নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
যে কোনো ধরনের ফোন আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর। আর মোবাইল তার চেয়ে কয়েক ডিগ্রি বেশি। আমার ধারণা, দেশে মোবাইল আসার পর থেকে মানুষের মিথ্যা কথা বলার পরিমাণ আগে চেয়ে বেড়ে গেছে। আমি মোবাইল ফোনে অনেককে দিব্যি খুব সুন্দর করে মিথ্যা কথা বলতে দেখেছি। যাদের অনেকেই মিথ্যা বলছেন, স্রেফ খামাখা। অথচ মিথ্যা না বললেও তাদের চলতো। যেমন ধরুন, ফোনের অপর পাশ থেকে হয়তো জিজ্ঞেস করা হয়েছে, কোথাও আছ? জবাবে অনায়াসে বলা যেতো, কাঁঠালবাগান, বন্ধুর বাসায়। তা না বলে জবাব দিচ্ছে, এই রকম- ফার্মগেট, মতিঝিল, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, উত্তরা, মিরপুর। এই যে মিথ্যা বলার অনুশীলন, এটা একটা জাতিকে খুব ধীরে ধীরে শুধু নষ্ট করেই দেয় না, সেই জাতির অস্থি-মজ্জ্বা বিবেককেও কলুষিত করে দেয়। চোখের সামনে যারা এভাবে দিব্যি মিথ্যা কথা বলতে পারে, পেছনে তারা আরো বেশি বেশি মিথ্যা বলে, এটাই আমার ধারণা।
যাক, অন্য মানুষের কথা বলে লাভ নেই। মোবাইল নিয়ে কিছু নিজের কথা বলি এবার। তখন আমার বন্ধুদের প্রায় সবার হাতে হাতেই মোবাইল ফোন। আমার কোনো মোবাইল নেই। তবে আমার পকেটে সব সময় কিছু মোবাইল নাম্বার একটা কাগজে লেখা থাকে। কয়েকজন কাছের বন্ধুদের মোবাইল নাম্বার। আগে টিএন্ডটি নাম্বার আমি মুখস্থ করেই রাখতাম। মোবাইল আসার পর প্রথম দিকে সব নাম্বার মুখস্থ রাখতাম। পরে যখন ডিজিট বেরে গেল, তখন ওই কাজে আমি ইচ্ছে করেই বিরতি দিলাম। কারণ, খামাখা আমার মস্তিস্কের একটা অংশ এই আজেবাজে সংখ্যা দিয়ে ভরাট করার কোনো মানে হয় না। দেরিতে হলেও ব্যাপারটা আমার উপলদ্ধিতে এসেছিল। তবে এই কাজে একটা মস্তিস্কের ব্যায়াম হত। তবুও আমি ওটা ছেড়ে দিলাম।
২০০৩ সালের জুন/জুলাই মাস। আমরা থাকি কাঁঠালবাগানের বিখ্যাত ১৯ নাম্বারে। বিখ্যাত এই কারণে যে, ওই বাড়ির ঘটনাবলী নিয়ে বন্ধুবর মহাত্মা টোকন ঠাকুর একটা উপন্যাস লিখেছিলেন। `সুঁই' নামের সেই উপন্যাসটি কোনো এক ঈদ সংখ্যায় ছাপা হয়েছিল। পরে ওটি বড় গল্প আকারে বইয়ে ঠাই পেয়েছে। ওই 'সুঁই' দিয়ে আবার বন্ধুবর সুমন শামস একটা ফিল্ম বানালেন। ধানমন্ডি'র আলিয়াঁস ফ্রান্সিসে 'সুঁই'র প্রিমিয়ার শো হয়েছিল। আমাদের প্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুন সেই অনুষ্ঠান উদ্ভোধন করেছিলেন। ছবি'র যে দৃশ্যে নায়ক সুঁই দিয়ে নিজের দুই চোখ নষ্ট করে, সেই অংশ গুন'দা চোখ বন্ধ করেছিলেন। গুন'দার ভাগ্নে ইমন ওই অংশ শেষ হবার পরেই গুন'দাকে চোখ খোলার জন্য বলেছিল। তো পরে হাসপাতালে দেখা গেল, ছেলেটি'র একটা চোখ নষ্ট হয়েছে, আরেকটি আঘাতপ্রাপ্ত। ওটি চিকিৎসা নেবার পর ভালো হয়ে যাবে। উপন্যাসের শুধু নায়ক ছাড়া বাকি প্রায় সকল ক্যারেক্টার কাঁঠালবাগানের সেই বিখ্যাত ব্যাচেলর বাড়ি'র সদস্য। রাজীব, রিয়াজ, রেজা, পবন, পুলক, নাছিম, খোকন, রোকন, নয়ন। তো, পুরো ঘটনা জানতে হলে আপনাদের টোকন ঠাকুরের 'সুঁই' বড় গল্পটি পড়তে হবে। নতুবা সুমন শামসের 'সুঁই' ছবিটি দেখতে হবে।
তো যে কথা বলছিলুম, মোবাইল তখনো আমার ছিল না। কারো সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হলে মোবাইলের দোকানে গিয়ে ফোন করতুম। নতুবা বন্ধুদের মোবাইল থেকে একটা/দুইটা কল দিতুম। কিন্তু বন্ধুরা একটু একটু বিরক্ত হত। তো বন্ধুরা সবাই আবদার করলো, তোর একটা মোবাইল থাকাটা খুব জরুরী। আমি অবশ্য তখনো মোবাইলের গুরুত্ব নিয়ে ততোটা উদ্বিগ্ন নই। শেষ পর্যন্ত ভোরের কাগজের বন্ধুবর বড় ভাই মহাত্মা শামীম আহমেদ ও বন্ধুবর কবি জাফর আহমদ রাশেদ বললেন, একটা মোবাইল তোমাকে নিতেই হবে। নইলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। তো সিদ্ধান্ত হল, শামীম ভাই ভোরের কাগজে আমার লেখক বিলগুলো একসঙ্গে দেবার একটা ব্যবস্থা করবেন। তাই দিয়ে মোবাইল কেনা হবে। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে হেঁটে বাংলা মটর ভোরের কাগজ অফিসে গেলাম। শামীম ভাই লেখক বিলের একটা অংশ ছাড় করাতে সক্ষম হলেন। এক হাজার টাকা। সেই এক হাজার টাকা আমার পকেটে। শামীম ভাই সন্ধ্যার আগে বের হতে পারবেন না। পেস্টিং শেষ করে বেরোবেন। তো বন্ধুবর মহাত্মা জাফর আহমদ রাশেদ আমাকে নিয়ে চললেন ফোনের দোকানে।
সোনারগাঁ রোডের একটা দোকানে আমরা গেলাম। সিমকার্ডের দাম-ই তখন এক হাজার পঞ্চাশ টাকা। আমি একটু গড়িমসি করছি দেখে জাফর পকেটে হাত দিয়ে পঞ্চাশ টাকা বের করলেন। এক হাজার পঞ্চাশ টাকায় সিমকার্ড কেনা হল। এবার ফরম পূরণের পালা। এককপি ছবিও তাদের দিতে হল। মহা ঝামেলার ব্যাপার। তো, সিমকার্ড হাতে নিয়ে আমরা হেঁটে হেঁটে কাঁঠালবাগানের বাসায় আসলাম। এখন মোবাইল সেট না হলে আর ফোন করা যাবে না। মোবাইল ফোনের কি দরকার আমি তখনো বুঝতেছি না। সন্ধ্যায় একে বেকে বন্ধুদের সবাই আসলো। সব রথি-মহারথিরা পরামর্শ দিল, এবার তোমাকে একটা মোবাইল সেট কিনতে হবে। আমি তখন একপায়ে খাড়া, কিছুতেই আর মোবাইল সেট কেনার টাকা যেমন আমার নেই, তেমনি ইচ্ছাও নেই। বন্ধুবর মহাত্মা মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ নাহিদের মোবাইল সেটে আমার সিমকার্ড ঢুকিয়ে কিছু নাম্বার টেপাটিপি করে নাহিদ ওটি চালু করলো। আমরা হরিবল হরিবল বলে হৈ হৈ করে উঠলাম। কাকে ফোন করা যায়? বন্ধুবর গল্পকার মহাত্মা রোকন রহমান চট্টগ্রাম গেছে। তো রোকনের নাম্বারে ফোন করলাম।
হ্যালো, কোই তুমি?
- আমি মনসুরাবাদ। এইডা কার নাম্বার?
- এইডা আমার নাম্বার।
- ফোন কিনলা? টাকা কোই পাইলা?
- না, ফোন কিনি নাই, সিমকার্ড কিনছি। নাহিদের মোবাইলে ঢুকাইয়া ফোন দিছি তোমারে।
- দাও একটু নাহিদ্যারে?
তারপর নাহিদকে ফোন দিলাম। নাহিদ কথা শেষ করে একটু হাসলো। জানতে চাইলাম, হাসলা ক্যান? জবাবে নাহিদ কইলো- সন্ধ্যার আগেই হেয় জায়গা মত হাজির। হেয় মানে রোকন।
আমাদের চারতলার বাসায় আগতরা সবাই আমার নাম্বার নিজেদের মোবাইলে সেভ করলো। কিন্তু সমস্যা হল, আমাকে কেউ ফোন করে পাবে না। কারণ, শুধু সিমকার্ড তো আর কথা বলার জন্য যথেষ্ট নয়। কবি জাফর আহমদ রাশেদ বললেন, আগামী শুক্রবার পর্যন্ত ওয়েট করেন। আমি একটা নতুন মোবাইল সেট কিনব। আমার এই পুরানটা আপনাকে দেব।
পরের বৃহস্পতিবার শামীম ভাইকে সঙ্গে নিয়ে জাফর আরেকটা নতুন মোবাইল সেট কিনলেন। আমাদের বাসায় আসার পর সেই নতুন সেটে জাফরের সিমকার্ড ঢুকালেন শামীম ভাই। তারপর ওটা চার্জে বসানো হল। আর আমার সিমকার্ড জাফরের সেই পুরান সেটে ঢুকালেন শামীম ভাই। পরদিন ধানমন্ডি লেকের পারে জাফর আমাকে চার্জার দিলেন। সে এক বিশাল অভিজ্ঞতা। আমার হাতেও একটা মোবাইল ফোন আছে! কি ভাগ্যবান রে!!!
ওই মোবাইল ফোনের বিশেষত্ব হল, ওটি পকেটে রাখা যায় না। সাইজে এতোই বড় যে, ওটি হাতে নিয়েই চলাফেরা করতে হয়। তাতে কি? আমারও যে একটা মোবাইল আছে, তাতো রাষ্ট্রের জানা দরকার!! তারপর মোবাইল হাতে নিয়েই আমার চলাফেরা শুরু হল। সে এক বিরাট কাণ্ড বটে!!
তো এরপর শুরু হল আরেক বিড়ম্বনা। মোবাইলে কথা বলতে তো টাকা লাগবে। কিন্তু আমার ফোনে সব সময় টাকা থাকে না। তো বন্ধুবর মহাত্মা সুদত্ত চক্রবর্তী পবন, বন্ধুবর মহাত্মা পুলক বিশ্বাস, বন্ধুবর হযরত রিয়াজুল হক শিকদার, বন্ধুবর মহাত্মা মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ নাহিদ, বন্ধুবর মহাত্মা জাফর আহমদ রাশেদ, বন্ধুবর মহাত্মা রোকন রহমান, বন্ধুবর মহাত্মা টোকন ঠাকুর, বন্ধুবর গল্পকার মহাত্মা খোকন কায়সার, বন্ধুবর মহাত্মা রাজীব নূর, বন্ধুবর বড়ভাই মহাত্মা শামীম আহমেদ, বন্ধুবর মহাত্মা রেজাউল কবীর মাহমুদ নাছিম, বন্ধুবর মহাত্মা আমিনুর রহমান মুকুল, বন্ধুবর মহাত্মা শাহীনুর রহমান, বন্ধুবর মহাত্মা ডাক্তার কল্লোল চৌধুরী, বন্ধুবর বড়ভাই মহাত্মা গোলাম রসুল, বন্ধুবর মহাত্মা নয়ন মনি চৌধুরী, বন্ধুবর মহাত্মা তারেক মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, বন্ধুবর মহাত্মা সুমস শামস, বন্ধুবর মহাত্মা মইনুল বিপ্লব, বন্ধুবর মহাত্মা জাহেদউদ্দিন, বন্ধুবর মহাত্মা সত্যজিৎ পোদ্দার বিপু সহ আরো অনেকে নানা পরামর্শ দিলেন। রাজীব দা বললেন, আপনি আমাকে মিসকল দিলে আমি কলব্যাক করবো। রিয়াজ বললো, আমিও তোমার মিসকলে কলব্যাক করবো। পুলক, পবন, নাছিম, মুকুল এরা প্রায় সবাই বললো, তুমি মিসকল দিবা, আমরা কলব্যাক করবো। তারপর শুরু হল মিসকল খেলা। কখনো কখনো অপ্রয়োজনেও সেই মিসকল খেলাখেলি শুরু হল। মোবাইল মানুষকে যন্ত্রের মত দানব বানিয়ে ফেলে!!
তো নাহিদ, রিয়াজ আর আমি এই মিসকল নিয়ে একটা গবেষণা করে ঠিক করলাম যে, শুধু মিসকল দিয়েই কিভাবে আমাদের মেসেজ ঠিকঠাক পাঠানো যায়, তা আমরা ঠিক করলাম। তার আগে আমরা আমাদের আড্ডার জায়গাগুলো কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করলাম। কাঁঠালবাগান হল 'ক' অঞ্চল, ধানমন্ডি হল 'খ' অঞ্চল। ফকিরাপুল/মতিঝিল/পল্টন হল 'গ' অঞ্চল। কারওয়ান-গারোয়ান-দারোয়ান এলাকা হল 'ঘ' অঞ্চল। আর অন্যান্য এলাকা হল 'ঙ' অঞ্চল। যদি একটা মিসকল দি, তাহলে আমি 'ক' অঞ্চলে আছি বুঝবে সবাই। এভাবে মিসকলের সংখ্যা যতো বাড়বে সেভাবে অঞ্চল ভাগ কবে। তো ধানমন্ডি লেকের পারে এক সন্ধ্যায় বন্ধুবর মহাত্মা টোকন ঠাকুর একদিন বললেন, রেজা মিসকলের খেলাটা মাঝে মাঝে বিরক্তি'র পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। এখন থেকে একটা নতুন আইন আমার বেলায় হবে। বন্ধুদের যে আমাকে মিসকল দেবে, তার ফোন নাম্বার আমি আমার মোবাইল থেকে মুছে ফেলবো। আর পারি না এদের নিয়ে। তো এই ঘোষণা দিয়ে টোকন ঠাকুর নিজেকে মিসকল খেলা থেকে প্রত্যাহার করলেন।
ধীরে ধীরে সেই প্রত্যাহারের সংখ্যাও এক সময় বাড়তে লাগলো। আমরা শুধু মিসকল দিয়েই আমাদের কিভাবে কখন কোথায় দেখা হবে তা প্রায় শতভাগ নিশ্চিত করতাম সে যুগে। তো একবার নাহিদ আমি যাচ্ছি কাঁঠালবাগান থেকে শাহবাগ। সেখান থেকে আমরা ধানমন্ডি ৩২-এ ফিরবো। আমরা যখন সোনারগাঁ রোড ধরে শাহবাগ যাচ্ছি, ওই সময় বন্ধুবর মহাত্মা জাহেদউদ্দিন আমাকে মিসকল দিল। নাহিদ একটা দুষ্টু হাসি দিয়ে কইলো, তুমিও একটা মিসকল মারো। আমিও জাহেদকে একটা মিসকল দিলাম। মানে আমি বাসায় আছি। দুই মিনিট পরে নাহিদ কইলো, এখন আরেকটা মারো। আবার জাহেদকে একটা মিসকল মারলাম। জবাবে জাহেদও মিসকল মেরে জানতে চাইলো ঘটনা কি? এই কইলা কাঁঠালবাগান, আবার এখন কইতাছো ধানমন্ডি?
আসল ব্যাপার হল তখনো জাহেদের মিসকল ছিল সবচেয়ে লম্বা। অনেকটা ফোনের মত। তো আমি ফোন রিসিপ করলাম। জাহেদ ওপাশ থেকে কইলো, এ্যাঁ? সেকি ধইরা ফেলাইলা যে? তারপর ফোন কেটে গেল। মানে জাহেদের ফোনে টাকা নাই। আমরা শাহবাগ পৌঁছে জাহেদকে ফোন করলাম। বললাম, শাহবাগ আছি। জাহেদ আমাদের বাকি কথা না শুনে বললো, থাকো আসতিছি। জাহেদ ফোন রেখে দিল। আমি আর নাহিদ ঝিগাতলা যাবো নাহিদের আপার বাসায়। সেখান থেকে ধানমন্ডি ফিরবো। তো জাহেদের জন্য অপেক্ষা করলে তিনজনের রিক্সাভাড়া বেশি পড়বে। সেই হিসেবে জাহেদকে আবার ফোন করলো নাহিদ। কইলো, তুমি ধানমন্ডি আসো। আমরা ঝিগাতলা যাইতেছি, ওখান থেকে ধানমন্ডি আসবো। জবাবে জাহেদ কইলো, আমি তো এখন কাঁঠালবাগান থেকে আবার রিক্সা নিয়ে ঢাল পর্যন্ত আসছি। দেখো দেখি কাণ্ড? তোমরা এখন কোই ঠিক কইরা কও তো? জবাবে নাহিদ কইলো, আমরা এলিফ্যান্ট রোড ক্রোস করে সিটি কলেজের সামনে এখন। জবাবে জাহেদ কইলো, ঠিক আছে, তোমরা তাড়াতাড়ি ফেরো। হুদাই রিক্সাভাড়া দিলাম।
সন্ধ্যায় ধানমন্ডি লেকের পারে জাহেদের কাছে জানা গেল, মিসকল বিড়ম্বনায় আজ ভুল বোঝাবুঝি হইছে। তোমাগো প্রথম মিসকলে আমি ধরে নিলাম তোমরা বাসায় আছো। আমি ইস্কাটন থেকে সরাসরি কাঁঠালবাগান রিক্সা নিলাম। কাঁঠালবাগান পৌঁছানের আগে আগে শুনলাম তোমরা শাহবাগ। রিক্সা ঘুরাইলাম। ভাড়া ডাবল। পরে শুনলাম তোমরা ঝিগাতলা যাইতেছো? পুরাডাই গোয়া মারা গেল!!
আমরা জাহেদের দুঃখের কথা বুঝতে পেরে জাহেদকে আজিজ আঙ্কেলের মাথা ধরার বিখ্যাত বড়ি দিয়ে আপ্যায়ন করলাম। আমরা তখন নানান ধরনের গাছ-গাছরা, আমলকি-হরতকি, পাওয়ার এ্যান্ড হিট নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম। কখনো বুড়ি'র দোকানের তাম্রকুট, কখনো নরসিংদি'র মোহিনী, কখনো আজিজ আঙ্কেলের বিখ্যাত বড়ি, কখনো এরাম সাহেবের শীতলক্ষার তরল, কখনো চাঁনখারপুলের রোকন থেরাপি, কখনো হাবিবের দোকানের বেশি চিনি'র চা নিয়েই আমরা তখন ভারী ব্যস্ত যৌবন কাটাচ্ছি। আর তার মধ্যে মোবাইলে টাকা না থাকলে মিসকল বিড়ম্বনা শুরু হত। সে এক ঘোর লাগা মোবাইল যুগ। সে এক ঝাঁঝাঁঝিঁঝিঁ দুপুর। সে এক মায়ায় পরা দৌড়ঝাপ। আহা দিনগুলি মোর। দীর্ঘ দশ বছর টানা আমরা ধানমন্ডি নদীর পারে রোজ সন্ধ্যায় আড্ডা দিতাম। কখনো সারাদিন। রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো দিন আমাদের আড্ডা বন্ধ হয়নি। আমিও কাঁঠালবাগান ছাড়লাম, ধানমন্ডি'র সেই আড্ডাও এক সময় বন্ধ হয়ে গেল!!!
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১৪
হারিয়ে যাওয়া কৈশোর বলেছেন: Rasel amar valo bondhu. Amar amma & bon premier show to attend korechilo. Asa kori apnar sathe ekdin dekha hobe. apnake somewhereinblog e onusoron kora suru korlam. valo thakben.