নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঐতিহাসিক নৈশভোজ ও একটি মজার স্বপ্ন...

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩১

গোটা জাতি এখন একটা ঐতিহাসিক নৈশভোজ দেখার অপেক্ষা করছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুই নেত্রী যেখানে বিগত তেঁইশ বছর কথা বলেন না, দেখা করেন না, সেখানে তারা পরসুদিন ৩৭ মিনিট মোবাইলে কথা বলেছেন। এটাতো বাংলাদেশের জাতীয় রেকর্ড। আন্তর্জাতিক রেকর্ড কিনা একটু গবেষণা করে দেখতে হবে। পৃথিবীর কোন দেশে রেড-টেলিফোনও বিকল থাকে? এক কথায় এই প্রশ্নের জবাব হল সপ্ত আশ্চার্যের দেশ বাংলাদেশে। বাংলাদেশের সপ্ত আশ্চার্যগুলো কি কি?

১. বাংলাদেশের সবগুলো রাজনৈতিক দল জনগণের কল্যানের জন্য রাজনীতি করেন।

২. বাংলাদেশে যে দল ক্ষমতায় যায় তারা দেশকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দেয়।

৩. বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোসজনক।

৪. বাংলাদেশে আইন সকলের জন্য সমান।

৫. বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পর বন্ধুসুলভ, পরমত সহিষ্ণুতা এবং ভিন্নমতের প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল।

৬. বাংলাদেশের জনগণই ক্ষমতার একমাত্র উৎস।

৭. বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ একটি দেশ।

তো এরকম একটি দেশে নির্বাচনকালীন সরকার কিভাবে গঠিত হবে, সে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানানীয় বিরোধীদলীয় নেত্রীকে টেলিফোনে নৈশভোজের নিমন্ত্রণ দিলেন। খাবার টেবিলে খেতে খেতে কিভাবে সরকার গঠন করা হবে তা নিয়ে দু'জনে পরামর্শ করবেন। সেই সুযোগে উভয় দলের অনেক বড় বড় দেশনেতাও সেখানে যাবেন। পরম্পর কোলাকুলি করবেন। একসঙ্গে খাবেন। দেশের তাবৎ প্রাইভেট ও সরকারি টেলিভিশন সেই দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করবে। আর আর আমরা আমজনতা সেই ঐতিহাসিক ভোজসভা দেখে খুশিতে ব্লা ব্লা ব্লা...। ক্লাপ ক্লাপ ক্লাপ...বাজাও তালিয়া....আহা এমন সুন্দর দেশ পৃথিবীর আর কোথায় আছেরে ভাই?

গত মাসে অস্ট্রেলিয়ায় সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী'র দল হেরে গেছে। সেখানে বিরোধীদল ক্ষমতায় গেছে। তো যিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সংসদে এখন তার বসার জায়গা হয়েছে পেছনের সারিতে। কারণ, তিনি জনগণের সমর্থণ লাভে ব্যর্থ হয়েছেন, সো আপনি পেছনে গিয়ে বসেন। আর মাত্র কয়েকদিন আগেও যাকে কেউ পাত্তাই দিতেন না। সংসদে বসতেন পেছনের সারিতে। তিনিই এখন প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রেলিয়ার। কপালে থাকলে কেউ তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারে না।

সামনে বাংলাদেশের দশম সাধারণ নির্বাচন। নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে দুই নেত্রী কথাবার্তা বলে একটা ফয়সালা করবেন। তারপর সবাই পান তামাক নিয়ে একযোগে ঝাপিয়ে পড়বে নির্বাচনী উৎসবে। আহা কোন সে মার্কা? সবাই বল, তালে তালে...আমার ভাই, তোমার ভাই...

ভোটের দিন অনেক গরিব মহিলা নতুন শাড়ি পড়বেন। অনেক গরিব ভদ্রলোক নতুন শার্ট পড়বেন। অনেক মানুষ দু'চার প্লেট ভাল খাবার খাবেন। তারপর পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে হাসতে হাসতে বাড়িতে যাবেন। ভোট গণণা শেষে যাদের পছন্দের ব্যক্তি বিজয়ী হবে, তারা বিজয় মিছিল বের করবে। কিন্তু হারু পার্টির প্রার্থীও সেই মিছিলে থাকবে। পাশাপাশি তারা গলায় ফুলের মালা নিয়ে গোটা এলাকা ঘুরবেন। সবাই তাদের মিষ্টিমুখ করাবে। রঙ দেবে। আহা কি আনন্দ বাংলার আকাশে বাতাসে...

তারপর নির্বাচনে বিজয়ী দল সরকার গঠন করবেন। অন্যরা সবাই তাদের সঙ্গে একসঙ্গে শপথ নেবেন। দেশ গড়ার শপথ। দেশ থেকে দুর্নীতি বিতাড়ন করার শপথ। দেশের সকল উন্নয়নে সবাই মনযোগ দেবেন। আর আমরা আমজনতা আবার ওই পাঁচ বছরের নির্বাচনী উৎসবের জন্য অপেক্ষা করতে থাকব। সাংসদগণ এলাকায় গেলে সবার উঠঅনে উঠানে হেঁটে সবার খোঁজখবর নেবেন। কারো কোনো অসুবিধা থাকলে এমপি সাহেবের কাছে বলবেন। এমপি সাহেব সাধ্যমত তাদের সহযোগিতা করবেন। তারপর সবাই সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে একসঙ্গে বসবাস করতে থাকবেন।

আর শিশুরা আমাদের দুই নেত্রী'র নাম মুখস্থ করবেন। ওনাদের জীবনী লিখতে আসবে পরীক্ষায়। তা মুখস্থ করার জন্য ছোট ছোট শিশুরা পড়ায় মনযোগী হবেন। আহা কি আনন্দ বাংলাদেশের ঘরে ঘরে...

কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেখলাম, ওটা ছিল স্বপ্ন। বাস্তবে এই বাংলাদেশ কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। সেই বাংলাদেশকে আমরা কোথায় পাব, দুইনেত্রী কি আমাদের স্পষ্ট করে বলতে পারেন? যদি না পারেন, তাহলে আপনারা রাজনীতি ছেড়ে দেন। দেশকে বাঁচান।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.