নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বেচ্ছায় নির্বাসন চাই !!!

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৩৩

একাত্তরের মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের ৪২ বছর পর নতুন করে আবার যখন বিচার প্রক্রিয়া শুরু হল, তখণ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন, তাদের মধ্যে আবারো একটি আশার আলো ঝিলিক মেরেছিল। জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি নব্বইয়ের দশকে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে যে চেতনা রোপন করেছিল, সেই চেতনার ধারাবাহিকতায় তখন স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বিশেষ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলে হয়তো একটা সমাধান হবে, এই আশায় তখন সবাই বুক বেঁধেছিল। নব্বইয়ে এরশাদের সামরিক শাসনের অবসানের পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তিকে নতুন করে আবার আশ্রয়-প্রশয় দিতে শুরু করল। যে কারণে তখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে সবচেয়ে সোচ্চার যে রাজনৈতিক দলটি, যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল, সেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপর মানুষের ভরসা আরো বহুগুন বেড়ে যায়। কিন্তু ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সবচেয়ে প্রধান লক্ষ্য স্থির করল বঙ্গবন্ধু'র খুনিদের বিচারের কাজ। খুনিদের বিচার প্রক্রিয়া শেষ হবার আগেই আবার ক্ষমতার ছন্দ-পতন ঘটল। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় এবং দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের সহিংস কর্মকাণ্ড নতুন করে আবার সেই সমীকরণকে সামনে নিয়ে আসল। সেটি হল বাংলাদেশে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি ক্ষমতায় থাকলে এদেশের মুক্তিকামী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। যে কারণে সবাই আবারো জোরালোভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করল। তখন আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো শক্তিশালী রাজনৈতিক প্লাটফরম না থাকায় আওয়ামী লীগের কাছে দেশের মানুষের প্রত্যশা আরো বেড়ে গেল।

সেই প্রত্যশাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে বিএনপি-জামায়াত জোট আবারো ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করল। সেই অপচেষ্টার ফসল ওয়ান-ইলেভেনের নতুন সেনা সমর্থিত ফকরুদ্দিন সরকার। যে সরকারের প্রধান কাজ ছিল একটি সুস্ঠু, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহনযোগ্য নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। যেটি করতে তারা প্রায় দুই বছর সময় নিল। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলাটি স্থগিত রেখেছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এসে সেই মামলা নিস্পত্তি করার উদ্যোগ নিল। খুনিদের পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর হল। অন্য আসামিরা বিভিন্ন দেশে এখনো দাপটের সঙ্গেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে। নতুন করে আওয়ামী লীগকে দেশের সাধারণ মানুষ ক্ষমতায় বসিয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার কার্যকর পরিনতি দেখার জন্য। যা দলটি ক্ষমতার পাঁচ বছরে আংশিক পূরণ করতে সমর্থ হয়েছে। সেই আশা পূরণেও এক ধরনের রাজনীতি ছিল। বিষয়টাকে দীর্ঘায়িত করার রাজনীতি। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে না করে সাধারণ বিচারিক আদালেত করার মধ্যেই সেই দীর্ঘ সূত্রতার রাজনৈতিক দুষ্টামি জড়িত। অন্যান্য আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় না আনতে পারার ব্যর্থতাও সেখানে সমান ভাবে দায়ী। সেই দায়ের খেসারত জাতি এখনো ভোগ করছে। ইস্যুই যদি না থাকে তখন নতুন কোন মোক্ষম ইস্যু দেখিয়ে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় যাবে, সেখানে এই দুষ্ট-দীর্ঘ সূত্রিতার প্রশ্নটি লুকায়িত। আবার ক্ষমতায় গেলে বঙ্গবন্ধুর অন্যান্য খুনিদের বিচার কার্য চালিয়ে যাবার একটি অযুহাত অন্তত জনগণের সামনে দলটি ইচ্ছে করেই ঝুলিয়ে রাখল। একই সময়ে দলটি নব্বইয়ের দশেকের সেই পূরনো দাবীটি সামনে এনে একাত্তরের মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করল। যা সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে সাড়া জাগাল। কিন্তু সেখানেও সেই রাজনৈতিক সমীকরণ!

যুদ্ধাপরাধিদের বিচার শেষ হয়ে গেলে আওয়ামী লীগ নতুন কোন ফর্মুলা দিয়ে জনগণের মন জয় করবে? দলটির হাতে কি সেরকম কোন মোক্ষম ইস্যু আছে? তাই আবারো নতুন সমীকরণ সেই দীর্ঘ সূত্রিতা। অন্তত আওয়ামী লীগ চেয়েছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শেষ করার জন্য দলটির আবারো ক্ষমতায় যাওয়া প্রয়োজন। আর এই প্রশ্নে জনগণ নিশ্চয়ই নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে বিএনপি-জামায়াত জোটকে ক্ষমতায় দেখতে চাইবে না। কারণ, ওই জোট ক্ষমতায় গেলেই বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যটিও স্থগিত করে দেবে। সেই প্রশ্নে বিএনপি শেষ পর্যন্ত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পর্যন্ত বয়কট করল। কারণ বিএনপি'র সামনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে যুক্তি ছিল, সেই যুক্তি ততটা জোড়ালোভাবে তারা নিজেরাই তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই সুযোগে ফাঁকা মাঠে আওয়ামী লীগ গোল করে নতুন বিশ্ব রেকর্ড করেছে। ১৫৩ জন সাংসদ বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় বিনা ভোটে জয়লাভ করেছে। যা সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য একটি নতুন অবক্ষয় বা সংসদীয় সরকার ব্যবস্থার একটি নতুন দুর্বলতা। মুরব্বিরা কহেন, রাজনীতিতে নাকি শেষ কথা বলে কিছু নেই। সেই সুযোগ নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সরকার গঠনের মত সুযোগ আদায় করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের মানুষ সেই বিশ্ব রেকর্ড হবার মত নির্বাচনও ইতোমধ্যে হজম করেছে। কারণ, সংসদীয় রাজনীতিতে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকলে সেই গণতন্ত্র এক সময় মুখ থুবরে পড়ে। বাংলাদেশের সংসদীয় রাজনীতি ধীরে ধীরে হয়তো সেই পথেই হাঁটছে।

কিন্তু যে কথা বা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগ আবারো সরকার গঠন করল, সেই কথা যেন তারা ভুলতে বসেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যান্য আসামিদের কত দিনের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনা হবে, সেই উদ্যোগটি এখন হয়তো শুধু কাগজে কলমেই আছে। বাস্তবে সেই উদ্যোগের কোনো তোড়জোড় লক্ষ্য করা যায় না। সঙ্গে আরো যে মোক্ষম ইস্যুটি এখনো সচল, সেখানেও দলটির এক ধরনের গাছাড়া গাছাড়া ভাব প্রতিলক্ষিত হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজটি আরো দীর্ঘায়িত করাই এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান কাজ হয়ে গেছে।

ধান ভানতে শিবের গীত না গেয়ে এবার আসল কথায় আসি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ায় শুরুতেই কাদের মোল্লার ফাঁসি না হওয়ায় তার প্রতিবাদে গত বছর ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃত্বে একটি তীব্র আন্দোলন শুরু হল। সরকার বাধ্য হয়ে সংসদে আইন পাশ করে আইনে সংশোধনী এনে তারপর আবার বিচারে সেই কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করতে অনেকটাই বাধ্য হয়েছিল। এখানে প্রশ্ন হল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে সৃষ্ট নতুন আইনে যে এরকম একটি ফাঁক ছিল, তা কি আমাদের মহান সাংসদ গণ জানতেন না? অবশ্যই জানতেন। বরং বিষয়টাকে দীর্ঘায়িত করার কৌশল হিসেবে সেই ফাঁক ইচ্ছে করেই তখন রাখা হয়েছিল। তরুণ প্রজন্ম শাহবাগে আন্দোলন করে সেই ফাঁক চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবার পর সাংসদের টনক নড়ে। তারা বাধ্য হয়ে আইনে পরিবর্তন এনে নতুন করে আবার বিচার শুরু করল। কিন্তু এই বিচার প্রক্রিয়ার প্রধান লক্ষ্য যেহেতু দীর্ঘায়িত করা, সময় ক্ষেপণ করতে পারলেই যেন ইস্যুটি বেঁচে থাকে, সেই আশায় আওয়ামী লীগ এখনো স্বপ্ন দেখে যে অন্তত এই ইস্যুটি দিয়ে আবারো ক্ষমতায় যাবার সহজ সিড়ির কৌশলটি অন্তত টিকে থাকুক। বাকি আল্লাহ ভরসা।

কিন্তু সেই আশায় যতই দিন যাচ্ছে ততই যেন মিষ্টির বদলে তা চিটাগুড় হবার দিকে মোড় নিচ্ছে। যার সর্বশেষ উদাহরন মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মামলার আপিল বিভাগের রায়। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল যেখানে সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল, আপিল বিভাগের রায়ে সেখানে সাজা কমে এখন আমৃত্যু কারাদণ্ডের পর্যায়ে গেছে। মানে সরকারকে এখন জনগণের করের টাকায় এই যুদ্ধাপরাধীর আসামীকে আমৃত্যু জেলখানায় জামাই আদরে ভরণ-পোষণ দিয়ে পালতে হবে। যতক্ষণ এই কুলাঙ্গারের মৃত্যু না হবে ততক্ষণ জনগণের করের টাকায় সোজা কথায় শ্রাদ্ধ করার দায়িত্ব এখন সরকারের।

পাশাপাশি বিশেষ ট্রাইব্যুনালের যেসব দুর্বলতা ইতোমধ্যেই আবিস্কার হয়েছে সেই দুর্বলতা নিয়েই সরকার বাহাদুর বাকি মামলাগুলো পরিচালনায় অনেকটাই যেনোবা আগ্রহী। এই আগ্রহের পেছনে কি কি কারণ থাকতে পারে? প্রথম কারণ রাজনীতি। এটা নিয়ে যত দিন রাজনীতি করা যাবে ততদিন অন্তত ইস্যুটি বেঁচে থাকল। নতুবা প্রশ্ন আসতে পারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেমন নেদারল্যান্ডের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালতের স্মরণাপন্ন হয়, সরকার কেন সেই পথে গেল না? তাহলে বিএনপি'র কথিত আদালত আন্তর্জাতিক মানের হয়নি, এই ধুয়ো অন্তত ধোপে টিকত না। মানে সরকার ইচ্ছে করেই বিচারের কাজটি নিজের হাতেই রাখতে চেয়েছে। আর এটি নিয়ে দীর্ঘ দিন রাজনীতি করার খায়েসও আছে মনে মনে। সেই খায়েসের ছিটেফোঁটা এখন ধীরে ধীরে আরো সুস্পষ্ট হচ্ছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে জানিয়েছেন, সারা দেশে এ পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ৫৭৭টি মামলা হয়েছে৷ এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১১২, চট্টগ্রামে ৮৪, রাজশাহীতে ৬৬, খুলনায় ১৮৪, সিলেটে ৫০ এবং বরিশালে ৩০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ কিন্তু এ সব মামলা তদন্ত ও নিষ্পত্তির কোন পর্যায়ে আছে তা জানাননি আইনমন্ত্রী৷ তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের দায়ে এ পর্যন্ত দায়ের করা ৫৭৭টি মামলা মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বর্তমান কাঠামো দিয়ে নিষ্পত্তি করতে কমপক্ষে ১৪৫ বছর লাগবে!!!!

মানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি দীর্ঘায়িত করার কৌশলটি এখানে একেবারেই সুস্পষ্ট। আর এই বিচার প্রক্রিয়া যাতে বন্ধ না হয় সেজন্য সরকারে অন্তত আওয়ামী লীগের মত স্বাধীনতার পক্ষের একটি দলকে ক্ষমতায় থাকার বিষয়টি সবার আগে এদেশের মানুষকেই ঠিক করে দিতে হবে। নইলে সব দোষ হবে জনগণের। যে তোমরা আমাদের ক্ষমতায় রাখলে অন্তত ওআি কুলাঙ্গারদের আমরা বিচার শেষ করতাম! সেই হিসেবে এখন পর্যন্ত যে ৫৭৭টি যুদ্ধাপরাধী মামলা দায়ের হয়েছে, তার বিচার কাজ স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় শেষ করার জন্য আগামী ১৪৫ বছর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার জন্য জনগণেকেই যেনো একটি সুস্পষ্ট সংকেত দিয়ে রাখল দলটি। যার ধারাবাহিকতায় মামলাগুলো নিরলস দীর্ঘায়িত করার অপচেষ্টা এখনো আরো বলবত আছে।

ধারবাহিক রাজনৈতিক সমীকরণে সাধারণ মানুষের মনে যে প্রশ্নটি নতুন করে জেগেছে, সেটি হল, আওয়ামী লীগ কি তাহলে জামায়াতের সঙ্গে একটি গোপন আতাঁত করতে সক্ষমত হয়েছে। সেই আতাঁতটি কোন ধরনের হতে পারে? এক. জামায়াত যদি বাংলাদেশে রাজনীতি করতে চায়, তাহলে যে সকল নেতারা যুদ্ধাপরাধী মামলায় আসামি বা সাজা ভোগ করছে, তাদের বাদ দিয়ে নতুন করে রাজনীতি করার সুযোগ। দুই. বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মেনে নিয়ে রাজনীতি করলে আওয়ামী লীগের সেই জামায়াতকে মেনে নিতে কোনো অসুবিধা নেই। তিন. জামায়াতের গঠনতন্ত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের কথা বলে ব্যাপক পরিবর্তন এনে নতুন প্রজন্মের জামায়াত নেতাদের দিয়ে জামায়াতের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ করা। চার. বাংলাদেশে জামায়াত রাজনীতি করার সুযোগ পাবে যদি তারা বিএনপি জোট থেকে বেড়িয়ে আসে। পাঁচ. জামায়াতের সঙ্গে পাকিস্তানের যত ধরনের যোগাযোগ ও বন্ধুত্ব আছে তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনীতি করার শেষ সুযোগ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকার করে নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা। যার সঙ্গে বর্তমান জামায়াতে ইসলামীর কোনো সম্পর্ক থাকবে না। এই দলটির সকল কার্যক্রম বন্ধ করা হবে। এরকম অনেক বিষয়েই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বর্তমানে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলতে থাকা জামায়াতে ইসলামীর এক ধরনের সমঝোতা হয়েছে বলেই সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে।

নতুবা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল ও প্রসিকিউশনে এখনো কেন এতো হাজার হাজার দুর্বলতা বাঁচিয়ে রাখা হচ্ছে? এসব দুর্বলতা কাটানোর জন্য কি হাজার বছর লাগবে?? তাহলে মামলাগুলো কেন হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে তোলা হল না? এই মামলাগুলো নিয়ে দীর্ঘ দিন রাজনীতি করার খায়েস থেকেই ৪২ বছর পরে এই মামলাগুলো শুরু হলেও সেখানে এখনো সেই রাজনীতির দুষ্ট নজরের কলুষমুক্ত হতে পারেনি। মূল কথা হল এই মামলাগুলো থেকে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ফয়দা ঘরে তুলতে চায়। দেশের সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়ার সঙ্গে, চেতনার সঙ্গে, আবেগের সঙ্গে, মুক্তিযুদ্দের সঙ্গে, ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মার সঙ্গে, তিন লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের সঙ্গে, যার কোনোই সম্পর্ক নাই। মামলাগুলোর একমাত্র লক্ষ্য রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়া। সেই সুবিধার পেছনে ক্ষমতায় টিকে থাকার বা ক্ষমতায় যাবার ইস্যু হিসেবে এটিকে বাঁচিয়ে রাখার কৌশলটিই প্রধান। ৪২ বছর চেতনা ধুয়ে আমরা পানি খেয়েছি। চেতনা এখন শাহবাগের মোড়ে তিন ভাগে চেয়ার ছোড়াছুড়ি করতে ব্যস্ত। চেতনা এখন সংগ্রামের মাঠে ফানুস ওড়াতে ব্যস্ত। চেতনা এখন নিজেরাই ঠোকাঠুকি করে লাভ লোকসান ভাগাভাগিতে ব্যস্ত। আওয়ামী লীগ খুব সচেতনভাবেই যে কাজটি করেছে, সেটি হল মানুষের প্রধান দাবিকে যে কোন মূল্যেই হোক তা দীর্ঘায়িত করা। সেই দীর্ঘায়িত করার অপকৌশলের সুযোগে হেফাজতের মত নতুন গোষ্ঠী সৃষ্টি হচ্ছে। একথা এখন সবাই স্বীকার করবে যে, বিএনপি-জামায়াত জোট পাঁচ বছর আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে নানান ইস্যুতে আন্দোলন সংগ্রাম করে সরকারকে যতোটা না বেকায়দায় ফেলতে সক্ষম হয়েছিল, তার চেয়ে এক সফি হুজুর শাপলা চত্বরে সমাবেশ ঘটিয়ে সরকারের পায়ের তলার মাটি সরিয়ে ফেলার মত অবস্থা তৈরি করেছিল। ৬৫ বছরের অভিজ্ঞ একটি রাজনৈতিক দল এক সফি হুজুরের হুমকিতে টলমল করতে শুরু করেছিল। যার প্রধান কারণ, জনগণের সঙ্গে দলের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে গেলে এতো বড় শক্তিশালী একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকেও হা-হুতাশ করতে হয়? বাংলায় একটা কথা আছে, জনগণ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় পাঠায়। কিন্তু দলটি ক্ষমতায় বসেই দলের বাইরের সবাইকে প্রতিপক্ষ মনে করা শুরু করে। যে কারণে দেশের উন্নয়নের বদলে শুধু দলীয় নেতা কর্মী-চামচা-তোষামোদকারীদের ভাগ্যে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যায়। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের তেমন কোনো পরিবর্তন হয় না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে যে দলটি এতো জোড়ালো ভাবে কুজকাওয়াজ করে, সেই দলটি এক সফি হুজুরের হুমকিতে কি করে দোয়া ইউনুস পড়া শুরু দেয়। এর পেছনে রহস্য কি?

আসল রহস্য হল জন-বিচ্ছিন্নতা। সাধারণ মানুষের সঙ্গে এই দলটির যে কি পরিমাণ দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে, তা দলীয় উচ্চ নেতানেত্রীরা একদম আমলে নিচ্ছেন না। জনসভা দেখে দলীয় সমর্থণ বোঝা যায় না। কারণ, দলীয় জনসভায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এখন লোক ভাড়া করে উপস্থিতি নিশ্চিত করে। এতে কাজের কাজ হয় দুইটি। এক- জনগণের থেকে নানান ইস্যুতে চাঁদাবাজীটা করা যায় স্বাচ্ছন্দে। দুই- জনসভার উপস্থিতিও নিশ্চিত করা যায়। তিন- দলীয় মধ্যম সারীর নেতাদের এই সুযোগে পকেটে কিছু গরম নোট ঢোকে। কিন্তু জনসভায় উপস্থিত শতকরা কত ভাগ লোক দলীয় চেতনায় বিশ্বাস করে জনসভায় হাজির হল, তা কেউ নিরূপন করতে পারে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন বরং মাস্টার্সে ছাত্রছাত্রীদের থিসিস হিসেবে জনসভায় কত ভাগ লোক দলীয় মতাদর্শে বিশ্বাসী ও কত ভাগ ভাড়ায় আসে, এর উপর নতুন করে গবেষণা করার জন্য উদ্যোগ নিতে পারে। তাতে অন্তত বড় ভাইদের নোট দেখে থিসিস করার বদলে নতুন মাত্রা ও চমক আসতে পারে। আর সেই থিসিসের ফলাফল যদি রাজনৈতিক দলগুগুলোর মধ্যে বিতরণ করা যায়, তাতে উচু সারীর নেতাদের অন্তত মাঠ পর্যায়ের দলের অবস্থা সম্পর্কে আসল ধারণা হতে পারে।

সাধারণ বিচারে কিছু যুক্তি তর্ক ছাড়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র শাসন কার্যের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। আমাদের ছাত্র বয়সে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের পতনের নামে আমাদের কোমল মনে যে চেতনা ধরিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ফয়দা তুলেছে, নব্বইয়ের পর সেই স্বৈরাচার এরশাদের সঙ্গেই যখন সেই সব রাজনৈতিক দলগুলোর আতাঁত ও পক্ষে টানাটানির বিষয়টি জোড়ালো হয়ে যায়, সেখানে চেতনা তো এখন রাজধানীর ড্রেনে গড়াগড়ি খায়। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর আসল মুখোশটি খুলে গেছে নব্বইয়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর থেকেই। বাকি ২৪ বছরে তারা নতুন প্রজন্মকে এখনো কোনো সত্যিকার চেতনার মন্ত্র শেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ যে কোনো ইস্যুর ভেতরেই এখন রাজনীতির গন্ধ, লাভলোকসানের গন্ধ, টাকা পয়সা লেনদেনের গন্ধ। বিষয়গুলো রাজনৈতিক না হলে, স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর তার তো বিচার হবার কথা। নূর হোসেন হত্যার বিচার হয়নি। ডাক্তার মিলন হত্যার বিচার হয়নি। অসংখ্য ছাত্র হত্যার বিচার হয়নি। এসব রাজনৈতিক কারণে মৃত্যু হিসেবে ধরলেই একটি দেশের চেতনা সমৃদ্ধ হয় না। বরং এসব হত্যার বিচার যতদিন না হবে ততদিন বাংলাদেশ থেকে এ ধরনের রাজনৈতিক হত্যা বন্ধ হবে না।

স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণবাসনের কথা ছিল। কোথায় সেই পূর্ণবাসন? আমাদের মহান সাত জন বীরশ্রেষ্টদের পরিবারের এখনো কি দশা? কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের ছেলেমেয়েরা বাইরে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসে আরামসে শিক্ষাগ্রহন করছে। তারপর উড়ে এসে বলছে, এবার আমাদের নেতা হবার পালা। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযুদ্ধ কোঠা এবং পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোঠা বা নাতী-নাতনী কোঠা একটি ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। গুটি কয়েক রাজাকার-আলবদর-আলসামশ বাদ দিলে গোটা জনপদের সবাই যুদ্ধ করেছে। সবাই মুক্তিযোদ্ধা। সেখানে সার্টিফিকেট চালু করে বাঙালি জাতিকে বিভক্ত করার একটি অপকৌশল হাতে নেওয়া হয়েছে। যা আজও জীবিত আছে। বিভক্ত জাতির কোনো দিন সঠিক উপায়ে উন্নতি আশা করা যায় না। এগুলো আমাদের দুষ্ট রাজনীতির এক একটি অপকৌশল।

শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চও এখন তিন ভাগে বিভক্ত। কারণ ওই একই। হালচাষের সময় সামনের গরু যেদিকে হাঁটে, পেছনের গুলোও সেদিকের হাঁটে। এমনটাই সব সময় দেখে আসছি। নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই বিভক্তি সৃষ্টি করাটাই আমাদের বর্তমান রাজনৈতিক নেতাদের একটি সুচতুর অপকৌশল। সেই অপকৌশলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশের।

বাংলাদেশে দেশপ্রেম প্রশ্নে রাজনৈতিক নেতাদের দেশপ্রেম নিয়ে পাঠ্যপুস্তকে আলাদা চাপ্টার থাকা উচিত। বাংলাদেশে দেশপ্রেম আছে আমার কৃষকের। আমার শ্রমিকের। আমার মেহনতি মানুষের। আমার গার্মেন্টস শ্রমিকদের। আমার রিক্সাচালকদের। এখনো জাতির বিশেষ বিশেষ দিনে বিশেষ করে স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে সত্যিকারের মুক্তি যোদ্ধাদের জাতীয় পতাকা ফেরি করে তিন বেলার আহারের সংস্থান করতে দেখি। তখন সবচেয়ে যে প্রশ্নটি সবার আগে সামনে আসে সেটি হল, এদেশে দেশপ্রেম কোনো রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সত্যিকার অর্থেই নেই। একদম নেই। থাকলে তারা দেশের স্বার্থে কাজ করতেন। বিদেশে নিজেদের সেকেন্ড হোমের স্বপ্নকে যমুনায় ডুবিয়ে দিয়ে আমার কৃষকের পাশে দাঁড়াতেন। নিজেদের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা বিদেশে না করিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতেন। যুদ্ধাপরাধীদের মত স্পর্শকাতর মামলায় শক্তিশালী প্রসিকিউশন গঠন করতেন। যাতে একজন অপরাধীও সাজা থেকে আইনি দুর্বলতা থেকে বেড়িয়ে যেতে না পারে।

ইতিহাস বেঁচে বেশি দিন রাজনীতি করা যায় না। রাজনীতি করার জন্য রাজনৈতিক প্রজ্ঞা থাকতে হয়। জনগণের সঙ্গে দৈনন্দিন নিবিঢ় যোগাযোগ থাকতে হয়। পাঁচ বছরে একবার এলাকায় গিয়ে ভোটের সময় হাজিরা দিয়ে জননেতা হওয়া যায় না। নেতা গঠিত হবার নিয়ম মাঠ পর্যায় থেকে। কিন্তু আমাদের নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নেতা কেন্দ্র থেকে বানিয়ে জনগণের ঘাড়ে সেই বানানো নেতার নেতৃত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়। যার সঙ্গে জনগণের সেই নিবিঢ় সম্পর্ক কখনোই তৈরি হয় না।

আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের এখন প্রধান টার্গেট থাকে দল ক্ষমতায় গেলে পাঁচ বছরে বাকি জীবনের অর্থ উপার্জন করাই মোক্ষম সুযোগ। সেই সুযোগর তারা এক মিনিটও নষ্ট করতে রাজী নয়। দলগুলোও সেই সুযোগে নির্বাচনী নমিনেশান দেবার সময় দলীয় খরচ হিসেবে মোটা অংকের চাঁদা অ্যাডভান্স ভাগিয়ে নিচ্ছে। এখন প্রশ্ন হল, যে লোকটি সাংসদ হবার আগেই দলের পেছনে এতো টাকা ইনভেস্ট করলেন, তার কাছে জনসেবা আগে নাকি সেই খরচ উঠিয়ে বাড়তি কিছু লাভ ওঠানোর ধান্ধা আগে? স্বাভাবিকভাবেই সে খরচ আর লাভ দুটো একসাথে ওঠাতে গিয়ে চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, চুরি-চামারি করতে উৎসাহিত হচ্ছে। আর পাঁচ বছর সময়ের মধ্যে এসব করতে না পারলে তার মিশন ব্যর্থ। তখন তার ছেলেমেয়েরা স্ত্রী, তাকে আর পাত্তা দিবে? তাদের চাই নতুন মডেলের গাড়ি, নতুন মডেলের বাড়ি, বিদেশে একটা স্বপ্নের সেকেন্ড হোম, দামি জামাকাপড়, দামি সেন্ট, নানান পদের ফাস্ট ফুড, কত চাহিদা তাদের। সেই চাহিদার কাছে জনসেবা নেহাত একটা ফালতু বিষয়। তাই এমপি সাহেবের মাথা সময় সময় আউলা থাকে। আগে তো ঘর সামলাতে হবে। সময় তো মাত্র পাঁচ বছর। এই যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে এটা দুর্নীতিকে ভয়াবহভাবে উসকে দিচ্ছে। এই দুর্নীতি উৎসাহিত করার জন্য আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রবলভাবেই দায়ী।

তবে একটা কথা খুবই সত্য, বাঙালি সবকিছুকেই খুব তাড়াতাড়িই সহ্য করার এক আশ্চার্য শক্তি পেয়েছে। যানজট এখন সহ্য করে নিয়েছে। দুর্নীতি সহ্য করে নিয়েছে। ভোট চুরি সহ্য করে নিয়েছে। স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা সহ্য করে নিয়েছে। নব্বই পরবর্তী গণতান্ত্রিক শাসন-দুঃশাসন সহ্য করে নিয়েছে। মঈনুদ্দীন-ফকরুদ্দীনকে সহ্য করে নিয়েছে। নিজামী-মুজাহিদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা সহ্য করে নিয়েছে। খালেদা জিয়ার শাসন-দুঃশাসন সহ্য করে নিয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনও একসময় এই বাঙালি সহ্য করে নিবে। বাঙালি জাতি এক অতিআশ্চার্য ধৈর্য ক্ষমতার অধিকারী। সেই ভরসায় আমাদের রাজনৈতিক নেতারা এখনো প‌্যাচ খেলাতে পালেই মনে মনে খুশি। দেশের বারোটা বাজলেও তারা যে প‌্যাচ খেলাইতে সক্ষম হলেন, এতেই তারা মহাখুশিতে গদগদ।

বিআরটিসি নাকি সরকারি বাস। এই বাসগুলো সব কন্টাক দেওয়া। ঢাকায় যতগুলো বিআরটিসি'র বাস আছে, ততগুলোর ভাড়ার রেট আলাদা আলাদা। কারো সাথেই কারো মিল নেই। যেভাবে যে পারছে সেভাবে সে ভাড়া তোলে। বাসের মধ্যে এই নিয়ে রোজ যাত্রীদের সঙ্গে বচ্চা। এই বচ্চাও বাঙালি সহ্য করে নিয়েছে। নইলে যোগাযোগমন্ত্রীকে পাবলিক বাসে এই বাঙালি আটকে রাখতো। যে ভাই নিজের চোখে দেখেন, আপনার সিস্টেম কি করে???

বাংলাদেশে এখন সবকিছু সিস্টেম নির্ভর হয়ে গেছে। ফুটপথে একদিন হকার পুলিশের ধাওয়া খায়, পরের ঘণ্টায় আবার সিস্টেম হয়ে সব ঠিক হয়ে যায়। ধুমছে চলে বেচাকেনা। এই সিস্টেমর নাম টুপাইস। টুপাইস দিলেই সব এক্কেরে ঠিক। কোথায় কোন সিস্টেম চলছে বাংলাদেশ সেই কথা কেউ জানে না। সবাই কয়, উপরের নির্দেশ। এই উপর যে কোন উপর, স্বয়ং আল্লাহর নির্দশ কিনা সেই কথায়ও কেউ ভরসা পায় না। তবু দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেই বেশ ভালো আছি। চেতনার গোষ্টী কিলাই। আমি স্বেচ্ছায় বাংলাদেশের বাইরে অন্য যে কোনো দেশে নির্বাসনে যেতে চাই। চোখের সামনে এত হাজার হাজার অনিয়ম দেখে দেখে দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। অসুস্থ থাকলে মন ভালো থাকে না। মন ভালো না থাকলে তখন কি করব জানা নেই। মাননীয় সরকার বাহাদুর, প্লিজ আমাকে কোথাও নির্বাসনে পাঠান। আপনাদের এই ভেলকি আর ভালো লাগে না।



২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪

শনিবার, ঢাকা

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৫

কুষ্টিয়ারশুভ বলেছেন: সমস্যা কী, যেখানে যেতে চান, যান। কে বাধা দিচ্‌ছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.