নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
তোমাদের কারো মুখেই গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। নব্বই পর্যন্ত যদি বাংলাদেশের গণতন্ত্রে উত্তরণের পূর্বাবস্থা ধরি, তাহলে ১৯৯০ সালে থেকে ২০১৪ পর্যন্ত এই ২৫ বছর বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নামে যে সন্ত্রাসবাদ, জোরজবরদস্তি, দুর্নীতি, খুন, গুম, লুটপাট, জ্বালাও, পোড়াও, হরতাল, অবরোধ, মিটিং-মিছিল, জনসভা করা হয়েছে, এর সবকিছুই করেছে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় যাবার সিঁড়ি হিসেবে অথবা ক্ষমতাকে ধরে রাখার বাসনা হিসেবে। মূলত এই ২৫ বছরে গোটা বাংলাদেশে এক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস আর দুবৃত্তায়নকেই কেবল পাকাপোক্ত করা হয়েছে।
সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো এই ২৫ বছর যা যা করেছে, যা যা করছে এর কোনোটাকেই গণতন্ত্রের ভাষা বলা যায় না। একে এক কথায় বলা যায় ক্ষমতার মাস্তানি অথবা ক্ষমতায় যাবার মাস্তানি। একপক্ষ ক্ষমতা পাকাপাকি করতে চায়। আরেক পক্ষ ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত হয়ে পুনরায় ক্ষমতায় যাবার রাস্তা তৈরি করে। বাংলাদেশের নিরিহ অশিক্ষিত কুশিক্ষিত কুসংস্কারচ্ছন্ন সাধারণ মানুষকে আমাদের দুবৃত্তায়নে ভরপুর রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্রের নামে এক ভুল ব্যাখ্যা চাপিয়ে দিয়ে মুখে গণতন্ত্রের ফেণা তুলে কেবল নিজেদের আখের গুছিয়েছে। এই ২৫ বছরে দেশে দুর্নীতি স্থায়ী আকার লাভ করেছে। এই ২৫ বছরে দেশে দুবৃত্তায়ন শক্তিশালী হয়েছে। এই ২৫ বছরে দেশে চাঁদাবাজি বেড়েছে, টেন্ডারবাজি বেড়েছে, ছিনতাই বেড়েছে, লুটপাট বেড়েছে, সরকারি অর্থের অপচয় বেড়েছে, সরকারি সম্পত্তির ভোগ দখল বেড়েছে, রাষ্ট্রীয় যন্ত্রগুলোকে ধ্বংসের চূড়ান্ত দোরগোড়ায় নিয়ে গেছে আমাদের মুখে ফেণা তোলা রাজনৈতিক দলগুলো।
এসব কাজ করতে গিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণ মানুষকেই কেবল জিম্মি করেছে। জনগণ এটা চায়, জনগণ ওটা চায়, এসব বলে বলে জোর করে জনগণের নামে নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়ার একটা প্রচলন পাকাপাকি হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সিন্ডিকেটের শক্তিশালী দুবৃত্তায়ন। পরিবহণ সিন্ডিকেট, বাজার সিন্ডিকেট, ঘাট সিন্ডিকেট, মাঠ সিন্ডিকেট, সংস্কৃতি সিন্ডিকেট, রাজনৈতিক সিন্ডিকেট, ছাত্র সিন্ডিকেট, যুব সিন্ডিকেট, ব্ল্যাকমানি সিন্ডিকেট, চোরাচালান সিন্ডিকেট, সম্পদ পাচার সিন্ডিকেট, সেকেন্ড হোম সিন্ডিকেট, টু-পাইস সিন্ডিকেট, কমিশন সিন্ডিকেট, ৫% সিন্ডিকেট, ১০% সিন্ডিকেট, ভিভিআইপি সিন্ডিকেট, ভিআইপি সিন্ডিকেট, সিআইপি সিন্ডিকেট, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, মার্কেট সিন্ডিকেট, অ্যাসোসিয়েশন সিন্ডিকেট, সমিতি সিন্ডিকেট, হাজার হাজার দুবৃত্ত সিন্ডিকেট মূলত বাংলাদেশকে নিজেদের ইচ্ছেমত খাবি খুবলে খাচ্ছে। আর এই চক্র মুখে ফেণা তুলছে, গণতন্ত্র-গণতন্ত্র-গণতন্ত্র!!! দেশ গণতন্ত্রের জোয়ারে ভাসছে।
এই ২৫ বছরে এসব দুবৃত্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিলুপ্ত হয়েছে বিবেকবোধ। মানুষের মানবিক বিচার বিবেচনার যে বোধ, সেই বোধ বা বিবেক সম্পূর্ণরূপে হারিয়েছে বাংলাদেশের এসব সিন্ডিকেট থেকে। জনগণের জন্য তাদের এসব অবৈধ আবদার যতই অত্যাচার-নির্যাতনমূলক হোক না কেন, তাতে এদের কোনো বিকার নেই। উল্টো এরা সবাইকে মিথ্যা বুঝিয়ে এই সত্য প্রচার করতে চাইছে যে, এরা যা করেছে, যা করছে সবই গণতন্ত্রের স্বার্থে! আহা মরি মরি!! গণতন্ত্রের বুঝদারগণ, দয়া করে আপনাদের এসব ভেলকিবাজি ধোকাবাজি বন্ধ করুন। আপনাদের মুখোশটা এখন সারা দেশের মানুষের কাছে দিবালোকের মত সুস্পষ্ট। এই ২৫ বছরে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি আস্থা হারিয়েছে রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিদের উপর।
নির্বাচনের আগে এরা দলীয় নমিনেশান নিয়ে চাঁদাবাজি করে। যে চাঁদা বেশি দেয়, সে-ই এদের দলীয় নমিনেশান পায়। সে যত বড় দুবৃত্ত হোক না কেন, তার দেওয়া চাঁদার অংকই এখানে বিরাট ফ্যাক্টর। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট নিঃসংশতায় হত্যা বা খুনের বিচার হয়নি। মানে রাজনৈতিক দলগুলো এই ২৫ বছরে দেশে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যত হত্যাকাণ্ড করেছে, সেই সকল হত্যাকে তারা বৈধ করে ফেলেছে। যে যত বেশি হত্যা করতে পারছে, সে তত বড় নেতা বা নেত্রী। যে যত বড় কুকর্ম করতে পারছে, সে তত বড় হিরো। রাষ্ট্রীয়ভাবে এখানে এক লুটপাটের অভয়ারণ্য তৈরি করা হয়েছে। তাই ক্ষমতা থেকে কেউ একবার ক্ষমতার বাইরে গেলেই পুনরায় ক্ষতায় আসার জন্যে মরিয়া হয়ে ওঠে। তখন এদের যে কোনো অন্যায্য দাবিকেও এরা রাজনৈতিক অধিকারের নামে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে।
এই ২৫ বছরে এরা দেশের আইন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের ন্যূনতম ভরসাও তৈরি করতে পারেনি। বরং আইনকে দলীয় সুবিধাভোগের একটি মর্ম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। দেশের বিচার ব্যবস্থাকে করা হয়েছে ক্ষতাসীন দলের প্রাইভেট থিয়েটার। এই ২৫ বছরে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনগুলো দেশের পুলিশের মত আচরণ করেছে। আইনকে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করেছে। বিচার মানেনি। আইনকে তোয়াক্কা করেনি। কেবল ক্ষমতাকে পুঁজি করে এরা এক প্যারালাল পুলিশি ক্ষমতা ভোগ করেছে।
এসব সম্মিলিত ধারাবাহিক দুবৃত্তায়নের হাত ধরেই বাংলাদেশে এখন রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের এক অভয়ারণ্য সৃষ্টি হয়েছে। এখন বাংলাদেশের এক ইঞ্চি ভূমিতেও সাধারণ মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। এই ২৫ বছরে দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে। পাশাপাশি দুবৃত্তরা তাদের নিজেদের নিরাপত্তাকে এই সময়ে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে।
সবাই এখানে একটি গন্তব্যকেই কেবল মুখ্য হিসেবে নিয়েছে। যে করেই হোক পুঁজি বানাও। টাকা বানাও। গণতন্ত্রের নামে বাংলাদেশে চলছে টাকা বানানোর এক আজব ধারাবাহিক নাটক। এই নাটকের প্রধান কলাকুশলী আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। পুঁজিকে এরা সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে ধ্যান করেছে। তাই দুবৃত্তায়নের সকল ক্ষেত্রে এই পুঁজির চলাচলকেই এরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় দুবৃত্তায়নের ফলে রাষ্ট্রের কাছে মানুষের জীবনের স্বাভাবিক যে পাওনাগুলো যেমন ন্যায়বিচার, মানবিক মূল্যবোধ, নিরাপত্তা, মৌলিক অধিকার, শিক্ষা, মানবাধিকার ও শান্তি, এই জিনিসগুলোই কেবল দিন দিন বিলুপ্ত হয়েছে, হচ্ছে। বিপরীতে সকল সেক্টরে এসব দুবৃত্তায়ন আরো হাজারগুণ শক্তিশালী হয়েছে। গণতন্ত্রের নামে এরা এই দুবৃত্তায়নকে জোর করে জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়েছে, দিচ্ছে।
আজ আমরা উন্নয়নের নামে যেসব চিত্র দেখি, তার প্রতিটি সেক্টরেই এই দুবৃত্তায়ন মৌমাছির বাসার মত জট পাকিয়েছে। পাশাপাশি এই সময়ে ধর্মীয় অনুভূতিকে প্রবলভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। মানুষের সেন্টিমেন্ট নিয়ে তামাশা করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। এখন আর সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগ বা বিএনপিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে মনে করে না। মনে করে দেশের সবচেয়ে বড় দুই দুবৃত্ত। যাদের কাছে দেশের মানুষ একপ্রকার জিম্মি। এরা রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে যা ঠিক করবে, সেই ব্যবস্থাকেই দেশের মানুষকে নিয়তি হিসেবে ভোগ করতে হবে। এ যেন এক মহা তামাশার রাজ্যে চলছে তামাশার বলৎকার। রাজা যায় রাজা আসে মাগার তামাশা বন্ধ হয় না। বরং নতুন নতুন তামাশা দেখে দেখে দেশের মানুষ এখন অনেকটা গিনিপিক হয়ে গেছে। উপায় নেই গোলাম হোসেন। তাই বিরক্ত হয়ে মানুষ কয় বছর পরপর এক দলকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাচ্ছে বা বিপক্ষ দলকে ভোট দিয়ে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা থেকে নামাচ্ছে। এ যেন এক মহা সিরিয়াল। মাগার আকাম কুকাম আর বন্ধ হয় না। বাংলাদেশে বিগত ২৫ বছর ধরে গণতন্ত্র-গণতন্ত্র খেলা চলছে। এরা নিজেরা না পারলে বিদেশি শক্তির সাহায্য নিচ্ছে। আহা গণতন্ত্র! তোমার চেহারা আমরা ২৫ বছরে চিনে ফেলেছি। এই যদি হয় গণতন্ত্রের নমুনা। তাহলে এমন গণতন্ত্রের গুষ্ঠি কিলাই। আর কোনো দিন ভোট কেন্দ্রে যামু না। যামু না, যামু না।
.....................................
১৫ জানুয়ারি ২০১৫
ঢাকা
২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৪৮
দেশী ম্যান বলেছেন: আপনারা তো এইসব পোস্টানো ছাড়া আর কিছু করতে পারেন না, তাইলে এত কথা বলেন কেন? চুপ করে হজম করে জান।
৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৪৯
দেশী ম্যান বলেছেন: আর আপনি তো মনে হয় বামপন্থী বেকুব, লাল কথিত ভণ্ডামির বিপ্লবী ছবি দিয়ে রাখছেন কেন?
৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৫৪
দেশী ম্যান বলেছেন: আমার বামদের ২ চোখে দেখতে ইচ্ছা করে না, এরা আসলে উন্নয়ন অর্থাৎ ক্যাপিটালিজমের শত্রু। বামরা বোকার রাজ্যে বাস করে, ভালো ভালো কথা বিক্রি করে খেতে চায়। জামাত খারাপ, বামরা জামাতের থেকেও বেশি খারাপ। গরিব আরো গরিব হবে, বড়লোক আর বড়লোক হবে এটাই সত্য। আগে বলেন আপনি কি বামাতি কিনা? তারপরে কেন ক্যাপিটালিজম শক্তিশালী এবং কেন ক্যাপিটালিজম এর জয় হয়েছে এবং হতেই থাকবে তা নিয়ে কিছু বামদের সাথে তর্ক আছে।
৫| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৯
আলী আহামমদ (সুমন) বলেছেন: + + + +
৬| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪১
রেজা ঘটক বলেছেন: সবাইকে ধন্যবাদ। কারো সাথে কুতর্ক করার খায়েস আমার কোনো দিন ছিল না। ভবিষ্যতেও হবে না। তাছাড়া আমার সময় নাই কুতর্ক করার। সবার মন্তব্যের জবাব দেওয়ার সময় বের করতে পারি না। তবে সবার মন্তব্য পড়ি। মন্তব্য পড়ে মন্তব্যকারী সম্পর্কে একটা মোটামুটি ধারণাও হয়ে যায়। আর আমি বুঝতে পারি, কোন মন্তব্যকারী কোন ধরনের লেখায় কি মন্তব্য করবেন। একটা সুবিধা হয়, দলকানা, বেকুব, ব্রেনওয়াশ, যুক্তি, কুযুক্তি নানান বিষয়ে একটা ধারণা পাওয়া যায়। তো কি আর করা...সবাই ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন, এই কামনা করি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৩৬
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
যামু না কইলে হইতো-না। কন- খামু না।