নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
আমি উদ্বিগ্ন। আমি আতংকিত। দেশের ষোলো কোটি মানুষের মতো আমিও গভীরভাবে উৎকণ্ঠিত। ক্ষমতায় থাকার লোভ আর ক্ষমতায় যাওয়ার লোভ আমাদের রাজনীতিকে এতোই লালায়িত করেছে যে, আজ দেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমরা নিরাপত্তা নিয়ে ভারী অসহায়। আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমি আমার বন্ধুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমি আমার প্রতিবেশী সকল সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। স্বাধীনতার ৪২ বছর পর বাংলাদেশ নিয়েও আমি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। সেই উদ্বেগের কারণ অবশ্যই দুবৃত্তায়নের রাজনীতি আর আমাদের তথাকথিত রাজনৈতিক কালচার। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি সরকার এদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে ভয় পায়। সাধারণ ভোটারের ম্যান্ডেটকে ভয় পায়। সাধারণ মানুষের অধিকারকে ভয় পায়। ভয় পায় ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়ার। ভয় পায় লুণ্ঠনকে হারানোর। ভয় পায় কালোবাজারীকে হারানোর। ভয় পায় দুঃশাসনের চপেটাঘাত জেল জুলুম। ভয় নাগরিক সভ্যতা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ভূমিকর কথা আমরা জানি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী এদেশে আগম ঘটা অন্যান্য মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কথাও আমরা কমবেশি জানি। বাংলাদেশে বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ভূমিকাও আমরা তাই আন্দাজ করতে পারি। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমেরিকা ও চীনের পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা আমরা জানি। আমেরিকার সপ্তম নৌবহর প্রেরণের খবরও আমরা জানি। বেইজিং-রাওয়ালপিণ্ডি দূতিয়ালীর খবরও আমরা জানি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হবার পর চীন ও সৌদিআরব বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমেরিকা, চীন ও সৌদআরবের রাষ্ট্রদূতদের নানামুখি তোড়জোড়ের খবরেও তাই আমরা উদ্বিগ্ন হই।
বিশেষ করে যখন স্বাধীনতার ৪০ বছর পরে যুদ্ধাপরাধিদের নতুন করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হল, তখন এই ত্রিমুখী দৌড়ঝাপ যেনো হাড়ে বাতাস পেয়েছে। বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমাদের তাই আতংকিত হবার মত নানা মশলা চারিদিকে সক্রিয়। আমার ভাবতে খুব অবাক লাগে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেনরী কিসিঞ্জারের কাছ থেকে শান্তিপদক নিয়েছিলেন। আমার ভাবতে খুব অস্বস্থি লাগে যে, স্বাধীন বাংলাদেশে বিদেশী রাষ্টদূত/হাইকমিশনার গণ আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নানামুখী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চোখ থাকতেও তারা যেনো অন্ধ। আমাদের সরকারের বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জনমতের চেয়ে আন্তর্জাতিক রক্তচক্ষু বেশি পছন্দ।
একবিংশ শতকে সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে চীন ও ভারত এমনভাবে অগ্রসর হচ্ছে যে, খোদ আমেরিকার তা নিয়ে ভারী উৎকণ্ঠা। সেই উৎকণ্ঠা লাঘবের জন্য চীন ও ভারতের কাছাকাছি তাদের কিছু শক্ত ঘাটি খুব প্রয়োজন। যে কারণে তারা মায়ানমার, ফিলিপাইনস ও ইন্দোনেশিয়ায় শক্ত ঘাটি গড়ে তুলেছে। এখন ভারতের সীমান্তবর্তী বাংলাদেশে একটা শক্ত ঘাটি তাদের খুব দরকার। ভারতের ওপাশে আফগানিস্তানে বর্তমান মার্কিন ঘাটির ইতিহাস যদি ইতিবৃত্ত পর্যালোচনা করি, দেখি, প্রথমে তারা সেখানে একটি তালেবান সরকার গঠনে সব ধরনের সহায়তা করলো। বিন-লাদেন খোদ আমেরিকার ডলারে সৃষ্ট একটি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্র। সেই চক্রের সরাসরি মদদে আফগানিস্তানে প্রথমে তালেবান সরকার গঠন করলো। পরে সেই তালেবান দমনে বর্তমান মার্কিন সেনাদের ঘাটি তৈরি করা হল।
ঠিক যেভাবে আমেরিকা ইরাকে সাদ্দাম হোসেন সৃষ্টি করেছিল, সেই সাদ্দামকে পতনের জন্য সেখানে মার্কিন সেনার ঘাটি গেড়েছে। একই সূত্র তারা বাংলাদেশে যে প্রয়োগ করবে না, তার গ্রান্টি কি? বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় দেশে বাংলা ভাই আমদানি হল। এখন চলছে হেফাজতের নামে সেই একই কায়দায় আরেক নগ্ন আমদানি। এর পেছনের আসল হোতা আমেরিকা-চীন। স্বার্থের ভাগ পেতে ভারতও সেই চক্রে সতর্ক অবস্থান করছে। হোয়াইট হাউজের গ্রিন সিগন্যাল যিনি পাবেন, তিনিই হবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, এই সমীকরণ যদি স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে এসে আমাদের হজম করতে হয়, তাহলে প্রশ্ন জাগে দুর্বল রাজনৈতিক নের্তৃত্ব কি ধীরে ধীরে দেশের স্বাধীনতাকে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে? বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের এতো নাক গলানো সরকারের তরফ থেকে কেন হজম করা হচ্ছে? একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এটাতো আমাদের জন্য কলংকের কথা, যে তারা আমাদের নিজেদের বিষয়ে এতো ওঠাবসা করছেন? কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাদের নষ্ট রাজনীতি?
আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরটা আমেরিকার খুব দরকার। সেই সুযোগে ভারত সুন্দরবনের কাছে রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত দেবার নাম করে মোংলা বন্দরকে করায়ত্ত করতে চায়। কিন্তু ভারতের সাথে আমাদের অমিমাংসিত সমুদ্রসীমা ও সীমানা ওবং ছিটমহল সমস্যার কি হল? ফারাক্কা বাধের পর এখন টিপাইমুখী বাধের খড়গ ছুলছে জাতির সামনে। আর আমাদের রাজনীতিবিদরা আছেন কে ক্ষমতায় যাবেন আর কে ক্ষমতায় থাকবেন সেই দৌড়ঝাপে।
মাঝখান থেকে সহিংস হরতাল, জ্বালাও পোড়াও জনজীবন অতীষ্ট। কোথাও কারো জীবনের নিরাপত্তা নেই। একুশ শতকে আমরা কাদের ক্ষমতায় বসিয়ে কি পেলাম? আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে তা নিয়ে চলমান সহিংসতা আরো দীর্ঘতর হবার লক্ষণ সুস্পষ্ট। তাহলে আমাদের সাধারণ জনগণের কি অপরাধ? আমরা কেন আপনাদের ক্ষমতার লড়াইয়ে বলি হব?
কি দোষ মনির হোসেনের? কি দোষ বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়া মানুষগুলোর? আপনাদের ক্ষমতার লড়াইয়ে আমরা কেন অসহায় বলি হব? আপনারা দেশের স্বাধীনতাকেই এখন হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। আর নিজেরা লুটপাট, দুর্নীতি, করে রাষ্ট্রের সকল সম্পদ ভোগ দখল করছেন? এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। মহাত্মা মীর মোশাররফ হোসেন বলেছিলেন, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা ধরে রাখা বেশি কঠিন। আজ সেই কথাটি বারবার মনে পড়ছে। বাংলাদেশ কি স্বাধীনতা ধরে রাখতে পারবে? আমেরিকা, চীন, ভারত, সৌদিআরব কি চায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা ধরে রাখুক? নাকি তলে তলে সকল কলকাঠি নাড়ছে পরাজিত পাকিস্তানীরা? এ এক কঠিন প্রশ্ন এখন জাতির সামনে।
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৮
ডাক্তার আমি বলেছেন: গোল্লায় যেতে আর কত দেরি সেটাই ভাবছি ......
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৩
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: উদ্ভুদ উটের পিষ্টে চলছে দেশ ,
ক্ষমতা শালিরা চায় সব মরে যাক আর যাদের ক্ষমতা দখলের চেষ্টা
তারা কয় ,স্বাধীনতা আবার কি , যা ইচ্ছা তাই করব ।।
আর জনতা হতবিহবল , আতংকিত ।। সমাধান কোথায় ?