নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণতন্ত্র!!! খায় না মাথায় লয়!!!

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭

দ্বিজাতী তত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনে ভারত পাকিস্তান ভাগ হল। কারা করল এই ভাগ? সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশরা। তাদের উদ্দেশ্য কি ছিল? একটি জাতিগত বিবাদ যাতে এই ভারতীয় উপমহাদেশে স্থায়ী রূপ লাভ করে। তাদের সেই উদ্দেশ্য একশোভাগ সফল হয়েছে। তারপর কি হল? পাকিস্তানে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় আসল। এর আগে ১৯১৯ সালে হিন্দু মুসলিম আলাদা আলাদা ভোট দিয়েছিল। এবার দিল একত্রে। কিন্তু শেষ রক্ষা কি হল? ব্রিটিশ মদদপুষ্ট সামরিক জান্তা জেনারেল আইউব খান ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের ক্ষমতা কেড়ে নিলেন। তারপর ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত আইউব খানের সামরিক শাসন। তারপর ইয়াহিয়া খানের সামরিত শাসন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আলাদা হল বটে। কিন্তু বাঙালির ঘাড়ের উপর চেপে বসল রক্ষীবাহিনী। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু নিহত হবার আগ পর্যন্ত রক্ষীবাহিনী ছিল ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। তারপর আবার জেনারেল জিয়ার সামরিক শাসন। তারপর ১৯৮২ সালে আবার আসলেন আরেক জেনারেল এরশাদ। শেষ পর্যন্ত ১৯৯০ সাল পর্যন্ত জেনারেল এরশাদ সামরিক ক্ষমতায় দেশ শাসন করল।

'৯০-এর গণ-আন্দোলনে জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের অবসান হলেও বেগম জিয়া ক্ষমতায় এসে সামরিক স্বৈরশাসনের মতই দেশ শাসন করলেন। ভেতরে ভেতরে এরশাদকে নিয়ে টানাহেচড়া শুরু হল। পতিত স্বৈরাচারী সরকারের কেন এতো গুরুত্ব? কারণ, সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা। এরশাদের পতন হলেও সেই ভূত রয়ে গেল। তারপর নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে টানাটানি। সেই টানাটানিতেও পতিতত স্বৈরাচারী এরশাদ একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে থাকল। শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসলেন সেই পতিত স্বৈরাচারের সমর্থন নিয়ে। ২০০১ সালৈ আবার বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতের সমর্থন নিয়ে যখন সরকার গঠন করল, তখন পতিত স্বৈরাচারী এরশাদের গুরুত্ব আওয়ামী লীগের কাছে আরো বেড়ে গেল। যে কারণে, সেই স্বৈরাচারের পতন ঘটলেও ক্ষমতার পালাবদলে এরশাদ ফ্যাক্টর রয়ে গেল নামকাওয়াস্তে গণতন্ত্রের নতুন যাত্রায়।

২০১৩ সালে তাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারো স্বৈরাচার এরশাদ একটা প্রধান ফ্যাক্টর হয়ে উঠলেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তাকে নিয়ে রশি টানাটানি করল। আওয়ামী লীগ এরশাদকে দলে ভাগিয়ে বিএনপিকে বাধ্য করল স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে জোট পাকিয়ে থাকতে। কিন্তু জেনারেল এরশাদ তো একটা উদাহরণ, তার পেছনের শক্তির রহস্য যদি বোঝা না যায়, তাহলে তাকে জোটে ভেড়ানোর রহস্য রাজনৈতিক বিশ্লেষণে বোঝা যাবে না। যে কারণে, আওয়ামী লীগ আবারো সেই পতিত স্বৈরাচারী এরশাদকে নিয়েই সরকার গঠন করল। মূল রহস্য সেই ব্যারাক কেন্দ্রীক ক্ষমতার কেন্দ্রে। আর সেই চালে বেগম জিয়া ভুল করেছেন। শেখ হাসিনা লাভবান হয়েছেন। কিন্তু গণতন্ত্রের আদৌ কোনো লাভ হয়নি। মূলত গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে ৪২ বছরের বাংলাদেশে এখনো ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু ব্যারাক। জনগণ ভোটের নামে কিছু উৎসব নিয়েই খামাখা মেতে ওঠে। বাংলাদেশের ৪২ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথম তিন বছরের রক্ষীবাহিনী, পরবর্তী ১৫ বছরের সরাসরি সামরিক শাসন, পরবর্তী বেগম জিয়া'র '৯১ থেকে ৯৬ ও ২০০১ থেকে ২০০৬ আর শেখ হাসিনার '৯৬ থেকে ২০০১ ও ২০০৯ থেকে ২০১৩ এই ২০ বছরের নামকাওয়াস্তে গণতন্ত্র তাই জনগণের জন্য কোনো সুশাসন বয়ে আনতে পারেনি। মাঝখানে ২০০৯-২০০৯ আবারো সেই ব্যারাক নির্ভর ক্ষমতা আসলে এখনো বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

তাই ২০১৪ সালে আবারো যখন জেনারেল এরশাদ প্রধানমন্ত্রী'র বিশেষ দূত হন, সেটা নিয়ে অবাক হবার কিছু নেই। এরশাদের পেছনে যারা কলকাঠি নাড়েন তাদের হাতে রাখতে এরশাদ ফ্যাক্টর বাংলাদেশে আরো অনেক দিন টিকে থাকবে।

আর সেই ফাঁকে খোদ রাজনীতিতে সত্যিকারের রাজনীতিবিদরা ধীরে ধীরে বিরল প্রজাতীতে পরিণত হচ্ছে। সেখানে জায়গা দখল করছে সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসার, সাবেক আমলা, শিল্পপতিরা। জনগণ থেকে কোনো রাজনৈতিক নেতা বের হয়ে আসছে না। তাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্রের নামে যা যা ঘটবে তার প্রায় সবটাই ওই রহস্যঘেরা ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু'র শুভদৃষ্টিকে ঘিরে। খামাখা সাধারণ জনগণ নানান আনন্দোলনের নামে অবাধে প্রাণ দেয় আর রাজনীতির এই গুমটরহস্যকে আরো রহস্যময় করে রাখার জন্য একটা গণতন্ত্র গণতন্ত্র খেলা চলে।

আর বিদায় নেওয়া সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো নানান অযুহাতে ছবক মারেন, তোমাদের এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। এটা হচ্ছে না, ওটা হচ্ছে না। প্রকৃত সত্য হল, দেশের মানুষ শুধু প্রকৃত শিক্ষা পেলেই আর ইতিহাস ও রাজনীতি বিষয়ে নিজেরা বিশ্লেষণ করতে পারলেই ভবিষ্যতে তখন রাজনৈতিক জনসভায় আর এতো উপস্থিতি যেমন দেখা যাবে না। তেমনি কেউ ডাক পারলেই না বুঝেই সেই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে না। মূল সমস্যা শিক্ষার অভাব। আর সেটাকে ছলেবলে কৌশলে পধ্চাৎমুখী করে রাখাই রাজনৈতিক দুবৃত্তায়নের প্রধান টার্গেট। আর বাংলাদেশের ৪২ বছরের ইতিহাসে সেটা তারা বেশ সফলভাবেই করতে সক্ষম হয়েছে। সো, ক্ষমতার চেয়ারে আর কে কোথায় কীসের ষড়যন্ত্র নিয়ে ব্যস্ত তা নিয়ে সাধারণ জনগণের কোনো লাভ হবে না।

গণতন্ত্র যে মুর্খদের কারখানা তা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি দালিলিক প্রমাণে সত্য হয়ে শোভা পাচ্ছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৪৮

বেলা শেষে বলেছেন: রেজা ঘটক Brother, Bangladesh is inside of India, 70-71 Muktibahini had trained for "Servent-Kulli" of Indian Soldiers. More then 200 years we were working in London as Hotel coockers- now a days Bangladeshies all 99% persent - all Dr.s Profesors , students are working as a cleaners- in Newyork, London, Paris, Tokio why not in India?

২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৫৩

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: রেজা ঘটক আপনি আসলেই ভাল লেখেন।






ধন্যবাদ্

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.