাবে। দুই নেত্রী সমঝোতায় না এলে ২৫ অক্টোবরের পর দেশে রক্তপাত হতে পারে। যা কারো কাম্য নয়। তাই দু'ই নেত্রীর কাছে অনুরোধ একটা ফয়সালা করুন। নিজ নিজ স্বার্থ কিছুটা হলেও বিসর্জন দিন, দেশের স্বার্থে।

২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:২৫

মতিউর রহমান মিঠু বলেছেন: রেজা ভাই, ভাল বলছেন তবে এখন দরকার আগামী নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব তা নির্ধারন করা।

৩| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩৫

এম ই জাভেদ বলেছেন: এ সব প্রস্তাব শুনতে বেশ লাগে , কিন্তু বাস্তবতার কাছে আকাশ কুসুম চিন্তা ছাড়া কিছু নয়।

৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৩২

একাকী বাংলাদেশি বলেছেন: :) :) :)

৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:১৩

nurul amin বলেছেন: আপনার মাথায় এত ব্রেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.