![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
কিকো বাবু আমাদের রাজপুত্তুর। ইদানিং আমার উপর একটু এদিক সেদিক হলেই প্রতিবাদ করে। কিকো বাবু যে বড় হয়ে উঠছে এটা তার লক্ষণ। কেউ ফোন করলে কিকো বাবু কাছে এসে শুনতে চায় ফোনের ওপাশে কে। ফোনটি যদি মায়া'র হয় তাহলে স্পিকার অন করে কিকো'র সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে হয় আমাকে। কিকো বাবু তিনটি ভাষায় কথা বললে বুঝতে পারে। বাংলা, ইংরেজি আর বসনিয়ান। আর ওর নিজের ভাষা তো আছেই। আমরা সেটি বোঝার চেষ্টা করছি।
সোফায় যদি একটা সিট খালি থাকে তখন সে ওখানে গিয়ে রাজপুত্তুরের মতো বসবে। খাবারের সময় একদম চাবি দেওয়া পুতুলের মত সবাইকে ডেকে আনবে। খাবার রেডি না হএয়া পর্যন্ত রাজপুত্তুরের মত আয়েসি ভঙ্গিতে বসে সব দেখবে। আমাদের খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিকো বসে থাকে। রাতে ঘুমোতে যাবার আগে কিকোকে ঠিক মতো গুডনাইট বলা না হলে বা তার পছন্দ না হলে চিৎকার করে আবার ডাকবে। আমরা যতোক্ষণ যেগে থাকি কিকো বাবু'র ঘুম আসলেও ঢুলু ঢুলু চোখে সেও পাশে বসে জেগে থাকে। আর রাতে যদি বাসার কোথাও কোনো অস্বাভাবিক শব্দ হয়, গোটা বাড়ি সে মাথায় তুলবে।
একেবারে ছোট্ট বাচ্চাদের কথা শুনলেই কিকো উপর থেকে ধমক লাগাবে। ভাবটা এমন সে-ই এই রাজ্যের প্রিন্স। তার উপরে আবার কে ওখানে কথা বলে-রে!!! ইদানিং কিকো বাবু হঠাৎ পেছন থেকে জাম্প করে জড়িয়ে ধরে। তারপর ক্যাঙ্গারুর মতো দু'হাতে জড়িয়ে ধরে দু'পায়ে ভর দিয়ে হাঁটবে। টেনিস বল কিকো বাবু'র খুব প্রিয়। বলটি উপরে ছুড়ে মারলে একলাফে সে ওটাকে অসামান্য দক্ষতায় ধরে ফেলবে। তারপর আবার এনে দেবে আবার ছুড়ে মারা জন্য।
হাঁটতে গেলে কিকো বাবু রাজপুত্তুরের মত সামনে সামনে হাঁটবে। আবার একটু পেছনে তাকিয়ে কনফর্ম হয়ে নেবে আমরা তার পেছনে আছি কিনা। আমাদের দুই ছেলে মেয়ের সঙ্গে স্কাইপেতে কিকো বাবুও কথা বলে। ওরা তখন কিকো'র সঙ্গে কথা বলে ভারী মজা পায়। আর যখন স্কুল ছুটিতে ওরা আমাদের এখানে বেড়াতে আসে তখন তো কিকো আমাকে বা মায়াকে একদম চেনেই না। ওরাই কিকো'র তখন সবকিছু। তখন কিকো খাওয়া পর্যন্ত ভুলে যায় খেলার ছলে। কিকো বাবু একদিন অনেক বড় হবে। ইদানিং মায়া'র সঙ্গে একটা গান অনুশীলন করে। আমি সেই গানের কোনো অর্থ বুঝি না। কিন্তু তারা দু'জনেই খুব ভালো এনজয় করে মনে হয়।
©somewhere in net ltd.