নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা ব্যবস্থার গোল্ডেন ভূতের মধ্যেই আপনাদের আসল রাজনীতি: দয়া করে এই ভূতের সমাধান বের করুন।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৪

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক ও জুনিয়র সমাপনী সার্টিফিকেট পরীক্ষার নামে যে গোল্ডেন প্লাস জালিয়াতি শুরু হয়েছে, এর এখনই সমাপ্তি হওয়া উচিত। শিক্ষা ব্যবস্থায় এই দুই পরীক্ষা পদ্ধতি এখনই তুলে নেওয়া হোক। এত অল্প বয়সেই কোমলমতী ছেলেমেয়েদের মাথায় জালিয়াতি ঢুকানোর কোনো মানে হয় না। তারপর প্রশ্নপত্র ফাঁস, পরীক্ষার হলে শিক্ষকদের প্রশ্নের উত্তর বাধ্যতামূলক বলে দেওয়া, শিক্ষা ব্যবস্থায় এই যে বেহাল অবস্থা, এর মধ্যে এক ধরনের রাজনৈতিক গন্ধই কেবল দৃশ্যমান। যারা অন্ধ দলকানা বুদ্ধিজীবী, তাদের কথা আলাদা। কিন্তু এই ব্যবস্থায় স্বয়ং অভিভাবকরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের আসল কৃতিত্বকে সঠিকভাবে বুঝতে এখন ব্যর্থ হচ্ছেন।
একটি দেশে শুধুমাত্র ভোটের রাজনীতির জন্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এভাবে ধ্বংস করার কোনো মানে হয় না। দয়া করে যারা সরকারে আছেন, যারা শিক্ষা ব্যবস্থাকে এই করুণ দশায় ফেলেছেন, দেশের কল্যানে অন্তত এই জায়গাটায় আরেকবার ভাবুন। ছেলেমেয়েরা অনায়াসে গোল্ডেন প্লাস পেলেই ভোটকেন্দ্রে গিয়ে, তাদের অভিভাবকরা সব ভোট আপনাদের দিয়ে আসবে, এমন বুদ্ধি যারা বের করেছেন, তারা অন্তত বাংলাদেশকে ভালোবাসেন না। আমি ১০০ ভাগ গ্রান্টি দিয়ে এই কথা বলতে চাই। এই বুদ্ধি দেওনের লোকগুলো শয়তান টাইপের। যত খারাপ বুদ্ধি আছে, তাই তারা দিয়ে যাচ্ছে। কারণ, এই বুদ্ধি দেওয়া লোকগুলোর ছেলেমেয়েরা কেউ বাংলাদেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করে না। তারা বিদেশে একটি নিয়মতান্ত্রিক উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়াশুনা করেছে বা করছে বা করবে।
ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলে একগাদা বই নিয়ে যেতে হয়। আমি এই ব্যবস্থারও বিপক্ষে। দয়া করে বাচ্চাদের জন্য ক্লাসরুমে বই রাখার ব্যবস্থা চালু করুন। বাড়ি থেকে বাচ্চারা শুধু লেখার খাতা নিলেই যথেষ্ঠ। আমি নিজে কোনো দিন স্কুলে বই নিতাম না। শুধু খাতা নিতাম। তখন দেখেছি, যারা স্কুলে বই নিত, হাতের ঘামে সেই বইগুলোর পৃষ্ঠা ছিড়ে যেত। তাছাড়া তখন এখনকার মত ব্যাগ ছিল না। হাতে করেই বই নিতে হতো। স্কুলের ক্লাসরুমে ওই বইগুলোর কোনো কাজ নেই। সত্যি সত্যিই কোনো কাজ নেই। অথচ রোজ ছেলেমেয়রা ওই বইগুলো কাঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। স্টেশানে কুলির কামলা দিলেও অত কষ্ট হয় না। যা পড়ানোর তা শিক্ষকই পড়াবেন। একগাদা বই টেনে টেনে বাচ্চারা এখন কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারে না। বই টানার এই কুলিগিরি দয়া করে উঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করুন।
শিক্ষক নিয়োগে দলীয় স্বজনপ্রীতির যে কালচার এখন চালু, যে সুরত এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের, তা শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য আরেকটি জঘন্য মৃত্যুকূপ। এটা বন্ধ করার জন্য রাজনৈতিকভাবেই আপনাদের আরো শিক্ষিত হতে হবে। নইলে আপনারা এটা বন্ধ করতে পারবেন না। যার কোনো বিকল্প এখনো অন্তত বাংলাদেশে নেই। কারণ, আপনাদের রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এই ব্যবস্থা আপনারা উঠাবেন না, এটাই আসল সত্যি। দলীয় পরিচয়ে যারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পায়, তারা মোটেও শিক্ষক নয়। তাদের আচরণে দলীয় মাস্তানিই কেবল শোভা পায়। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বর্তমান ইতিহাস তাই বলে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা সেই আচরণ দেখিয়ে এটা প্রমাণ দিচ্ছেন, প্রতিদিন সেই দৃশ্য দেখছি।
শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। সেই অধিকারকে কোনো রাজনৈতিক বিবেচনায় দলীয় সুবিধার আওতায় আনাই একটি জাতি ধ্বংসের জন্য যথেষ্ঠ। এখন বাংলাদেশে যারা দলকানা, তাদের কাছে দলীয় সকল অপকর্মও গুনের সমান মর্যাদা পায়। তাহলে ডিকশনারি থেকে মর্যাদা শব্দটির নতুন অর্থ করার সময় এসেছে। দলের অনুসৃত নীতি যারা মানবে না, তারা কোনো সুযোগ সুবিধা পাবে না। এই কঠোর নীতির আওতায় সবাইকে বাধ্য করার যে কালচার প্রবর্তন হয়েছে, এটা এই জাতিকে তীলে তীলে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এই যে দলীয় আনুগত্যের সীমাহীন অপব্যবহার, এটা বন্ধ না হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় যতোই গোল্ডেন প্লাসের সংখ্যা বাড়ুক, এই জাতির শিক্ষিত হবার কোনো লক্ষণ সেখানে নেই।
আজকে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানের গোল্ডেন প্লাস পাওয়া নিয়ে খুশির বদলে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। কারণ, তাদের ছেলেমেয়েদের মেধা সম্পর্কে তারাই সবচেয়ে বড় পর্যবেক্ষক। সেই বিবেচনায় তাদের কাছে মনে হয়েছে, এই গোল্ডেন প্লাসের হিরিকে কোনো একটা ঘাপলা আছে। সেই গাপলার সহজ বাংলায় নাম হল ফল জালিয়াতি। গোটা জাতি একটা জালিয়াতি শিখে বড় হচ্ছে। ক্লাস ফাইভ থেকেই যে বাচ্চারা জালিয়াতির মুখোমুখি হবে, এটা এই দেশের গরীব মা-বাবারা সত্যি সত্যিই চায় না। এমন অনেক অভিভাবকও আছে, যারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের পর নিজেদের ছেলেমেয়েদের সেই প্রশ্ন জোগাড় করে দেবার জন্য ব্যাপক খাটুনি করেছেন। এই মানুষগুলো অনেক আগেই নিজেদের বিবেককে ধ্বংস করেছেন। আর হিরিকে নাক ডুবিয়ে এখন নিজেদের সন্তানের ভবিষ্যতকেও জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত করছেন। এই সংখ্যাটি কিন্তু দিন দিন বাড়ছে। যা একটি দেশের জন্য মোটেও সুখকর কোনো খবর নয়। বরং চরম ভয়ংকর খবর। যে অভিভাবকরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের রেজাল্ট ভালো করানোর জন্য ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের পেছনে দৌঁড়াচ্ছেন। এই দৃশ্য দেখে সবচেয়ে খুশি হচ্ছেন, যারা এই কুকর্মে জড়িত, এই ব্যবস্থা যারা প্রবর্তন করেছেন, সেই সব অপাংতেয় দুবৃত্তের দল। শিক্ষা ব্যবস্থায় দুবৃত্ত নিয়ে একটি জাতি বেশিদূর অগ্রসর হয় কি করে? মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন বটে!!!
একুশ শতকে এসে একটি দেশের শাসন ব্যবস্থায় এমন সকল ক্ষেত্রে জালিয়াতি নীতি চলতে পারে না। কোনো মতেই তা সমর্থনযোগ্যও নয়। একদিকে এই শিক্ষা ব্যবস্থা ছেলেমেয়েদেরকে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নমালায় এমন একটি জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে, যে, এদের কাউকে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করলে আগে জানতে চায়, চারটা সম্ভাব্য উত্তর বল। তাই শুনে সে সঠিক টা বলার চেষ্টা করবে। আমি বাজি ধরে বলতে পারি, আপনি ক্লাস সেভেনের একটি ছেলে বা মেয়েকে এই নৈর্ব্যক্তিক ব্যবস্থায় ক্লাস নাইনের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেবেন, সে আন্দাজে টিক মেরে পাস করবে। কিন্তু লিখিত প্রশ্নপত্র হলে তার পাস করা অনেকটা কঠিন। এসব ছেলেমেয়েরা একটা আবেদনপত্র লিখতে পারে না। কারণ, পরীক্ষার খাতায় কোথাও তা তারা শেখে না। একটা রচনা লিখতে পারে না। কারণ, এরা রচনা লেখা শিখছে না। অংক কিভাবে করতে হয় এরা শিখছে না। কারণ, এরা সঠিক জবাবটা মুখস্থ করছে। বা আন্দাজে বসিয়ে দিচ্ছে। পরীক্ষার খাতায় যদি লিখতেই না হল, তাহলে সেটা পরীক্ষা হয় কিভাবে, এই বিষয়েই বরং আমি বর্তমান ব্যবস্থার যারা প্রবর্তক, তাদের সঙ্গে যুক্তিতর্ক করতে প্রস্তুত। পরীক্ষা আমরা কাকে বলব? বর্তমান ব্যবস্থায় শিক্ষানীতিতে যে পরীক্ষা ব্যবস্থা, এটা অনেকটা হাইব্রিড ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় ছেলেমেয়েরা আসল শিক্ষাটি কোনোভাবেই পাচ্ছে না।
পরীক্ষার খাতায় যদি আপনাকে শুধু গোলভরাট করলেই মামলা চুকে যায়, সেই ছেলেমেয়েদের দিয়ে আপনাদের অবর্তমানে এই দেশ কিভাবে শাসন করাবেন? এরা কি এভাবে বড় হয়ে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকের মিনিট লিখতে পারবে? এরা কি এভাবে শিক্ষা গ্রহন করে বিদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি বা সমঝোতা স্বারক কিভাবে লিখতে হয়, সেটি লিখতে পারবে? এরা এভাবে বড় হয়ে কি বিদেশের সাথে বাংলাদেশের কোনো চুক্তির সময় কিভাবে দেশের স্বার্থকে তুলে ধরতে হয়, তার পক্ষে যথাযথ যুক্তি লিখতে পারবে? আই ডাউট, এভাবে এরা কেউ তা পারবে না। তাহলে স্বাভাবিক প্রশ্ন, এই কাজগুলো তখন কারা করবে?
এই বিদ্যমান ব্যবস্থায় তখন এই প্রশ্নের জবাব খুঁজলে তা আরো পরিস্কার হয়। যাদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে সঠিক শিক্ষা ব্যবস্থার অধীনে ভালো লেখাপড়া শিখে আসবে, তাদেরই তখন প্রয়োজন পড়বে, তাইতো। তার মানে হিসেব কিন্তু খুব পরিস্কার। তোমরা গোল্ডেন প্লাস পেয়ে মুর্খই থাকো। আমাদের ছেলেমেয়েরা বাইরে থেকে তোমাদের কিভাবে শাসন করতে হয়, তার এ টু জেড শিখে আসছে। অতএব তারাই দেশ শাসন করবে। এই হল আসল রাজনীতি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি পরীক্ষার খাতায় কি উত্তর না লিখে পাস করতে পেরেছিলেন? মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনি পরীক্ষার খাতায় কি গোল ভরাট করে পাস করেছিলেন? তাহলে আমার এই কঠিন প্রশ্নগুলোর জবাব পেয়ে যাবেন। তাহলে কেন গোটা দেশের ছেলেমেয়েদের এই গোলভরাট পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়ার রেওয়াজ চালু করলেন? উদ্দেশ্যটা একটু বুঝিয়ে বলবেন? আপনাদের ছেলেমেয়েরা কিন্তু বাইরে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে তারপর দেশ শাসনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। গোটা দেশের ছেলেমেয়েরা কী অপরাধ করল, যে এমন একটি ভৌতিক শিক্ষা ব্যবস্থা আপনারা তাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। এভাবে একটি দেশ উন্নত হতে পারে না। যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন জটিল এক ভৌতিক প্রক্রিয়া জড়িত, সেই দেশের কপালে অনেক কিন্তু আছে। সেই কিন্তু দিয়ে রাজনীতি করা যাবে, মাগার রাজ্য উদ্ধার হবে না।
কোটি টাকায় লালন পালন করা আমাদের ফায়ার সার্ভিস কিন্তু এক শিশু জিহাদ উদ্ধারে হান্ড্রেড পারসেন্ট ফেল করল। সাধারণ জনতাই বুদ্ধি খাঁটিয়ে খাঁচা বানিয়ে মাত্র আধা ঘণ্টায় জিহাদকে উদ্ধার করেছে। আজকে দেশে এক বিল্ডিংয়ের ভেতর কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ ছোটবেলা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনলে মনে আসত, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরই একদিনে ঘুরে শেষ করা যাবে না। এত বড় তার কাম্পাস। অথচ আপনাদের প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনটা যে বিশ্ববিদ্যালয় আর কোনটা যে কোচিং সেন্টার, সেটা আলাদা করাই বরং এখন অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাহলে বুঝতে হবে আপনাদের সিস্টেমের কোথাও একটা কিছু গোলমাল আছে। খুব বড় ধরনের গোলমাল আপনারা ইচ্ছে করেই পাকিয়েছেন। অথবা শিক্ষার নামে আপনাদের এমন সমাধান খুবই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
যে দেশে এইচএসসিতে কয়েক হাজার গোল্ডেন প্লাস পায়, অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে মাত্র দুই জন, সেই দেশের শিক্ষা পদ্ধতিতে যে একটা বড় ধরনের গোলমাল আছে, এটা খালি চোখে আপনারা স্বীকার করুন আর না করুন, এটা থেকেই এই জাতির শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়ন চিত্র যথাযথভাবে বোঝা যায়।
আজকে ছেলেমেয়েদের মার্কসিটে লেখা থাকে বাংলায় এ+, ইংরেজিতে এ+, অংকে এ+, ইত্যাদি। আর ফলাফলের ঘরে লেখা থাকে পাস। এই পাস মানে হল গণপাস। এটা কোনো গোল্ডেন প্লাস বুঝায় না। বুঝায় যে, সে পাস করেছে। কিন্তু কোন পেপারে কত নম্বর পেল, টোটাল কত নম্বর পেল, তা যদি মার্কসিটে না থাকে, তাহলে কি বুঝব তা দিয়ে? ৮০ থেকে ১০০ মানে এ+। এখন সে কি ৮০ পেল নাকি ৮৫ পেল, নাকি ৯৯ পেল, তা কি করে বুঝব, এই মার্কসিট দেখে?
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনি সময় নিয়ে এই শিক্ষা ব্যবস্থার এই দশা থেকে জাতিকে উদ্ধারের জন্য সত্যি সত্যিই একটা উপায় বের করুন। দেশে এখনো অনেক পণ্ডিত জীবিত আছেন। তাঁদের নিয়ে বসেন। একটা উপায় বের করুন। সেই উপায় নিয়ে পর্যালোচনা করুন। সারা দেশের জন্য সেই উপায় প্রবর্তন করুন। নইলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা যে করুন দশায় আছে, তা একটি জাতির জন্য ধ্বংস ডেকে আনবে। গণহারে গোল্ডেন প্লাস এই ভূত তাড়াতে পারবে না। যদি না আপনারা শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে এই ভূত না তাড়ান। নইলে বছর শেষে ঠিকই পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে। ঝাঁক ঝাঁক গোল্ডেন প্লাস পাবে। কিন্তু শিক্ষার যে ব্যাপার তা সত্যিকার অর্থেই অনুপস্থিত থাকবে। এভাবে একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য আপনি লাইসেন্স পেতে পারেন না। কিছুতেই পারেন না। এই কথা বলার জন্য আপনি হয়তো আমাকে কঠোর সাজা দিতে পারবেন। কিন্তু আমার এই কথা, ত্রিশ বছর বা পঞ্চাশ বছর পর, নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অনুধাবন করতে পারবে, কতোটা ক্ষুদ্ধ হলে আমি এই কথা বলার মত দুঃসাহস দেখাচ্ছি এখন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে রাজনীতি না করলেই বরং আপনাদের জন্য আরো মঙ্গল কামনা করার আমার অনেক খায়েস আছে। কিন্তু একটা জাতিকে ধ্বংস করার এই যে চক্রান্ত, এখান থেকে আপনারা এখনই সতর্ক না হলে, এই দেশে শিক্ষার নামে যা কিছু হবে, সবই হবে রাজনৈতিক বিবেচনায়। শিক্ষক নিয়োগের নামে যা হবে, সবই হবে রাজনৈতিক বিবেবচনায়। এভাবে বড় জোর পাঁচ বছর, দশ বছর, পনের বছর, কুঁড়ি বছর, পঁচিশ বছর চালাতে পারবেন। কিন্তু আমি লিখে দিতে পারি, এই ব্যবস্থা ভাঙ্গার জন্যই এদেশের নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা একদিন রাস্তায় আন্দোলন করবে। আর তখন আপনাদের এই ভুল শিক্ষা পদ্ধতিকে সেদিন ছুড়ে মারবে নর্দমায়। সেই করুণ পরিনতির জন্য অপেক্ষা না করে, আপনারাই বরং ভালো কিছু করুন। যা পরবর্তী প্রজন্ম সারা জীবন মনে রাখবে। আপনারা অন্যান্য উন্নত দেশের শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে ভালো করে জানুন। বিচার বিশ্লেষণ করুন। তারপর দেশের জন্য একটা মৌলিক শিক্ষা পদ্ধতি চালু করুন। এটা আমার সবিনয় নিবেদন। নইলে এই জাতি বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থায় অচিরেই একটা গরুর জাতিতে পরিনত হবে।

............................
৩০ ডিসেম্বর ২০১৪
ঢাকা

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২৬

আবু শাকিল বলেছেন: প্র‍য়োজনীয় লেখা।।

২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০২

নিলু বলেছেন: শিক্ষার মান , পরীক্ষার পাশের হার কম / বেশী এবং গ্রেড ভিত্তিক ফল , খাতা দেখার পদ্দতি এসবই কেমন জানি মনে হয় । তাহলে ডি / ই গ্রেড কোথায় যাবে এবং তাদের কি মান ?

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪০

শাশ্বত স্বপন বলেছেন: জাতি বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থায় অচিরেই একটা গরুর জাতিতে পরিনত হবে।

৪| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৫:০৯

খেলাঘর বলেছেন:


নাহিদরা সাধারণ লোক, অসাধারণ কাজ করতে চাচ্ছে; কিন্তু দক্ষতা নেই।
যতটুকু করেছিল, সবটা ঢুবে যাবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.