নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক 'দ্য ন্যাশন' পত্রিকায় 'রিসলুটলি সার্পোটিং রং' নামে একটি সম্পাদকীয় ছাপা হয়েছিল। সেটি'র অনুবাদ পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরছি।
এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আমাদের রাজনীতিবিদের একটা বিশাল অংশ বর্তমান বাস্তবতায় কিছু কিছু স্পর্শকাতর বিষয়ে অবিবেচকের মত অপমানজনক অযৌত্তিক কথাবার্তা উচ্চারণ করেন। বরং তাদের উচিত ষাঁড়ের মত না চেঁচিয়ে আসল সত্যকে মনযোগ সহকারে উপলব্ধি করা। পূর্ব পাকিস্তানের এখন আর কোনো অস্তিত্ব নাই। পূর্ব পাকিস্তান এখন সম্পূর্ণ অতীত, ইতিহাসের একটি ন্যাক্কারজনক অধ্যায়। সেখানে এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি দেশ। আর হ্যা, সেই দেশটির নাম বাংলাদেশ। এই দেশটি দুঃসাহসী বাঙালিরা প্রতিষ্ঠা করেছে। কোনো ভূতপূর্ব পাকিসস্তানী বা কোনো নতুন প্রজন্মের পাকিস্তানী ওটা প্রতিষ্ঠা করেনি। কেবল বাঙালিরাই তাঁদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে, জীবনমরণ বাজী রেখে, অনেক ত্যাগ স্বীকার করে ওটা প্রতিষ্ঠা করেছে।
যারা এখন সেই পচা গু ঘাঁটতে গিয়ে নতুন করে গন্ধ ছড়াচ্ছেন, তাদের এসব পুরানা ঘটনা খুব ভালো করেই জানা। বাংলাদেশ কিভাবে পাকিস্তান থেকে আলাদা হল এটা আমরা ভালো করেই জানি। পাকিস্তানকে নিশ্চিতভাবে পরাজিত করেই বাঙালিরা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেই পরাজয়ের গ্লানি নতুন করে আবার ঘাটাঘাটি করা কতোটা শোভন বা রুচিকর তা আমাদের বিচক্ষণ রাজনীতিবিদগণ ভুলে গেলে চলবে কেন? অতীতের সেই ভুলের কথা নতুন করে নতুন মোড়কে সামনে এনে কেন আমরা আবার গোটা বিশ্বের সামনে নিজেদের অসভ্যতার দুঃখবিলাশ করছি? বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী'র নেতা আবদুল কাদের মোল্লা'র ফাঁসির ঘটনার প্রতিবাদে কেন আমাদের জাতীয় পরিষদে (ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি) আবার একটি নিন্দা ও শোক প্রস্তাব পাশ করতে হবে? যদিও অতোবড় একটি অপমানজনক পরাজয়ের গ্লানি ভোলার জন্য মাত্র ৪৪ বছর খুব একটা দীর্ঘ সময় নয়। তবুও সেই অপমানকর বিষয়ে জাতীয় পরিষদে প্রস্তাব পাশের মাধ্যমে আমরা কি আবারো নিজেদেরকে একটি অসভ্য জাতি হিসেবে প্রমাণ করছি না?
পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিস্টার নিসার আলী খান সাহেব অত্যন্ত কঠোর ভাষায় দাবী করলেন যে, একমাত্র পাকিস্তানের অখণ্ডতা চাওয়ার কারণেই মিস্টার মোল্লাকে ওঁরা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। মিস্টার মোল্লা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পাকিস্তানের একজন অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন। গোটা পাকিস্তান মিস্টার মোল্লার ফাঁসির ঘটনায় বড়োই মর্মাহত, শোকার্ত ও দুঃখিত।
যদিও মিস্টার নিসার আলী খানের এই আবেগতাড়িত বেদনামিশ্রিত প্রলাপ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মিসেস ওয়াজেদকে কোনো সাহায্য করবে না। বরং এটা এখন বাংলাদেশে দিবালোকের মত সত্য যে, পাকিস্তানী কোনো অন্ধ সমর্থকের জন্যেও বাংলাদেশের মাটিতে এক ইঞ্চি জায়গাও বাটি চালান দিয়ে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সুতরাং পাগলের মত অযৌক্তিক বিষয়ে মিথ্যাচার করে কিংম্বা প্রলাপ বকে আমাদের বর্তমান কলুষিত রাজনীতিকে সুদূর অতীতের পাপের প্রলেপ থেকে মুক্ত করা যাবে না।
যদিও মিস্টার মোল্লার বিরুদ্ধে মহামান্য আদালতে যেসব অভিযোগনামা হাজির করা হয়েছিল, সেখানে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে সমর্থণদানকে কোনো ধরনের ক্রাইম বা অপরাধ হিসেবে গন্য করা হয়নি। বরং মিস্টার মোল্লার বিরুদ্ধে বেশ কিছু পুরুষ-মহিলা ও শিশুকে খুন, শিশু ও নারী ধর্ষণ, শিশু ও নারী ধর্ষণের পর তাদের খুন, অগ্নি সংযোগ, নির্যাতন, লুটপাটের মত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এবং জঘন্য সব অপরাধ উপস্থাপন করা হয়েছে। যা বিশ্বের যেকোনো দেশের আইনে জঘন্য অপরাধ এবং মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। আর বাংলাদেশের মহামান্য বিচারিক আদালতে মিস্টার মোল্লার বিরুদ্ধে আনীত এসব জঘন্য অপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত হওয়ার পর বিচারিক রায়ের মাধ্যমে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। একজন বিদগ্ধ বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ হিসেবে মিস্টার নিসার আলী খান নিশ্চয়ই একথা মানবেন যে, খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নি সংযোগ, লুটপাট ইত্যাদি জঘন্য সব অপরাধ না করেও, অখণ্ড পাকিস্তান রক্ষার আন্দোলনে একজন নিবেদিতপ্রাণ পাকিস্তানপ্রেমী কর্মী হিসেবে দেশপ্রেম প্রমাণের জন্য মিস্টার মোল্লার সামনে পাকিস্তান প্রেমের নজির প্রমাণে আরো অনেক সুন্দর সুন্দর বিকল্প ভালো কাজের সুযোগ ছিল, তিনি সেগুলো করে পাকিস্তানের খাঁটি দেশপ্রেমিক সেটি প্রমাণ করতে পারতেন।
মিস্টার নিসার আলী খান যদি একজন অসীম বিচক্ষণ প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি কিভাবে দাবী করেন যে, মিস্টার মোল্লার জন্য আমরা পাকিস্তানীরা আজ সত্যিই বড় গর্বিত যে, একজন বাংলাদেশী হয়েও তিনি জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পূর্ব পর্যন্ত অভণ্ড পাকিস্তানকে সমর্থণ করেছেন। এখন যদি একজন খাঁটি পাকিস্তানী নাগরিক অখণ্ড ভারতের দাবী নিয়ে মিস্টার নিসার আলী খানের দরবারে হাজির হন, তাকে তিনি কি জবাব দেবেন?
অন্য একটি দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে পাকিস্তানের নাক গলানোর কোনোই অধিকার নাই। চলমান মাবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারিক প্রক্রিয়া যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের একটি বড় নজির। আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা যে, এই আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদাণের রায় বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেয়নি। সেই রায় ঘোষিত হবার পর প্রতিবাদ স্বরূপ বাংলাদেশের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ নতুন প্রজন্মের সঙ্গে ঢাকার শাহবাগে এক অভাবনীয় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছে। তাদের সেই আন্দোলনে একটাই দাবী ছিল যে, আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরে যাবে না।
এমন কি এসব ঘটনাও যদি মিস্টার নিসার আলী খানের নজরে না আসে, তবুও এটা পাকিস্তানের কোনো বিষয় নয় যে তা নিয়ে একেবারে জাতীয় পরিষদে ঘাম ঝড়িয়ে প্রস্তাব পাশ করতে হবে। ইট ইজ নান অব পাকিস্তান'স বিজিনেস। এটা তাঁদের আগ্রাসন, তাঁদের ভিকটিমস, তাঁদের সিদ্ধান্ত। আমরা আমাদের পাকিস্তানী সন্ত্রাসীদের প্রতি কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছি না। তাদের আইনের আওতায় আনছি না। আমরা পাকিস্তানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করছি না। তার মানে যে অবশিষ্ট বিশ্ব সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে চোখ বন্ধ করে উদাসীন থাকবে তা কি করে সম্ভব মিস্টার নিসার আলী খান?
ইতোসধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানী হাই কমিশনারকে ডেকে বাংলাদেশ তীব্র ভাষায় এর প্রতিবাদ করেছে। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে যে প্রস্তাব পাশ হয়েছে তা বাতিল করারও অনুরোধ করেছে। একজন চিন্থিত খুনী, একজন চিন্থিত ধর্ষক, একজন চিন্থিত মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীকে কোনো ভাবেই পাকিস্তান বীরের মর্যাদা দিতে পারে না। এটা অন্যায়। এটা লজ্জ্বার। এটা চরম অপমানের। দয়া করে আমাদেরকে এভাবে আর বিশ্ববাসীর সামনে অপমান করবেন না। দয়া করে এবার থামুন। স্টপ ইমবারেসিং আস।
বি.দ্র. যারা সরাসরি ইংরেজি ভার্সান পড়তে চান, এই লিংকে যেতে পারেন:
Click This Link
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩১
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪১
েবনিটগ বলেছেন: darun jinish dilen, mama.
link ta ache?
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩২
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৪
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ
হ্যা লিংকটা দিয়ে দিলাম
৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫১
সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: স্টপ ইমবারেসিং আস।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩২
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫১
সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: এতটুকু অনুভুতিও তাদের আছে !
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩২
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩০
অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: চিন্তা ভাবনা পরিস্কার।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৩
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ
৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২১
বিষন্ন একা বলেছেন: এখন যদি একজন খাঁটি পাকিস্তানী নাগরিক অখণ্ড ভারতের দাবী নিয়ে মিস্টার নিসার আলী খানের দরবারে হাজির হন, তাকে তিনি কি জবাব দেবেন?
+++
৭| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৩২
গোলক ধাঁধা বলেছেন: বাটি চালানরে যেন ইংলিশে কি কয় ++ পড়িয়া মজা পাইলাম
৮| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৫৩
কলাবাগান১ বলেছেন: বাংলাদেশে বিহারী ক্যাম্পে লাখ লাখ পাকিস্তানী আছে এবং উনারা পাকিস্তানী পতাকাও তুলে থাকেন..... তাহলে বাংলাদেশে শুধু পাকিস্তানের অখন্ডাতা বলার জন্য কাদের মোল্লাকে ফাসী দেওয়া হয়েছে বলাটা একটা জোক ছাড়া আর কিছুই না
৯| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৯
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: “কেবল বাঙালিরাই তাঁদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে, জীবনমরণ বাজী রেখে, অনেক ত্যাগ স্বীকার করে ওটা প্রতিষ্ঠা করেছে।”
অধিকাংশ পাকিস্তানির অভিমত এই সম্পাদকীয়।
তৃপ্ত হলাম পড়ে। ধন্যবাদ।
অনুবাদও সুন্দর হয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪০
রক্ত পলাশী বলেছেন: সব দেশেই কিছু বুদ্ধি সম্পন্ন লোকজন বসবাস করে!!!