নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
গতকাল ১৭ সেপ্টেম্বর একাত্তরের ঘৃণীত মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী'র আপিলের রায় কমিয়ে আজীবন কারাদণ্ড হবার পর মাননীয় আইনমন্ত্রী মিডিয়ার কাছে যে মন্তব্য করেছেন, এটি কোনো ভাবেই সুস্থ মানুষ হিসেবে মেনে নেবার মত নয়। মামলায় সাঈদীর রায় হবার পর মাননীয় আইনমন্ত্রী মিডিয়াকে বলেছেন, ‘উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। যে রায় হয়েছে তা মাথা পেতে নিচ্ছি। তবে, ব্যক্তিগতভাবে আমি বলব, কিছুটা হতাশ ও মর্মাহত হয়েছি। এটা আমার আবেগ। রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর এ ব্যাপারে কিছু করা যায় কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’ তিনি আরো বলেছেন, 'যেটা আমাকে কষ্ট দিচ্ছে, আমি শুনেছি তিনি পিস কমিটির মেম্বার ছিলেন এবং এ বিষয়ে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। স্বেচ্ছায় যারা পিস কমিটির মেম্বার হয়েছিলেন তারাতো সচেতনভাবেই স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। আমি রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি না দেখে কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। তবে প্রসিকিউশন টিমের যা অবস্থা, সেখানে পরিবর্তন আসা উচিৎ। ট্রাইব্যুনালে কিছু কিছু মামলা চলছে, কিছু রায় অপেক্ষমাণ আছে। প্রসিকিউশন টিমের যেন কোনো অসুবিধা না হয় এজন্য আমি কোনো পরিবর্তন আনিনি। তবে দ্রুত এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।'
মাননীয় আইনমন্ত্রী আপনার কথা থেকেই এটা সুস্পষ্ট যে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমে কিছু ঝামেলা আছে। তাহলে সেই ঝামেলাগুলো কি কি তা কি বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারবে? দীর্ঘ ৪২ বছর পর মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের জন্য যে স্পর্শকাতর মামলাগুলো এই ট্রাইব্যুনালে এখন বিচারধীন, আপনি রাষ্ট্রের আইনমন্ত্রী হিসেবে সেই প্রসিকিউশনের ঝামেলা না এড়িয়ে সুস্পষ্টভাবেই রাষ্ট্রের সঙ্গে বেঈমানী করেছেন। নতুন সরকার গঠেনর পর আপনি আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে সেই ঝামেলাগুলো জানার পরেও কেন সেগুলো ঠিক করেন নি? কেন একটি জোড়াতালির প্রসিকিউশন টিম দিয়ে এত বড় স্পর্শকাতর মামলাগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে? তাহলে আইনমন্ত্রী হিসেবে আপনি এই নয় মাস কি করলেন? যদি প্রসিকিউশনের কোনো দুর্বলতার কারণে সাঈদীর মত দুর্ধর্ষ অপরাধী প্রাপ্ত সাজা থেকে রেহাই পেয়ে যায়, সেই দায় আপনি আইনমন্ত্রী হিসেবে মোটেও এড়াতে পারেন না। রাষ্ট্রের আইনমন্ত্রী হিসেবে প্রসিকিউশনের সকল ব্যর্থতার দায় আপনার ঘাড়েই পড়ে।
আপনি কেন দীর্ঘ নয় মাসেও এই দুর্বল প্রসিকিউশন টিমকে শক্তিশালী টিমে রূপ দিতে পারলেন না? আবার আপনি বলছেন যে,
প্রসিকিউশন টিমের যেন কোনো অসুবিধা না হয় এজন্য আপনি কোনো পরিবর্তন আনেননি! প্রসিকিউশন টিমের সুবিধা-অসুবিধা দেখার দায়িত্ব তো আপনার নয়? প্রসিকিউশন টিমের সুবিধা-অসুবিধা দেখা নাকি রাষ্ট্রের বা জাতির সুবিধা অসুবিধা দেখা, কোনটা আপনার গুরুদায়িত্ব ছিল মাননীয় আইনমন্ত্রী?
আপনি জাতির সুবিধা অসুবিধার কথা ভুলে সচেতনভাবেই নিরব ছিলেন। আর প্রসিকিউশনের দুর্বলতার সুযোগে সাঈদীর মত আসামীর সাজা কমে গেল। এখন এই দায় কে নেবে? আপনার এই ব্যর্থতার দায় তো বাংলাদেশ নেবে না। বাংলাদেশের ষোলো কোটি মানুষ নেবে না। আপনি কেন প্রসিকিউশন টিমের দুর্বলতার কথা জেনেও সেখানে পরিবর্তন আনলেন না?
খুব শীঘ্রই আরো কিছু মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় আসবে। সেই রায়গুলো কি আপনার কথিত প্রসিকিউশনের দুর্বলতার বা ঝামেলার ফলে এমন ভাবেই সাজা কমার একটা দৃষ্টান্ত হতে যাচ্ছে? তাহলে আইনমন্ত্রী হিসেবে আপনি জাতির সঙ্গে স্রেফ বেইমানী করছেন। আপনি শপথ নিয়ে আইনমন্ত্রী হয়েছেন। রাষ্ট্রের কোনো অসুবিধা হলে সেটি দেখার দায়িত্ব তাহলে কার? আপনি আইনমন্ত্রী হিসেবে তাহলে কি দায়িত্ব পালন করছেন?
প্রসিকিউশন টিম মেরামতে আপনার সচেতনভাবে ইচ্ছাকৃত ঢিলেমির ফলে সৃষ্ট অক্ষমতায় সাইদীর মতো আসামি মৃত্যুদণ্ড থেকে বেঁচে গেল। এই দায়ভার তো আপনাকে নিতেই হবে মাননীয় মন্ত্রী। সরকার আপনাকে যে দায়িত্বটি দিয়েছে, সেই রাষ্ট্র ও জাতির সুবিধা-অসুবিধা দেখার কাজটি আপনি ঠিকমতো করলেই এই ক্ষতি জাতিকে বহন করতে হতো না। এখানে আপনার ব্যক্তিগতভাবে মর্মাহত হবার মত নরম গলায় কোনো মন্তব্য আমরা মানতে পারছি না। আপনার ব্যর্থতার দায় থেকেই সাঈদীর সাজা কমেছে এটাই এখন আপনার বক্তব্যের সূত্রেই সুস্পষ্ট।
সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেছেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ বিবেচনায় নিয়ে রায় দিয়েছেন। আপিল বিভাগের রায় সবাইকে মেনে নিতে হবে।’ বেশ ভালো কথা। কিন্তু প্রসিকিউশনের দুর্বলতার সুযোগ যিনি করে দিলেন, তার কি হবে? কেন দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী প্রসিকিউশনের দুর্বলতার বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন। এমন কি সামনে যে মামলাগুলো খুব শীঘ্রই আসবে, সেখানেও তিনি সেই দুর্বল প্রসিকিউশন রাখার পক্ষে? আমরা দেখতে চাই, মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীর আগামী মামলা গুলো আদালতে ওঠার আগেই মাননীয় আইনমন্ত্রী প্রসিকিউশনের দুর্বলতাগুলো ঠিক করে প্রসিকিউশনকে আরো শক্তিশালী করার যথাযথ উদ্যোগ নেবেন। যদি তিনি সেখানেও ঢিলেমি করেন বা করার চেষ্টা করেন বা এড়িয়ে গিয়ে দুর্বল প্রসিকিউশন দিয়ে মামলাগুলো পরিচালনার সুযোগ করে দেন, তাহলে বাঙালি জাতি আপনাকে ক্ষমা করবে না মাননীয় আইনমন্ত্রী।
আপনার ব্যর্থতার দায় গোটা বাংলাদেশ নেবে না। আপনার ব্যর্থতার দায় বাঙালি জাতি নেবে না। আমরা আশা করব, অন্য মামলাগুলো আদালতে ওঠার আগেই আপনি আপনার ব্যর্থতা বুঝতে সক্ষম হবেন। এবং প্রসিকিউশনকে আরো শক্তিশালী করার যথাযথ উদ্যোগ নেবেন। নইলে আইনমন্ত্রী হিসেবে আপনার নামের পাশে একটি কলঙ্ক যোগ হবে। আর সেই কলঙ্কের দায়ভার গোটা বাঙালি জাতি বহন করতে পারে না।
মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী মামলার সকল প্রসিকিশন যাতে আরো শক্তিশালীভাবেই কাজ করতে পারে সেই উদ্যোগ আপনাকেই যথাযথভাবে নিতে হবে। নইলে আপনি আর আইনমন্ত্রীর পদ দখল করে বাংলাদেশের সর্বনাশ ডেকে আনতে পারেন না। বাঙালি জাতি সেই সর্বনাশের দায় নিতেও পারে না মাননীয় আইনমন্ত্রী।
২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:৩৮
আমায় ডেকো না বলেছেন: মালপানি জিন্দাবাদ।
গতকাল পত্রিকায় দেখলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে ছাপানো হয়েছে সবাইকেই নাকি কেনা যায়। গতকাল রায়ে তার চাক্ষুস দেখলাম।
৮
৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:১২
সরদার হারুন বলেছেন: 1 .আমার যা মনে হয় ট্রাইবুনালের আইনে মৃত্যুদন্ডের বিধান রাখা হয়নি ।
.2.কাদের মোল্লার ফাঁঁশির পরে ব্যপারটা ধরা পরছে ।
3.অথবা এবারে ওবামার অনুরোধ রাখা হয়েছে
4.মন্তত্র্রীরা এত কথা বলেন যে কাজের সময় পান না ।।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:২৭
রাফা বলেছেন: পরবর্তি প্রজন্মের কাছে অনুরোধ থাকলো বিচারের নামে যারা প্রহসন উপহার দিলো তাদের বিচার করে বুঝিয়ে দিও বিচার কাকে বলে।
ধন্যবাদ,রেজা ঘটক।