নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে নির্বাচন কালীন সরকার ও রাজনৈতিক সদস্যার সমাধানে সাতটি মহাষৌধ!!!

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৮

বাংলাদেশের নির্বাচন কালীন সমস্যা ও বিরোধ নিস্পতি করতে গণ-প্রতিনিধিত্বশীল সরকার হয়তো সবচেয়ে কার্যকর একটি উদ্যোগ হতে পারে। কিন্তু গণ-প্রতিনিধিত্বশীল সরকার কেমন হতে পারে, তার একটি রূপরেখা তুলে ধরার চেষ্টা করব এখানে। যে কেউ আমার মতামতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করতে পারেন, একমত হতে পারেন বা নতুন হাইপোথিসিস নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। নির্বাচন কালীন সরকার নিয়ে ভবিষ্যতে যাতে আর কোনো বিরোধ সৃষ্টি না হয় সেজন্য এই কাঠামোর অবতারণা। আমাদের জাতীয় সংসদে মোট ৩০০ আসনে এখন সরাসরি নির্বাচন হয়। এটাকে ভাগ করতে হবে সবার আগে। আমাদের যেহেতু ৬৪টি জেলা। ছোট হোক বড় হোক ৬৪ জেলার জন্য ৬৪টি আসনে হবে নতুন কাঠামোতে সরাসরি নির্বাচন। কোন সরকারের অধীনে সেই নির্বাচন হবে? আর বাকী আসনগুলো কিভাবে বণ্টন করা হবে? সেই আলোচনায় পরে আসছি।



তার আগে নির্বাচন কালীন সরকার কিভাবে হবে তার একটি সমাধান দেবার চেষ্টা করি। নবম জাতীয় সংসদে মোট ৫১ টি কমিটি ছিল। সেখানে সবচেয়ে শক্তিশালী কমিটি ছিল কার্য উপদেষ্টা কমিটি। সেখানে স্পিকারের নের্তৃত্বে মোট ১৫ জন সদস্য ছিল। এই ১৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে নির্বাচন কালীন সরকার। আর আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সেই সরকারের নের্তৃত্ব দেবেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি। অর্থ্যাৎ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কালীন সরকার হবে রাষ্ট্রপতি'র নের্তৃত্ব মোট ১৬ সদস্যের। তাহলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচন কালীন সরকারের পূর্ণাঙ্গ চেহারাটি হবে এরকম-

১. অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, রাষ্ট্রপতি ও নির্বাচন কালীন সরকারের প্রধান

২. ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী

৩. শেখ হাসিনা

৪. বেগম খালেদা জিয়া

৫. হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

৬. শওকত আলী

৭. সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী

৮. মোঃ আব্দুস শহীদ

৯. সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত

১০. শেখ ফজলুল করিম সেলিম

১১. তোফায়েল আহমেদ

১২. মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া

১৩. এম. কে. আনোয়ার

১৪. আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট মোঃ রহমত আলী

১৫. রাশেদ খান মেনন

১৬. আবদুল মতিন খসরু

এদের মধ্যে রাষ্ট্রপতি ছাড়া বাকী সবাই নবম জাতীয় সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। রাষ্ট্রপতির নের্তৃত্বে এঁরাই নির্বাচন কালীন সরকার পরিচালনা করবেন।



ক. সরাসরি নির্বাচন হবে ৬৪ জেলায় ৬৪ আসনে যেটি হবে সংসদের উচ্চ কক্ষ:

বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় সরাসরি ৬৪ আসনে নির্বাচন হবে। অর্থ্যাৎ প্রতি জেলায় জনগণের সরাসরি ভোটে একজন মাত্র নির্বাচিত প্রতিনিধি জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবেন। এই ৬৪ জন সাংসদ নিয়ে গঠিত হবে সংসদের উচ্চ কক্ষ। এটাকে আমরা বলতে পারি বাংলাদেশের কংগ্রেস। অর্থ্যাৎ কেবল জাতীয় সংসদের কংগ্রেসের জন্য বা উচ্চ কক্ষের জন্য সরাসরি নির্বাচন হবে। যেখানে জনগণ সরাসরি ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।

এই ৬৪ জন সাংসদ থেকে দশম জাতীয় সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটি গঠন করতে হবে। আগামীতে এই কার্য উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে ১০ জন। অর্থ্যাৎ একাদশ বা দ্বাদশ বা পরের সংসদ নির্বাচনগুলো ১০ সদস্যের কার্য উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের নিয়ে যে নির্বাচন কালীন সরকার হবে, তারা পরিচালনা করবে। যখন যাঁরা সেই কমিটিতে থাকবে। নির্বাচন কালীন সরকার নিয়ে ক্যাচাল বন্ধের জন্য এছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তখন আগামী দশম জাতীয় সংসদে যখন এই ১০ সদস্যের কার্য উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হবে, সবাই আগে ভাগেই জেনে যাবে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন কালীন সরকারে কে বা কারা থাকছেন। আর রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি হিসেবে সেই সরকার পরিচালনা করবেন। যাতে নিরপেক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তৈরি না হয়।



খ. সংসদের নিম্নকক্ষ বা প্রতিনিধি পরিষদ হবে ২২০ সদস্যের:

রাজনৈতিক দলগুলোর আনুপাতিক ভোটের ভিত্তিতে গঠিত হবে সংসদের নিম্নকক্ষ বা প্রতিনিধি পরিষদ। প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য সংখ্যা হবে ২২০ জন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬৪ জেলায় রাজনৈতিক দলগুলো'র প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে এই ২২০ আসন ভাগ হবে। ৬৪ আসনে রাজনৈতিক দলগুলো শতকরা যতো ভোট পাবে, সেই দল প্রতিনিধি পরিষদে বা সংসদের নিম্নকক্ষে শতকরা ততো আসন পাবে। প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হারই এই আসন বণ্টন নির্ধারণ করবে।



গ. বিশেষ গণ-প্রতিনিধি বা স্পেশাল মেম্বর অব পার্লামেন্ট হবে ১৬ সদস্যের:

সংসদের উচ্চকক্ষ বা কংগ্রেস এবং নিম্নকক্ষ বা প্রতিনিধি পরিষদের ৬৪ + ২২০ = ২৮৪ জন সাংসদ মিলে জাতীয় সংসদের ১৬ জন বিশেষ গণ-প্রতিনিধি বা স্পেশাল মেম্বর অব পার্লামেন্ট গঠন করবেন বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কবি, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, জাতীয় খেলোয়ার, কৃষক নেতা, শ্রমিক নেতা, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ইত্যাদির সমন্বয় থাকবে। সংসদের এই বিশেষ গণ-প্রতিনিধি সব সময় একবারের জন্যই নির্বাচিত হবেন। পরের জাতীয় সংসদে যাতে দেশের আরো বরণ্য ব্যক্তিরা এই সুযোগ পান, সে কারণেই এই ১৬ সদস্যের বিশেষ গণ-প্রতিনিধিরা জাতীয় সংসদে একবারের জন্য নির্বাচিত হবেন।



ঘ. সরকার গঠন কিভাবে হবে:

সংসদের উচ্চকক্ষ বা কংগ্রেস এবং নিম্নকক্ষ বা প্রতিনিধি পরিষদের ২৮৪ আসন মিলে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে, সেই দল সরকার গঠন করবে। অর্থ্যাৎ সরকার গঠন করতে কোনো একটি দল বা জোটকে মিনিমাম কংগ্রেস ও প্রতিনিধি পরিষদ মিলিয়ে মোট ১৪৩টি আসনে সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জন করতে হবে।



ঙ. সরকারের মেয়াদ:

দশম সংসদ থেকে সরকারের মেয়াদ হবে ৪ বছরের। কারণ, ৫ বছর অনেক দীর্ঘ সময়। বাংলাদেশকে একটি উন্নয়ন মডেল হিসেবে অগ্রসর হতে হলে সরকারের মেয়াদ কম হওয়াই যুক্তিযুক্ত।



চ. সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্ত:

জাতীয় সংসদে বর্তমানে প্রচলিত ৫০ সদস্যের নারী আসনের সুবিধা দশম সংসদে বিলুপ্ত করার সুপারিশ করছি। কারণ, ১৬ সদস্যের বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে অনেকটা সংরক্ষিত আসনের মতোই কিন্তু পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতাবান গণ-প্রতিনিধিদের সুপারিশ করেছি। সংরক্ষিত নারী আসন জাতির জন্য একটা লজ্বার বিষয় ছাড়া আর কিছুই নয়।



ছ. সাংসদের অবসর গ্রহনের বয়স হবে ৬০ বছর:

আগামী দশম জাতীয় সংসদে সাংসদদের অবসর গ্রহনের বয়স সীমা চালু করার আইন পাশ করতে হবে। বাংলাদেশে ৬০ বছর বয়সের পর মানুষের আর স্বাভাবিক কাজকর্ম করার মতো শক্তি বা সামর্থ যথেষ্ট থাকে না। তাছাড়া দেশ পরিচালনার মত একটি সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ৬০ বছরের বেশি বয়সি মানুষের কর্মক্ষমতা না থাকারই কথা। সাংসদদের সর্বোচ্চ বয়স সীমা হবে ৬০ বছর। তারপর তারা স্বেচ্ছায় অবসরে যাবেন। নতুন প্রজন্মের জন্য জায়গা বা সুযোগ করে দেবার জন্য এই অবসর গ্রহনের অপসান। অর্থ্যাৎ ৬০ বছরের পর আর কেউ জাতীয় সংসদের নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারবে না।



বাংলাদেশে নির্বাচন কালীন সরকার নিয়ে জটিলতা দূর করার জন্য আমার এই সুপারিশমালা একটি স্থায়ী টিকা হতে পারে। যদি সদিচ্ছা নিয়ে সকল রাজনৈতিক দল এবং দেশের মানুষ এটা গ্রহন করেন। নবম জাতীয় সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের নিয়ে যদি রাষ্ট্রপতির নের্তৃত্ব নির্বাচন কালীন সরকার গঠিত হয়, তাহলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে আর কোনো সদস্যা থাকবে না। কারণ, দশম জাতীয় সংসদে যে ১০ সদস্যের কার্য উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হবে, ওটাই রাষ্ট্রপতির নের্তৃত্ব নির্বাচন কালীণ সরকার পরিচালনা করবে।



সবচেয়ে বড় কথা আমাদের একটি স্থায়ী সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। নতুবা ৫ বছর পর পর বিরোধীদলের সহিংস আন্দোলন কেবল বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্র যাত্রাকে ব্যাহত করবে। আমার এই সপ্ত সুরের বটিকায় যদি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হয়, তাহলে কোনো দিন এই অমীমাংসিত বিষয়টির সমাধান হবে না। সদস্যা বছরের পর বছর আরো বাড়বে বলেই আমি মনে করি। আশা করি, সপ্ত সুরের বটিকা রাজনৈতিক সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধানের পথে সবাইকে নতুন চিন্তার খোরাক জোগানোর পাশাপাশি, স্থায়ী সমাধানের পথে অগ্রসর হতে পথ নির্দেশিকা দেবে। সবাই ভালো থাকবেন। শান্তিতে থাকবেন।





মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৪

কিরিটি রায় বলেছেন: ভাল প্রস্তাব।

তবে নির্বাচন কমিশনকে বিতর্ক মুক্ত করে পূর্ণ স্বায়ত্ব শাসন প্রদান আরো সহজ এবং বেশী কার্যখর বলেই মনে হয়।

++

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩

রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করার জন্য আলাদা ভাবে বলতে চাই। আপনার সঙ্গে একমত। স্বাধীন পূর্ণ নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী স্বায়ত্ব শাসিত নির্বাচন কমিশন দরকার। সেটা আলাদাভাবে বলতে চাই। শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, রিটার্নিং অফিসার কিভাবে কাজ করবে, কারা কিভাবে নির্বাচন কমিশনে যুক্ত থাকবে, সেখানে অনেক ব্যাপার আছে।

২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪০

যুবাইরআজাদ বলেছেন: রাষ্ট্রপতি কে হবেন তার সমাধান টা ও লিখবেন প্লিজ, তা না হলে ওটা নিয়েই কামড়া কামড়ি শুরু করবে দু দল। আইডিয়া ভাল, এমন হলে কোন দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন এর সম্ভাবনা কম। আর কোন আইন পাশ করতে হলে তা কোন দল ইচ্ছামত করতে পারবেনা।
ধন্যবাদ।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৫

রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার জন্য সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ একসাথে বিশেষ গণ-প্রতিনিধিদের নিয়ে অর্থ্যাৎ ৩০০ সদস্য মিলে একজনকে নির্বাচন করবেন। সেখানে একাধিক প্রার্থী হলে গনভোট হতে পারে। সেটা হতে পারে সংসদে বা সংসদের বাইরে।

৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:২৭

সাউন্ডবক্স বলেছেন: খুবই ভাল আইডিয়া......

৪| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:০৮

শাহাদাত রুয়েট বলেছেন: আমার কাছে একটি সহজ সমাধান আছে। এভাবে হরতাল অবরোধের মাধ্যমে জনসাধারণের ক্ষতি হচ্ছে আর মরছে সাধারণ মানুষ। যদি দুই দল লড়তেই চায় তবে। তাদের মধ্যে দুটি দলের ১১ জনকে নিয়ে দল গঠন করে একটি মাঠে বদ্ধ অবস্থায় মারামারি করতে দেয়া হউক। যারা জিতবে তারাই ক্ষমতা গঠন করবে। আরো বিরাট আকারে করতে চাইলে প্রত্যেকটি জেলায় দল গঠন করে জেলা স্টেডিয়ামে দরজা বন্ধ করে মারামারি হউক। তারপর যে দল বেশী সংখ্যক জেলায় জিতবে তারাই ক্ষমতা পাবে। এতে তাদেরই নেতাকর্মীগণ অংশগ্রহণ করতে পারবে। সাধারণ জনগণের কেউ অংশগ্রহণ করতে পারবেনা। এতেজনগণও মোজা পাবে। নতুবা এরা মারামারির নামে আমাদের সাধারণ মানুষকে মারতেই থাকবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.