নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবারো পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি: সমাধানে সরকারকেই যথার্থ ভূমিকা নিতে হবে!!

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৮

আবারো হঠাৎ করে অশান্ত হয়ে উঠেছে পাবর্ত চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা। এবার নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু আদিবাসী নারী, শিশু ও যুবক। পাহাড়ের পাশাপাশি দেশের সমতল অঞ্চলের সংখ্যালঘু আদিবাসীরাও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশে হঠাৎ করেই আবার সংখ্যালঘুদের উপর এই পরিকল্পিত হামলা ও নির্যাতনের রহস্য কোথায়? এমন কি দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের এই সাম্প্রতিকতম ঘটনাগুলো তেমন ফলাও করে প্রচারও পাচ্ছে না। গত বছর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর গঠিত বর্তমান সরকারের বছর পুর্তির এই সময়ে দেশের সংখ্যালঘুরা কেন আবার দুবৃত্তদের টার্গেটে পরিনত হলো? এর পেছনে কি শুধু বিরোধীদল বিএনপি-জামায়াত জোটের হিংসার রাজনীতি জড়িত? নাকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় দখলবাজিও জড়িত? নাকি দেশের সংখ্যালঘুদের নিশ্চিন্থ করার মিশনে এটি একটি পরিকল্পিত যৌথ প্রযোজনা? যেখানে সরকারি বা বিরোধীদল বলে কোনো কথা নয়, সংখ্যালঘু নিধন প্রকল্পই আসল কথা!!



কেস স্ট্যাডি ১.

গত ১৪ জানুয়ারি ২০১৫ পাবর্ত রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার কাশখালী গ্রামে ৭ বছর বয়সি এক শিশুকে ধর্ষণ করেছে একই গ্রামের আইউব আলী (৪৫) নামের এক পাষণ্ড। আইউব আলী'র বাবার নাম খন্দকার সুরুজ মিঞা। ধর্ষকের পরিবার কাশখালীতে বাঙালি সেটেলার পরিবার। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ভিকটিম শিশুটি কাশখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে স্কুল ছুটির পর বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। পথে শিশুটি দোকান থেকে খাবার কিনতে গিয়ে দলছুট হয়। তারপর শিশুটি যখন একা একা বাড়ি ফিরছিল, কাশখালী বঙ্গটিলার কাছাকাছি আসলে শিশুটির উপর ঝাপিয়ে পড়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে পাষণ্ড আইউব আলী। ধর্ষণের পর আহত শিশুকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় আইউব আলী।

রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটি বাড়িতে পৌঁছে তার মাকে জানালে দ্রুত তাকে স্থানীয় কাশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। হাসপাতালের ডাক্তারগণ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শিশুটিকে বিকাল চারটার দিকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নেবার পর সেখানকার ডাক্তারগণও শিশুটিকে আবারো রেফার্ড করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রাত নয়টায় শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয়। এরপর শিশুটিকে জরুরী বিভাগ থেকে গাইনোকলোজি ডিপার্টমেন্টে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দুই ঘণ্টা ধরে শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তারপর আবার শিশুটিকে শিশু ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। পারদিন ১৫ জানুয়ারি দুপুর দুইটায় শিশুটির নিম্নাঙ্গে একটি সফল অপারেশন সম্পন্ন করা হয়। বর্তমানে শিশুটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের নিবিঢ় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, শিশুটির অবস্থা ধীরে ধীরে কিছুটা উন্নত হচ্ছে।

এদিকে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির বাবা ধর্ষক আইউব আলী'র বিরুদ্ধে ১৪ জানুয়ারি কাউখালী থানায় একটি শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। কাউখালী থানার ওসি নিলু কান্তি বড়ুয়া জানান, ধর্ষক আইউব আলীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আজ ১৫ জানুয়ারি ধর্ষককে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে।

ভিকটিম শিশুটির পরিবার নিতান্ত গরীব হওয়ায় তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করা পরিবারটির জন্য এখন চরম দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশুটির চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করার জন্য ইতোমধ্যে সংখ্যালঘু আদিবাসি গোষ্ঠির কিছু ব্যক্তি, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও বাংলাদেশ মার্মা ছাত্র কাউন্সিল সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সচেতন মহল সাত বছরের শিশুর ধর্ষককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছে।



কেস স্ট্যাডি ২.

গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার চিৎমারম কেয়াং গুটাংয়ের ১৫ বছরের একটি মেয়ে খুন হয়। মার্মা মেয়েটির পরিবার ও এলাকাবাসীর ধারণা, মেয়েটিকে ধর্ষণের পর দুবৃত্তরা তাকে খুন করে পালিয়েছে। ভিকটিম মেয়েটি এ বছর চিৎমারম হাই স্কুল থেকে জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। মেয়েটির বাবা কাপ্তাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুইজন বাঙালি সেটেলারকে গ্রেফতার করেছে।



কেস স্ট্যাডি ৩.

কাপ্তাইয়ে মার্মা মেয়ে ধর্ষনের পরে খুনের রেশ কাটতে না কাটতেই ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি থানার কাপ্তাই পাড়ায় মহালছড়ি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে ধর্ষনের চেষ্টা চালায় এক বাঙালি সেটেলার যুবক। মেয়েটির চিৎকারে এলাকাবাসী হাতেনাতে ছেলেটিকে ধরে ফেলে এবং পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এই ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার মহালছড়ি থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। উল্টো বাঙালি সেটেলার ছেলেটিকে অভিযোগ থেকে বাঁচাতে বাঙালি পাড়া থেকে মিছিল বের করা হয়।



কেস স্ট্যাডি ৪.

মহালছড়ির ঘটনার দুইদিন পর ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙা উপজেলার তাইনডং ইউনিয়নের সুসিলা রঞ্জন হেডম্যান পাড়ায় ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষনের চেষ্টা চালায় মাঝপাড়ার হারুনর রশীদের ছেলে বাদশাহ মিঞা (২২)। এই ঘটনায়ও থানায় মামলা হয়নি।



কেস স্ট্যাডি ৫.

এই সময়ে পাহাড়ি জনপদের পাশাপাশি সমতলেও সংখ্যালঘু সম্পদায়ের উপর নির্যাতন হয়েছে। গত ১০ জানুয়ারি রাজশাহীর তানোরের মইনপাড়ায় রাজশাহী সরকারি কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বাবলু হেমব্রনকে খুন করে দুবৃত্তরা। নিহত বাবলু হেমব্রন (২৫) সংখ্যালঘু শান্তাল সম্প্রদায়ের সন্তান। নিহত বাবলু ছিল শান্তাল স্টুডেন্টস ইউনিয়নের একজন নেতা। পুলিশ এখনো বাবলু হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।



কেস স্ট্যাডি ৬.

এর আগে গত ৬ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার শড়িষা ইউনিয়নের বৃত্তিডাঙ্গা গ্রামে সংখ্যালঘু বাগদি সম্প্রদায়ের মা ও মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষন করেছে দুবৃত্তরা। এই ঘটনায় পাংশা থানায় ভিকটিমের পরিবার ১০ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করে। মামলা নম্বর ৩, ধারা ৭/৯(৩)/৩০। মামলায় পাংশা থানার সাফিন শেখ (২৫), ওলি সর্দার (২৮), সাদ্দাম (২২), জিয়ারুল (২৩) ও অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, মামলার প্রধান আসামী সাফিন শেখ শড়িষা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সোহরাব হোসেনের ভাই। সাফিন শেখের নেতৃত্বে ৪/৫ জনের একটি দল ভিটমের বাড়িতে গিয়ে উপর্যুপরি মা ও মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষন করে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের খবর শুনে সাফিন ও ওলির নেতৃত্বে ৪/৫ জনের সন্ত্রাসী দলটি পুনরায় ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে হুমকি প্রদর্শন করে এবং মাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে মেয়েকে পুনরায় ধর্ষন করে। মেয়েটি দুই সপ্তাহ আগে স্বামীর বাড়ি থেকে মায়ের কাছে বেড়াতে এসেছিল।

পাংশা থানার পুলিশ জানায়, মা ও মেয়েকে ধর্ষনের অভিযোগের প্রধান আসামি সাফিন শেখকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। বাকি আসামীরা এখনো পলাতক। এদিকে থানায় মামলা করার পর আসামীরা পুনরায় মেয়েকে ধর্ষনের সময় হুমকি দিয়ে বলেছে, যদি মামলা তুলে নেওয়া না হয়, তাহলে পেট্রল দিয়ে মা ও মেয়েকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারবে। বর্তমানে সংখ্যালঘু এই বাগদি পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।



হঠাৎ করে পাহাড় অশান্ত হবার নেপথ্যে আর কী কী রহস্য ?

সরকার রাঙামাটিতে একটি মেডিকেল কলেজ এবং একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সেই লক্ষ্যে ১০ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ছাত্র ভর্তির তারিখ ঘোষিত হয়। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ দাবি করেছে, ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার যে পার্বত্য শান্তি চুক্তি সাক্ষর করেছিল, তার পুর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের আগে রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন কার্যক্রম বন্ধ রাখার। সরকারি উদ্যোগকে বাধা দিতে ১০ জানুয়ারি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ গোটা রাঙামাটিতে জল ও স্থল পথে সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দেয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন ও বাঙালি সেটেলাররা সংগঠিত হয়ে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাথে এই নিয়ে কয়েক দফা মারামারির এক পর্যায়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সেখানে ১৪৪ ধারা জারী করেন।

১৪৪ ধারা জারী থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন, বাঙালি সেটেলার, সম-অধিকার আন্দোলন এবং পার্বত্য যুব ফ্রন্টের কয়েক শো নেতাকর্মীরা সম্মিলিতভাবে দফায় দফায় রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকায় আদিবাসি সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালায়। হামলায় আদিবাসিদের অন্তত ১৫ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়। যাদের মধ্যে গুরুতর আহত বিকি চাকমা এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসন ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টায় অনির্দিষ্টকালের জন্য রাঙামাটিতে ১৪৪ ধারা জারী করে।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবার কথা সরাসরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করার পর সেখানে ১৪৪ ধারা জারী করা হয়। ১৩ জানুয়ারি পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু বাঙালি ও পাহাড়ি কমিউনিটিতে এই নিয়ে এখনো রাঙামাটি পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।



অশান্ত পাহাড় শেষ কোথায়?

১৯৫৮ সালে রাঙামাটিতে কাপ্তাই লেকে বাঁধ দিয়ে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করা হয়। তখন চাকমা রাজার বাড়ি সহ গোটা চাকমা সম্পদায়ের বাড়িঘর লেকের পানিতে ডুবে যায়। পাহাড়ে অশান্তির সেই সূচনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বাঙালি জাতিসত্তা প্রশ্নে আবার পাহাড়িদের সাথে প্রথম সমস্যা শুরু হয়। সংবিধানে যখন বাংলাদেশের সবাইকে বাঙালি জাতি হিসেবে লিখিতভাবে আকার দেওয়া হয়, তখন থেকেই পাহাড়ের মানুষেরা এটি মেনে নেয়নি। তখন বাংলাদেশের প্রথম সংসদে পার্বত্য জেলার সাংসদ মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা বলেছিলেন, আমরা চাকমা, আমরা বাঙালি নই। জবাবে বঙ্গবন্ধু সংসদে বলেছিলেন, তোরা বাঙালি হয়া যা। ওই সংসদের রেকর্ড বিবরণীতে সেসব কথা এখনো থাকার কথা। তারপর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হবার পর, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রামে আরো কঠোর নীতি গ্রহন করেন। ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতির জিয়ার নির্দেশে পাহাড়ি জনপদে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার নদী ভাঙ্গনে বিপর্যস্ত বাঙালিদেরকে বসতি স্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়। এভাবে তিন পার্বত্য জেলায় বাঙালি জনবসতি গড়ে তোলা হয়। গোটা পাহাড়ি জনপদে বাঙালি বসতি স্থাপনের পর থেকেই চূড়ান্ত অশান্তির শুরু হয়।

তারপর থেকে পাহাড়ি জনপদে বাঙালি-পাহাড়ি শত্রু শত্রু খেলা জমে ওঠে। গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সময়ে সেনা অভিযানে অসংখ্য পাহাড়ি মানুষ নিহত হয়েছে। আর ক্রমে পাহাড়ি জনপদে বাঙালি বসতির সীমানা বেড়েছে। অশান্ত পাহাড়কে শান্ত করার জন্য ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহন করার পর, শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে পাহাড়ি জনপদে শান্তি স্থাপনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সঙ্গে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর এক শান্তি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। শান্তি চুক্তির পর পাহাড় কিছুটা শান্ত হতে শুরু করে। কিন্তু সেই শান্তি চুক্তি তৎকালীন বিরোধীদল বিএনপি মেনে নেয়নি। তাই বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলে আবার ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে শান্তিচুক্তি থমকে যায়। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় ফিরে আসলেও শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে সরকার তখন থেকেই কিছুটা গরিমসি বা ঢিলেমি করতে থাকে। তাছাড়া শান্তিচুক্তিতে বর্ণিত যে সকল সুযোগ সুবিধা পাহাড়িদের দেবার কথা, তা বাস্তবায়নে সরকারি মহল থেকে গোটা পাহাড়ি জনপদে এক ধরনের তালবাহানা শুরু থেকেই ছিল।

তাছাড়া গোটা পাহাড়ি জনপদ নিয়ে পাকিস্তান আমল থেকেই এক ধরনের রহস্য বিরাজমান। তখন পাকিস্তান সরকার দাবি করত, পাহাড়ে ভারতের সন্ত্রাসীরা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন করায় উসকানি দিচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পরিস্থিতি ছিল ঠিক উল্টো। গোটা পাহাড়ি জনপদ ছিল পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর একক দখলে। পরবর্তীতে সেখানে জিয়ার সময়ে সেনাবাহিনীর তৎপরতা আরো বাড়ানো হয়। যা এখন পর্যন্ত বলবৎ আছে। ফলে শান্তিচুক্তি যেটা হয়েছে, সেটা পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়ন না হলে, পাহাড়ি জনপদে শান্তি ফিরে আসবে না, এটাই স্বাভাবিক।

সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে পাহাড়ি জনপদের গভীর অরণ্যের ভেতর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হয়, জামায়াতে ইসলামির কোনো সন্ত্রাসী জঙ্গি গোষ্ঠী জঙ্গলে এসব নিরাপদ প্রশিক্ষণ ঘাটি গড়ে তুলেছে। আসল ঘটনা যাই হোক না কেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এখন মূল সমস্যা বাঙালি সেটেলার বনাম পাহাড়িদের স্বার্থ।

পাশাপাশি বিশ্বের পুঁজিবাদের সাম্রাজ্যবাদী চক্র উন্নয়নের নামে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ন্যাচারাল হেরিটেজ ধ্বংস করেছে। বিভিন্ন দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে। মুক্তবাজার যুগে লুটপাটের এই চেহারা নতুন কৌশল নিয়েছে। যার নমুনা আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বেলায়ও দেখা যায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে একদিকে বিদেশি শক্তির মাল্টি মিলিয়ন প্রজেক্ট, গ্যাস, কয়লাসহ গোটা পাহাড়ি জনপদ অনেক খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। এই সম্পদ যাদের দরকার, তাদের সবার নজরই আমাদের পাহাড়ি জনপদের দিকে। তার মধ্যে বাঙালি বসতি স্থাপন করিয়ে গোঁদের উপর বিষ ফোঁড়া বানানো হয়েছে।

গোটা পার্বত্য জনপদে এখন সংখ্যালঘুদের উপর যে নির্যাতন চলছে, এর নেপথ্যে তাই দেশি-বিদেশি অনেক হিসেব নিকেশ জড়িত। স্বাধীনতার পর বিগত ৩৫ বছরে গোটা পাহাড়ি জনপদ থেকে অনেক সংখ্যালঘু আদিবাসিরা নিশ্চিন্থ হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে বাঁচিয়ে রাখা এমন একটি আত্মঘাতি কৌশল শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামকে আবারো অশান্ত করছে না, পাশাপাশি ওই অঞ্চলের আদিবাসি পাহাড়ি মানুষ ও জীববৈচিত্রের উপর তার প্রভাব পড়ছে। ছোট হয়ে যাচ্ছে পাহাড়িদের জায়গা জমি, সম্পত্তি। সেখানে ভাগ বসাচ্ছে অনেকগুলো পক্ষ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, সেনাবাহিনী পাহাড় থেকে কখনো আর ক্যান্টনমেন্ট গুটিয়ে নেবে না। পাশাপাশি যেসব বাঙালিকে সেখানে বসতি স্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তারাও আর সেখান থেকে সরতে চাইবে না। কিন্তু ন্যূনতম যেটুকু সুবিধা দিয়ে পাহাড়িদের শান্ত করা যায়, সেদিকে না গিয়ে প্রতিটি সরকার পার্বত্য জনপদকে নিয়ে রাজনৈতিক কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। যা বারবার পাহাড়ি জনপদ অশান্ত হবার মূল কারণ।

সাম্প্রতিক সময়ে রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সঙ্গে পাহাড়ি জনপদের প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্য ধ্বংস করে সেখানে কর্পোরেট ব্যবসা চালু করার যে গোপন কৌশল রয়েছে, তার সঙ্গে পাহাড়ি জনপদের সংখ্যালঘু নিধনের সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে বলে পাহাড়িরা দাবি করে। যে কারণে পাহাড় অশান্ত রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবেই বিভিন্ন কুটকৌশলের আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে বলে পাহাড়িদের দাবি। আর সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ি সংখ্যালঘুদের উপর ধারাবাহিক আক্রমনও একই সূত্রে গাঁথা।

গোটা পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের এক বিশাল সম্পদ। পাহাড়ি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভিন্ন জাতিসত্তাও আমাদের এক বিশাল ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্য ও সম্পদকে যদি আমরা নিজেরা রক্ষা করতে না চাই, বরং সেই সম্পদকে বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠির হাতে তুলে দিতে তাদের ভুল কৌশলের প্রেসক্রিপশনের পথে হেঁটে উন্নয়ন কার্যক্রমের নামে যত যজ্ঞ চালানো হোক না কেন, তা প্রকৃতপক্ষে পাহাড়কে শান্ত করায় কোনো কাজে লাগবে না। বরং দিনদিন শান্ত পাহাড় আরো অশান্ত হয়ে ওঠার নানান উপাদানে একটা সমস্যার মস্তজট পাকিয়েছে। ভুল কৌশলে সেই মস্তজট খুলতে চাওয়া হবে আরো বড় ধরনের ঝুঁকি। এখন দেখার বিষয় বাংলাদেশ কোন পথে যায়।

পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে যত শিঘ্র সম্ভব শুভ উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর যে হামলা, নির্যাতন, তার বিরুদ্ধে সরকারকে আরো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সংখ্যালঘুদের উপর এসব হামলা, নির্যাতন, খুন, ধর্ষন, উচ্ছেদ এসবের যথাযথ বিচার করতে হবে। দোষীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে লোক দেখানো কৌশল বা অস্থায়ী কোনো কৌশলই পার্বত্য এলাকায় শান্তি ফেরাতে পারবে না। পাহাড়ে শান্তি টেকসই হবে না। মনে রাখতে হবে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের এক অমূল্য সম্পদ। সেই সম্পদকে বিদেশি ও দেশি দুবৃত্তদের হাতে তুলে দেওয়ার ফল কখনোই শুভ হবে না। অতএব, সাধু সাবধান।



........................................

১৬ জানুয়ারি ২০১৫

ঢাকা







মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৫:০৫

দেশী ম্যান বলেছেন: আপনি কি বাম গাধাদের দল করেন?

২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৫:০৬

দেশী ম্যান বলেছেন: বিপ্লবী ভন্ডামীর চিন্তা বাদ দেন না কেন? আপনাদের তো সমাজে কোন ভূমিকা নাই, করেন কি আপনারা?

৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:০৬

খেলাঘর বলেছেন:


সেটেলারদের মাঝে সারা কোনরুপ ক্রাইমের সাথে যুক্ত তাদের পাহাড় থেকে বের করতে হবে।

সেটেলারদের সরকারী পাহাড়ী এলাকায় নিয়ে যেতে হবে।

৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৩০

ঢাকাবাসী বলেছেন: মাইনরিটি ট্রাইবসগুলো সবসময়ই মার খাচ্ছে জমির জন্য।

৫| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৪

ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: পার্বত্য উপজাতিদের আদিবাসী বললেন কোন আক্কেলে? তারা যে সব ষড়যন্ত্রে সামিল হয়ে শান্তিচুক্তির ৯-১০ বছর পরে এই আদিবাসী তত্ত্বের আমদানি করেছে, জানা আছে? না জানলে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভিতে খালেদ মুহিউদ্দিনের উপস্থাপনায় আয়োজিত টকশোটি ইউটিউব ঘেঁটে দেখে নিয়েন।

মানুষ কতটা নির্বোধ ও প্রতিক্রিয়াশীল হলে মেডিক্যাল কলেজ বা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরোধিতা করতে পারে তার জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ হলেন আপনি।

যে কয়টি ধর্ষনের ঘটনা বললেন, সেগুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিলেই হত, সেটা না করে কেস স্টাডির নামে গালগল্পের প্যাচাল করেছেন। আমিও ১০টি উদাহরণ দিতে পারি যেখানে উপজাতিরা বাঙালি ধর্ষন করেছে। আর এও জানি, উপজাতিদের অভিযোগের ৭৫%ই মিথ্যাচার।

শান্তিচুক্তি শুধু সরকারই পালন করবে? উপজাতিদের দায় নাই? চুক্তির ৪৫ দিনের মধ্যে সকল অস্ত্র জমা দেয়ার কথা থাকলেও একদিনের জন্যেও অস্ত্র পরিত্যাগ করেছে? পিসিজেএসএস চুক্তি করলেও চুক্তির পরপরই ভেঙ্গে ইউপিডিএফ হয়েছে, এখন আবারও ভেঙ্গে জেএসএস (রিফর্মিস্ট) হয়েছে, তারা কি পরিমান অস্ত্রের পাহাড় বানিয়েছে, সে নিয়ে ধারণা আছে? তাদের চাঁদাবাজি, অপহরণ বাণিজ্য, মারধোর, খুন, রাহাজানি এসব নিয়ে এক লাইনও বেরুল না, কেন? তাদের আধিপত্যের লড়াইয়ে প্রতিদিন পিষ্ট হচ্ছে পাহাড়ি জনপদ, আপনার জানা নাই? বাংলাদেশের সবচে বড় সব অস্ত্র চোরাচালানের সাথে জড়িত তারা। এই নিয়ে গত ২ বছরে আসাম, মিজোরাম ও ত্রিপুরায় বাংলাদেশি উপজাতিরা দফায় দফায় ধরা পড়েছে, সেটা জানতে ইচ্ছে হয় না? সেই তথ্যা দিতে ইচ্ছে হয় না? তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি করছে, এই টাকায় অস্ত্র কিনছে, আপনাদের মত দালাল কিনছে, সুতরাং আপনাকেইতো সাফাই গাইতে হবে।

দালালিকে ধিক্কার!

৬| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৩

রেজা ঘটক বলেছেন: সবাইকে ধন্যবাদ। একটা জিনিস সবার মনে রাখতে হবে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত রাখার জন্য দেশি-বিদেশি এজেন্টদের অনেক ভূমিকা আছে। তাই এখানে অনেক পক্ষ বিপক্ষ আছে। মাঝখানে গোটা বাংলাদেশকে কিন্তু এই সমস্যা হজম করেই চলতে হচ্ছে।
আজকে একজন সমতলের মানুষ কেন নিশ্চিন্তে পাহাড়ে ঘুরতে পারবে না? ওটা কি বাংলাদেশের বাইরের কোনো জায়গা? আবার পাহাড়ের মানুষ কেন সমতলে ইচ্ছেমত ঘুরতে পারবে না। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্তে নিরাপদে নিশ্চিন্তে ঘুরতে পারবে, এটা মনে হয় আমরা সবাই চাই। মাঝখানে রাজনীতি ঢুকে এই চাওয়া পাওয়াকে উল্টে দেয়।
আমরা যদি রাজনৈতিকভাবে দলকানা না হই, তাহলে মনে হয় এ বিষয়ে আরো স্বচ্ছ চিন্তা করার সুযোগ আছে। ইফ ইউ থিংক উইদিন বক্স, ইউ ক্যান'ট আন্ডারস্ট্যান্ড দ্য হোল থিং। গোটা ধরিত্রির যতদূর পর্যন্ত মানুষের স্বার্থ কাজ করেছে, ততদূর পর্যন্ত মানুষ এই ধরিত্রিকে নানাভাবে নানা স্বার্থে ব্যবহার করেছে বা করার চেষ্টা করছে। কোনো লেখা কারো পক্ষে গেলে বা বিপক্ষে গেলেই কেউ কারো দালাল হয়ে যায়, এমন লঘু চিন্তা আমার মাথায় কখনো আসে না। আমি কারো পক্ষে বা বিপক্ষে দালালি করার জন্যও লেখি না। স্বতস্ফূর্ত ভাবেই লেখালেখি করি। যখন যে বিষয়ে লিখতে মন চায়, সেই বিষয়ে লিখি। দয়া করে কোনো গোষ্ঠি, বা কোনো পক্ষ বা কোনো বিপক্ষের দলে আমাকে কেউ ফেলবেন না। নিজের বিবেক দিয়েই লিখি। সেখানে হয়তো অনেক ভুল থাকে, অনেক গ্যাপ থাকে, অনেক তথ্য সংকট থাকে, কিন্তু কাউকে খুশি করার জন্য আমি লিখি না। লিখতে পারলে নিজে সুস্থ থাকি। নিজের মত প্রকাশ করি। অনেকটা খোলামেলা ভাবেই করি। তাই সেই মতামতে হয়তো অনেকের গায়ে জ্বর ওঠে। সেই জ্বরের চিকিৎসা তো আমার কাছে নাই। আমি ভাই নিরিহ বেচারা। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবার আছে। কিন্তু অন্যায়ভাবে কেউ গালি দিলে, বা লেখার জন্য গালি খেতে হবে, এটা কেবল মুর্খদের সমাজেই চলে। লিটল লার্নিংদের আমি খুব ভয় পাই। সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। চিন্তা করতে শিখুন। চিন্তা করতে না পারলে আপনার যা ভালো লাগে তাই করুন। কিন্তু খামাখা মানুষকে গালাগালি করলে, সেটা এক ধরনের অন্যায়।

৭| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:১৬

দেশী ম্যান বলেছেন: আপনি যে একটা আজাইরা লোক, এত বড় লেখা দেখেই বোঝা যায় আপনার সময়ের দাম নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.